কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা বারাসাতের বেশ কিছু প্যান্ডেল দর্শন করে নিয়েছি, আর কয়েকটি প্যান্ডেল দর্শন করলে এবছরের মতো আমাদের বারাসাতের কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন সম্পন্ন করা হবে। তাই আমরা আলোময় রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এসেছি আরেকটি কালী মায়ের প্যান্ডেলের সামনে। আর এই প্যান্ডেলের থিম করা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের প্রেম মন্দির। এ বছর দেখলাম দুর্গাপুজো এবং কালীপূজোয় অনেকগুলি ক্লাবের প্যান্ডেলে এই শ্রীকৃষ্ণের প্রেম মন্দির থিম করা হয়েছে। এতগুলো প্রেম মন্দির দেখে নিয়েছি যে মনে হচ্ছে এটা না দেখলেও চলবে। তবে প্রত্যেকটা প্রেম মন্দিরের কারুকার্য ভিন্ন ধরনের করা হয়েছে তাই ভাবলাম দেখেই আসি এই প্যান্ডেলটি ভেতর থেকে কেমন করে করেছে। এইসব ভেবেই প্যান্ডেলের দিকে এগিয়ে গেলাম। এই প্যান্ডেলটি আমার কাছে তুলনামূলক একটু ছোট বলে মনে হলো। অন্যান্য প্রেম মন্দিরের মতো এই মন্দিরেও বিভিন্ন রঙের আলো ফেলা হচ্ছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আলোর পরিবর্তন হচ্ছিল। প্যান্ডেলটি সাদা রংয়ের করেছে এবং তার ওপরে বিভিন্ন রঙের আলো পরছে দেখতে বেশ ভালই লাগলো।
প্রবেশের জন্য সামনে যে রাস্তা করা হয়েছে তার দুপাশে আবার দেখা যাচ্ছে সরু সরু কিছু লাইটের নকশা করা রয়েছে রাস্তার দুপাশে। আমরা মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখতে পেলাম ভেতরে পুরো দুধের মত সাদা রংয়ের করা রয়েছে। সাদা রঙের মধ্যে আবার সোনালী রঙের কারুকার্য করা আছে। আর চারিদিকে ছোট ছোট ঝুমুর টানিয়ে রাখা হয়েছে, সেই ঝুমুরের আলোয় চারিদিকটা আলোকিত হয়ে রয়েছে। ঝুমুরের একদম বড় রিংটা তৈরি করা হয়েছে সুন্দর গোলাপি রঙের ফুল দিয়ে এবং তারপরে পুরো সাদা রংয়ের আলো দিয়ে ঝুমুরটি তৈরি করা হয়েছে। দেখতে বেশ ভালই লাগছে কারণ ফুলগুলো খুবই সুন্দর করে চোখে পরছে। প্রত্যেকটা ঝুমুরের চারপাশে ছাদে সুন্দর করে ফুলের কারুকার্য করা যেমন আমাদের বাড়িতে ফলস সিলিং এর কাজ হয় ঠিক তেমনি দেখতে লাগছে। পুরো প্যান্ডেলের মাঝখান বরাবর মাথার ওপরে একটি বড় ঝুমুর লাগানো আছে। এই ঝুমুরটিতে ছোট ছোট লাইট লাগানো মনে হচ্ছে এবং ঝুমুরের উল্টোদিকে ছাদে ঝুমুর যে যত বড় ততটা জায়গা জুড়েই নীল রঙের আলো ছাদে পড়েছে।
দেখতে খুবই নতুনত্ব আর সুন্দর লাগছে। এই বড় ঝুমুরের পাশেও দেখা যাচ্ছে অন্যান্য ঝুমুরের তুলনামূলক ছোট ছোট কিছু ফুলের কারুকার্য। আর এই ঝুমুরের পাশের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে এখানে যেন দোতলা আছে। অর্থাৎ পাশে একটি বারান্দা মত জায়গা করা রয়েছে যেটা দেখে মনে হচ্ছে ওর পাশে আরো ঘর করা আছে। আর সেখানেও ছোট ছোট অনেক ঝুমুর লাগানো আছে। এছাড়াও সুন্দর করে বারান্দার রেলিংয়ে কারুকার্য করা আছে। আর এই সাদার মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের প্রত্যেকটি ছবি নীল রঙের লাগানো আছে। সাদা এবং নীল রঙের কম্বিনেশন চারদিকটা আরো অনেক সুন্দর করে তুলেছে। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলে ধরা আছে।কোন ছবিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তিনি গাছে হেলান দিয়ে শুয়ে তার বাঁশি বাজাচ্ছেন, আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে তিনি পঞ্চমুখী সাপের মাথার উপরে দাঁড়িয়ে আছেন। কোন ছবিটা আবার দেখা যাচ্ছে তিনি সখীদের সঙ্গে লীলায় মগ্ন, আবার কোন ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনি শ্রী রাধিকার সঙ্গে খুনসুটিতে ব্যস্ত। শ্রীকৃষ্ণ গরু চরাতে মাঠে গেছেন এই ছবিও দেখা যাচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের এই প্রেম মন্দিরের প্যান্ডেলটিতে।
চারদিকটা দেখতে দেখতে এবার আমরা কালী মায়ের প্রতিমার সামনে এসে দাঁড়ালাম।এখানে কালী মায়ের প্রতিমা দেখে মনে হচ্ছে কালী মা এবং শ্রীকৃষ্ণ দুজন একই শরীরে প্রবেশ করে আছেন। কারণ এই প্রতিমার শারীরিক অঙ্গভঙ্গিতে শ্রীকৃষ্ণের এবং কালী মায়ের দুজনেরই আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে। পেছনদিকে কালী মায়ের চার হাত রয়েছে আবার সামনে শ্রীকৃষ্ণের দুই হাতে বাঁশি বাজাতে দেখা যাচ্ছে। মা কালী দাঁড়িয়ে আছেন শ্রীকৃষ্ণের মতন করে। আবার এদিকে দেখা যাচ্ছে মা কালী জিভ বের করেই আছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেহেতু শিব ঠাকুর কে তার দেবতা হিসেবে আরাধনা করেন এবং খুবই মন থেকে ভক্তি করেন সেই জন্য এখানে প্রতিমার পায়ের নিচে শিব ঠাকুর কে রাখা হয়নি। দুই পাশে দেখা যাচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সখা দাঁড়িয়ে আছেন। আমার কাছে কালী মায়ের এই প্রতিমা টি খুবই নতুনত্ব এবং অনেক সুন্দর লেগেছে। খুবই সুন্দর করে ভেবেচিন্তে এই প্রতিমাটি করা হয়েছে, যেটা অন্য কোন প্রেম মন্দিরে করা হয়নি। আমরা এবার মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit