আজ সন্ধ্যা বেলায় আমার ছোট বোন হঠাৎ করেই বার্গার খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলো। আমি বুঝতে পারলাম, এই ইচ্ছা পূরণ করতে আমাকে অবশ্যই বের হতে হবে। কারণ, ছোট বোনের আবদার তো আর ফেলা যায় না। বোনের মুখে এক টুকরো হাসি ফুটাতে পারলেই আমার মনটা ভরে ওঠে। তাই, আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম। আমি নিজে স্ট্রিট ফুড খেতে ভীষণ পছন্দ করি। বড় বড় রেস্টুরেন্টে যেতে তেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না, কারণ স্ট্রিট ফুডের সেই বিশেষ স্বাদ এবং মজার ছোঁয়া আমার কাছে অতুলনীয়।
আমার বাসার সামনেই কিছুদিন আগে একটি স্ট্রিট ফুডের দোকান চালু হয়েছে। প্রতিদিন দোকানের সামনে ভিড় দেখে বেশ কৌতূহল হয়েছিল, কিন্তু এতদিন যাবত সময়ের অভাবে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু আজকের সন্ধ্যায় বোনের আবদার পূরণের সঙ্গে সঙ্গে সেই নতুন দোকানের স্বাদ গ্রহণ করারও সুযোগ এলো। দোকানটি দেখতে বেশ ছোট এবং সাধারণ হলেও সেখানে একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল, যা দূর থেকে নজর কেড়েছিল। দোকানটি শুধু বার্গার নয়, সাথে ফ্রাইড চিকেন ও রোল বিক্রি করে। দোকানের খাবারগুলোর দাম একদম সাধ্যের মধ্যে—প্রতিটি আইটেমের দাম মাত্র ৫৯ টাকা। এত কম দামে এমন সুস্বাদু খাবার পাবো ভাবতেও পারিনি!
দোকানে ঢুকে আমি দুটি বার্গারের অর্ডার দিলাম। দোকানের লোকটি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে বার্গারগুলো প্রস্তুত করলো। বার্গার প্রস্তুত করার সময় তার হাতের দক্ষতা দেখে বুঝলাম, সে তার কাজটা ভালোই জানে। আমি অপেক্ষা করার সময় চারপাশটা লক্ষ্য করলাম। সাধারণ হলেও দোকানটির পরিবেশ বেশ পরিচ্ছন্ন এবং খাবারের মানের প্রতি তাদের যত্ন ছিল স্পষ্ট। এক সময় সুন্দরভাবে বার্গার দুটি প্যাকেট করে আমার হাতে দিলো। সেই মুহূর্তে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য আমার অধীরতা বাড়ছিল, কারণ আমি বোনের মুখে সেই আনন্দের ঝিলিক দেখার অপেক্ষায় ছিলাম।
বাসায় ফিরে এসে, বোনকে নিয়ে একসাথে বার্গার খেতে বসলাম। প্রথম কামড়েই আমি বুঝলাম, এই বার্গারটি আসলেই বিশেষ কিছু। বার্গারের প্রতিটি উপাদান ছিল সতেজ এবং তার প্রতিটি স্তরে ছিল মখমলের মতো নরমতা। খাওয়ার সময় একটুও গলদ বা অতিরিক্ত কিছুর প্রয়োজন অনুভব করিনি। বার্গারের মাংসের প্যাটি ছিল সঠিকভাবে রান্না করা, আর তার সাথে সসের সংমিশ্রণ ছিল অসাধারণ। বড় বড় রেস্টুরেন্টের বার্গার যেমন উপকরণে সমৃদ্ধ হয়, তেমনই এর স্বাদে অতুলনীয়তা থাকে, কিন্তু এই স্ট্রিট ফুডের বার্গারে এমন এক সৌন্দর্য ছিল যা সত্যিই মনকে ছুঁয়ে যায়।
বোনের মুখেও দেখলাম সেই একই সন্তুষ্টির অভিব্যক্তি। তার উচ্ছ্বসিত মুখ দেখে মনে হলো, এই ছোট্ট স্ট্রিট ফুডের দোকানটি আমাদের সন্ধ্যাকে সম্পূর্ণ করে তুলেছে। বড় বড় রেস্টুরেন্টের চেয়ে এই স্ট্রিট ফুডের দোকানের বার্গার আমাদের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এত স্বল্প দামে এত ভালো স্বাদ এবং এমন সুন্দরভাবে প্রস্তুত করা খাবার পেয়ে আমরা সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। এ ধরনের দোকানগুলো আমাদের শহরের একটি বিশেষ অংশ হয়ে উঠেছে, যেখানে এক টুকরো খুশি এবং সন্তুষ্টি খুঁজে পাওয়া যায়।
আমাকে এই বার্গারের রেটিং দিতে বসলে, ১০ এর মধ্যে ১২ না দিয়ে পারতাম না। কারণ, এটার প্রতিটি কামড়ে ছিল একটা নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন স্বাদ। বড় বড় রেস্টুরেন্টের বিলাসিতা বা আড়ম্বরতা ছাড়াই, এই সাধারণ স্ট্রিট ফুডের দোকানে আমরা পেয়েছি সেরার স্বাদ, যা আমাদের হৃদয়কে পরিপূর্ণ করে দিয়েছে।
এই ছোট্ট ঘটনাটি আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে, জীবনকে উপভোগ করার জন্য বড় কিছু করার প্রয়োজন নেই। আমাদের চারপাশেই ছোট ছোট খুশির মুহূর্তগুলো ছড়িয়ে রয়েছে। শুধু দরকার আমাদের খোলা মন এবং সেই মুহূর্তগুলোকে গ্রহণ করার ক্ষমতা। আমার ছোট বোনের সেই হঠাৎ করা আবদার, স্ট্রিট ফুডের সেই ছোট্ট দোকান, এবং সেই অসাধারণ বার্গার—সব মিলিয়ে আমাদের একটি আনন্দময় সন্ধ্যার সৃষ্টি করলো, যা আমার স্মৃতির পাতায় দীর্ঘদিন ধরে থেকে যাবে।
প্রত্যেকটা ছবি তোলার লোকেশন এবং ডিভাইসের নামঃ
Device:Samsung A33 (5G)
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
ফোনের বিবরণ
মোবাইল | Samsung A33 (5G) |
---|---|
ধরণ | "ছোট বোনের আবদার: নতুন স্ট্রিট ফুডের বার্গার, রেটিং ১২/১০!" |
ক্যমেরা মডেল | A33 (48+8+5+2) |
ক্যাপচার | @mohamad786 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ |
https://x.com/mohamad786FA/status/1829889346767634859?t=CKwcEa-MMR1eYanjQbJ0Aw&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit