শারদীয়া কনটেস্ট ১৪৩১

in hive-129948 •  23 days ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই? আসলে এই উৎসবের দিনগুলোতে আপনারা সবাই খুব ভালো ছিলেন এবং আপনাদের সময়টা খুব ভালো কেটেছে। আসলে পুজো মানে প্রত্যেকটা বাঙ্গালীদের জীবনে একটা আনন্দের উৎসব। কেননা আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি যে কবে আমাদের এই দুর্গাপূজা আসবে। আসলে পূজার দিনগুলো যে কিভাবে আনন্দে এত দ্রুত কেটে যায় তা আমরা কখনো বুঝতে পারি না। "আমার বাংলা ব্লগে" ঠিক প্রতিবারের মতো এবারও শারদীয় কনটেস্ট এর আয়োজন করা হয়েছে। তাই এই কনটেস্টে আমি অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।




|
** ✠ মহাসপ্তমী ✠**
|


থিমের নাম :- ব্যাংককের অরুণ মন্দির।


IMG_20241011_000738669_HDR.jpg


আসলে প্রতি বছরের মতো এই কল্যাণীর লুমিনাস ক্লাব চেষ্টা করে যে তারা বিভিন্ন ধরনের প্যান্ডেল তৈরি করার জন্য। এছাড়াও তারা যেসব প্যান্ডেল তৈরি করে তা দেখতে লাখো মানুষের ভিড় জড়ো হয়ে যায়। তেমনি তারা এবারের প্যান্ডেল তৈরি করেছে ব্যাংককের অরুণ মন্দিরের।


IMG_20241011_000750522_HDR.jpg


আসলে ব্যাংককের সবচেয়ে সুন্দর একটি মন্দির হল এই অরুণ মন্দির। যেটি কিনা ভোরের মন্দির নামেও পরিচিত। ঠিক একই রকম ভাবে এই অরুণ মন্দিরটি যেভাবে প্যান্ডেল হিসেবে তৈরি করেছে তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি আসল না নকল।


IMG_20241011_000842265_HDR.jpg


এই প্যান্ডেল দেখতে আমাদের অনেক বেশি কষ্ট হয়েছিল। কেননা এই প্যান্ডেল দেখতে একদিকে যেমন লোকের ভিড় তেমনি অন্যদিকে লাইন এতটা বড় হয়েছিল যে সেই লাইনে দাঁড়িয়ে প্যান্ডেলের কাছে পৌঁছতে আমাদের প্রায় ৫০ মিনিটের উপর সময় কেটে গিয়েছিল।


IMG_20241011_000929286_HDR.jpg


এছাড়াও যখন প্যান্ডেলের ভিতর সর্বপ্রথম প্রবেশ করলাম তখন প্যান্ডেলের চারিপাশে যেসব কারুকার্য ছিল তা দেখে সত্যিই আমরা মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আসলে এমন কারুকার্য করার জন্য সত্যিই অনেক বেশি ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।


IMG_20241011_000939668_HDR.jpg


কেননা আপনারা ছবিতে দেখতে পারছেন সেটি কিন্তু সম্পূর্ণ নুড়ি পাথর এবং সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আসলে এত সুন্দর ভাবে তারা সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে তৈরি করেছে তা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম।


IMG_20241011_000957775_HDR.jpg


প্রতিটা জিনিস এত সুন্দর ভাবে শিল্পীরা তৈরি করেছেন তা দেখে মুগ্ধ হওয়ারই কথা। তাই আমি এই ভিড়ের মাঝে একটু জোর করে এই কারুকার্য গুলোর ছবি তোলার জন্য চেষ্টা করলাম।


IMG_20241012_000109790_HDR.jpg


আসলে যেরকম প্যান্ডেল তৈরি করেছে ঠিক সেরকম মায়ের মূর্তি খানা। আসলে মায়ের ওই হাসি মুখ দেখলে সত্যিই মনটা যেন ভরে যায়। যদিও প্যান্ডেলের ভিতরে বেশিক্ষণ থাকার অবকাশ নেই। কেননা প্রচুর লোকের ভিড়ে আমাদের খুব দ্রুত প্যান্ডেল ছেড়ে বের হয়ে যেতে হয়।

* সপ্তমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/10/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- বৃন্দাবনের প্রেম মন্দির।


IMG_20241011_014325365_HDR.jpg


আসলে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার বৃন্দাবনে এই প্রেম মন্দিরটি অবস্থিত। প্রতিবছর হাজারো মানুষ এই বৃন্দাবন ভ্রমণ করতে যায় এবং বৃন্দাবনের সৌন্দর্য দেখে তারা সত্যিই মুগ্ধ হয়ে যায়। ঠিক তেমনি আমরা দেখতে গেলাম বৃন্দাবনের প্রেম মন্দিরের প্যান্ডেল।


IMG_20241011_014332289_HDR.jpg


মনে হচ্ছে যেন এই প্যান্ডেলে রাধাকৃষ্ণের মিলন আবার পুনরায় হয়েছে। আসলে এই প্যান্ডেলটি মেইন রোড থেকে একটু ভিতরে হয় আমরা প্রথমে লোকেদের কাছে জিজ্ঞাসা করে সেই প্যান্ডেলের কাছে গেলাম। প্যান্ডেল যখন সর্বপ্রথম দেখতে পেলাম তখন মনে হচ্ছে যেন আমরা সত্যিই বৃন্দাবনে চলে এলাম।


IMG_20241011_014933596_HDR.jpg


এরপর একটা জিনিস আমরা লক্ষ্য করলাম যে প্যান্ডেলের চারিপাশে রাধা কৃষ্ণের বিভিন্ন ধরনের ছবি রয়েছে। আসলে প্রত্যেকটা ছবি দেখে মনে হচ্ছে যে রাধা কৃষ্ণ প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে আছে।


IMG_20241011_014806132_HDR.jpg


যখন ভিতরে প্রবেশ করলাম তখন মায়ের মিষ্টি মুখ খানি দেখে সত্যিই মনটা ভরে গেল। তাই সর্বপ্রথম দুই হাত জুড়ে প্রণাম করে কয়েক সেকেন্ড দেখার সুযোগ পেলাম মায়ের মুখ খানি। আবারো লোকের চাপে দ্রুত প্যান্ডেল থেকে বের হয়ে যেতে হল।

* সপ্তমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/10/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- হ্যারি পটারের হগওয়ার্টস দুর্গ।


IMG_20241011_023356700_HDR.jpg


আসলে হ্যারি পটার আমরা সবাই দেখেছি। এই হ্যারি পটারের কাহিনী গুলোতে আমরা বিভিন্ন ধরনের দুর্গ দেখতে পাই। ঠিক তেমন একটা দুর্গ হল এই হগওয়ার্টস। এই দুর্গে বিভিন্ন ধরনের জাদু শিক্ষা দেওয়া হয়।


IMG_20241011_023430940_HDR.jpg


আসলে কাঁচরাপাড়ায় ত্রিপর্ণ ক্লাব এই দুর্গটি নির্মাণ করেছে। যেহেতু রাত অনেক বেশি হয়েছিল তাই এই প্যান্ডেলে তেমন একটা বেশি লোক ছিল না। ভিতরে যেতেই বিভিন্ন ভয়ঙ্কর মূর্তি দেখে সত্যি ভয় পেয়ে গেলাম।


IMG_20241011_023448864_HDR.jpg


আসলে প্রত্যেকটা কারুকার্য শিল্পীরা খুব সুনিপুনভাবে তৈরি করেছেন। আর রাতের বেলায় এই ধরনের ভাস্কর্য গুলো দেখে সত্যি খুব ভয় লাগছিল।


IMG_20241011_023550559_HDR.jpg


মায়ের এই মূর্তি দেখে মনে হচ্ছিল যেন শিল্পী পাথর দিয়ে এই মূর্তিটা তৈরি করা হয়েছে। তাই কিছুক্ষণ মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করে আবার পুনরায় প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে আসলাম।

* সপ্তমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/10/2024
লোকেশন


|
** ✠ মহা অষ্টমী ✠**
|


থিমের নাম :- হস্তশিল্পের কারুকার্য।


IMG_20241011_024615862_HDR.jpg


বাংলার সমস্ত জেলায় ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য লোকশিল্প ও হস্তশিল্প। আসলে বাঙ্গালীদের মতো এমন কারুকার্যের শিল্পী আর পৃথিবীর হয়তোবা কোথাও নেই। ঠিক এ বছর ত্রিনয়নী সংঘ এই হস্তশিল্পের প্রাসাদ তৈরি করে সবাইকে মুগ্ধ করে দিয়েছেন।


IMG_20241011_024431084_HDR.jpg


যখন আমরা প্যান্ডেলে প্রবেশ করছিলাম তখন প্যান্ডেলের গায়ে যে উঁচু উঁচু জিনিস গুলো দেখতে পাচ্ছিলাম সেগুলো ছিল বাঁশের তৈরি ঝুড়ি। এছাড়াও এরা এদের প্যান্ডেলে কোন ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার করেনি।


IMG_20241011_024440237_HDR.jpg


আরেকটু ভিতরে যেতেই দেখলাম যে দেওয়ালের গায়ে বেতের তৈরি দারুন একটা ডিজাইন। আসলে ডিজাইনগুলো দেখতে যতটা সুন্দর ঠিক ততটা কঠিন এইগুলো তৈরি করতে।


IMG_20241011_024505344_HDR.jpg


একদম মায়ের মূর্তির সামনে উপরে যে বড় ঝাড় বাতিটি দেখতে পারছেন এই ঝাড়বাতির চারিপাশে হস্তশিল্পের বিভিন্ন কারুকার্য দিয়ে সাজানো হয়েছে।


IMG_20241011_024457363_HDR.jpg


মায়ের মূর্তির দিকে তাকালে মনে হচ্ছে যে মা কোন সবুজ অরণ্যের মধ্যে রয়েছেন। মায়ের এই মিষ্টি মুখ খানি দেখে সত্যিই মনটা ভরে গেল।

* অষ্টমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/11/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- যোধপুরের উমেদ ভবন।


IMG_20241011_031546621_HDR.jpg


ভারতের রাজস্থানের যোধপুরে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রাসাদের মধ্যে এই উমেদ প্রাসাদটি অন্যতম। আসলে মহারাজা উমেদ সিং এর নাম অনুসারে এই প্রাসাদটির নামকরণ করা হয়। আর এই প্রাসাদের একটি অংশে রয়েছে জাদুঘর। প্রাসাদের একটি অংশ তাজ হোটেল দ্বারা বর্তমানে পরিচালিত হয়।


IMG_20241011_031622040_HDR.jpg


ঠিক এই প্যান্ডেলটি দেখে মনে হচ্ছিল যেন আমরা রাজস্থানের যোধপুরে চলে এসেছি। কেননা এত সুন্দর ভাবে শিল্পীরা এই প্রাসাদটি তৈরি করেছেন তা দেখে বোঝার উপায় নাই যে এটি নকল প্রাসাদ।


IMG_20241011_031851416_HDR.jpg


যাইহোক এই প্যান্ডেলের সামনে একটি বড় পুকুর ছিল। তাই আমরা পুকুরের পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে এই প্যান্ডেলের দিকে আসছিলাম। যদিও মানুষের ভিড় অনেক বেশি ছিল তাই আমরা আস্তে আস্তে প্যান্ডেলের ভিতরে প্রবেশ করলাম।


IMG_20241011_031944871_HDR.jpg


আসলে প্যান্ডেলের ভিতরে যখন প্রবেশ করলাম তখন উপরের ঝাড় বাতিটি দেখে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম। আসলে ঝাড় বাতিটি দেখে মনে হচ্ছিল রাজাদের আমলের বড় ঝাড়বাতি।


IMG_20241011_031935564_HDR.jpg


আর মায়ের স্বর্ণ উজ্জ্বল মুখখানা দেখে সত্যিই মনটা ভরে গেল। কেননা ভাস্কর্য হুবহু সোনা দিয়ে মাকে মনে হচ্ছে তৈরি করেছেন।

* অষ্টমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/11/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- ছদ্মবেশ।


IMG_20241011_222338016_HDR.jpg


প্রথমত ছদ্মবেশ বলতে আমরা আমাদের নিজেদের পরিচয়কে গোপন করাতেই বোঝাই। ঠিক অনেকে রয়েছে যারা মুখে মুখোশ পরে নিজেদের চেহারাকে ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে রাখে। ঠিক এই ক্লাবটি এই ধরনের থিমে প্যান্ডেলটি তৈরি করেছেন।


IMG_20241011_222356894_HDR.jpg


প্যান্ডেলের বাইরে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ দিয়ে শিল্পী যে সুন্দর একটা দৃশ্যের জন্ম দিয়েছেন তা দেখে আমাদের মনটা সত্যিই ভরে গেল। আসলে প্যান্ডেল দেখে খুব সহজে বোঝা যায় যে এই প্যান্ডেলের থিমের নাম।


IMG_20241011_222420917_HDR.jpg


প্যান্ডেলের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য শিল্পীরা তাদের নিজ হাতে তৈরি করে একদম পুরো প্যান্ডেলটি কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন।


IMG_20241011_222445496_HDR.jpg


এছাড়াও উপরের একটা ঝাড়বাতি তারা নিজেও হতে এত সুন্দর ভাবে তৈরি করেছেন যেটি দেখে বর্তমান সময়ের বড় বড় ঝাড়বাতির কোম্পানিগুলো হার মেনে যাবে।


IMG_20241011_222520189_HDR.jpg


মায়ের মূর্তির সামনের চারিদিকটা এত সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন মুখোশ দিয়ে তা দেখে আমি সত্যিই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করলাম।


IMG_20241011_222535507_HDR.jpg


এছাড়াও প্যান্ডেলের গায়ে প্রতিটি জায়গায় তারা বিভিন্ন ধরনের লোকশিল্পের ভাস্কর্য তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।


IMG_20241011_222532102_HDR.jpg


এবারে শিল্পী একটু অন্যরকম ভাবে মায়ের মূর্তিটা তৈরি করেছেন। আসলে মায়ের মূর্তি দেখে বোঝা যাচ্ছে যে শিল্পী মাকে এবার একটু নতুন রূপে আমাদের সামনে পরিচয় করে দিয়েছেন।


IMG_20241011_222603140_HDR.jpg


আসলে মায়ের দর্শন শেষে যখন আমরা বের হয়ে আসছিলাম তখন বের হবার গেটের সামনে ছদ্মবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের জিনিস দেখতে পেলাম।

* অষ্টমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/11/2024
লোকেশন


|
** ✠ মহা নবমী ✠**
|


থিমের নাম :- কোমল গান্ধার।


IMG_20241011_225403564_HDR.jpg


কোমল গান্ধার বলতে আমরা একটি মিষ্টি সুর বুঝে থাকি। আর বাংলা চলচ্চিত্রে এই কোমল গান্ধার এর নাম অনুসারে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোমল গান্ধার যা সার্প স্কেলের একটি শর্ট নোট নামেও পরিচিত।


IMG_20241011_225456222_HDR.jpg


আসলে এই প্যান্ডেলের কারুকার্য অন্যান্য প্যান্ডেল অপেক্ষা সম্পূর্ণ আলাদা। কেননা এত সুন্দরভাবে একটা বড় মাঠের মাঝে এই প্যান্ডেলটি রাতের আলোতে যেন ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পীরা।


IMG_20241011_225540017_HDR.jpg


মনে হচ্ছে যেন আমরা বড় কোন একটা মন্দির প্রাঙ্গনে প্রবেশ করছি। এই প্যান্ডেলের উপরিভাগে চারিদিক কাচের টুকরো দিয়ে সুন্দর করে বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য তৈরি করেছে।


IMG_20241011_225623998_HDR.jpg


এরপর মায়ের মূর্তিটা দেখার জন্য যখন মেইন প্যান্ডেলের পিছনের দিকে গেলাম তখন দেখতে পেলাম যে সুন্দর একটা প্যান্ডেলের ভিতর মায়ের মূর্তি রয়েছে।


IMG_20241011_225701450_HDR.jpg


দূর থেকে যদিও মায়ের মূর্তিটা তেমন ভালোভাবে বুঝতে পারছিলাম না তাই একটা দাদাকে রিকোয়েস্ট করায় সে আমার মোবাইলটা নিয়ে মায়ের কাছে গিয়ে ছবি তুলে দিলেন।


IMG_20241011_225809553_HDR.jpg


আসলে প্রত্যেকটা প্যান্ডেলে প্রত্যেকটা শিল্পী মায়ের মূর্তি গুলোর মধ্যে যেন সৃজনশীলতা প্রবেশ করিয়েছেন। এত সুন্দর করে মায়ের মূর্তি তৈরি করেন তা দেখে সত্যিই আমরা অবাক হয়ে যাই।

* নবমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/12/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- রুপোর মহল।


IMG_20241011_231958861_HDR.jpg


পূর্বেকার দিনে রাজা মহা-রাজারা তাদের প্রাসাদ তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান ধাতুর ব্যবহার করতেন। কেননা তাদের তখন শখ সৌখিনতার কোন শেষ ছিল না। ঠিক তেমনিভাবে এবারের এই পুজো প্যান্ডেলটি রুপোর মহল নামে স্বীকৃতি দিয়েছেন।


IMG_20241011_232045085_HDR.jpg


কিন্তু আসলে এটি অ্যালুমিনিয়ামের পাতলা শীট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যদিও দূর থেকে মনে হচ্ছিল যে এই পুরো প্যান্ডেলটি রুপোর পাতলা শীট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।


IMG_20241011_232105387_HDR.jpg


ঠিক একইভাবে প্যান্ডেলের ভেতরের চারিদিকটা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে তা দেখে মনে হলো যেন আমরা কোন রুপোর তাজমহলে প্রবেশ করেছি।


IMG_20241011_232123020_HDR.jpg


এছাড়াও উপরের ঝাড়বাতির চারিপাশে তারা খুব সুন্দর ভাবে ডিজাইন করে সবাইকে আশ্চর্য করে দিয়েছেন।


IMG_20241011_232130996_HDR.jpg


এই রুপোর মহলের মাঝখানে মায়ের সোনা মাখা মুখ খানি একদম চকচক করছিল। এই পূজা প্যান্ডেলের ভাস্কর্য খুব সুন্দরভাবে মায়ের প্রতিমা তৈরি করেছেন।

* নবমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/12/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- দে দে মাঝি পাল তুলে দে।


IMG_20241011_233800190_HDR.jpg


বাংলার মাঝিরা যখন পাল তুলে কোন নদী দিয়ে চলাচল করে তখন সেই দৃশ্যটা আমাদের সবার খুব ভালো লাগে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই পাল তোলা নৌকা আর তেমন একটা বেশি দেখা যায় না। বিভিন্ন সাহিত্য এবং উপন্যাসে এই মাঝির পাল তুলে নৌকা চালানোর দৃশ্যের উল্লেখ রয়েছে।


IMG_20241011_233905005_HDR.jpg


এই পূজার প্যান্ডেলের মাধ্যমে নদীর বুকে ভেসে চলা পাল তোলা নৌকার দৃশ্যটি শিল্পী খুব দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এছাড়াও মনে হচ্ছে যে নদীর বুক থেকে জল পরীরা উপরে উঠে এসেছে। দারুন একটা দৃশ্যের সৃষ্টি করেছেন এই প্যান্ডেলের শিল্পীরা।


IMG_20241011_234034618_HDR.jpg


এছাড়াও আমরা যখন প্যান্ডেলের ভিতরে প্রবেশ করলাম তখন চারিপাশ দেখে মনে হচ্ছে যে আমরা গভীর জলের নিচে অবস্থান করছি এবং আমাদের উপর দিয়ে সামুদ্রিক মাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে।


IMG_20241011_234125258_HDR.jpg


আসলে এত সুন্দর করে চারিদিকটা সাজানো রয়েছে এবং মাঝে মাঝে এই নীল আলোর আভায় মনে হচ্ছিল আমরা যেন গভীর সমুদ্রের নিচে জল পরীদের সাথে চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছি।


IMG_20241011_234117823_HDR.jpg


মায়ের সেই রাগান্বিত মুখখানা দেখে মনে হচ্ছে যেন মা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শত্রু বধ করতে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন।

* নবমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/12/2024
লোকেশন


|
** ✠ বিজয়া দশমী ✠**
|


থিমের নাম :- প্রেম মন্দির।


IMG_20241012_001014874_HDR.jpg


আমরা সবাই জানি যে বৃন্দাবনে শুধুমাত্র একটা প্রেম মন্দির নেই। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় আমরা তখন ঘুরতে যাই তখন বিভিন্ন প্রেম মন্দির আমরা দেখতে পাই। যেখানে আমাদের রাধা কৃষ্ণের প্রেমলীলা উল্লেখ রয়েছে। আমার কাছে মনে হয় যে বৃন্দাবনের সব জায়গায় রাধা কৃষ্ণের প্রেম লীলা লুকিয়ে রয়েছে।


IMG_20241012_001447398_HDR.jpg


এই প্যান্ডেল বৃন্দাবনের অন্যতম আরেকটা প্রেম মন্দিরকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে। আসলে মন্দিরের চারিপাশে আলোর আভা সত্যিই মনমুগ্ধকর। মনে হচ্ছে প্রেমের আলোতে সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।


IMG_20241012_001527156.jpg


প্যান্ডেলের চারপাশে শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রী রাধার বিভিন্ন ধরনের ছবি রয়েছে। আসলে মনে হচ্ছে যে শ্রী রাধা এবং শ্রীকৃষ্ণ এখানে গভীর ভালোবাসায় আচ্ছন্ন রয়েছেন।


IMG_20241012_001902993_HDR.jpg


আসলে এই মন্দিরটা কিন্তু পুরোটাই প্লাস্টিকের ছোট ছোট চামচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আপনারা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন যে ছোট ছোট চামচ গুলো কিভাবে আঠা দিয়ে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে।


IMG_20241012_001703891_HDR.jpg


এছাড়াও প্যান্ডেলের ভিতরে যখন প্রবেশ করলাম তখন উপরের সুন্দর ডিজাইন দেখে আমাদের সত্যিই সবার মন ভরে গেল। কেননা পুরোটা এত সুন্দর করে সাজানো রয়েছে যা বারবার দেখতে ইচ্ছে করে।


IMG_20241012_001801811_HDR.jpg


প্যান্ডেলের ভিতরে চারপাশে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি খুব সুন্দরভাবে প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে সাজানো রয়েছে। যদিও দু একটা সেলফি নিতে কিন্তু ভুললাম না এই ঠাকুরের ছবি সামনে।


IMG_20241012_002102192_HDR.jpg


এই প্যান্ডেলের ভেতরের মায়ের মূর্তির সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। মায়ের মুখখানা দেখতে খুব মিষ্টি লাগছিল। তাই দুহাত জুড়ে প্রণাম করে প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে আসলাম।

* দশমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/13/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।


IMG_20241012_010639285_HDR.jpg


এই প্যান্ডেলের প্রধান থিমের নামকরণ করা হয়েছে বিশ্ব কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কবিতা থেকে। আসলে কবি তার এই কবিতার মাধ্যমে সৃষ্টির প্রতিটা জিনিস সম্পর্কে যে সুন্দরভাবে দৃশ্যগুলো উল্লেখ করেছেন তা সত্যিই অসাধারণ।


IMG_20241012_010808574_HDR.jpg


এই প্যান্ডেলের প্রত্যেকটা জিনিস একদম নিখুঁতভাবে শিল্পীরা তৈরি করেছেন। আপনারা যে রাজহংসের ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন তার পাখনা গুলো কিন্তু পুরোটাই পাতা দিয়ে তৈরি।


IMG_20241012_010816695_HDR.jpg


প্যান্ডেলে যখন প্রবেশ করছিলাম তখন চারিপাশের জিনিসগুলো খুব সুনিপুণভাবে দেখছিলাম। কিছু কিছু জিনিস আবার সোলার তৈরি ছিল। আসলে প্যান্ডেলটি দেখে তার সৃজনশীলতা বোঝা যাচ্ছিল।


IMG_20241012_010950916_HDR.jpg


আবার প্যান্ডেলের মধ্যে কিছু কিছু অংশ ছোট ছোট কাঠের চামচ এবং কাঠের গোল বল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যেটি কিনা আপনারা ছবিতে দেখতে পারছেন।


IMG_20241012_010921375_HDR.jpg


এছাড়াও প্যান্ডেলের ভেতর উপরের অংশটি বিভিন্ন ধরনের গাছের নিচের অংশ এবং পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যদিও হঠাৎ করে দেখে বোঝা যায় না যে এগুলো এত সুন্দর ভাবে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।


IMG_20241012_010938518_HDR.jpg


পরবর্তীতে আমরা সুন্দর মায়ের মুখখানা দেখে কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে লাগলাম। এরপর লোকের চাপে পুনরায় প্যান্ডেল থেকে বের হয়ে আসতে হলো।

* দশমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/13/2024
লোকেশন


থিমের নাম :- সমারোহে এসো হে পরমতর।


IMG_20241012_015903258_HDR.jpg


আসলে থিমের নামটি সাধারণত একটি গানের লাইন। যেটি বিখ্যাত গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের অন্যতম একটি বিখ্যাত গান। এই লাইনের মাধ্যমে ক্লাবটি মাকে পুনরায় পৃথিবীতে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করেছেন। এছাড়াও অরিজিনাল গানের প্রতিটা লাইন সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতন।


IMG_20241012_015909297_HDR.jpg


আপনারা এই প্যান্ডেলটি দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। কেননা প্যান্ডেলের বাইরের দিকে মায়ের মুখের মূর্তিটা এত সুন্দর ভাবে তৈরি করে চারিদিকটা সাজিয়েছেন তা দেখে সত্যিই প্রথমে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তারা অনেকটা ইউনিক টাইপের প্যান্ডেল তৈরি করেছেন।


IMG_20241012_020133960_HDR.jpg


আসলে মায়ের ভাস্কর্যের পাশে বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য করা হয়েছে যেগুলো অনেক বেশি নিখুঁত ছিল। আর প্রায় শেষ রাতের দিকে আমরা এই প্যান্ডেলটি ঘুরতে গিয়েছিলাম তাই এমন একটা বেশি ভিড় ছিল না।


IMG_20241012_015933036_HDR.jpg


এছাড়াও প্যান্ডেলের দুই পাশে ছোট ছোট বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য তৈরি করেছেন শিল্পীরা। যা দেখতে খুব ভালো লাগছিল।


IMG_20241012_020009804_HDR.jpg


আপনারা যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন সেই ছবিটা ঠিক গেটে ঢোকার মুহূর্তের ছবি। খুব সুন্দরভাবে ক্লাবের নাম এবং গেটের এন্ট্রির জায়গাটা তারা সাজিয়েছেন।


IMG_20241012_020126600_HDR.jpg


এবছর তারা মায়ের মূর্তিকে একটু অন্যরকম ভাবে সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আসলে মায়ের মুখ খানি দেখতে আমার খুব ভালো লাগছিল তাই শেষের কিছুটা সময় এই প্যান্ডেলের ভিতর মায়ের সামনে প্রার্থনা করে কাটিয়ে দিলাম।

* দশমীর ফটোগ্রাফি *
ক্যামেরা পরিচিতি : Motorola
ক্যামেরা মডেল : Motorola edge 50 pro
ক্যামেরা লেংথ : 5.89 mm
তারিখ : 10/13/2024
লোকেশন




আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

দাদাকে অনেক ধন্যবাদ কারণ দাদার প্রতিযোগিতাটির অ্যানাউন্স না হলে এত সুন্দর সুন্দর পুজো প্যান্ডেল এবং ঠাকুর দেখতে পেতাম না। বাংলায় না থেকে দুর্গাপুজোর না দেখতে পাওয়ার দুঃখগুলো অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতোই মিটে যাচ্ছে। কি চমৎকার সব থিম। প্রবাসে তো সেভাবে থিম হয় না ওখানে বাঙালির আবেগের পূজো হয়। খুব ভালো লাগলো আপনার ছবিগুলো দেখে।

হ‍্যারি পোটারের দূর্গের থিম এটা অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। চমৎকার ছিল এইটা। আর এক একটা জায়গার ভিন্ন ভিন্ন থিম সত্যি অসাধারণ। সবগুলো চমৎকার লাগল আমার কাছে। ঘোরাঘুরি এবং ফটোগ্রাফি বেশ চমৎকার করেছেন ভাই আপনি। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা।।

আপনি শারদীয়া কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন দেখে ভালো লাগলো দাদা।আপনি তো দেখছি সবগুলো দিনের ফটোগ্রাফি একটি পোষ্টে শেয়ার করেছেন।এটা ভালোই হয়েছে একবারে দেখতে পেলাম সবগুলো প্যান্ডেল ও প্রতিমাগুলি।এককথায় চোখ ধাঁধানো সবগুলো থিম ও ফটোগ্রাফিগুলি।ধন্যবাদ দাদা।