কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আমরা কোথায় জন্মগ্রহণ করব এবং আমাদের জীবনধারা কেমন চলবে, আমাদের কাদের সাথে বিয়ে হবে অর্থাৎ আমাদের জীবনসঙ্গী কে হবে? তার সাথে আমাদের জীবনটা কেমন কাটবে এছাড়া আমাদের মৃত্যু কোথায় কিভাবে হবে সবকিছুই নির্ভর করে ভগবানের ওপর ভগবান আমাদের যেমন ভাবে চালাবে আমরা সেই ভাবে চলতে বাধ্য। তেমনি আমরা কোন পরিবারে জন্মগ্রহণ করব, কেমন সৌন্দর্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করব, কেমন আমাদের দেখতে হবে সেগুলো সব নির্ভর করছে ভগবানের উপর। আমরা কখনোই নিজে আমাদের রূপ রং আমরা কেমন দেখতে চাই এগুলো আমরা নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। আর জন্মগ্রহণের পরও আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের শরীর কোনভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা যেমন গায়ের রং নিয়ে জন্মগ্রহণ করি বা যেমন মুখমণ্ডল এবং শরীর নিয়ে জন্মগ্রহণ করি সেটা নিয়েই সুখে থাকা হল বুদ্ধিমানের কাজ। আসলে আমরা চাইলেও কখনো আমাদের শরীরের রং পরিবর্তন করতে পারবো না। যদিও বর্তমানে অত্যাধুনিক অনেক ট্রিটমেন্ট বেরিয়েছে তবুও সেটা কতটা কার্যকর সেটা জানিনা। তবে যেটুকু জানি সেটা হল মানুষের রূপ গায়ের রং নিয়ে কখনোই কাউকে ছোট করা বা বাজে কথা বলা কখনোই উচিত নয়। কারণ প্রত্যেকটি মানুষ তাদের নিজস্ব জায়গায় নিজস্ব সৌন্দর্যে অনেক বেশি সুন্দর।
অনেক সময় দেখা যায় যখন কোন শিশু সদ্য ভূমিষ্ঠ হয় অর্থাৎ সদ্য জন্ম গ্রহণ করে তখন তাদের পরিবারের সবাই সেই সদ্য জন্মগ্রহণ করা শিশুটিকে দেখার জন্য আসে। এবং সেই শিশুটিকে দেখার পর কিছু কিছু মানুষ তার গায়ের রং নিয়ে কথা বলা শুরু করে। যদি শিশুটি সুন্দর ফর্সা দেখতে হয় তাহলে তার প্রশংসায় কোন ত্রুটি থাকে না, আর যদি শিশুটি একটু শ্যাম বর্ণ বা গায়ের রং একটু চাপা হয় তাহলে তার গায়ের রং নিয়ে নানান মন্তব্য করা শুরু করে দেয়। কিন্তু যারা এইসব গায়ের রং নিয়ে মন্তব্য করে তাদের বোঝা উচিত যে একটি সদ্যোজাত শিশু সে কখনো নিজের গায়ের রং নিজে পছন্দ করে নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে না। সে তার জিনগত যে গায়ের রং পায় অথবা যে রং তার ভাগ্যে থাকে সেটাই নিয়ে সে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু সব মানুষ এতটাও শিক্ষিত বা বুদ্ধিমান হয় না যে তারা একটু ভেবেচিন্তে কথা বলবে। ছোট শিশু থেকে একদম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যন্ত কেউই বাদ যায় না এই গায়ের রং নিয়ে কথা শুনতে। যেসব ব্যক্তি ফর্সা দেখতে হয়, তারা তো জীবনে বেঁচে গেল তাদের গায়ের রঙের জন্য। কিন্তু যারা দেখতে একটু শ্যাম বর্ণ বা আমাদের চলতি কথায় বলা যায় গায়ের রং কালো তাদের জীবন ছোটবেলা থেকেই যেন কটু কথায় ভরা থাকে।
আর সবচেয়ে বিরক্তিকর হয় যদি কোন মেয়ের গায়ের রং কালো থাকে। তাহলে সে ছোটবেলা থেকেই গায়ের রংয়ের জন্য বিভিন্ন কথা শুনতে থাকে এবং বড় হওয়ার পরেও স্কুল কলেজ, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে হয়। তারপর যখন বিয়ের সময় আসে , তখন তো পাত্রপক্ষের প্রথম চাহিদাই থাকে যেন মেয়ে ফর্সা হয় দেখতে। মেয়েদের দেখতে আসলেই সবার আগে নজর থাকে মেয়ে কালো নাকি ফর্সা। আমি বুঝিনা সংসার সুখী হয় বা দাম্পত্য জীবন সুখী হয় কি গায়ের রংয়ের জন্য নাকি মানুষের ব্যবহার বা মানুষটির আচার-আচরণের জন্য? মানুষের মধ্যে বা মেয়েদের মধ্যে কি গুন আছে, তার যোগ্যতা কি, অথবা সে কি কি পারে বা তার দক্ষতা কি আছে? সেটা দেখার আগে মানুষ গায়ের রং নিয়ে এত বেশি চিন্তা করে যে মনে হয়, তাদের সংসার সুখী হবে গায়ের রঙের জন্য। গায়ের রং তার সংসারকে সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবে এবং দাম্পত্য জীবনকে সুখে রাখবে। এই গায়ের রঙের জ্বালা যে শুধু মেয়েদের এমনটা কিন্তু নয় পুরুষ মানুষও গায়ের রংয়ের মন্তব্য থেকে দূরে থাকতে পারে না। কিছু কিছু মেয়েরা এমন আছে যে ছেলেদের গায়ের রং একটু চাপা হলে বা শ্যাম বর্ণ দেখতে হলেই এমন ভাবে আচরণ করে যেন শ্যাম বর্ণের পুরুষ মানুষদের সাথে কোন রকমের সম্পর্ক বা বিয়ে করাই যায় না। আসলে কিছু কিছু মানুষ ভুলে যায় তারা যে গায়ের রং নিয়ে এত বেশি মানুষকে তাচ্ছিল্য করছে সেই শরীরটাই একসময় মাটির সাথে মিশে যাবে। থাকবে কোন রূপ, রং, সৌন্দর্য, অহংকার সবকিছু একসময় শেষ হয়ে যাবে।
আমি এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা কম বয়সে অনেক বেশি ফর্সা সুন্দর দেখতে থাকে কিন্তু বয়স যত বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে গায়ের রং চাপা হতে থাকে এবং দেখতেও খারাপ হতে থাকে। অনেক মানুষ তো এমন আছে যারা শ্যামবর্ণ বা কালো ছেলে বা মেয়েদের দেখলে এমন ভাব করে যেন এইসব মানুষদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোন অধিকারই নেই। এইসব মানুষদের চিন্তাভাবনার পরিবর্তন এর অনেক বেশি প্রয়োজন রয়েছে। কারণ মানুষের বহির সৌন্দর্যের থেকে ভেতরের সৌন্দর্যের অনেক বেশি প্রয়োজন একসাথে থাকার জন্য। মানুষের যদি মনটাই ভালো না হয় বা আচার-আচরণ, ব্যবহার যদি ভালো না হয় তাহলে বাইরের সৌন্দর্য অর্থাৎ সুন্দর দেখতে বা ফর্সা গায়ের রং থেকেও কোন উপকারে আসবে না। মানুষের গায়ের রং না দেখে কাজের দক্ষতা, আচার-আচরণ, গুণটাকেই সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেয়া উচিত। ভালো মনের মানুষ হলে, আচার-আচরণ, ব্যবহার এবং সবচেয়ে বড় কথা মানুষটি ভালো হলেই তার সাথে সারা জীবন ভালো থাকা যায় গায়ের রংয়ের কোন প্রয়োজনই হয় না। কিন্তু মানুষ যদি ভালো দেখতে হয় অথচ তার ব্যবহার অতীব জঘন্য হয় আর তার মধ্যে কোন গুণ বা কোন যোগ্যতা না থাকে তাহলে এমন মানুষের সাথে সারা জীবন তো দূরের কথা অল্প কিছু সময়ও থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই মানুষের রূপ রং এর উপর গুরুত্ব না দিয়ে মানুষের মনুষ্যত্বের ওপর গুরুত্ব দেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটা হয়েছে দিদি। তবে পরিবারের কাছে অবহেলিত হতে হয়নি। এদিকে শ্বশুরবাড়িতে অবহেলিত হতে হয়নি। কিছু আবোল তাবোল মানুষের মুখে শুনতে হয়েছে নানান কথা। আসলে এগুলো মানুষের ভুল ধারণ। সৃষ্টিকর্তা যাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছে এখানে কারোর হাত নেই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit