আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। আসলে আমি যখন দক্ষিণ কোরিয়াতে ছিলাম, তখন বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। তো সেই বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো আপনাদের সাথে পোস্ট আকারে শেয়ার করতে আমার খুব ভালো লাগে। তাছাড়া আমি কাল্পনিক গল্পের চেয়ে বাস্তব গল্প শেয়ার করতে বেশি পছন্দ করি। যাইহোক এই ঘটনাটি ২০২১ সালের শুরুর দিকের ঘটনা। দক্ষিণ কোরিয়াতে আমি যে এরিয়াতে থাকতাম, সেই এরিয়াতে আমাদের পরিচিত অনেক ভাই ব্রাদার ছিলো। আমি যেখানে জব করতাম, সেখানে যেতে আমার বাসা থেকে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগতো গাড়িতে চড়ে। সেই এরিয়াতে আমরা বাংলাদেশী যারা ছিলাম সবাই ছিলো বৈধ অর্থাৎ সবারই দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করার রেসিডেন্স কার্ড ছিলো।
যাইহোক হঠাৎ করে আমাদের পরিচিত এক ভাই উনার নাম হচ্ছে সেলিম। উনার বাড়ি আমাদের নারায়ণগঞ্জে। তো উনাকে আমরা সবাই সেলিম মামা বলেই ডাকতাম। উনি দক্ষিণ কোরিয়াতে যেখানে ছিলেন, সেটা আমাদের এরিয়া থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। তো সেলিম মামার এক বন্ধু আমাদের এরিয়াতে থাকতো এবং তার নাম হচ্ছে মোশাররফ। তো মোশাররফকে আমাদের এরিয়াতে আমরা কখনো দেখিনি। মোশাররফ মূলত অবৈধভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে বসবাস করতো বিধায়, বাসা থেকে সেভাবে বাহিরে বের হতো না। শুধুমাত্র কোম্পানিতে গিয়ে কাজ করতো এবং রুমের মধ্যেই থাকতো। মূলত সেজন্যই আমরা কখনো তাকে আমাদের এরিয়াতে দেখিনি। তো সেলিম মামা ফোন দিয়ে আমাকে বললো উনার বন্ধু মোশাররফ নাকি একটু অসুস্থ। তাই তার রুমে গিয়ে একটু দেখে আসতাম এবং প্রয়োজন হলে তাকে নিয়ে হসপিটালে যেতাম। তো সেদিন ছিলো রবিবার এবং অফ ডে ছিলো সেদিন।
তাই আমি সেলিম মামার কাছ থেকে মোশাররফের বাসার ঠিকানা নিয়ে, আমরা ২/৩ জন মোশাররফের বাসা খুঁজে চলে গেলাম। যেহেতু আমরা একই এরিয়াতে থাকতাম,তাই মোশাররফের বাসা খুঁজে পেতে আমাদের কোনো সমস্যা ই হলো না। তো মোশাররফের সাথে দেখা হওয়ার পর জানতে পারলাম ৪/৫ দিন ধরে তার বুকের মধ্যে প্রচন্ড ব্যথা করছে। মাঝেমধ্যে নাকি মনে হয় বুকের মধ্যে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছে কেউ। তাছাড়া বুকের একেবারে মাঝখানে নাকি ব্যথা করে। তার কথাবার্তা শুনে আমাদের কাছে মনে হয়েছিল হয়তো হার্টের সমস্যা মোশাররফের। তো মোশাররফের তখন বয়স ছিলো ৩৩/৩৪, কিন্তু সে তখনো বিয়ে করেনি। দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রথম ৪ বছর ১০ মাস মোশাররফ বৈধভাবে বসবাস করার পর,ভিসা এক্সটেনশন না হওয়ায় পরবর্তীতে অবৈধ হয়ে যায়।
কথায় কথায় জানতে পারলাম মোশাররফের বাসা হচ্ছে ঢাকার শনি আখড়া তে। আমি শনি আখড়ার দনিয়া কলেজ থেকেই ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছিলাম। তো সেই এরিয়া খুব ভালোভাবে চিনি। যাইহোক আমরা মোশাররফ ভাইকে বললাম আপনার যেহেতু কয়েকদিন ধরে বুক ব্যথা করছে, তাহলে হসপিটালে যাওয়া দরকার। নয়তো পরবর্তীতে আরও বেশি সমস্যা হতে পারে। তো মোশাররফ বললো আর ২/১ দিন দেখি,যদি ব্যথা না কমে, তাহলে হসপিটালে যেতে হবে। তাছাড়া মোশাররফ ভাই যেহেতু অবৈধ ছিলো, তাই তার স্বাস্থ্য কার্ডও ছিলো না। তাই হসপিটালে গেলে প্রচুর খরচ হতে পারে। আর আমাদের স্বাস্থ্য কার্ড ছিলো, তাই হসপিটালে গেলে খরচ অনেক কম লাগতো। যাইহোক আমরা বেশ কিছুক্ষণ মোশাররফ ভাইয়ের বাসায় থেকে, আমাদের বাসায় চলে গেলাম। সেদিন রাত ৮ টার দিকে মোশাররফ ভাই আমাকে ফোন করলো। এরপর মোশাররফ ভাইয়ের সাথে আর কি কি হলো,সেটা জানার জন্য আপনাদেরকে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | গল্প (ক্রিয়েটিভ রাইটিং) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ১৬.৮.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹