ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প)|| প্রবাসীদের জীবনে দুঃখের কোনো সীমা নেই (চতুর্থ পর্ব )

in hive-129948 •  4 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।


তৃতীয় পর্ব


প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের তৃতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এবং আজকে চতুর্থ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের দুই ভাই কোনো কাজ করতো না। এককথায় বলতে গেলে সারাক্ষণ ঘুরেফিরে খেতো। মোবারক ভাই দিনরাত পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে পাঠাতেন, আর উনার দুই ভাই বিলাসিতা করতেন। এসব ব্যাপারগুলো একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। হ্যাঁ বড় ভাই হিসেবে মোবারক ভাইয়ের দায়িত্ব ছিলো উনার ছোট ভাইদেরকে দেখা। কিন্তু মোবারক ভাইয়ের পরিবারেরও উচিত ছিলো মোবারক ভাইয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা।


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH815z8bVJxvrVBf2K6Z2aTTx3MKUp4YBgFjx27M4QBecv4hHwyroZNohJTqi2ELa8NjAkJpcNymirPUEVsWEhZxvRDMdS14.jpeg

Source


কিন্তু মোবারক ভাইয়ের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে উনার ভাইদেরকে দুটি বিল্ডিং নির্মাণ করে,একেবারে রেজিস্ট্রি করে দেওয়াটা, মোবারক ভাইয়ের মা বাবার একেবারেই উচিত হয়নি। আর মোবারক ভাইয়ের জীবন এলোমেলো হওয়ার পিছনে, আমার মনে হয় মোবারক ভাইয়ের মা বাবার দোষ ছিলো। কারণ মোবারক ভাই যেহেতু একেবারে অল্প বয়সে দক্ষিণ কোরিয়াতে গিয়েছিলেন এবং তখন তিনি জীবন সম্বন্ধে খুব বেশি বুঝতেন না, তাই উনার মা বাবার উচিত ছিলো মোবারক ভাইয়ের ভালো মন্দ দেখা। তাছাড়া মানুষের ইনকাম সবসময় একরকম থাকে না। তাই যখন ইনকাম ভালো হয়,তখন অবশ্যই সঞ্চয় করতে হয়। তাছাড়া মোবারক ভাই দক্ষিণ কোরিয়াতে অবৈধভাবে বসবাস করতেন।


কখন ধরা পড়ে বাংলাদেশে ফেরত যেতে হয়,তার কোনো নিশ্চয়তা ছিলো না। মোবারক ভাইয়ের মা বাবার উচিত ছিলো, মোবারক ভাইয়ের জন্য বাড়ির এক সাইডে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করা। যাতে করে উনি বাংলাদেশে চলে আসলে, সেই বিল্ডিংয়ে সবাই মিলে থাকতে পারেন। কারণ বাংলাদেশে যাওয়ার পর তো মোবারক ভাইয়ের বিয়ে করতে হবে। যাইহোক ২০০২ কিংবা ২০০৩ সালের দিকে মোবারক ভাই দক্ষিণ কোরিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ধরা খেয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। এরপর বাংলাদেশে আসার পর মোবারক ভাই দেখেন, উনাদের বাড়ির এক পাশে একটা দোতলা বিল্ডিং এবং একটা তিনতলা বিল্ডিং তৈরি করা। তারপর উনি জানতে পারেন, সেই দুটি বিল্ডিংয়ের সম্পূর্ণ কাজ মোবারক ভাইয়ের টাকা দিয়ে করা হয়েছে।


মোবারক ভাই দক্ষিণ কোরিয়াতে থাকা অবস্থায় ভেবেছিলেন, হয়তোবা দুই ভাইকে একতলা বিশিষ্ট দুটি বিল্ডিং তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের বাবা বিভিন্নভাবে মোবারক ভাইয়ের প্রায় সব টাকা খরচ করে ফেলেছেন। মোটকথা সবকিছু দেখে মোবারক ভাইয়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। মোবারক ভাই উনার মা বাবার কাছে যখন সবকিছু জিজ্ঞেস করলেন, তখন উনার মা বাবা মোবারক ভাইকে বলে,তুই তো বড় তাই তোর দায়িত্ব বেশি এবং আল্লাহ তোকে সবই দিবে। এককথায় বলতে গেলে, এসব বলেই সান্ত্বনা দেন মোবারক ভাইকে উনার মা বাবা। আমি যখন মোবারক ভাইয়ের মুখ থেকে এই কথাগুলো শুনছিলাম, তখন সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগছিলো। যাইহোক মোবারক ভাইয়ের জীবনে আর কি কি ঘটেছিলো, সেটা পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিগল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং)
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy S9 Plus
তারিখ১২.৭.২০২৪
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সন্তান হিসেবে প্রত্যেকটা সন্তানেরই মা-বাবার প্রতি এবং অন্যান্য সদস্যদের প্রতি যে দায়িত্ব গুলো থাকে সেটা বাস্তব সত্য। তবে এই যে একটা কথিত কথা বড় জনের দায়িত্ব বেশি, এটা একদম নির্ঘাত একটা চাপ প্রয়োগ করা। একথাটা আমি একদমই পছন্দ করি না। অন্যদেরকে কি না খাইয়ে মানুষ করেছে?সবার প্রতি সবার দায়িত্ব কর্তব্য আছে সেটা মেনে নিতে হবে। আর এমন অনেক ফ্যামিলি আছে যারা দেশের বাইরে যে থাকে তার টাকা দিয়ে অট্টালিকা গড়ে অবশেষে তার জন্য কিছুই রাখে না। আর এটাই ঘটলো আপনার মোবারক ভাইয়ের সাথে। এগুলো আসলেই দুঃখজনক। কারণ যেখানে তার মা বাবাই তার জন্য চিন্তা করল না সেখানে অন্য জনের কথা তো বাদই দিলাম। গল্পটা পড়ে তার জন্য খুব খারাপ লাগলো ভাইয়া পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

মোবারক ভাইয়ের মা বাবা খুবই অন্যায় করেছে মোবারক ভাইয়ের সাথে। পরবর্তী পর্ব আগামী সপ্তাহে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। যাইহোক গল্পটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।