🥀শুভেচ্ছা স্বাগতম🥀 |
---|
সম্মানিত"আমার বাংলা ব্লগ" বাসি সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক উষ্ম অভ্যর্থনা। আমি @munna101 আছি আপনাদের সাথে। বরাবরের নেই আজকেও আমি আপনাদের মাঝে একটি কবিতা আবৃতি নিয়ে হাজির হলাম।তবে আজকের কবিতা আমার স্বরচিত নয়। আজকে আমি আমাদের সম্মানিত জাতীয় কবি যাকে আমরা বিদ্রোহী কবি বলে জেনে থাকি। তার লেখা একটি কবিতার একাংশ আপনাদের আবৃতি করে শুনাচ্ছি।
কাজী নজরুল ইসলামের "মানুষ" কবিতা থেকে কিছু অংশ পাঠ করে শোনাচ্ছি আপনাদের |
---|
কণ্ঠে আমি @munna101😍 |
---|
Table | Table |
---|---|
কবিতা: | মানুষ |
লেখক | কাজী নজরুল ইসলাম |
Making: KineMaster apk
🖋কবিতার লিরিক্স🖋
মানুষ
কাজী নজরুল ইসলাম
গাহি সাম্যের গান–
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি ।
‘পুজারী, দুয়ার খোল,
ক্ষুধার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পুজার সময় হলো !’
স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা- টাজা হয়ে যাবে নিশ্চয় !
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুধায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনা তো সাত দিন !’
সহসা বন্ধ হল মন্দির , ভুখারী ফিরিয়া চলে
তিমির রাত্রি পথ জুড়ে তার ক্ষুধার মানিক জ্বলে !
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পুজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয় !’
মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি !
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে, ‘বাবা, আমি ভুখা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন !’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা–”ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গে-ভাগাড়ে গিয়ে ! নামাজ পড়িস বেটা ?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা !’ মোল্লা হাঁকিল- ‘তা হলে শালা
সোজা পথ দেখ !’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা !
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে–
“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তেমায় কভু,
আমার ক্ষুধার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু !
তব মজসিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী !”
কোথা চেঙ্গিস, গজনী-মামুদ, কোথায় কালাপাহাড় ;
ভেঙ্গে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া- দ্বার !
খোদার ঘরে কে কপাট লাগায় কে দেয় সেখানে তালা ?
সব দ্বার এর খোলা র’বে, চালা হাতুড়ি শাবল চালা !
হায় রে ভজনালয়
তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয় !
মানুষেরে ঘৃণা করি
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে ।
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল !–মুর্খরা সব শোনো
মানুষ এনেছে গ্রন্থ,–গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো ।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ,
আমাদেরি এরা পিতা পিতামহ, এই আমাদের মাঝে
তাঁদেরি রক্ত কম-বেশী করে প্রতি ধমনীতে বাজে !
আমরা তাঁদেরি সন্তান , জ্ঞাতি, তাঁদেরি মতন দেহ
কে জানে কখন মোরাও অমনি হয়ে যেতে পারি কেহ ।
হেস না বন্ধু ! আমার আমি সে কত অতল অসীম
আমিই কি জানি কে জানে কে আছে আমাতে মহামহিম।
হয়ত আমাতে আসিছে কল্কি, তোমাতে মেহেদি ঈসা,
কে জানে কাহার অন্ত ও আদি, কে পায় কাহার দিশা ?
কাহারে করিছ ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছ লাথি ?
হয়তো উহারই বুকে ভগবান জাগিছেন দিবারাতি !
অথবা হয়ত কিছুই নহে সে, মহান উচ্চ নহে,
আছে ক্লেদাক্ত ক্ষত-বিক্ষত পড়িয়া দুঃখ–দহে,
তবু জগতের যত পবিত্র গ্রন্থ ভজানালয়
ঐ একখানি ক্ষুদ্র দেহের সম পবিত্র নয় !
হয়ত ইহারি ঔরসে ভাই ইহারই কুটীর-বাসে
জন্মিছে কেহ-জোড়া নাই যার জগতের ইতিহাসে !
যে বাণী আজিও শোনেনি জগৎ, যে মহাশক্তিধরে।
🔰কবিতার কথা 🔰
কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হতো কারণ উনার কবিতার ভাষা গুলো ছিল অদম্য। আর এই মানুষ কবিতাটি নজরুলের প্রতিবাদী কবিতা হিসেবে ধরা হয়। মানবতাবাদী কবিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কবিতা হচ্ছে এই মানুষ কবিতা। চিনিয়ে কবিতার মধ্যে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে ধার্মিকেরা আজ অধার্মিক রক্ষকরাই ভক্ষক এ পরিণত হয়ে গেছে।
🔰মন্তব্য:🔰
আমাদের উচিত সকল কিছুকে উপেক্ষা করে মানুষে পরিণত হওয়া। তবেই না আমরা ধর্মের চর্চা করতে পারব।
অসাধারণ হয়েছে ভাই আপনার কবিতাটি। এই কবিতাটি আমার বরাবরই প্রিয়। আপনার কবিতা আবৃতি অসাধারণ হয়েছে। শুনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইল আপনার প্রতি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit