বন্ধুদের সাথে আম চুরির গল্প //পর্ব-৩

in hive-129948 •  5 months ago 

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

বন্ধুদের সাথে ও বড় ভাইকে সাথে নিয়ে আম চুরি করার গল্পটা আমার এখনো মনে রয়েছে। আর কিছু কিছু গল্প যেনে সারা জীবন মনে থেকে যায়। এই আমের সময় আসলেই সেই দিনের কথা মনে পড়ে বেশি। আসলে আমরা আম চুরি করতে গিয়ে অনেক মজা করে ছিলাম।তারপর সেই রাতেই লিচু চুরি করেছিলাম। আর এই লিচু চুরি করতে গিয়েই মানিকের হাত কেটে গিয়েছিল। আর এই হাত কাটার বিষয়টা অনেক ঝামেলা হয়েছিল আমাদের মধ্যে। তো আজকে তাই আপনাদের মাঝে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি এই গল্পের শেষ পর্ব পড়ে আপনারা গল্পটির সম্পূর্ণ জানতে পারবেন। তো বন্ধুরা চলুন আমার আম চুরি করার সেই গল্পের শেষ পর্ব পড়া শুরু করা যাক।


bird-5634173_1280.jpg

Source

আম চুরি করে আমরা সেখানে বসে আম খেয়েছি এবং একটা লিচু গাছ ছিল। সেই লিচু গাছে অনেক লিচু ধরেছে। আর মানিক, আমি আর বড় ভাই সেই লিচু চুরি করার জন্য আসি এবং আমরা যে লাইট বানিয়েছিলাম এই লাইটটি নিয়ে আসি। তারপর ছুটির আঘাতে সেই জাল কাটতে লাগলো এবং জাল কেটে অনেকটাই লিচু বের করেছিলাম।তবে জালটা আরো বেশি কাটতে গিয়ে মানিকের হাতে লেগে যায়। আর হাতের অনেকখানি কেটে যায়। বোঝা যাচ্ছিল না তবে মানিক বলতেছিল আমার হাত কেটেছে এবং আমি লাইট জ্বালিয়ে দেখতে পেলাম, মানিকের হাত অনেক খানি কেটেছে এবং রক্তে যেন পুরো হাত ভিজে গেছে।রক্ত গড়িয়ে পড়ছে এটা দেখতে পেয়েই তো আমি বড় ভাইকে বললাম।


বড় ভাই তখন মানিকের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে অনেকখানি কেটে গেছে। তখন আমরা লিচুগুলো ফেলে দিলাম এবং মানিকের হাত চেপে ধরলাম এবং আমরা সেখান থেকে রাস্তায় উঠে আসলাম। রাস্তায় উঠে এসে বড় ভাই তার গা থেকে গেঞ্জি খুলল, আর এই গেঞ্জি দিয়ে মানিকের হাত আমরা শক্ত করে বঁধে দিলাম। যাতে রক্ত না পড়ে। বাঁধার পরেও গেঞ্জি ভিজে ভিজে রক্ত বের হচ্ছিল।তখন অনেক ভয় গেয়ে যায় আমি, বড় ভাই বললো মানিকের হাতের রগ কেটে গিয়েছে হয়তো।আর দেড়ি না করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে তাই আমরা হাসপাতালে দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।রাতের বেলা গাড়ি পাচ্ছিলাম না।


তারপরে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম একটা সিএনজি যাচ্ছে। সেই সিএনজিতে অনেক মানুষও ছিল। তবে আমার বন্ধু মানিকের এক্সিডেন্টের কথা বললাম যার কারণে তারা আমাদের হসপিটালে যাওয়ার জন্য সিএনজিটা ছেড়ে দিল। আর আমরা এই সিএনজি করে হসপিটালে আসলাম। আসলে রাতের বেলা কি আর বলবো বুঝতে ছিলাম না।তখন আমরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।আর বড় ভাই বললো আমরা রাস্তা দিয়ে তিন জন যাচ্ছিলাম একটা ভ্যানের সাথে ধাক্কা লেগে মানিক নিচে পড়ে যায় আর এভাবে হাত কেটে।এই কথায় সবাইকে বলতে হবে। তা না হলে আমরা যে লিচু চুরি করতে এসে হাত কেটেছি এই কথা জানা জানি হলে মানসম্মান থাকবে না আর মাসিকের বাবা মানিকের অবস্থা একদম খারাপ করে দিবে।



তারপরে আমরা রাত নয়টা দশটার দিকে হাসপাতালে আসলাম। হাসপাতালে এসেই মানিককে অপারেশন রুমে নেওয়া হলো এবং ডাক্তার বলল যে হাতে কাটার পরিমাণ একটু বেশি কেটেছে। তবে রগ কাটেনি, যাক আলহামদুলিল্লাহ শুনে ভালো লেগেছে। তবে মাংস একটু বেশি ভিতরে কেটেছিল। যার কারণে রক্ত বেশি পরেছে। আর তখনই ডাক্তার ওকে সেলাই দিয়ে দিল এবং বলল একদিন আপনাদের ভর্তি থাকতে হবে। পরের দিন সকাল বেলা আপনারা যেতে পারবেন। তারপরে রাতের বেলায় মানিকের বাবা চলে আসলো। এসে বলল কিভাবে হয়েছে, আমরা সবাই ভ্যানের কথা বললাম। আর এভাবেই যেন রাতটা পার হয়ে গেল। আসলে ভ্যানের কথা বলার কারণে আমাদের কেউ কিছু বলেনি।

চুরি করতে গিয়ে মানিকের যে হাত কেটেছে এটা গোপন গোপনে থেকে গেছে। আমাদের মধ্যেই ছিল। আমরা কাউকে কিছু বলিনি। তারপরে থেকে মালিক আর কখনোই চুরি করতে যায়নি। কারণ মানিক ওইদিনই বলেছিল আমি আর কখনোই চুরি করবো না। তারপর থেকে আমরাও চুরির পরিমাণ অনেক কমিয়ে দিয়েছিলাম। খুব একটা চুরি করিনি। আসলে এই আম চুরি করার এবং লিচু চুরি করার মুহূর্তগুলো আনন্দের। তবে একটা বিপদ হলে আরো অনেক ধরনের সমস্যা মুখে পরতে হয়। যার কারণে আমরা আর চুরির দিকে বেশি আগায়নি। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতায় এই গল্পটি শেয়ার করলাম। আসলে আমের সিজন আসলেই মানিকের এই হাত কাটার গল্পটি মনে পড়ে যায়।


আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আসলে ভাইয়া ছোট বেলা এমন ঘটনা অনেকেই করে থাকেন। আর এক সাথে অনেক কিছু চুরি করেছেন।আসলে ভাইয়া বিপদ তো আর বলে কয়ে আসে না। যাইহোক অবশেষে মানিক ভালো হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার আম চুরির এই গল্পটিও শেষ পর্ব করে ভালো লাগলো। যাইহোক মানিকের হাত কেটে গিয়েছিল অনেকখানি। আপনারা হাসপাতালে নিয়ে তাকে সেলাই দিয়ে সুস্থ করেছেন। আর আম চুরির ও লিচু চুরির এই দৃশ্যটি আপনাদের কাছে এখনো অজানায় কাউকেই বলেননি। তবে মানিক তারপর থেকে আর চুরি করেনি,এটক জানতে পেরে ভালো লাগলো।

বড় ভাইকে নিয়ে আম চুরি!😆 তবে ছোটবেলা আম চুরির ঘটনাগুলো খুবই মজাদার হয়ে থাকে। আম চুরি করতে গিয়ে মানিকের হাত কেটে গেল। একবার আম চুরি করতে গিয়ে আম গাছ থেকে আমি পড়ে গেলাম। বাড়িতে এসে কাউকে কিছু না বলে নীরবে কষ্ট সহ্য করলাম। আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।