বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ১০

in hive-129948 •  2 years ago 

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ ভ্রমণের দশম পর্ব শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।


IMG_20221222_102540.jpg

তো কয়েকদিন পর সকাল সকাল জ্যেঠু আমায় ঘুম থেকে তুলে বলল, তোর এক কাকার পুকুরে আজ মাছ ধরছে। চল দুজনে মিলে গিয়ে মাছ ধরা দেখি।



IMG_20221222_102630.jpg

তো সকালবেলা হাতমুখ ধুয়ে বেরোনোর সময় মামা আমাদের সাথে যোগ দিলো। কাকার ওই পুকুরে গিয়ে দেখি, তাদের মাছধরা অনেকটা কমপ্লিট হয়ে গেছে। ওই পুকুরের ভিতর ছোট্ট একটা নৌকা ছিল। কিন্তু নৌকাতে উঠে আমার প্রথমে খুব ভয় লাগছিল কারণ নৌকাটা খুব ছোট ছিল। তো পরবর্তীতে আমি নৌকা থেকে নেমে পুকুরের পাড়ে বসে ওদের মাছ ধরা দেখছিলাম।



IMG_20221222_104607.jpg


জাল যখন পুকুরের পাড়ের দিকে টেনে নিয়ে আসছিল তখন জালের ভিতর দিয়ে বড় বড় মাছ লাফালাফি করছিল। কিছু কিছু মাছ তো লাফ দিয়ে একদম জালের বাইরে চলে যাচ্ছিল।



IMG_20221222_110732.jpg



আসলে এই সময়টা খুব একটা বিপদজনক সময়। কারণ যে কোন সময় মাছ লাফ দিয়ে নাকে মুখে আঘাত করলে নাক মুখ একদম ফেটে যাবে। তারপর আবার মাছগুলো অনেক বড় সাইজ। এই পুকুরে বিভিন্ন ধরনের মাছ আছে। সবথেকে বেশি রুই আর কাতলা। এছাড়া অনেক বড় বড় চিংড়ি মাছ রয়েছে।

IMG_20221222_112011.jpg

আসলে এই মাছ ধরতে গ্রামের অনেক দাদা-কাকারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। একটা মজার জিনিস হল, তারা একসাথে এই মাছ ধরছে এবং বিকালে আবার এই মাছ রান্না করে একসাথে সবাই মিলে খাবে। আর কয়েকজন মিলে এই মাছ ভ্যানে করে নিয়ে বাজারে গিয়ে বিক্রি করবে।

IMG_20221222_112048.jpg



আসলে মাছ ধরা যতটা সহজ মনে হচ্ছে অতটা সহজ কিন্তু নয়। ডুব দিয়ে জলের নিচ দিয়ে এই জাল টানা হয়। তারপর আবার পুকুরে বিভিন্ন ধরনের ডালপালাও রয়েছে। তো দূরে মামা নৌকার উপর বসে ওদের মাছ ধরা দেখছিল। কিন্তু আমি আর নৌকায় যেতে পারলাম না কারণ যদি পড়ে যাই।



IMG_20221222_112922.jpg



চিংড়ির পা-গুলো অনেক বড় ছিল। আর এই বড় দুটো পা দিয়ে যদি কাউকে একবার চিমটি মেরে ধরে তাহলে রক্ত বের করেই ছাড়বে। আর এই চিংড়ি মাছের ঘিলু খেতে খুব সুস্বাদু। সবাই মিলে আনন্দ করে মাছ ধরছিল। কেউ কেউ আবার বিড়ি ধরাছিল আবার কেউ পান খাচ্ছিল।



IMG_20221222_122407.jpg



তো মাছ ধরা শেষ হয়ে গেলে ওই কাকা আমার হাতে কতগুলো মাছ দড়ি দিয়ে বেঁধে দিল। আমি বললাম, এই মাছ দিয়ে আমি কি করব। তখন কাকা বলল, বাড়ি নিয়ে গিয়ে এই মাছগুলো রান্না করে খাবি। আসলে গ্রামের মানুষ গুলো এরকমই হয়। আপনি যে কোন গ্রামের মানুষের বাড়িতে যাবেন আর তাদের আদর আপন দেখলে আপনি বিস্মিত হয়ে যাবেন।

IMG_20221222_122424.jpg


তো মাছ ধরা শেষ হয়ে গেলে সবাই এই মাছ ড্রামে করে বাজারের দিকে নিয়ে গেল। আমি এই মাছ দুটো হাতে করে একদম রাজকীয় স্টাইলে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আসলে খুব ভালো লাগছিল। এরকম তাজা মাছ হাতে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি এই আমার প্রথম।

মাছগুলো কিন্তু খুবই সুস্বাদু ছিল। কারণ আমরা শহরের মানুষ এই জ্যান্ত মাছ সচরাচর পাই না। আর এইসব পুকুরের মাছের স্বাদের তুলনা হয় না।


তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।


সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।


11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif


IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!