রক্ত দান।

in hive-129948 •  28 days ago 

আসসালামু আলাইকুম।

আমি রাহুল হোসেন। আমার ইউজার নেমঃ@mrahul40।বাংলাদেশ থেকে।আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

  • রক্ত দান
  • ০৩,সেপ্টেম্বর ,২০২৪
  • মঙ্গলবার

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব রক্তদান নিয়ে কিছু কথা। রক্তদান এমন একটি মহৎ কাজ যা নিজের রক্ত দিয়ে অন্য কারো জীবন বাঁচান এর থেকে ভালো কাজ আর কি হতে পারে বলুন? যে রোগীর যখন রক্ত লাগে সে রোগের লোকজনে বুঝে রক্ত ম্যানেজ করা কত কষ্ট। যদি ঠিকঠাক মত এবং সময়মতো রক্ত খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে রোগীর অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হয়ে যায়। তখন তারা অনেক বেশি টেনশন এর মধ্যে পড়ে যায়। আর আমরা যারা রক্তদান করি তারা সময় পেলেই কোন রোগের লোকজনের ফোন পেলেই ছুটে চলে যায় শরীরের রক্তদান করার জন্য।

এটা একটি ভালো লাগার কাজও বটে আমার রক্ত দ্বারা অন্য কারো জীবন বাঁচানো এর থেকে আর ভালো কাজ কি হতে পারে। আর এই রক্তদান গুলো সব থেকে বেশি করে ছাত্রসমাজ। তারা কোন কিছু না ভেবেই চলে যায় রক্ত দেওয়ার জন্য। তারা নিঃস্বার্থভাবে কাজগুলো করে থাকেন। রক্তদানের জন্য অনেক গ্রুপ আছে যদি কারো রক্ত প্রয়োজন হয় তাহলে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ডোনার ম্যানেজ করে দেন। সময় মত রক্ত পাওয়া যে কত ভাগ্যের ব্যাপার যার রক্তের প্রয়োজন সেই বুঝে।


IMG20240828234624-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

আমারও হঠাৎ করেই রক্তদানের সুযোগ এসেছিল আমি কখনো এই সুযোগ পেলে হাতছাড়া করি না। গত ২৮ তারিখে হঠাৎ এক কাছের ছোট ভাই ফোন দিল এলাকার একটি বৃদ্ধ মহিলা অ্যাক্সিডেন্ট করেছে তাকে নাকি দ্রুত ঢাকাতে নিয়ে আসা হয়েছে এবং রক্তের প্রয়োজন। ছোট ভাই যখন ফোন দেয় তখন ঘড়িতে সময় ৯ টা বেজে ৩০ মিনিট। প্রথমে বলল রক্ত লাগবে হয়তো কালো লাগতে পারে কিন্তু কিছুক্ষণ পর ফোন দিয়ে বলল রক্ত নাকি এখনই লাগবে। যেহেতু ইমার্জেন্সি কেস তাই আর দেরি না করে আমি বাইক নিয়ে মিরপুর থেকে কাকড়াইলে উদ্দেশ্যে রওনা করি। দূরত্বটা ১০ কিলোমিটারের আশেপাশে হবে রাতের বেলা তারপরও কিছুটা জ্যাম জট পার দিয়ে যেতে হবে। ৩০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছাতে সক্ষম হয় গিয়ে দেখি ছোট ভাইয়ের বড় ভাই আছে তার সাথে কন্টাক করে উপরে চলে যায়। তখন অলরেডি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পরবর্তী প্রসেস গুলো কমপ্লিট করতে হবে এবং সেজন্য অপেক্ষা করছি।

IMG20240829001045-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

কিছু সময় অপেক্ষা করার পর যে ছোট ভাই আমাকে ফোন দিয়েছিল সে চলে এসেছে তারপর দুজন একসাথে বসে থাকলাম। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী সকল কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে আমাকে একটা ফরম পূরণ করতে দিল সেখানে আমি আমার এড্রেস এবং সবকিছু লিখে দিলাম তারপর ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল নিল হাত থেকে। আমাদেরকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে কারণ ব্লাডটা টেস্ট করতে হবে। সে সময় একটু নিচে হাটাহাটি করার জন্য বের হলাম এবং পানি খেয়ে আবার উপরে চলে আসলাম। তার কিছু সময়ের মধ্যেই ব্লাড দেওয়ার জন্য একটি রুমে প্রবেশ করলাম। এর আগেও যেহেতু অনেকবার ব্লাড দিয়েছি এটা সম্ভবত আমার ১৩ তম ব্লাড ডোনেট করা তাই কোন রকম ভয় কাজ করছিল না। ব্লাড প্রদান শেষে কিছু সময় শুয়ে ছিলাম কারণ কিছু সময় রেস্ট না থাকলেও সাথে সাথে উঠে পড়লে মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারি। তারপর হাসপাতাল থেকে একটি পানির বোতল স্যালাইন এবং একটি জুস দিল।


IMG20240828235936-01.jpeg


Device : Realme 7
What's 3 Word Location :

হঠাৎ ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে দেখি রাত বারোটা পার হয়ে গিয়েছে। আসলে হাসপাতালে আসলে টাইমের কোন সিডিউল থাকে না সময় অনেক টাই বেশি লেগে যায়। রাত অনেক হয়েছে সেজন্য আর বেশি সময় অপেক্ষা না করে আমি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। অবশ্য গভীর রাতে রাস্তায় কোন জ্যাম জট ছিল না সেজন্য 15 থেকে 20 মিনিটের মধ্যেই আমি মিরপুর পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।

আমি কখনো রক্তদানের সুযোগ হাতছাড়া করি না ।এটা একটি মহৎ কাজ মনে হয় আমার কাছে কারণ আমার রক্তের বিনিময়ে যদি কারোর জীবন বেঁচে যায় তাহলে এর থেকে আর ভালো কি হতে পারে। রক্তদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে। তাই আমরা সবাই যদি সুযোগ পাই এবং শরীর সুস্থ থাকে তাহলে রক্ত দান করব ইনশাল্লাহ।

আজ এই পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে অন্য কোন গল্প নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।



আমি কে !

IMG_20231120_103032_225.jpg

আমি মোঃ রাহুল হোসেন, আমার ইউজার নেম @mrahul40। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন।

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

রক্তদান করা মানুষের মহৎ গুণ। দুনিয়ার বুকে যে সমস্ত মহৎ গুণগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম রক্ত প্রদান করা। কারণ একজন আর রক্তের বিনিময়ে আরেকজনের প্রাণ বেঁচে যায়। বিপদের সম্মুখে একজন যদি নিজের শরীর থেকে আরেকজনকে রক্ত দান করে সহায়তা করে এর মতন সওয়াবের কাজ আর নেই। অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি পোস্ট দেখে।

আসলেই বন্ধু রক্ত দান করা মহৎ কাজ। তুমি এই কাজ অনেকবার করেছো এটা সত্যিই অনেক প্রশংসনীয়। দেখতে দেখতে তুমি ১৩ বার ব্লাড ডোনেট করে ফেলেছ এটা সত্যি ভালো খবর। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু।

আসলে ভাইয়া আমার মনে হয় রক্তদান সবার কাছে মহৎ কাজ। সত্যি এমন কাজ করতে পারলে নিজের কাছে ও অনেক ভালো লাগে। আপনি তো দেখছি অনেক বার রক্ত দিয়েছেন। এভাবেই এগিয়ে যান। ধন্যবাদ আপনাকে।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া রক্তদান করা খুবই মহৎ একটা কাজ। যখন নিজের শরীর থেকে অন্য কাউকে রক্তদান করা হয় তখন মনে হয় খুব মহান একটা কাজ করেছি। যদিও কখনো কাউকে রক্ত দেওয়া হয়নি।তবে আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

রক্তদানের মত মহৎ কাজ আর কিছু হতে পারে না ভাই। আপনি যে একজনের বিপদের কথা শুনেই রক্ত দিতে চলে গেছেন, এটা খুব কম মানুষই করে। তাছাড়া আপনি দেখছি অনেকবারই এভাবে রক্ত দিয়েছেন মানুষকে। আসলে মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন সেই মানুষকে সাহায্য করতে আসে খুব কম মানুষ। আপনি যেহেতু লোককে এভাবে সাহায্য করছেন, দেখবেন একটা সময় লোকও আপনার বিপদে অবশ্যই এগিয়ে আসবে।