হঠাৎ নৌপথে ভ্রমণ-০১।

in hive-129948 •  last year 
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আবার এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। গত সপ্তাহে তিন বন্ধ পেয়েছিলাম। বন্ধ পেয়ে মনে হল কোথাও ঘুরে আশা দরকার। চিন্তা করে কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কারণ ঢাকার বাহিরে ঘুরতে গেলে থাকার ব্যাপার আছে কিন্তু কোথাও গিয়ে থাকা যাবে না। আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে আলাপ করছিলাম যে ঢাকার বাহিরে ডে লং ট্যুর দেয়া যায় কিনা। অনেক ভাবার পর মনে হল খুব সুন্দর একটি ভ্রমণের জায়গা আছে সেটি হলো লঞ্চ এ করে চাদপুর যাওয়া। আমি এর আগেও কয়েকবার লঞ্চে করে চাদপুর গিয়েছি। আসলে লঞ্চে বা নৌপথে ভ্রমণ আমার খুব ভালো লাগে ।

IMG20230929072216.jpg

গত বৃহস্পতিবার রাতে আমি আর শরীফ ভাই প্ল্যান করলাম কখন কি করব। যেহেতু চাদপুর যাচ্ছি ইলিশ মাছ কেনার ব্যাপার আছে তাই একটু বেশি করে টাকা পয়সা নিয়েছি। পরদিন সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গলো শরীফ ভাইয়ের ডাকে। সকাল ৬ টা বাজে শরীফ ভাই আমাকে ডেকে তুলল। জিজ্ঞেস করল যাবা লঞ্চ ভ্রমণে জিজ্ঞেস করার কারণ আমি যদি আবার মত বদল করি। আমি এক লাফে উঠে বললাম অবশ্যই যাবো ভাই তাড়াতাড়ি রেডি হন বড় লঞ্চ ধরতে হবে।
সদরঘাটে লঞ্চ ভেড়ানো থাকে আর বড় বড় লঞ্চ সব সকাল ৯-১০ টা বাজার আগেই ছেড়ে যায়।

IMG20230929072234.jpg

IMG20230929075137.jpg

আমরা রেডি হয়ে ঘাটে পৌঁছে গেলাম। রাস্তায় জ্যাম থাকায় পৌঁছাতে ৭:১৫ বেজে গিয়েছে। গিয়ে দেখি সোনার তরী নামক একটি বড় লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বার বার হর্ন বাজাচ্ছে। আমরা ঢুকতে যাব তখনই একজন বলল ভাই টিকেট কেটে নিন। পরে ১০ টাকা মূল্যের দুটি টিকেট কেটে লঞ্চের দিকে এগিয়ে গেলাম। যেতে যেতে লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছে এর মধ্যেই আমরা দৌড়ে উঠে পড়লাম লঞ্চে। মনে হচ্ছিল দিলবালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে এর বিখ্যাত সিন এর শুটিং করছিলাম।

IMG20230929102130.jpg

IMG20230929102109.jpg

যাই হোক লঞ্চে উঠে পুরো লঞ্চ ঘুরলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে দূরে আসা শুরু করলো। আমাদের উদ্দেশ্য স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটে যাওয়া। তাই সোজা সারেং এর রুমের কাছে চলে গেলাম। এর কারণ হচ্ছে সেখানে বাতাস খুব ভালো উপভোগ করা যায়। আমার উদ্দেশ্য ছিলো সারেং এর ঘরের সামনের খালি জায়গায় বসে থাকা কিন্তু সেখানে যাওয়া খুবই রেষ্ট্রিকটেড ছিল তাই সামনে যেতে পারিনি।

IMG20230929091823.jpg

IMG20230929072230.jpg

কিছুক্ষণ পর টিকেট কাটার লোক আসল এবং বললেন ৪০০ টাকা ভাড়া দেন। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি কারণ লাস্ট ৪ বছর আগে যখন গিয়েছিলাম তখন ভাড়া ছিল ১০০ টাকা। ১০০ টাকার ভাড়া ৪ বছর পর ১৫০ টাকা হতে পারে কিন্তু সেখানে ২০০ টাকা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। যাই হোক ভাড়া দিয়ে তিন তলা থেকে নেমে নিচ তলায় চলে গেলাম নাস্তা খাওয়ার জন্য। লঞ্চের মধ্যে দেখেছি নাস্তার আয়োজন নিচ তলায় ই থাকে। নাস্তা খেতে গিয়ে দেখি পাউরুটি আর ডিম । কি আর করা খেতে ত হবেই। নাস্তা খেয়ে চা খেয়ে নিলাম। চা অনেক মজার ছিল। চা নাস্তা খেয়ে কিছুক্ষণ নিচে দাড়িয়ে পানির দৌড়ানো দেখছিলাম । উপর থেকে লঞ্চের গতি খুব একটা বোঝা যায় না কিন্তু নিচ থেকে মনে হয় অনেক গতিতে দৌড়াচ্ছে।

IMG20230929093427.jpg

কিছুক্ষণ উপভোগ করে আবার চলে গেলাম লঞ্চের তিন তলায় সারেং এর ঘরের পাশে। আকাশ পরিষ্কার ছিল সাথে সূর্যের ঝলমলে রোদ। মাঝে মাঝে আমরা লঞ্চের এক পাশ থেকে আরেক পাশে গিয়ে বসেছিলাম রোদ থেকে বাচার জন্য। নদীতে অনেক কচুরিপানা দেখা যাচ্ছিল। লঞ্চ যাওয়ার সাথে সাথে কচুরিপানা গুলোও দুলতে থাকে। মাঝে মাঝে ছোট ছোট নৌকা করে মাঝিরা জাল পাততে দেখা যায়। আবার পাশ দিয়ে অনেক ট্রলার যাচ্ছিল।

আজ এই পর্যন্তই। আশা করি আমার লেখা পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সত্যি কথা বলতে কি ভাইজান নৌকায় চড়েছি কিন্তু নদীতে এভাবে কখনো জাহাজ কিংবা স্টিমারে ওঠে ভ্রমণ করেনি। খুব সুন্দর ভাবে আপনি আমাদের মাঝে ভ্রমণের বিশেষ বিশেষ অংশ তুলে ধরেছেন ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এবং বর্ণনার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করেছেন। আর এ থেকে বেশ অনেক তথ্য গ্রহণ করলাম এবং ধারণা পেলাম আপনার জার্নি সম্পর্কে।