আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করবো ঈদের দিন কিভাবে কাটালাম সেই প্রসঙ্গে। প্রথমেই সবাইকে ঈদুল ফিতরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর আমাদের মাঝে ঈদুল ফিতর এসেছে। তবে এবারের রমজান মাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশিই কষ্ট হয়েছে সবার। কারণ এই বছর রেকর্ড পরিমাণে গরম পরেছে রমজান মাসে। কোথাও কোন কাজে গেলে প্রখর রোদ এবং তীব্র গরমে গলা শুকিয়ে যেতো মূহুর্তের মধ্যেই। মুখে পানি নিয়ে কুলি করলে কিছুটা শান্তি লাগতো। তবে মাঝে মধ্যে মন চাইতো পানি গিলে ফেলি। তবে সেটা তো সম্ভব না। মোটকথা এই গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। তবে রমজান মাসের শুরুটা বেশ ভালোই লেগেছিল। কারণ প্রথম ৯/১০ দিন মোটামুটি ঠান্ডা ছিল বিধায় রোজা রাখতে একটুও কষ্ট হয়নি। যাইহোক গরম হোক আর যা ই হোক আমার কাছে মনে হয়েছে রমজান মাস তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গিয়েছে। যাইহোক মূল কথায় ফিরে আসা যাক। ঘুম থেকে সকাল ৭টার সময় উঠেছিলাম।
কারণ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে। আমাদের এখানে ঈদগাহ নেই বিধায় মসজিদের ভিতরে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঘুম থেকে উঠে গোসল করে সেমাই এবং নুডলস খেলাম। তারপর বাবা মা কে সালাম করলাম। এরপর আমার ছোট্ট ভাতিজিকে সালামি দিয়ে পাঞ্জাবি পায়জামা এবং টুপি পরে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করার জন্য মসজিদে চলে গেলাম। সবাই ভেবেছিল ঈদের দিন বৃষ্টি হবে। তবে বৃষ্টি না হওয়াতে খুব ভালো হয়েছে। কারণ ঈদের দিন বৃষ্টি হলে আমার খুব বিরক্ত লাগে। যদিও ঈদের আগের দিন বিকেল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছিল। যাইহোক যথারীতি সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হলো। এরপর মসজিদের ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করলো এবং মোনাজাত ধরলো। মোনাজাতে সবার জন্য দোয়া করা হলো। এরপর এলাকার কয়েকজন ভাই ব্রাদারের সাথে ঈদের কোলাকুলি করে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসার পর দেখলাম আমার ওয়াইফ আমার দেওয়া নতুন জামা পরিধান করে একেবারে রেডি হয়ে আছে। তারপর আমাকে সালাম করলো এবং আমি তাকে ঈদের সালামি দিলাম। বিয়ের পর এটাই আমাদের প্রথম ঈদ।
তাই আমরা প্রথম ঈদের দিনটাকে স্বরণীয় করে রাখার জন্য কয়েকটি সেলফি তুলে নিলাম। এরপর জামাকাপড় চেঞ্জ করে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কারণ রাতে ঘুম অনেক কম হয়েছে। আর ঘুম কম হলে সারাদিন আমার খারাপ লাগে। যাইহোক এরই মধ্যে বাসার কাছাকাছি থাকা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ছোট ছোট বাচ্চারা বাসায় চলে এলো ঈদের সালামি নেওয়ার জন্য। তাদেরকে খাবার খেতে দিল এবং খাওয়া শেষ হলে ঈদের সালামি দিলাম। আসলে ঈদের সালামি নেওয়া ঈদের ই একটা অংশ। ছোটবেলায় আমরাও এমন করতাম। সালামি নেওয়ার জন্য আত্মীয় স্বজনের বাসায় চলে যেতাম। সবাই মিলে নতুন জামা কাপড় পরিধান করে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতাম। চটপটি,আলুর দম সহ আরও অনেক মজার মজার খাবার খেতাম। আসলে সেই দিনগুলো কখনও ভুলবার মতো নয়। তখন চাঁদ রাত থেকে শুরু করে ঈদের আমেজ থাকতো প্রায় ৭/৮ দিন। আর এখন তো ২/৩ দিনেই ঈদের আমেজ শেষ হয়ে যায়। যাইহোক সবাই চলে যাবার পর অল্প কিছুক্ষণ ঘুমালাম। ঘুম থেকে উঠে ভুনা খিচুড়ি এবং মাংস খেলাম। কারণ ভুনা খিচুড়ি আমার খুব পছন্দের খাবার। এরই মধ্যে কয়েকজন বন্ধু বান্ধব ফোন দিল বাহিরে বের হবার জন্য।
তবে আমাদের প্ল্যান ছিল আমার শশুর বাড়িতে যাব। কারণ আমার ওয়াইফ তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমাকে পাগল করে ফেলছিল। তাই বন্ধুদের সাথে বাহিরে ঘুরাঘুরি করা হয়নি। আমরা বাসা থেকে রেডি হয়ে বিকেল ৪টার দিকে বের হলাম আমার শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে গেলাম কিছু ফল কিনতে। যাওয়ার পর দেখলাম ফলের দোকান মাত্র কয়েকটি খোলা। কারণ ঈদের দিন বলে কথা। তারপর আমি কয়েক ধরনের ফল কিনলাম এবং মিষ্টির দোকানে গিয়ে রসমালাই কিনলাম। তারপর শশুর বাড়িতে চলে গেলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই। কারণ আমার শশুর বাড়ি খুব কাছেই। যাওয়ার পর সবার সাথে কুশল বিনিময় করলাম এবং ছোট ছোট বাচ্চাদের ঈদ সালামি দিলাম। কারণ একই বাড়িতে চাচা শশুর রয়েছে চারজন এবং তাদের পরিবার। তারপর হালকা খাওয়া দাওয়া করে শশুর বাড়ির পিছনে যে সবজি বাগান রয়েছে সেখানে গিয়ে কয়েকটি সেলফি তুলে নিলাম। এরইমধ্যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলো এবং ঈদের দিন চলেও গেল। যাইহোক সবমিলিয়ে বেশ ভালোই কাটালাম ঈদের দিন।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৩.৪.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই ঈদ মোবারক জানাই ভাইয়া আপনাকে।আপনার ইদে কাটানো মুহূর্ত পড়ে অনেক ভালো লাগলো।এবার ঈদে শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন,যেজন্য বন্ধুদের সাথে বেড়াতে পারেন নি।আর পাগল তো করবেই,তারও তো পরিবারের কথা মনে হয় ঈদের সময়।যেহেতু কাছেই আপনার শ্বশুর বাড়ি,তাহলে তো যেতে কষ্ট নেই ।সব মিলিয়ে দারুন সময় কাটিয়েছিলেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি ঠিক বলেছেন আপু শশুর বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় কোন কষ্ট হয় না আসা যাওয়া করতে। সবমিলিয়ে ঈদের দিন বেশ ভালোই কেটেছে। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit