প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। ৮/১০ দিন আগে বৃষ্টির মধ্যে আমাদের নারায়ণগঞ্জের ৫ নং ঘাট থেকে মাছ কিনেছিলাম এবং সেই অভিজ্ঞতা এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। আসলে কিছুদিন আগে টানা বৃষ্টি হয়েছে বেশ কয়েকদিন। তো প্রতিদিন রাতে ভাবতাম যে সকালে বৃষ্টি না হলে সকাল সকাল ৫ নং ঘাটে মাছ কিনতে যাবো। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বেশ ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে। তারপর আর যাওয়া হতো না। আসলে বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে যেতে আমার এমনিতেই অলসতা কাজ করে। তাছাড়া বৃষ্টির মধ্যে মাছ কিনতে আরও বেশি ঝামেলা লাগে। তো এভাবে ২/৩ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমার ওয়াইফ বললো যে, ফ্রিজে তো মাছ একেবারেই নেই। তাই বৃষ্টির মধ্যেই মাছ কিনতে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

তারপর আমিও ভাবলাম তাহলে বৃষ্টির মধ্যেই মাছ কিনতে যাবো এবং ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করবো। তাছাড়া ইউটিউবে দেখলাম বৃষ্টির মধ্যে নাকি ইলিশ মাছের দাম একটু কম আছে। তো সবমিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম যে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মাছ কিনতে চলে যাবো। তো খুব সম্ভবত সেদিন রোববার ছিলো অর্থাৎ এই মাসের ১৫ তারিখ। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে, ছাতা নিয়ে বের হয়ে গেলাম নারায়ণগঞ্জের ৫নং ঘাটের উদ্দেশ্যে। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে খেয়াল করলাম মাঝেমধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, আবার মাঝেমধ্যে জোরে জোরে বৃষ্টি নামছে। যাইহোক নবীগঞ্জ ঘাট দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে অটো নিয়ে সরাসরি চলে গেলাম ৫ নং ঘাটে। যাওয়ার পর দেখলাম যে বৃষ্টির মধ্যেও প্রচুর লোকজন মাছ কিনতে গিয়েছে। আসলে সেটা হচ্ছে অস্থায়ী বাজার অর্থাৎ রাস্তার মধ্যে বাজার বসে এবং প্রতিদিন সকালে শুধুমাত্র ২/৩ ঘন্টার জন্য বাজার বসে।

মানে সকাল ৭টার দিকে বাজার শুরু হয় এবং সকাল ১০ টার মধ্যেই বাজার শেষ হয়ে যায়। যাইহোক প্রথমেই গেলাম ইলিশ মাছের দোকানে। কিন্তু দাম শুনে তো অবাক। ইলিশের দাম কমেনি বরং বেড়েছে। ১ কেজি সাইজের ইলিশ মাছ ১৮০০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি করবেই না। কারণ বৃষ্টির জন্য নাকি ইলিশ মাছ ধরতে পারছে না,তাই দাম বেশি। তাছাড়া সামনে তো ইলিশের অভিযান শুরু হবে। তাই ভাবলাম দাম দিয়ে হলেও ইলিশ মাছ কিনে ফেলি। তো দুটি ১ কেজি সাইজের ইলিশ মাছ কিনলাম এবং একটি ছোট সাইজের ইলিশ মাছ কিনলাম ইলিশ মাছের ঘাটা খাওয়ার জন্য। তারপর বড় সাইজের তিনটি বাইলা মাছ কিনলাম। তিনটি বাইলা মাছের ওজন হয়েছিল ১,১৫০ গ্রাম। সচরাচর এতো বড় বাইলা মাছ পাওয়া যায় না। তো বাইলা মাছের কেজি ১,২০০ টাকা। তারপর কালিবাউশ মাছ কিনলাম ৫০০ টাকা কেজি অনেক দামাদামি করে।

মাছের ওজন হয়েছিল ১,৩০০ গ্রামের মতো। তারপর দুটি বোয়াল মাছ কিনলাম ৫০০ টাকা কেজি। এরপর ৭৬০ টাকা কেজি চিংড়ি মাছ কিনলাম ১ কেজি। তারপর দেশী চান্দা মাছ এবং পুঁটিমাছ কিনলাম ৫০০ গ্রাম করে মোট ১ কেজি। দেশী চান্দা মাছের ভর্তা খেতে দারুণ লাগে। তো মাছ কেনার পর দেখলাম যে পুরো ব্যাগ ভরে গিয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার টাকার মাছ কিনেছিলাম। তারপর ভাবলাম বাসায় ফেরা যাক। আসলে সেখানে একেবারে তাজা মাছ পাওয়া যায় এবং নদীর মাছ পাওয়া যায়। তাই দাম কিছুটা বেশি হলেও সেখান থেকে মাছ কিনতে খুব ভালো লাগে। সেদিন বৃষ্টির কারণে এক হাতে ছাতা এবং আরেক হাতে মাছের ব্যাগ ছিলো বলে সেভাবে ফটোগ্রাফি করতে পারিনি। তাই বাসায় আসার পর মাছের ফটোগ্রাফি গুলো ক্যাপচার করেছিলাম। বৃষ্টির দিনে মাছ কিনে মোটামুটি ভালোই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং এই অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আরও বেশি ভালো লাগছে।