"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
মিউজিক ভালোবাসি তবে মেটাল মিউজিক একটু বেশিই।বলা চলে গান শুনা আমার এক ধরনের নেশা আর গান হলো আমার প্রেমিকার মত।যখন মন খারাপ থাকে তখন যেমন মন খারাপের সঙ্গী হিসেবে গান থাকে ঠিক একইভাবে যখন মেজাজ ফুরফুরে থাকে তখনও গানই শুনি।যাইহোক সেটা বড়ো কথা না।বাংলাদেশ ব্যান্ড মিউজিক জগতে ওয়ারফেইজকে কেই বা না চিনি।বাংলাদেশে মেটাল মিউজিক এর যে আবির্ভাব সেটা ওয়ারফেইজ এর হাত ধরেই।আর যারা এই জনারার গান শুনে অথচ ওয়ারফেইজ এর গান শুনবে না এটা ভাবতেই বেমানান লাগে।ওয়ারফেইজ একটা মানুষের জীবনে বিভিন্ন ভাবে জড়িয়ে আছে।ওয়ারফেইজ হলো কখনো প্রতিবাদের ভাষা,কখনো হতাশার গল্প শোনায়,কখনো বা ব্যার্থতা,কখনো বিচ্ছেদের কখনো বদলে যাওয়া দিনের আবার মাঝে মাঝে প্রেমের।আর ওয়ারফেইজ এর এই গান গুলো আজ থেকে টিকে থাকবে হাজার বছর।
তো গত 30 জুন আমাদের উত্তরবঙ্গে অর্থাৎ রংপুরে প্রথমবার এসেছিল ওয়ারফেইজ। আর আমি সেখানে থাকবো না সেটা কি করে হয়।তাই আমি আর আমার এক বন্ধু দুইজন মিলে রওনা দিলাম রংপুর এর উদ্দেশ্যে ট্রেন ছিলনা বলে বাসেই যাইতে হয় আমাদের।আর ফেসবুক উত্তরবঙ্গের একটি ব্যান্ড মিউজিক ফ্যান নামের একটু কমিউনিটি আছে।তো সেখানকার ও অনেক ভাই ব্রাদার আসছে।
এইযে এখানে যে মানুগুলাকে দেখতে পাচ্ছেন এদেরকে কাউকেই আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি না এবং কেউই কাউকে চিনে না।কিন্তু এই জায়গায় আমাদের সবার পরিচয় একটাই আমরা মিউজিক লাভার।আর মিউজিক এর টানেই দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা।এখানে কারো বাসা লালমনিরহাট কারো আবার দিনাজপুর।কিন্তু আমাদের সবার মাঝে একে ওপরের প্রতি যে সম্মান সেটা আমাদের এই বন্ধনটাকে আরো মজবুত করেছে।তো আমাদের গ্রুপকে যেহেতু সব বান্ডই চিনে তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ওয়ারফেইজকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিবো।এরপর ফুল কিন রেডি করে ওরা যখন আসলো আমরা সবাই মিলে ওদের স্বাগতম জানালাম।এবং আমাদের এরকম অতিথিপরায়ণ দেখে ওরা সত্যিই অনেক খুশি মুগ্ধ এবং আমাদের ধন্যবাদ দিতে কার্পণ্য করে নি।যাইহোক আমরা যেহেতু অনেকজন ছিলাম সবার সাথে তো ছবি তুলা সম্ভব না তাই গ্রুপ ছবি নেই।আর যে জে পারছে সেলফি ও নিচে এবং আমিও নিয়েছি।
তিনটার দিকে ওয়ারফেইজ কে স্বাগতম জানিয়ে আমরা হোটেল থেকে বের হয়ে রংপুর শহর ঘুরতে থাকি।কেউ কেউ আবার মেসে গিয়ে রেস্ট নিচ্ছিল।কারণ কনসার্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল রাত 8 টা থেকে।আর এই কনসার্ট টি ছিল রংপুর মেডিকেল কলেজ 49 ব্যাচ এর rag day উপলক্ষে।তাই পুরো কনসার্ট প্রাইভেট ছিল।কিন্তু কথা হলো যেখানে ওয়ারফেইজ আসছে সেখানে আমরা যাবো না সেটা কি করে হয়।আর ব্যান্ড যেহেতু আমাদেরকে চিনে,ওরাই মেডিকেলে ফোন দিয়ে বললো নর্থ বেঙ্গল ব্যান্ড মিউজিক ফ্যানস কমিউনিটি এর যারা যারা আছে সবাইকে ঢুকানোর ব্যাবস্থা করা হোক।যদিওবা শেষে কাউকেই আটকাইতে পারে নাই সবাইকে ঢুকার সুযোগ দিছে।
এরপর কষ্ট করে অডিটোরিয়াম এর মধ্যে ঢুকলাম।কিন্তু নিচতলায় আমাদের থাকতে দিলো না।যারা গেস্ট ছিল সবাইকে পাঠিয়ে দিল উপর তলায়।আর উপর তলায় জায়গা অনুপাতে মানুষ হয়ে গেলো বেশি।আর এমনিতেই অডিটোরিয়ামে নাই কোনো এসি নাই কোনো ফ্যান।এমনিতেই অনেক গরম তারউপর মানুষের ভিড়।যাইহোক ইচ্ছে ছিলো কনসার্ট দেখার এগুলা ভিড় কে এত পাত্তা দিলাম না।এরপর 9 টার দিকে শো শুরু হলো।প্রথমে মেডিকেল এর স্টুডেন্টদের তৈরি একটা ডকুমেন্টারি দেখলাম।এবং তারপর এলো সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত।সাউন্ড চেক শুরু হলো আর একে একে আসতে শুরু হলো ওয়ারফেইজ এর মেম্বার রা,প্রথমে এলো কমল ভাই(গিটারিস্ট), সামির হাফিজ (গিটারিস্ট), রজার (বেজিস্ট),শামস (কীবোর্ডইস্ট),টিপু (ড্রামার) এরা একজন যখন এন্ট্রি নিচ্ছে আর পুরো অডিটোরিয়াম চিৎকারে ফেটে পড়ছে।এরা এসে সবার ইনস্ট্রুমেন্ট সাউন্ড চেক করে নিল এরপর হিরোর মত এন্ট্রি নিল ভোকাল পলাশ নুর ভাই।আর এরপর শুরু হলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ প্রথমেই শুরু করলো সত্য এলবাম এর প্রতীক্ষা গান দিয়ে এরপর একে একে গাইল অসামাজিক,হতাশা,না,অবাক ভালোবাসা,তোমাকে,রূপকথা,মহারাজা,বসে আছি,পূর্ণতা এর মত জনপ্রিয় গানগুলো।আর আমি তো পুরা গলা ফাটিয়ে গান গাচ্ছিলাম আর হ্যাড বেং করতেছিলাম।জীবনে প্রথমবার ওয়ারফেইজ এর সাথে গলা মেলানোর সুযোগ হয়েছে এই সুযোগ কি হাত ছাড়া করা যায়😍।যাইহোক কনসার্ট এর কিছু অংশ রেকর্ড করেছিলাম সেগুলো দিচ্ছি আপনাদের সামনে ।
কনসার্ট এর কিছু অংশ:
কনসার্ট আমার আমার ফোন থেকে আরেকজন ভিডিও করেছিল।আসলে আমি ফুল কনসার্ট টা উপভোগ করেছি তাই ভিডিও করার দিকে কোনো খেয়াল এই ছিল না।এরপর পুরা কনসার্ট শেষ করলাম।কেউ কেউ গরম এর ঠেলায় একটা গান আগেই বের হয়ে গেছে।তারপর অডিটোরিয়াম থেকে বের হয়ে দেখি গলা একদম বসে গেছে।তারপর ঐ অবস্থায় ফ্রেন্ড এরিস গেলাম।গিয়ে দেখি সব হোটেল ও বন্ধ।আর পুরো শরীর এত ব্যাথা যে কোনো রকম গিয়ে শুয়ে পড়লাম।আর পরের দিন ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘাড় মাথা শরীর কিছুই নাড়াতে পারছি।তারপর বুঝার আর বাকি রইলো না।যাইহোক এটাই হলো ওয়ারফেইজ এর পাওয়ার।
আজকের মত এখানেই শেষ করলাম।আর ধন্যবাদ আপনাদের এত ধৈর্য নিয়ে পোস্ট টি পড়ার জন্য।সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি
আল্লাহ হাফেজ 🌿
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
অবস্থান | রংপুর বিভাগ: |