লাইফস্টাইল পোস্ট || সারাদিনের ব্যস্ততা এবং এই বছর প্রথম বারের মতো তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি

in hive-129948 •  5 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আপনারা অনেকেই জানেন যে, আমার ওয়াইফ বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। এই মাসের ৯ তারিখ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নারায়ণগঞ্জ শাখার গাইনী ডক্টর আলহাজ্ব কামরুন্নাহার ম্যাডামকে দেখাই। তো উনাকে দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট করতে দিয়েছিলেন। তারপর সবগুলো রিপোর্ট নিয়ে ৫/৬ দিন পর দেখা করতে বলেছিলেন। তো গত সপ্তাহে অর্থাৎ এই মাসের ১৩ তারিখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টেস্ট ছিলো এবং সেই টেস্ট করার জন্য আমরা বাসা থেকে দুপুর ১টার দিকে বের হই। কারণ দুপুর ১.৩০ টা বাজে সেই টেস্ট করানোর জন্য হসপিটালে থাকতে বলা হয়েছিল।


Notes_240519_144832_1a2.jpg

Notes_240519_144843_58e.jpg

Notes_240519_144846_742.jpg


তো বাসা থেকে হসপিটালে যেতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল। আমরা কাউন্টারে টেস্টের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে টেস্ট করার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমার ওয়াইফ এর সিরিয়াল আসলো। আসলে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মানুষের এতো ভিড় হয়,যা বলার মতো নয়। ৭/৮ দিন হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করে একেবারে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। যাইহোক সেই টেস্ট, দুটি ধাপে সম্পন্ন করতে বেশ সময় লেগেছিল। টেস্ট করতে করতে প্রায় ৩ টা বেজে যায়। রিপোর্ট ডেলিভারির কথা জিজ্ঞেস করার পর, তারা বললো যে সন্ধ্যার পর রিপোর্ট ডেলিভারি দিতে পারবে। পরে ভাবলাম যে রিপোর্টের জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা না করে,পরের দিন হসপিটালে গিয়ে রিপোর্ট দেখাবো।


Notes_240519_144844_75f.jpg

Notes_240519_144848_837.jpg


যাইহোক হসপিটাল থেকে বের হওয়ার পর আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে গিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি খাবে কিনা। কিন্তু সে বললো বাহিরের কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। যেহেতু লাঞ্চ করা হয়নি আমাদের, তাই আমার পেটে তো ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছিল। যাইহোক ওয়াইফ যেহেতু বাহিরে খেতে চায়নি,তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই নবীগঞ্জ ঘাটে চলে আসলাম শীতলক্ষ্যা নদী পার হওয়ার জন্য। যাইহোক নৌকায় উঠার আগে দেখলাম বেশ কচি কচি কাঁচা তাল বিক্রি করছে। আমার কাছে তালের শাঁস খেতে খুব ভালো লাগে। যদিও এই বছর এর আগে তালের শাঁস খাওয়া হয়নি আমার,তবে তালের রস বেশ কয়েকবার খাওয়া হয়েছে। যাইহোক তালের শাঁসের দাম জিজ্ঞেস করার পর বললো যে, প্রতি পিস শাঁসের দাম ১৫ টাকা


Notes_240519_144841_413.jpg

Notes_240519_144839_ded.jpg


তো আমি বললাম বড় সাইজের তালের শাঁস ৭ টা দিতে। তালের শাঁস বিক্রেতা কাঁচা তাল কেটে নরম নরম ৭ টা তালের শাঁস আমাকে দিলো। তালের শাঁসের সাইজ বেশ বড় ছিলো। যাইহোক তালের শাঁস নিয়ে ১০০ টাকা দিলাম এবং তারপর নৌকায় উঠলাম শীতলক্ষ্যা নদী পার হওয়ার জন্য। ঘাটে গিয়ে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। নদী পার হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি তরমুজ কিনে বাসায় চলে এসেছিলাম। যাইহোক বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার পর লাঞ্চ করলাম। বাসার কেউ তালের শাঁস খেতে চায়নি বলে ৭টা তালের শাঁস একাই খেলাম। তালের শাঁস গুলো খেতে সত্যিই দারুণ লেগেছিল। এরইমধ্যে মেবাইলে ম্যাসেজ আসলো হসপিটাল থেকে। ম্যাসেজ চেক করার পর দেখলাম, যে রিপোর্ট সন্ধ্যার পর আসার কথা, সেটা সন্ধ্যার আগেই চলে এসেছে।


Notes_240519_144837_74f.jpg

Notes_240519_144836_2ec.jpg


তারপর অনলাইন থেকে রিপোর্ট ডাউনলোড করার পর দেখলাম রিপোর্ট খুবই খারাপ। মানে ওয়াইফ এর ফ্যালোপিয়ান টিউব এর অ্যাম্পুলারী পার্টস দুই পাশ থেকে একেবারে ব্লক। তারপর সন্ধ্যার দিকে আবারও হসপিটালের দিকে রওনা দিলাম। ডক্টর দেখানোর পর বললেন যে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম ২ দিন পর অর্থাৎ ১৬ তারিখে হসপিটালে ভর্তি হয়ে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করানোর। তারপর অপারেশন করার জন্য বেশ কিছু টেস্ট করতে বললেন পরের দিন এসে এবং অপারেশন এর জন্য কিছু টাকা এডভান্স করে যেতে বললেন। শুধুমাত্র ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির জন্য ৪৫,০০০ হাজার টাকা নিবে এবং টেস্ট, মেডিসিন খরচ আলাদা দিতে হবে। তারপর সেদিনের মতো বাসায় চলে আসলাম। সকাল থেকে একেবারে রাত পর্যন্ত প্রায় সারাদিন হসপিটালে খুবই ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম।


Notes_240519_144834_ede.jpg

Notes_240519_144831_609.jpg



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিলাইফস্টাইল
ফটোগ্রাফার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ১৯.৫.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

এই গরমের মধ্যে তালের শাঁস খেতে মোটামুটি ভালোই লাগে। তবে সব ভালো লাগার মধ্যেও খারাপের অবস্থান থেকেই যায় জীবনে। যেমন আপনার ওয়াইফ বর্তমান অসুস্থ। প্রিয় মানুষ অসুস্থ থাকলে নিজেকে কতটা খারাপ লাগে সেটা হয়তোবা আপনিও ভালোভাবেই বুঝতে পারতেছেন। যদিও বা বর্তমান অপারেশন কমপ্লিট করেছেন তারপরেও মন খারাপ তো থাকারই কথা। দোয়া করি আপনার ওয়াইফ যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

আসলেই ভাই প্রিয় মানুষ অসুস্থ থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। তবে ওয়াইফ এখন অনেকটা ভালো আছে আলহামদুলিল্লাহ। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

আপনার ওয়াইফ অসুস্থ তাই তাকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিলে একটি টেস্ট করানোর জন্য। বেশ অনেকক্ষণ ধরে টেস্টটা কমপ্লিট করেছিলেন এবং টেস্টটা কমপ্লিট করানো হলে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। আর ফেরার পথে তালের শাঁস ও তরমুজ কিনেছিলেন জানতে পারলাম আপনার লেখার মাধ্যমে। তবে শেষে জেনে খারাপ লাগলো আপনার ওয়াইফের রিপোর্টটা খারাপ এসেছিল। দোয়া করি আপনার ওয়াইফ যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। ধন্যবাদ

হসপিটালে গেলে প্রচুর সময় ব্যয় হয়। তালের শাঁস খেতে দারুণ লেগেছিল। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

হসপিটাল মানেই ভোগান্তির শেষ নেই। ল্যাপারোস্কোপি করতে অনেক টাকাই খরচ হয়। আর এর জন্য অনেক প্রস্তুতিও আছে। একবার টেস্ট করতে দিতে হয় আবার রিপোর্ট দেখাতে হয় এই সিরিয়াল যেন শেষই হয় না। ভাবিকে নিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন বুঝতে পারছি। যেহেতু উনি এখনো অসুস্থ তাই ভাবির জন্য দোয়া রইল ভাইয়া। আর তালের শাঁস আমি খুব একটা খেতে পারিনা। তবে অনেকের কাছেই এই খাবারটি অনেক পছন্দের।

হ্যাঁ আপু প্রস্তুতি এবং ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির খরচ সহ ইতিমধ্যেই ১ লাখ টাকা শেষ হয়েছে। আরও তো অনেক খরচ বাকি। তবুও আলহামদুলিল্লাহ ওয়াইফ এখন সুস্থ আছে, সেজন্য খুব ভালো লাগছে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আপনার ওয়াইফ কয়েকদিন ধরে অনেক অসুস্থ এটা আমরা জানি ভাইয়া। ডাক্তারের কাছে যাওয়া ভিষণ ঝামেলার বিষয়।বিশেষ করে সিরিয়াল দিয়ে অপেক্ষা করা। যাইহোক, ভাবির জন্য অনেক অনেক দোয়া। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে এটাই কামনা করি। আপনার সারাদিনের ব্যস্ততা এবং এই বছর প্রথম বারের মতো তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো৷ মজার বিষয় হলো আজ আমরাও এই বছরে প্রথম তালের শাঁস খেয়েছি।

তালের শাঁস খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। তাইতো ৭ টা খেয়েছি একসাথে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আপনার ওয়াইফ এর ট্রিটমেন্টের জন্য হসপিটালে গিয়েছেন। সেখানে বছরের প্রথমবারের মতো তালের শাঁস খেয়েছেন। তালের শাঁস আমার ভীষণ পছন্দ। তবে এ বছর এখনো খাওয়া হয়নি। চারদিকের পরিবেশ টা দেখে খুব ভালো লাগলো। আমাদের এদিকে প্রতি পিস শাঁসের দাম ১০ টাকা। যাইহোক, আশা করছি আপনার ওয়াইফ এখন সুস্থ রয়েছে।

চারিদিকের পরিবেশটা আসলেই খুব সুন্দর। হ্যাঁ আপু আমার ওয়াইফ আলহামদুলিল্লাহ এখন অনেকটাই সুস্থ। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।