বান্দরবানের পথে পথে "রেমাক্রির রোমাঞ্চকর সকাল।"

in hive-129948 •  4 months ago 

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

  • রোমাঞ্চকর সকাল
  • ২১,মে ,২০২৪
  • মঙ্গলবার

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।আপনারা সবাই অবগত আছেন যে আমি ধারাবাহিকভাবে বান্দরবান ভ্রমণের পর্বগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করে চলছি। অনেকটা পথ নৌকা ভ্রমণের পর আমরা রেমাক্রিতে এসে পৌঁছেছি। যেহেতু আমরা দীর্ঘ সময় জার্নি করতেছি আমাদের প্রথমে লাগবে একটি বিশ্রাম করার জন্য ঘর। আর এখানে সুন্দর সুন্দর থাকার জন্য ঘর পাওয়া যায় পাহাড়ের উপরে। অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতির সাথে থাকতে পারলে মন্দ হয় না। তাই আমরা আমাদের গাইডকে ফলো করে একটি হোটেলে চলে যায়। হোটেল বললে ভুল হবে এটা জুম ঘর বলা যেতে পারে। পাহাড়ের উপর কাঠের তৈরি এই ঘরগুলো অসম্ভব সুন্দর।

আমরা এই ঘরে রাত্রি যাপন করেছিলাম। যেহেতু সারাদিন ভ্রমণ শেষে অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই রাতে ঘুমটাও খুব ভালো হয়েছিল। পরের দিন সকালে আমাদের গন্তব্য নাফাখুম জলপ্রপাত। এখানে যেতে হলে পুরাটাই পায়ে হেঁটে যেতে হবে। নাফাখুম যাওয়ার গল্প অন্য কোন পর্বে শেয়ার করব আজকে সকালের সৌন্দর্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে এসেছি। অবশ্য আমরা বের হয়েছি নাফাখুম যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিন্তু আমাদের রুম থেকে বের হয়েই সকালের অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতি দেখে আমরা মুগ্ধ হয়ে যাই। আমাদেরকে এখন যেতে হবে রেমাক্রির জলপ্রপাতের সামনে। তাই আমরা দল বেঁধে নামতে থাকি আমরা ছিলাম পাহাড়ের উপরে যেহেতু আমরা জলপ্রপাতের ওইখানে যাব সেজন্য আমাদের নদীর সমতলে আসতে হবে। অবশ্য বেশি উপরে ছিলাম না পাঁচ মিনিট হাঁটলেই নদী পেয়ে যাই। শীতের সকাল চারিদিকে কুয়াশা আচ্ছন্ন নদীর পানি দিয়েও ধোঁয়া উঠছে দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।


IMG20240121065018-01.jpeg

IMG20240121065030-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

নদীর তীরে আসতেই নদীর সৌন্দর্য দেখে আমরা অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি। এত দারুণ সৌন্দর্য এর আগে কখনো দেখিনি। নদীতে সারিসারি নৌকা বাধা আছে পাহাড়ি নৌকাগুলো সৌন্দর্য অসম্ভব সুন্দর। বড় বড় পাহাড় মনে হচ্ছে মেঘগুলো এসে পাহাড়ের গায়ে ভিড় জমিয়েছে। সাথে কুয়াশাচ্ছন্ন চারিপাশ এবং নদীর পানি থেকে ওঠা ধোয়া সবমিলিয়ে পরিবেশটা অসম্ভব সুন্দর ছিল। আমাদের এই সকালেই পানির ভিতর নামতে হবে। শীতের সকালে পানিতে পা ভেজাতে একটু কষ্টই লাগে। আমাদের এই নদীটা পার হয়ে ওই পাশে শুকনার উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে এগোতে হবে। ভেবেছিলাম নদীর পানি অনেক ঠান্ডা হবে কিন্তু তুলনামূলক পানি বেশ গরম ছিল।


IMG20240121065117-01.jpeg

IMG20240121065103-02.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

এত দারুণ পরিবেশ আমরা সবাই অনেক উপভোগ করেছি। প্রথমে পানিতে পা দেওয়ার সময় ভয় ভয় পা দিয়েছি না জানি কত ঠান্ডা হবে। আমার বন্ধু রিপন সে তো পানিতে পা দিতেই লাফ দিয়ে উঠলো এই মুহূর্তটা অনেক বেশি ইনজয় করেছে আমরা সবাই মিলে। তারপর পানিতে যখন নেমে পড়লাম অনেক ভালো লাগছিল এটা যেহেতু প্রবাহমান পানি তাই তুলনামূলক বেশ গরম ছিল। আমরা সবাই পানির ভিতর দিয়েই হাঁটতে হাঁটতে অসম্ভব সুন্দর প্রকৃতি উপভোগ করতে থাকি। এটা ছোট নদী পার হতে দুই মিনিট সময় লাগে আমরা পার হয়ে শুকনা জায়গায় চলে যাই। এখন এই পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা জলপ্রপাতের সামনে চলে যাব ওইখানে খাবারের হোটেল আছে আমরা সকালের নাস্তা করব। এখানে নৌকা শাড়ি গুলো অনেক বেশি কিছু নৌকা আবার ছুটে চলছে তার আপন গতিতে। এ যেন অপরূপ সৌন্দর্য যা স্মৃতির পাতায় গেঁথে রাখার মত।


IMG20240121065819-01.jpeg

IMG20240121065858-02.jpeg

IMG20240121065942-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

রেমাক্রি জলপ্রপাতের সামনে যে নৌকা ঘাট রয়েছে সেখানে অনেক নৌকা বাধা আছে। নৌকাগুলো পর্যটকদের নিয়ে এসেছে আর পর্যটক গুলো বিভিন্ন হোটেলে রাত্রে যাপন করছে। যেহেতু এখানে পানি বেশি এবং খাবার-দাবারের সুব্যবস্থা আছে তাই মাঝিরা এখানেই ছিল। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে নৌকাগুলো দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। বেশি দূরে কিছু দেখা যাচ্ছে না মনে হচ্ছে মেঘগুলো এসে ঘিরে ধরেছে। এটা মেঘও হতে পারে আবার কুয়াশাও হতে পারে কারণ অনেক সকালে কুয়াশাটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিছু কিছু মানুষ দেখলাম একটি স্থানে আগুন জ্বালিয়ে তাপ গ্রহণ করছে কারণ শীত অনেক বেশি ছিল।


IMG20240121070030-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

সবাই গোল হয়ে বসে আগুনের তাপ নেওয়া দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় সকালবেলা গ্রাম অঞ্চলে এই দৃশ্যটা অনেক বেশি দেখা যেত। অনেকদিন পর পাহাড়ি এলাকায় এসে এই দৃশ্যটা দেখে সত্যি ভালো লাগলো। গোল হয়ে বসে আছে তার মধ্যে দুইজন আমার বন্ধু আছে রিপন এবং রাজু তারা দুইজন তাদের সাথে সঙ্গ দিয়েছে। শীত লাগুক আর না লাগুক তাদের সাথে এভাবে বসে সময়টা উপভোগ করতে অনেক বেশি ভালো লাগছে। সকালের প্রকৃতিটা অসম্ভব সুন্দর ছিল আমাদের অনেক দূর ট্রাকিং করে যেতে হবে নাফাখুম জলপ্রপাতের ওইখানে। আজকে এ পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।


আমি কে !

IMG_20231120_103032_225.jpg

আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আপনার ফটোগ্রাফি গুলোর মাধ্যমে আমরাও জায়গাটাকে দেখতে পেলাম। বেশ সুন্দর লাগছে জায়গাটা। আপনারা ওই সময় নদীর পানিতে পা ভেজাতে ভয় পাছিলেন কিন্তু পানি তুলনামূলকভাবে গরম ছিল যার কারণে পরে আর অসুবিধা হয়নি। আসলে প্রবাহমান পানি বলেই হয়তো একটু গরম ছিল। তবে আপনার বন্ধু রিপন পা দিতেই লাফিয়ে উঠেছিল আশা করি বিষয়টা বেশ মজা করেছিলেন সবাই মিলে। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে রেমাকান্তি রোমাঞ্চকর সকালের এই অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

জ্বী ভাইয়া প্রবাহমান পানি ছিল তো তাই একটু গরম গরম ছিল। আমার পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো।

আসলে প্রকৃতির মাঝে সবকিছুই ভালো লাগে। যে ছোট্ট পাহাড়ের উপরে হোটেলটায় ছিলাম সেটাও কিন্তু দারুন ছিল। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সকালবেলা নদীর সৌন্দর্যটা কেননা নদী থেকে যেন কুয়াশার মতো ধোঁয়া উঠছিল। এই সৌন্দর্যটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

একদম ঠিক বলেছো বন্ধু আমরা অনেক বেশি মজা করেছিলাম। আরো জায়গাটাও ছিল অসম্ভব সুন্দর।