এই প্রথম তিতির মুরগি কিনতে গেলাম।

in hive-129948 •  last year 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আপনাদের আশীর্বাদে আমিও সুস্থ আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে তিতির মুরগি কেনার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


IMG_20230824_115133.jpg


কিছুদিন আগে আমি আর দাদা বসে বসে একটু কাজ করছিলাম। হঠাৎ করে দাদা বলল যে, তিতির মুরগি পাওয়া যায় কোথায় নিলয় তুমি কি জানো? আসলে আমরা যে দোকান দিয়ে সব সময় বিভিন্ন ধরনের দেশি মুরগি কিনি সেই দোকানদারের নাম্বার আমার ফোনে সেভ করা থাকে। তাই আমি এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে ওই দোকানদার দাদাকে কল করলাম। তখন দোকানদার দাদা আমাকে বলল যে, এখানে সচরাচর এই তিতির মুরগি পাওয়া যায় না। এরপর উনারা বাজার করতে গেলে যদি তিতির মুরগি পায় তাহলে আমাদের জন্য নিয়ে আসবে।


IMG_20230824_112013.jpg


আমি তখন দোকানদার দাদাকে বললাম যে, উনাদের যে কোন কিছুর বিনিময়ে এই তিতির মুরগি জোগাড় করতে হবে। আসলে আমার কথা শুনে উনারা বললেন ঠিক আছে দাদা আমরা তাড়াতাড়ি এই মুরগি আপনাদের এনে দেব। তখন আমি পুরো ঘটনাটা দাদাকে বললাম। যাইহোক এই ঘটনার ৩-৪ দিন পর ওই দোকানদার দাদা আজ সকালে আমাকে কল করে বললেন যে, তিতির মুরগি তারা পেয়েছেন।


IMG_20230824_112020_edited.jpg


যাইহোক আমি পরমুহূর্তে দাদাকে বললাম যে দাদা ওই তিতির মুরগি পাওয়া গেছে আমি কি ওই মুরগি কিনতে যাব। আসলে সবাই একে তিতির মুরগি বললেও আসলে এটি কিন্তু মুরগী নয়। এটি হলো এক ধরনের পাখি। যাইহোক দাদার অনুমতি পেয়ে আমি বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলাম ওই মুরগি কেনার জন্য। আসলে যাওয়ার সময় রাস্তার কাজ চলছিল বলে রাস্তায় খুব ধুলো ছিল।


IMG_20230824_112025_edited.jpg


যাইহোক আমি কিছুক্ষণ পর ওই মুরগির দোকানে পৌঁছে গেলাম। দোকানে গিয়ে দেখি ওই দোকানদার দাদা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আসলে এই দোকানদার দাদা লোকটি খুব ভালো মনের মানুষ। এরপর আমি তিতির মুরগিটির একটু ছবি তুললাম। তখন ওনারা বললেন, দাদা আমি এই মুরগিটার পা বেঁধে দিই কারণ এই মুরগিটা একবার ছাড়া পেলে কিন্তু উড়ে যাবে। আমি তখন আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম এটি কি উঠতে পারে?


IMG_20230824_112031_edited.jpg


তখন ওনারা আমাকে বললেন যে, এর আগে ওনাদের এই তিতির মুরগি একটা উড়ে চলে গেছে। কারণ আসলে এটি মুরগি নয় এটি হলো পাখি। যাইহোক আমার কথা শুনে তারা মুরগির পায়ে দড়ি বেঁধে দিল এবং আমি ছবি তুলতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর তারা মুরগিটিকে ওজন করল। আসলে মুরগি দুটির ওজন সাড়ে তিন কিলো থেকে একটু বেশি। তখন আমার কথামতো এরা মুরগিটি কেটে গরম জলে পশম ছাড়ানোর জন্য এক মহিলার কাছে দিলেন।


IMG_20230824_112036_edited.jpg


IMG_20230824_112124.jpg


আসলে একটা জিনিস কি তিতির মুরগি কেনা একদিকে লস। কারণ এই তিতির মুরগিতে পশম অনেক বেশি থাকে। উনারা কিন্তু গোটা ওজন করে মূল্য নির্ধারণ করেন। যাইহোক প্রথমে মহিলাটি গরম জলে তিতির মুরগিটিকে ভালো করে সেদ্ধ করে পশম গুলো ছাড়িয়ে নিলেন। আমি ওনাকে বললাম যে, আপনি একটু ভালো করে পশম ছাড়াবেন। কারণ মুরগিতে পশম থাকলে দাদা একটু রাগারাগি করে।


IMG_20230824_112511_edited.jpg


এরপর মুরগির পশম ছাড়ানো হয়ে গেলে মহিলাটি ওই মুরগির গায়ে হলুদ মেখে দিলেন এবং হলুদ মাখা শেষে ওই মুরগি দুটোকে আগুনের উপর একটু সেঁকে নিলেন। এই হলুদ মাখানোর কারণ হলো আগুনের এই বেশি তাপে মুরগিটি বেশি পুড়তে পারে না এবং মুরগির গায়ে কোন গন্ধ হয় না। আর আগুনে পোড়ালে মুরগির চামড়ায় যেসব ছোট ছোট পশম থাকে সবগুলো পুড়ে যায়। যাইহোক উনি খুব দক্ষতার সাথে মুরগিটিকে সেঁকে তখন আবার পুনরায় ওই দাদার কাছে মুরগিটি কাটার জন্য দিলেন।


IMG_20230824_113027_edited.jpg


IMG_20230824_113315.jpg


এরপর ওই দাদাটি মুরগিটিকে সুন্দর করে তার দক্ষতার সাহায্যে ছোট ছোট পিস করতে শুরু করলেন। আসলে উনার কাজের দক্ষতা এবং স্পিড দেখলেই বোঝা যায় যে উনি অনেকদিন ধরে এইসব মুরগীর ব্যবসায় রয়েছে। মুরগি কাটতে কাটতে উনি আমাকে চা খাওয়ার জন্য অফার করলেন। কিন্তু রাস্তায় এত বেশি ধুলো ছিল যে আমি এই ধুলোর ভেতর আর চা খেতে চাইলাম না।


IMG_20230824_113453_edited.jpg


এরপর উনি আমাকে পুনরায় ব্যাগে করে মাংস আমার বড় ব্যাগের ভিতর দিয়ে দিলেন। আসলে তিতির মুরগি আমিও কখনো খাইনি আগে। আর এক কথায় বৌদির হাতের রান্না কিন্তু অসাধারণ। যে একবার বৌদির হাতের রান্না খাবে সে কিন্তু বৌদির বড় ফ্যান হয়ে যাবে। যাইহোক আমি বাড়িতে এসে মাংসটা ধুয়ে দিয়ে বৌদিকে একটু কাজে সাহায্য করে দিলাম।


IMG_20230824_114057_edited.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : BKK-AL 10
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 12/11/2022


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

  ·  last year (edited)

জী দাদা তিতি মুরগি মূলত মুরগি নয়। এ গুলো এক ধরনের পাখি। আমিও তিতি মুরগি কখনো খায়নি। দাদা কত করে কিলো নিলো সেটা বলেলন না। সেটা জানলে ভালো হতো। তিতি মুরগি পেয়ে অবশ্যই দাদা অনেক খুশি হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

তিতির মুরগি আমাদের বাসায়ও কিছু রয়েছে আমি লালন পালন করছি। তবে এখনো আমি তিতির মুরগি মাংস খাই নি। তিতির মুরগি কিনতে যাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। শ্রদ্ধেয় দাদা তিতির মাংস খেয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। দাদার কথা শুনে বোঝাই গেলো খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে মাংস। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আসলে এই মুরগি সম্পর্কে আমার তেমন অভিজ্ঞতা নেই। তবে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম এটি মুরগি নয় এটি এক ধরনের পাখি। দাদার কাছ থেকে শুনে বোঝা গেল তিতির মাংস অনেক মজাদার ছিল এবং সুস্বাদু হয়েছিল খেতে ।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।