আবওহার বিরূপ আচরণ

in hive-129948 •  2 years ago 

"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"


today 02 june,2023
আজ ১৯ জৈষ্ঠ্য,১৪৩০ বঙ্গাব্দ


desert-279862_1280.jpg

image source


মার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।


অতিরিক্ত তাপমাত্রা আর গরমে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। এভাবে বেচেঁ থাকা বহুত কষ্টের। এমনিতেই তো সারাটা জীবন সার্ভাইব করেই জীবন পার করতে হয়। কিন্তু এমন ভয়ানক রোদ আর গরম দেখে মনে হচ্ছে আর বোধয় সার্ভাইব করা সম্ভব না। আমার জীবদ্দশায় আবওহার এমন ভয়াবহ বিপর্যয় এর আগে কখনো দেখি নাই। তবে বর্তমানের এমন অবস্থা দেখে সামনের আরো কঠিন দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করতেছি হাহা।


যাইহোক এমনিতেই এখন ইরি ধান কাটার মৌসুম চলতেছে। বাড়িতে মেলা কাজ। সারাদিন কাজ কর্ম শেষে শরীর একদম নাজেহাল। তাই ব্লগিংটা আপাতত বন্ধই ছিল। আসলে বাড়ির এক ছেলে হলে যা সমস্যা হয় আরকি। এমনিতেও তো ছোট থেকে কাজ করার অভ্যাস নেই কিন্তু এবার ঠেলায় পড়ে করতেই হলো। আজকে আয়নায় হটাৎ করে নিজেকে দেখে বেশ আফোসসি হলো একটু হাহা😁। যাইহোক এখন থেকে কাজ-কর্ম শেষ এখন মোটামুটি একটু রিল্যাক্স।


এমনিতেই আবওহা গরম বাড়িতে থাকার মত অবস্থা নাই। ফ্যান ঘুরলে মনে হয় আগুনের আচ লাগছে শরীরে। এই জন্য সারাটাদিন গাছের নিচেই সবার আনাগোনা। সবাই গল্প করছে কেউ মোবাইল টিপছে এভাবেই চলছে। হটাৎ করে একটা দাদু আসলো। এসে সবার মোবাইল টিপা দেখে এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে বলেই ফেললো। হায়রে আজকালকার ছাওয়াল তোমাদের সময় থাকতে আমরা লুঙ্গি কাছা মাইরা মাছ মারতাম কাঠাল পারতাম আরো কত কি। আসলে দাদু আমাদের সাথে গল্প করতে চাচ্ছিল। যাইহোক এক পর্যায়ে আমি দাদুকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা তোমার জীবদ্দশায় এমন বিরূপ আবওহা কি কখনো দেখেছো। উনি খানিক চুপ থাকলো। তারপর বললো খরা দেখেছি চৈত্রের কাঠফাটা রোদে বিলের পানি শুকায় যাইত নিচু জমি পানির অভাবে ফেটে যেত। কিন্তু সেটা কেবল চৈত্র মাসে। এরপর বৈশাখ যখন আসতো তখন আবার বৃষ্টি হওয়া শুরু হতো আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যেত।


বৈশাখ আসলেই নাকি বৃষ্টি শুরু হতো চারদিকে গাছে গাছে একসাথে নতুন পাতা গজাতো। সবুজ ঘাসে মাঠ ভরে যেত। আর ধান কাটার শেষভাগে কিংবা মাঝামাঝি অবস্থায় সেইরকম ভারী বৃষ্টি কিংবা বন্যা হইতো। আর ওইসময় দেশী মাছেরা ডিম পাড়া শুরু করতো। আর তারা তখন ফাঁসি জাল বসায় সারাদিন মাছ ধরতো। যাইহোক তখন ব্যাপারটাই ছিল একদম আলাদা। আর সত্যি কথা বলতে আমিও সারাজীবন এমন অবস্থায় দেখে আসলাম। এই ইরি ধান কাটার সময় চারদিকে থই থই পানি। পানিতে ধানের শীষ প্রায় ডুব ডুব অবস্থা। ধান কাটার বিঘা 5 হাজার থেকে নিমিষেই 10-12 হাজার টাকা হয় যায়। এমনও পরিস্থিতি গেছে নৌকা কিংবা ভুরায় করে ধান আনতে হয়। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন এক আবহা। এই আবহ যেনো সম্পূর্ণ অপরিচিত আমাদের কাছে বিশেষ করে আমার কাছে।


এই ইরি মৌসুমে ধান শুকাতে দিলে আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখা দিত। আবার তড়িঘড়ি করে ধান তুলতাম আবার একটু পরেই রোদ দেখা দিলে ধান মেলায় দেওয়া হতো। কিন্তু এবার এর সেই মেঘের দেখা তো নাই খালি রোদ আর রোদ। আর এতই প্রচন্ড রোদ যে খালি পায়ে মাটির উপর দাড়িয়ে থাকাও প্রায় অসম্ভব।


যাইহোক রোদের এই তাণ্ডব যে আরো কতদিন চলবে আল্লাহ মালুম। এই অনাবৃষ্টি শেষে আবারও বৃষ্টি নামুক আবারও সজীবতা পাক এই গ্রাম বাংলার প্রকৃতি।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এবার যেহেতু বৃষ্টির পরিমাণ কম হয়েছে তাই তো নৌকায় করে ধান আনতে হয়নি। তবে এই সময় ব্যস্ত সময় পার করছেন বোঝাই যাচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই তো ধান কাটতে গেলেও অনেক টাকা দিয়ে ধান কাটাতে হয়।

হ্যা আপু।
তবে এটা ভালো যে ধানের দাম ও বেশ ভালই আছে এবার।🤭

বাড়ির কাজকর্মের পাশাপাশি ব্লগিং করাটা একটু কষ্টকর। তবে আপনি আবার ব্লগিং শুরু করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আবার বিরুপ প্রভাবের কারণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে গেছে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।🖤

জনাব, এখন তো কাজ শেষ। ফ্রি সময়টা কাজে লাগান। ব্লগিং টা আবার শুরু করুন! শুভকামনা রইলো। ঈদের একটা ঘুরাঘুরির প্ল্যান রেডি করেন।

Posted using SteemPro Mobile

বদ্দা বাড়ি আসো আগে তারপর প্ল্যান হবে।🤘

ওকে ঠিক আছে। 💓

Posted using SteemPro Mobile

গ্রামের ছেলেরা সবসময়ই অলরাউন্ডার হয়ে থাকে।
লেখাপড়া কাজকর্ম দুটোই একসাথে চালাতে হয়।
পরিশ্রম করা ভালো এতে শরীর ভালো থাকে ফ্যামিলিতে অনেক হেল্প আছে।।
পরিবেশের এমন বির ূপ আচরণ আসলে জানিনা এর শেষ কোথায় তবে আমরা কিন্তু ভালো নেই।।
এক্ষেত্রে আমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে পানাহ চাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।।
অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।।

আসলেই ভাই কথা কিন্তু ঠিক কইছেন একদম।🤭