প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন অফিসের কোরিয়ান বসের কথা অনুযায়ী ছারপোকা মারার জন্য বোম জ্বালিয়ে রেখেছিলাম সারাদিন। আমাদেরও বিশ্বাস ছিলো যে বোম থেকে যে ধোঁয়া বের হবে সারাদিন, এতে করে সব ছারপোকা মারা যাবে। কারণ দরজা জানালা বন্ধ করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ধোঁয়া বের হয়েছিল সারাদিন। শুনেছিলাম ছারপোকা মারার জন্য এটি নাকি বেশ কার্যকরী একটি উপায়। কিন্তু বিকেলে রুমের দরজা যখন খুললাম, তখন দেখলাম রুমে প্রচন্ড ধোঁয়া। তাই রুমের মধ্যে প্রবেশ করতে পারছিলাম না। তারপর দরজা খুলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম বাহিরে। খেয়াল করলাম বোম থেকে আরো আগেই ধোঁয়া বের হওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দেখলাম কিছু কিছু ছারপোকা মারা গিয়েছে, তবে বেশিরভাগ ছারপোকা রয়ে গিয়েছিল।

তখন প্রচন্ড রাগ উঠেছিল। কারণ এতো কষ্ট করার পর যদি ভালো কোনো ফলাফল না আসে তাহলে এমনিতেই মেজাজ খারাপ হয়। তবে রুমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ছারপোকা ছিলো। যাইহোক সেদিন আর আমাদের রুমে ঘুমাইনি। কারণ পরের দিন রবিবার, মানে অফ ডে ছিলো। পাশের রুমে যে বাংলাদেশী ছিলো, সেই রুমে আমরা তিনজন ঘুমিয়ে ছিলাম। রাতের বেলা আরো কয়েকটি প্ল্যান করলাম আর কি কি করা যায় ছারপোকা মারার জন্য। ইউটিউবে অনেক ঘাটাঘাটি করলাম। একটি ভিডিওতে দেখলাম যে ১১৫° ডিগ্রি তাপমাত্রায় নাকি ছারপোকা মারা যায়। তারপর পরের দিন সকালে সব জামাকাপড় ছাদে একটি ম্যাট বিছিয়ে রেখে দিলাম রোদে। তারপর রোদ থেকে এনে ওয়াশিং মেশিনে দিলাম ওয়াশ করতে। কিন্তু গরম পানি দিয়ে ওয়াশ করলাম সব জামাকাপড়। একবার ওয়াশ করার পর জামা কাপড় বের করে দেখলাম যে জামার উপর ছারপোকা হাঁটছে।

তখন আমি ভীষণ অবাক হলাম। গরম পানি দিয়ে ওয়াশিং মেশিনে জামা কাপড় ওয়াশ করার পরও ছারপোকা গুলো মারা গেল না। মনে মনে খুব রাগও উঠলো। জামা কাপড় গুলো ম্যাট বিছিয়ে ছাঁদে রেখে দিলাম এবং আর ওয়াশিং মেশিনে দিলাম না। বোমের ধোঁয়ায় জামা কাপড় থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ছাঁদে রোদ ছিলো অনেক, তাই ভাবলাম কিছুক্ষণ রেখে দেখি কি হয়। যাইহোক ভাবলাম রুমে গিয়ে ম্যাট্রেস এর কভার খুলে, একেবারে গরম পানিতে বড় বালতির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবো। ম্যাট্রেস এর কভার খোলার সময় দেখলাম কোণায় কোণায় অনেক গুলো করে ছারপোকা একসাথে। এটা দেখে তো আরো ঘাবড়ে গেলাম। ভেবেছিলাম বোমের ধোঁয়ায় কিছুটা কাজ হয়েছে। কিন্তু না তেমন কোনো কাজ হয়নি। প্রায় সব ছারপোকা রয়ে গিয়েছিল। যাইহোক ম্যাট্রেস এর কভার বড় বালতির মধ্যে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখলাম। তারপর ম্যাট্রেস ছাদে রেখে দিয়েছিলাম রোদে।

তবে ঘন্টা খানেক বালতির মধ্যে ভিজিয়ে রাখার পর দেখলাম কয়েকটা ছারপোকা মরেছে। কারণ পানি খুব গরম ছিলো। যাইহোক রুম থেকে সবকিছু বের করে ছাঁদে রেখে দিলাম। রুম একেবারে ফাঁকা করে দিয়েছিলাম। রাতে যখন ঘুমাবো তখন ফ্লোরে পাতলা কিছু একটা বিছিয়ে ঘুমাবো সেটা ভেবে রেখেছিলাম। দেখবো তবুও ছারপোকা বের হয় নাকি। যাইহোক রাতের বেলা শুয়ে পড়লাম ১২ টার দিকে, কারণ সকালে অফিস আছে। কিন্তু লাইট বন্ধ করে যখন ঘুমাচ্ছিলাম,তখন আবারো ছারপোকার কামড়ে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। লাইট অন করে দেখলাম রুমের ফ্লোরে অনেক ছারপোকা। তখন বুঝলাম যে ছারপোকা গুলো ফ্লোরে থাকা ম্যাটের নিচে থেকে বের হয়েছে। ভাবলাম ফ্লোরের ম্যাটের নিচে অসংখ্য ছারপোকা রয়েছে। যাইহোক তারপর কি কি করলাম, সেটা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)