গল্প || একজন ব্যর্থ প্রবাসীর গল্প (১ম পর্ব)

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি প্রথম বারের মতো একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। তবে গল্পটি কোনো কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে লেখা নয়,বরং একেবারে বাস্তব ঘটনা। প্রবাস জীবন আসলেই খুব কষ্টের। কারণ বেশিরভাগ প্রবাসীরা তাদের জীবনে নানান ধরনের ত্যাগ তিতিক্ষা করে থাকে। আমি প্রবাসে ছিলাম বিধায় এসব ব্যাপারগুলো খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি। যখনই কোনো প্রবাসীর জীবনে চরমভাবে হোঁচট খাওয়ার গল্প শুনি,আমার ভীষণ খারাপ লাগে তখন। যাইহোক মূল কথায় আসা যাক,আমাদের পাশের মহল্লার একজন লোক।


man-gffb033a88_1280.jpg

Source


নাম তার রফিক। উনি একজন মালয়েশিয়ান প্রবাসী ছিলেন। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন। আমি যখন ছোট ছিলাম ওনাকে দেখতাম ছোটখাটো ব্যবসা করতো। তবে ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যান। মালয়েশিয়া যাওয়ার পর প্রথম কয়েকবছর তিনি বিভিন্ন ধরনের চাকরি করেছেন। তিনি পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের সাথে ফোনে সবসময় যোগাযোগ করতেন। ঘটনাক্রমে এক মালয়েশিয়ান নারীর সাথে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর বেশ ভালোই চলছিলো তাদের দিনকাল। যেহেতু রফিক ভাইয়ের ওয়াইফ মালয়েশিয়ার সিটিজেন ছিলেন, তিনি রফিক ভাইকে বুদ্ধি দিলেন ব্যবসা করার জন্য।


তারা একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করলো। তাদের ব্যবসাও বেশ ভালোই চলছিল। রফিক ভাই এবং তার মালয়েশিয়ান ওয়াইফ, বাংলাদেশে বেড়াতে এসে বেশ কয়েকদিন ছিলেন। কিছুদিন পর তারা আবারও মালয়েশিয়ায় চলে গেল। এরইমধ্যে রফিক ভাইয়ের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেল, কিন্তু ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারছিল না। যেহেতু রফিক ভাইয়ের ওয়াইফ মালয়েশিয়ার সিটিজেন, তাই রফিক ভাই চেষ্টা করছিল যেন মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। কিন্তু কোনোভাবেই কিছু হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে রফিক ভাই অবৈধ হয়ে গেল। এদিকে বাংলাদেশে রফিক ভাইয়ের বাবার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। রফিক ভাইয়ের ৩ ভাই এবং ২ বোন বাংলাদেশে ছিলো।


রফিক ভাইয়ের বাবার সম্পত্তি বন্টনের সময়, রফিক ভাইকে তার ভাই বোনেরা খুবই বাজেভাবে ঠকিয়েছে। যেটা একেবারেই অকল্পনীয়। কারণ তাদের বাড়ি বিশাল বড় ছিলো। তার মধ্যে রফিক ভাইকে মাত্র দেড় শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছিল। রফিক ভাই মালয়েশিয়ায় অবৈধ হওয়ার কারণে তখন বাংলাদেশে ছুটিতে আসতে পারেনি। আর সেই সুযোগে তার পরিবারের লোকজন তাকে চরমভাবে ঠকিয়েছে। এরপর রফিক ভাই তার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। প্রায় ৩/৪ বছর কারো সাথেই যোগাযোগ ছিলো না রফিক ভাইয়ের। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে পরের পর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

বিষয়গল্প
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ২২.৭.২০২৩
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG_20220605_234413_388.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

যেহেতু মালয়েশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করেছে তাহলে তাকেতো মালয়েশিয়া থাকতেই হবে । আর অবৈধভাবে না থেকে যদি দেশে চলে আসে তাহলে তো আর যেতেই পারতেন না তখন তার স্ত্রী একা পড়ে যেত । এমনিতেই বিদেশে তারা কষ্ট করে তারপরও যদি দেশের মানুষ এভাবে ঠকায় তাহলে তো তার কষ্টের জায়গা থাকে না ।

চেষ্টা করেছিল মালয়েশিয়া থাকতে। তবে সেটা সম্ভব হয়নি। আসলে পরিবারের মানুষ এভাবে ঠকালে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

রফিক ভাই যখন মালয়েশিয়া বিয়ে করেছে তাহলে তাকে ওখানে কাগজপত্র করে থাকতে হবে। তবে অনেক প্রবাসী আছে যারা বিদেশে থাকে। বাড়ির লোক গুলো তাদের সাথে অন্যায় করে। যেমন রফিক ভাইয়ের বেলা হলো। অনেকে ফ্যামিলির উপর এত বড় কষ্ট আসে এক পর্যায়ে ফ্যামিলি থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যাইহোক আপনার পরের পর্বে জানতে পারবো রফিক ভাইয়ের কি হয়েছে। এবং সে মালয়েশিয়ার কাজ ঠিক করতে পেরেছে কিনা তাও জানতে পারবো। আশা করি পরে করবো খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

রফিক ভাই মালয়েশিয়া থাকার চেষ্টা করেছিল,কিন্তু থাকতে পারেনি। পরিবারের কাছ থেকে এমন কষ্ট আশা করা যায় না। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবো ভাই। আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

রফিক ভাইয়ের মত এরকম অনেক প্রবাসী আছে অনেক বছর বিদেশ করে। ফ্যামিলির কাছে তাঁরা মূল্যই পাই না। যদিও তিনি মালয়েশিয়া থাকাকালীন অবস্থা ওখানে বিয়ে করেছে। তারপরও সে ওখানে সেটেল হতে পারে নাই। এবং তার ফ্যামিলি যে আচরণ তার সাথে করল সত্যিই দুঃখজন। ১৬ টি বছর প্রবাসী চাকরি করে এই টাকা কম বেশি তার ফ্যামিলির সবাই খেয়েছে। তবে আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে পর্বটি শেয়ার করবেন।

আপনি ঠিক বলেছেন আপু, এমন অসংখ্য প্রবাসী রয়েছে যারা পরিবারে অনেক অবদান রাখলেও,একটা সময় মূল্যহীন হয়ে যায়। এটা সত্যিই দুঃখজনক এবং নিকৃষ্ট একটি কাজ। যাইহোক পোস্ট পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।