🖼️ নমস্কার 🖼️

🙏🙏🙏

---

নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত

🎍🎍🎍

---

বন্ধুরা, কেমন আছেন? পরিবারের সবাই ভালো আছে তো? আপনাদের সব্বার সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট শুরু করছি৷

পূর্বাভাসে আজ এখানে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। তাই পুণে জেলার সমস্ত প্রাইমারি স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছিল। অতয়েব মেয়ে সারাদিন বাড়িতে৷ এদিকে গতরাত থেকেই ওর সাথে আমার মনকষাকষি চলছে৷ বেচারি কিছু বলতে না পেরে আমাকে দেখলেই বড় বড় ফোটার চোখের জল ফেলছে৷ এদিকে আমি নীরব৷ ওর কিছু ভুল বার বার ঘটালে আমি বকাবকি করে নীরবই হয়ে যাই৷ সেটা ও ভাবে ওর মা বোধহয় আর ওকে ভালবাসবে না৷ সেই একটা মানসিক দুঃখ তৈরি হয়। আর সারাদিন মুখ বেজার করে ঘুরে বেড়ায়। অন্যান্য দিন স্কুল থাকলে ভুলে যায়৷ কিন্তু আজ তো সে সব নেই৷ তাই যেন চিরদীন হয়ে বসে রয়েছে৷ বেলা করে রোজই মা ফোন ফোন করেন৷ আজ মা সব শুনে আমাকেই বকা দিলেন, বললেন যেন ওকে বুঝিয়ে বলি আর মিটিয়ে নিই৷ মা না বললেও আমি ওকে বোঝাই। তবে এবারে হয়তো একটু বেশিই কঠিন হয়ে গেছিলাম। যাইহোক মা ফোন করার পর ওর সাথে কথা বললাম প্রায় এক দেড় ঘন্টা ধরে৷ সমস্যাগুলো বললাম। সবেই মাথা নাড়ল৷ কিন্তু আমি জানি এই বয়সে এতো কথা ও বুঝবে না আবার এই একই কাজ করবে৷ আর আমিও আবারও চিৎকার করব। মায়েদের চিৎকার করতে করতেই বোধহয় জীবন চলে যাবে৷

এতো কথা বললে আমার মাইগ্রেন শুরু হয়ে যায়৷ সে আরেক ঝামেলার। বিকেলের দিকে ঠিক করলাম নিজেকে ঠিক করতে হবে। একেবারে ফ্রেশ। অগত্যা বইয়ের আলমারি খুলে রঙ তুলি পেন্সিল ইরেজার সব বার করে আনলাম৷ সাথে আমার একটা ছোট্ট স্কেচবুক। কি আঁকি কি আঁকি ভেবে ভেবে খসখস করে একটা মেয়ের মুখ দিয়ে শুরু করলাম। তারপর যা দাঁড়ালো তা তো ওপরের ছবিটাতেই দেখছেন। আসন ধাপগুলো দেখিয়ে দিই।

ধাপ-১

আজকাল আর এক টানে আঁকতে পারি না৷ বেশ কয়েকবার রবার ঘষে মোছামুছি করতে হয়েছে৷ এই ধরণের স্কেচগুলো অ্যাক্রেলিক রঙে করলে আরও অন্যরকম দেখায়৷ আমার অ্যাক্রেলিক রঙ নেই। আর খুব একটা কাজও করিনি। দেখি যদি পারি কখনও করব। আসলে আমার আঁকার সম্পর্কে তো কোন প্রথাগত শিক্ষা নেই৷ ওই এদিক ওদিক দেখে আন্দাজে যেটুকু নিজে নিজে করি।

ধাপ-২

এবার রঙ দিতে শুরু করেছি। যে যে জায়গাগুলো মোটামুটি একই রঙের করতে চাইছি সেইগুলো এক টানে করে নিচ্ছি। ফলে বার বার তুলি ধোবার ব্যপার থাকবে না৷ তবে যেকোন ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড টা আগে রঙ করে নিলেই ভালো। তারপর মাঝের অংশগুলো, তারপর শেডিং এর কাজ আর সবার শেষ কালো রঙ বা পেন্সিল দিয়ে বর্ডার টানা।

ধাপ-৩

মোটামুটি রঙ দেওয়া হয়ে গেছে৷ জলরং একটু ধরে করতে হয়৷ কারণ শুকনোর ব্যপার থাকে। আমার তো টিউব নেই। কেক। তাই বেশ পাতলা রঙ হওয়ার কারণে ম্যাট ফিনিশিং আসে৷ সেই কারণে প্রথমবার রঙ দেওয়া হলে আমি শুকনো করে দু তিনবার দিই৷ তারপর দেখুন কেমন গ্লসি এফেক্ট এসছে৷ সামান্য শেডিং এর কাজও করেছি। তবে ফিনিশিংটা আমি স্টেডলার পেন্সিল দিয়ে করব৷

ধাপ-৪

ওয়াইনের গ্লাসটা প্রথমে সাদাই রেখেছিলাম। কিন্তু দেখলাম খুব একটা ভালো লাগছে না। তাই একেবারে পাতলা করে হাল্কা গোলাপি রঙের একটা টাচ দিয়ে দিয়েছি৷ কেমন লাগছে বলুন তো? কালো পেন্সিল দিয়ে বর্ডার টানতে গিয়ে কত বেঁকে গেছে। কাছ থেকে ছবি না তুললে বুঝতেই পারতাম না৷

ধাপ-৫

কানের দুলের ভেতরটা সামান্য ডিজাইন করে দিয়েছি৷ আর চুলে ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জায়গায় স্টেডলার পেন্সিল দিয়ে এফেক্ট দিয়ে দিয়েছি। ফাইনালি কেমন লাগছে বন্ধুরা? জানি খুব একটা বিরাট কিছু হয়নি। তাও অনেকদিন পর এমন কিছু আঁকলাম। খারাপ হলেও মনটা যে খানিকটা ভালো হয়েছে, এটাই প্রাপ্তি৷

সবশেষে

এই যে একেবারে সব শেষের পর ছবি৷ বন্ধুরা কেমন হল জানাতে ভুলবেন না। আপনারা বললে আবারও আঁকব। জানেন মেয়ে জিজ্ঞেস করল একটা চোখ ওরম গলায় ঘুরছে কেন? আমি বললাম তুই ভেবে বল। আসলে কেন যে দিয়েছি ওখানে চোখটি তা আমিও খুব একটা ভেবে দেখিনি৷ মনে হয়েছিল দেওয়া যাবে তাই দিয়েছি। অতো অর্থ বুঝলে তো হয়েই যেত, চিত্রপ্রদর্শনীতে নাম লেখাতাম। কিন্তু তা তো হয়নি। হবেই বা কি করে। আসলে তো হাতুড়ে। হা হা হা

যাইহোক বন্ধুরা আজকে এইটুকুই ছিল আমার ঝুলিতে। আপনারা ভালো থাকুন। সাথে থাকুন। আবার আগামীকাল আসব নতুন কিছু নিয়ে৷ আজ আসি।

টাটা।

বিষয়	উপকরণ	মিডিয়াম	ফটোগ্রাফি
পেইন্টিং	পেন্সিল, স্কেচবুক, জলরং, তুলি, জল, ইরেজার	জলরং	স্যামসাং F54