প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আবারো স্পোর্টস বিষয়ক একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। ক্রিকেট খেলা ছোটবেলা থেকেই আমার ভীষণ পছন্দ। তাই চেষ্টা করি সবসময় ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে। আপনারা জানেন যে,ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। গত সোমবার অর্থাৎ ৬ ই নভেম্বর শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। টসে জিতে বাংলাদেশ দল ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। শ্রীলংকান দুই ওপেনার পাথুম নিসাংকা এবং কুশাল পেরেরা ব্যাট করতে নামে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশী পেসার শরিফুল ইসলাম এর বলে, কুশাল পেরেরার দুর্দান্ত একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন উইকেট কিপার মুশফিকুর রহিম। এতে করে শ্রীলংকা মাত্র ৫/১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায়। তারপর অধিনায়ক কুশাল মেন্ডিস যোগ দেয় পাথুম নিসাংকার সাথে।

স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস

দুজনেই বেশ দেখেশুনে খেলছিল। তারা ছোটখাটো একটি পার্টনারশিপ গড়ে তুলে। দলীয় ১২ তম ওভারে ৬৬/২ রানের মাথায় সাকিবের বলে মেন্ডিস ক্যাচ আউট হয়ে যায়। পরের ওভারে পাথুম নিসাংকাও ৪১ রান করে আউট হয়ে যায়। এরপর সাদিরা এবং আসালাংকা চমৎকার পার্টনারশিপ গড়ে তুলে। দুজনেই খুব ভালো ব্যাট করছিল। দলীয় ২৫ তম ওভারে ১৩৫/৪ রানের মাথায় সাদিরা ৪১ রান করে ক্যাচ আউট হয়ে যায় সাকিবের বলে। তারপর ব্যাট হাতে মাঠে নামেন ম্যাথিউস। কিন্তু ম্যাথিউসকে আম্পায়াররা আউট ঘোষণা করে। কারণ নিয়ম হচ্ছে একজন আউট হওয়ার পর পরবর্তী ব্যাটসম্যান ২ মিনিটের মধ্যে ব্যাট করার জন্য একেবারে রেডি থাকবে। কিন্তু ম্যাথিউস অনেক সময় নষ্ট করে ফেলে। এমন অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এমনটা আশা করা যায় না। ম্যাথিউস সাকিবকে জিজ্ঞেস করে এটা কি হচ্ছে, তখন সাকিব বলে যে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত এটা এবং এখানে আমার কিছু বলার নেই।

স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস

নিয়ম আছে বলেই তো আউট দেওয়া হয়েছে এবং এই ম্যাচটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিলো বাংলাদেশ দলের জন্য। কারণ পয়েন্ট টেবিলে থাকা শীর্ষ ৮ দল সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার সুযোগ পাবে। যাইহোক ম্যাথিউস টাইমড আউট হওয়ার পর ডি সিলভা ব্যাট করতে নামেন। আসালাংকা এবং ডি সিলভা দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে তুলে। এই জুটির উপর ভর করে শ্রীলংকা বেশ ভালোই স্কোর গড়তে সক্ষম হয়। আসালাংকা ৪৯ তম ওভারে ১০৮ রান করে আউট হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৩ ওভারে শ্রীলংকা ২৭৯/১০ রান করে অলআউট হয়ে যায়। তাসকিন আহমেদ ছাড়া বাকি চার বোলার উইকেট পান। একসময় মনে হচ্ছিল শ্রীলংকা ২৫০ রান করতে পারবে না, কারণ নিয়মিত বিরতিতে তাদের উইকেট পরছিল। কিন্তু আসালাংকার ব্যাটিং দৃঢ়তায় ফাইটিং স্কোর গড়ে শ্রীলংকা দল। জবাবে ২৮০ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ দল দলীয় ৭ তম ওভারে ৪১/২ রানে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান এবং লিটন দাসকে হারায়।

স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস

এরপর শান্ত এবং সাকিব দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে তুলে। তারা দুইজন চমৎকার ব্যাট করে। দলীয় ২১০/৩ রানের মাথায় তাদের জুটি ভাঙ্গে ম্যাথিউস। ১৬৯ রানের চমৎকার একটি পার্টনারশিপ গড়ে তুলে তারা দুইজন। সাকিব আউট হওয়ার অল্প একটু পর শান্তও বোল্ড আউট হয়ে যায় ম্যাথিউস এর বলে। দলীয় ৩৪ তম ওভারে ২১১/৪ রানের মাথায় বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারায়। তারা দুইজন সেঞ্চুরি মিস করে। সাকিব ৬৫ বল খেলে ৮২ রান করে এবং শান্ত ১০১ বল মোকাবেলা করে ৯০ রান করে। এরপর মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ ছোটখাটো একটি পার্টনারশিপ গড়ে তুলে। শেষের দিকে মিডল অর্ডার এবং লো অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত ৪১.১ ওভারে ২৮২/৭ রান করতে সক্ষম হয়। এতে করে বাংলাদেশ দল ৩ উইকেট এর জয় পায়। সাকিব আল হাসান সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়। অনেকদিন পর বাংলাদেশ দল চমৎকার একটি ম্যাচ উপহার দিলো আমাদেরকে। সবমিলিয়ে এই ম্যাচটি বেশ উপভোগ করেছি।

স্ক্রিনশট - স্কাই স্পোর্টস