কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
দীর্ঘ তিন বছর পর আমাদের বাড়িতে আজ পিকনিক হল। শেষ পিকনিক হয়েছিল চার বছর আগে, তখন পিকনিক করার সময় প্রতিটা পিকনিকে যেমন একটু ঝামেলা হয়ে থাকে তেমন আমাদের পিকনিকেও একটু মনোমালিন্য এবং একটু ঝামেলা হয়েছিল। তাই সে বছর থেকে এতটাই রাগারাগি বেড়ে গেছিল একে অপরের প্রতি যে আমরা পিকনিক করার কথা আর চিন্তা করিনি। তবে এত বছর পরে আজ পিকনিক হচ্ছে দেখে বেশ আনন্দ হচ্ছে। আমরা বেশ ৬০ জন মতো এ পিকনিকটা করছি। তবে এই পিকনিকের স্থান অন্য কোথাও নয় আমাদের বাড়ির ছাদে। প্রতিবছর আমরা পিকনিক করি ৩১শে ডিসেম্বর। নতুন বছরের আগমনে সবাই মিলিত হই, কিন্তু এ বছর পিকনিক করবো কি করবো না সেটা ভাবতে ভাবতেই ৩১ শে ডিসেম্বর পেরিয়ে গেছে। পিকনিক করা হবে শনিবার, তাই আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে গেছিল বাজার করা এবং প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসা। তার সাথে উপরে প্যান্ডেল করার জন্য যেসব জিনিস লাগবে তার অর্ডার দেওয়া আগের দিন সব হয়ে গেছিল।
শনিবার সকাল থেকেই বাকি যা কিছু কাজ ছিল সবকিছু শুরু হয়ে গেছে। সকাল থেকেই গান বাজানোর জন্য স্পিকার নিয়ে আসা টুকটাক যেগুলো বাজার করা ভুল হয়ে গেছে সেগুলো করে আনা। মোটামুটি চারিদিকে বেশ তোড়জোড় আর ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাড়ির বউদের সকাল সকাল উঠে রান্না বান্না সেরে নেওয়া এবং ঘরের কাজ তাড়াতাড়ি করে নেওয়ার জন্য আজ তেমন কাউকেই সকালে রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে না। দুপুর মোটামুটি ১টার মধ্যে বাড়ির সব বউরা ছাদে চলে গেলাম। এবং গোল করে বসে গেলাম পেয়াজ, আদা, রসুন এছাড়াও যা সবজি কেনা হয়েছে সব কাটাকুটি করার জন্য। কারণ আজ আমাদের পিকনিকের মেনু অনেক কিছু তাই রান্না করতে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে।
-:আমাদের পিকনিকের মেনু হল:-
চিকেন বিরিয়ানি
ফ্রাইড রাইস
মটর পনির
ডিমের কারি
সালাদ
চাটনি
পাপড়
মিষ্টি
আনলিমিটেড চা
বিস্কুট
আমরা তাড়াতাড়ি সবকিছু কাটাকুটি করে গুছিয়ে নিয়ে শুরু করে দিলাম রান্নাবান্না করা। প্রায় ছয় সাত জন মিলে আমরা এই রান্না সম্পন্ন করলাম। তারই মাঝখানে দেখলাম দুটি ছোট বাচ্চা খুব সুন্দর নাচ করছে। আমি গিয়ে কিছুক্ষণ তাদের নাচ দেখতে থাকলাম। তারপর আমাদের রান্নার কাজ মোটামুটি হয়ে গেলে আমরা এসে অনেকক্ষণ নাচানাচি করলাম আর অনেক মজা করলাম। নাচানাচি করতে করতে রাত প্রায় ১১টা বেজে গেল। এবার সবাইকে একে একে খেতে দেওয়ার পালা, তাই টেবিল সব সাজিয়ে আস্তে আস্তে সবাইকে খেতে দেওয়া হল। তবে খেতে বসে সবাই বলছিল রান্না নাকি অনেক সুন্দর হয়েছে, খুবই সুস্বাদু হয়েছে খেতে। রান্না ভালো হয়েছে শুনে আমাদের তো মনে অনেক শান্তি হলো। একে একে সবার খাওয়া হয়ে গেলে সবশেষে আমরা বসলাম খেতে। আমরা খেতে বসতে বসতে প্রায় ১২টা বেজে গেল। খেতে খেতে আমাদের এমন অনুভব হচ্ছে যে আমরা যেন পর্বতে চূড়ায় বসে রাতের খাওয়া দাওয়া করছি। আমরা চোখের সামনে দেখতে পারছি আমাদের মাথার ওপর এবং চারপাশ কুয়াশায় ভরে যাচ্ছে।
আর বাইরের চারিদিক তো দেখাই যাচ্ছে না এতটা বেশি পরিমাণ কুয়াশা পড়ছে চারিদিকে। মনে হচ্ছে যেন খেতে খেতে আমরা এখানেই ঠান্ডায় জমে যাব। এতক্ষণ যেহেতু নাচানাচি করছিলাম সেজন্য শরীরটা একটু গরম ছিল। আর পুরো ঘেমেও গেছিলাম কিন্তু এখন যেহেতু শান্ত হয়ে বসে খাচ্ছি সেই জন্য পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে এবং প্রচুর ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। আমাদের এখনো অনেক কাজ বাকি তাই আমরা তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিলাম। সবার খাওয়া দাওয়া করার পরেও অনেক খাবার এখনো আছে, তাই আমরা প্রত্যেকে সেই খাবারগুলো ভাগাভাগি করে যার যার বাড়িতে নিয়ে আসলাম। এবং পুরো ছাদ যেহেতু নোংরা হয়ে গেছে তাই একটু পরিষ্কার করে সবকিছু গুছিয়ে রাখলাম। তবে এখন যেহেতু অনেক রাত হয়ে গেছে আর সারাদিনের অনেক কাজকর্মের ফলে শরীরে আর এনার্জি নেই, তাই বাসনপত্র এখন আর পরিষ্কার করা হবে না। পরের দিন সকালে এই বাসনপত্র পরিষ্কার করতে হবে। তাই ছাদের কলের পাশেই বাসন গুলি রেখে আমরা সবাই ঘরে চলে আসলাম।
পরেরদিন গিয়ে আবার বাসর গুলো পরিষ্কার করে তারপর ঘরে নিয়ে আসতে হবে। তবে নিজেরা এমন কাজ-কর্মের মাধ্যমে এবং নিজেরা রান্না করে পিকনিক করার একটা অন্যরকম মজা আছে যেটা বাইরে থেকে রান্না করে নিয়ে আসলে এই আনন্দটা হয় না। আর আমার মনে হয় সবাই মিলে পিকনিক করলে নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব সুলভ সম্পর্ক আরো মজবুত হয়। তবে আজকের সারাদিনটা খুবই মজা করে কাটলো ভবিষ্যতে আবার যেন পিকনিক করতে পারি এবং অনেক মজা করতে পারি এটাই ভগবানের কাছে প্রার্থনা। আর এই বছরটাও যেন সবার অনেক ভালো কাটে এবং ভগবান সবাইকে ভালো রাখুক এটাই আশা।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন পিকনিক হয়েছে তো। আর মেনুগুলো তো অত্যন্ত লোভনীয়। পিকনিক মানেই টুকটাক গন্ডগোল লেগেই থাকে। তবে ষাট জনের পিকনিক মানে বিরাট বড় সড় আয়োজন। আমাদের ১৫-২০ জন এই গন্ডগোল হয়ে যায় এত জনে হবে না? যাই হোক এর অনুষ্ঠানটি দারুন ভাবে সম্পন্ন হয়েছে বেশ কয়েক বছর পর তা পড়ে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আপনারা অনেক সুন্দর আয়োজন করেছেন। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে আমাদের এখানেও বেশ পিকনিকের ব্যবস্থা হতে দেখলাম। কিন্তু পিকনিক করা হয়ে ওঠেনি। এত সুন্দর খাওয়া দাওয়ার আয়োজন দেখে সত্যি ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit