বরাবরের মতই গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস চলে গেলাম। অফিসে গিয়েই অন্য দিনের মত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। সকাল তখন ১০ টা বেজেছে। আমারও কাজের গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। হঠাৎ একটি অপিরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এসেছে। কাজের চাপে ফোন রিসিভ করতে পারিনি। আবার কাজে মগ্ন হয়ে পড়লাম। ১২ টা বাজতে আমার বড় ভাইয়ার ফোন আসল। বড় ভাইয়া সাধারণত এই সময় ফোন দেয় না। ভাইয়ার ফোন দেখেই রিসিভ করলাম। ফোন ধরতেই ভাইয়ার ভারী কণ্ঠ শুনে আমার ভালো লাগেনি। ভাইয়া কিছুক্ষণ ইনিয়ে বিনিয়ে পরে বলল আমার সেজ মামার ছোট ছেলে জায়ান মারা গিয়েছে। আমি বললাম বলিস কি, এত ছোট বাচ্চা কিভাবে মারা গেল। আমি ত শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।
আমি কোন রকমে কাজ সামলে ৩ টা বাজে অফিস থেকে বের হয়েছি। খুব খারাপ লাগছিল পথে। রাস্তায় যেতে যেতে শুনি বড় ছেলে মানে জাহিনও অসুস্থ। আমার ত আরো ভয় বেড়ে গেল। বেলা ৪ টা বাজে মামার ঢাকা বসুন্ধরার বাসায় পৌছে আমার নিশ্বাস ভারী হয়ে এসেছে লোকজনের কান্নায়। নিজেদের অনেক আত্মীয় স্বজন এসেছে এবং সবাই কে খুবই শোকাহত মনে হল। জায়ান এর জানাজার প্রস্তুতি শুরু হল এদিকে জাহিনের অবস্থা খারাপ এবং আই সি ইউ তে লাইফ সাপোর্ট এ রাখা হয়েছে। আমরা আবার ছুটলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে শুনি কিছুটা ইমপ্রুভ করেছে। আমরা আবার চলে এসেছি ছোট ছেলের জানাজার কাজ সম্পন্ন করার জন্য। এসে রাত ৯ টা বাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে জায়ানের শেষ সমাধি স্থাপন করা হয়। আমি সেখান থেকে আমার বাসায় ফিরছি রাত ১০ টা বাজে আবার আমার মোবাইলে ফোন এল। আমি ততক্ষণে বুঝেছি আরো একটি খারাপ সংবাদ হয়ত আমার জন্য অপেক্ষা করছে। ফোন রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে বলল জাহিনও মারা গিয়েছে। আমার শরীর যেন নিথর হয়ে আসছিল।
ঘটনা সংক্ষেপে যদি বলি, সেজ মামার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলের বয়স ১৬ বছর আর ছোট ছেলের বয়স ১০ বছর। দুই ভাই খুবই ভালো এবং শান্ত। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সেজ মামা ঢাকার বসুন্ধরায় নতুন ফ্ল্যাট কিনেছে এবং ১০ দিন হল পরিবার নিয়ে সেখানে উঠেছে। নতুন ফ্ল্যাটে উঠার পর এক সপ্তাহ শুধু গুছিয়েছে, সাজিয়েছে। তারপর যখন বাসা পুরোপুরি রেডি তখন উদয় হল তেলাপোকার উপদ্রপ। দুই ভাই খুব ভয় পায় তেলাপোকা। তাই মামা থার্ড পার্টি পেস্ট কিলিং এজেন্ট ডেকে বাসায় ইনসেক্ট কিলার দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। ইনসেক্ট কিলার স্প্রে করার পর নির্দিষ্ট সময় পার হলে মামা পরিবার নিয়ে বাসায় ঢুকে। বাসায় ঢুকার পর সকালে পরিবারের সবাই বমি করে। সারাদিন তারা তেমন কোন আলামত বুঝতে পারেননি। এরই মধ্যে স্প্রে করা কেমিক্যাল তাদের পুরো শরীরে ছড়িয়ে পরে। পরদিন ভোরবেলা জায়ান এর শাস কষ্ট হয় এবং তার কয়েক ঘন্টা পর সে মারা যায়। বড় ছেলেকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেয়া হয়। রাত ১০ টা বাজে সেও মারা যায়।
যাই হোক আমার মন খুবই খারাপ। তারপরও একা একা বসে ছিলাম যখন তখন লিখছিলাম।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে কি বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। আসলে কার জীবনে কখন দুর্ভোগ নেমে আসবে একমাত্র আল্লাহ পাক জানেন। ভীষণ বেদনাদায়ক একটি ঘটনা ঘটে গেছে, আমার নিজের কাছেও অত্যন্ত খারাপ লাগছে কি বলবো। তবুও বলি আরো একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে হয়তো জীবন দুটো বাঁচতে পারতো।
শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং উপর ওয়ালার কাছে প্রার্থনা করছি।
আর কিছু বলতে পারলাম না ভাই 😞
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল। আসলে ভাইয়া আপনার পোস্ট আমি মনোযোগ দিয়ে বারবার পড়ছিলাম। সত্যি এমন মর্মান্তিক ঘটনার জন্য আমরা কখনো প্রস্তুত ছিলাম না। আসলে ভাইয়া কার ভাগ্যে কি আছে বলা মুশকিল। তবে দুই ছেলে এভাবে এক সাথে মারা যাওয়া মেনে নেওয়া অনেক কষ্টের। যাইহোক আল্লাহ আপনার মামার পরিবারকে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা দান করুন, আমিন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কালকে সারাদিন ফেসবুকের নিউজফিডে এই খবরটি দেখছিলাম। খবরটি দেখার পর এত খারাপ লাগছিল যে কি আর বলবো। তাদের বাসা আমার বাসার একদমই কাছে। তারা যে আপনারই মামাতো ভাই জেনে হাত পায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেল। একই পরিবারের দুটি সন্তানের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া আসলেই কষ্টকর। শুনেছিলাম তাদের মা এবং বোনটিও অসুস্থ। তাদের কি অবস্থা জানাবেন ভাইয়া। আল্লাহ যেন বাচ্চা দুটিকে জান্নাতবাসী করে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাদের শরীরে এখনো পয়জন আছে তবে অনেকটা বিপদ মুক্ত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই মর্মান্তিক ঘটনাটা শুনে সত্যি চোখের জল আর ধরে রাখতে পারিনি ভাই। আমি কি যে বলবো এবং আপনাকে কি বলে সান্ত্বনা দিব তার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সত্যি খুবই খারাপ লাগছে এই বিষয়টা শুনে। দুই ভাইয়ের এক সঙ্গে কিছুক্ষণ পর মৃত্যু সত্যি খুব খারাপ লাগলো সম্পূর্ণটা পড়ে। আল্লাহ তায়ালা যেন দুটি বাচ্চাকে জান্নাতবাসী করে সেই দোয়া করি। আর আপনার মামার পরিবারকে যেন ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করে। এরকম একটা পরিস্থিতিতেও আপনি আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এরকম মর্মান্তিক একটি ঘটনা পড়ে আসলে কি বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। নতুন ফ্ল্যাটে উঠে সারা সপ্তাহ ধরে সব গুছিয়ে আনন্দে থাকার কথা কিন্তু তাদের পরিবারে এরকম একটি মর্মান্তিক ঘটনা শুনে নিজের কাছে খুবই খারাপ লাগছে। দোয়া করি আল্লাহর কাছে ওদেরকে জান্নাতে নসিব করে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আল্লাহপাক যাতে উনাদেরকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দেয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি আপনাকে কোন কথাটা বললে ভালো হবে আমি তো তা ই বুঝতে পারতেছি না। এরকম মর্মান্তিক ঘটনার কথা শুনে সত্যি চোখের জল আর ধরে রাখতে পারিনি ভাইয়া। এরকম মৃত্যু সত্যি মেনে নেওয়া যায় না। তাদের পরিবারের অবস্থা কিরকম আমি তো তা ভাবছি। এরকম একটা অবস্থাতে যেন তাদের ফ্যামিলিকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করে আল্লাহ তা'আলা, এটাই কামনা করি ভাইয়া। আর তারা দুজন যেন জান্নাত বাসী হয় এটাই দোয়া করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit