কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সকালবেলা দাদার বানানো চা খেতে খেতে আর তার সাথে সবাই মিলে আড্ডা গল্পগুজব করতে করতেই ভোরের আলো ফুটে গেল। চারদিকটা সুন্দর পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে মনের মধ্যে তখন কেমন বলে উঠলো অনেক দিন পর আবার সকাল দেখলাম এইভাবে জেগে থেকে। শেষবার রাত থেকে এমন ভোর হওয়া দেখেছিলাম দুর্গাপুজোর সময়। আমি আর আমার একটা দাদা মিলে একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম যেহেতু এখন তেমন কোন কাজ নেই। আর এই এলাকাটা যেহেতু একটু গ্রামের দিকে তাই চারপাশটা একটু ঘুরতে ইচ্ছা করছিল। তাই দাদা আর আমি বেশ কিছুক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে এদিক ওদিক ঘুরে বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি ফিরে দাদারা সবাই মিলে চলে গেল বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে, যেহেতু বিয়ে বাড়ি চারিদিকে কাজের অভাব নেই। আমিও লেগে পড়লাম মাসির সাহায্য করতে। সবকিছু গুছিয়ে রেখে চলে গেলাম বোনকে সাজাতে। কারণ সকাল সকাল বৃদ্ধি পূজো শুরু হয়ে যাবে আর তার আগেই বৃদ্ধির কিছু ফটোশুট করে নিতে হবে। সেই জন্য বোনকে বললাম তাড়াতাড়ি সাজগোজ করে নিতে। যেহেতু আমি মেকআপ করতে পারি, তাই আমি বোনের সুন্দর করে মেকআপ করে দিলাম এবং তারপর আমার একটা বৌদি ওকে শাড়ি পরিয়ে দিল।
আমি আর বৌদি মিলে বোনকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রেডি করে দিলাম তারপর শুরু হয়ে গেল বোনের ফটোশুট। ছবি তোলা হয়ে গেলে তারপর শুরু হয়ে গেল বোনের বৃদ্ধির পূজো। বৃদ্ধি পূজো সম্পন্ন হওয়ার পর এবার আমাদের যেতে হবে জল আনতে। আসলে গঙ্গা নদী বা যেকোনো নদীতেই যেতে হয় কিন্তু আমাদের এখানে যেহেতু কোন নদী নেই তাই আমরা কাছাকাছি একটি মন্দিরের ভেতরে অনেক সুন্দর একটি পুকুর ছিল সেখান থেকেই জল আনতে গেছিলাম। আমরা ব্যান্ড বাজনার সাথে সবাই নাচ করতে করতে গেছিলাম আবার জল নিয়ে নাচ করতে করতে অনেক মজা করে জল টা নিয়ে এসেছিলাম। আর এই জলটাই গায়ে হলুদের পর বোনের মাথায় ঢেলে স্নান করানো হবে। আগেকার সময় এই এক কলসি জলে যেটুকু স্নান হয় সেটুকুই করতে হতো কিন্তু বর্তমান সময় যেহেতু পাল্টেছে তাই ওই কলসি টা ঢেলেই বাথরুমে গিয়ে আবার ভালো করে স্নান করা যায়। জল নিয়ে আসার পর আমাদের কাছে অনেকটা সময় ছিল যে সময়ে কোন কাজ নেই। তাই আমরা ভাই-বোনেরা আর বৌদি মিলে অনেকটা সময় ধরে গল্প গুজব করছিলাম এবং বোনের হবু শ্বশুরবাড়ির গল্প শুনছিলাম।
আমরা গল্প করতে করতেই মাসি এসে বলল যে ছেলের বাড়ি থেকে হলুদ এবং তত্ত্ব নিয়ে আসছে তাই আমরা যেন একটু সেই ভাবে প্রস্তুত হয়ে থাকি। কারণ তাদের একটু আপ্যায়ন করতে হবে। ছেলের বাড়ির লোক এসে গায়ে হলুদ দেওয়ার হলুদ দিয়ে গেল এবং তার সাথে কিছু তত্ত্বও দিয়ে গেল। আমরা আর দেরি না করে সাথে সাথেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু করে দিলাম। কারণ গায়ে হলুদের পরপরই শুরু হয়ে যাবে বোনকে কনে সাজানো আর এই কনে সাজাতে অনেক বেশি সময় দরকার হয়। তাই খুবই আনন্দের সহকারে আমরা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলাম। কিন্তু এখনকার সময় যেহেতু সবার একটু সাজগোজের উপর ভালোবাসা বেড়েছে সেই জন্য কেউ আর আগের মতো হলুদ নিয়ে একে অপরের গায়ে মাখামাখি করে না। আর এখন বিয়ের কনে কেও খুব কম গায়ে হলুদ দেয়। মানে যেটুকু না দিলেই নয় সেটুকুই শুধু হলুদটা ছোঁয়ায়। কারণ পুরো মুখ ভর্তি করে হলুদ মাখলে পরে মেকআপ মুখে লাগতে চায়না। সেজন্য এখন কেউ আগের মত অত বেশি করে হলুদ মাখে না। গায়ে হলুদ সম্পন্ন হলেই বোন স্নান করে তাড়াতাড়ি চলে যায় বিয়ের সাজে সাজতে।
বোনের বিয়ের সাজ সম্পূর্ণ হলে আমাদের কাছে আসে আমরা কতদূর সাজগোজ করে তৈরি হয়েছে সেটা দেখার জন্য। সত্যি কথা বলতে তখন বোনকে দেখে এতটাই ভালো লাগছিল যে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। যে বোনকে এত বছর ধরে ছোট থেকে বড় হতে দেখেছি সে এখন অন্য কারোর স্ত্রী হতে চলেছে, প্রতিটা মেয়ের এইভাবে নিজের ঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে ভাবলেই খুবই কষ্ট লাগে মনে। তাড়াতাড়ি আমরা সবাই সাজগোজ সম্পন্ন করে চলে গেলাম লজে। একটি বড় লজ বুক করা হয়েছিল আমার বোনের বিয়ের জন্য। তাই সেখানেই সবাই মিলে চলে গেছিলাম অনেক বেশি তাড়াহুড়ো করে, কারণ বরযাত্রী আসার আগেই আমাদের সবার পৌঁছাতে হবে এবং বরের প্রবেশের গেট আটকাতে হবে। আসলে আমাদের এই বিয়ের মধ্যে এটা খুবই মজাদার একটি ব্যাপার যে বরযাত্রীর গেট আটকে রেখে আমরা তাদের প্রবেশের জন্য কিছু টাকা দাবি করতে পারি। আর সেটা বরযাত্রীর দিতেই হয় এবং তারপরেই আমরা তাদের প্রবেশ করতে দেই। আর এই কাজগুলো করে থাকে বিশেষ করে বরের ছোট শালীরা, বৌদি এবং বোনেরা যারা মেয়ের বাড়ির থাকে। আর আমরা এমন করে গেট আটকে কিছু উপার্জন করে তারপর বরযাত্রীকে প্রবেশ করতে দিলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি কি সুন্দর করে আপনার বোনকে সাজিয়েছেন এবং লালপাড় সাদা শাড়িতে কি অপূর্ব দেখতে লাগছে যেন মনে হচ্ছে সাক্ষাৎ লক্ষ্মী বসে রয়েছেন। বিয়ে বাড়ি মানেই মজা হইহুল্লোড় এবং নানান রিচুয়াল এর মধ্যে দিন কেটে যায় ঝড়ের মত। আপনার বোনের বিয়ে বাড়ির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit