কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের জন্মের পর আমরা যখন একটু একটু করে বুঝতে শুরু করি তখন থেকেই আমাদের সমবয়সী কিছু বন্ধু তৈরি হতে থাকে। কিছু থাকে বাড়ির পাশে প্রতিবেশী বন্ধু হিসেবে কিছু থাকে পড়াশোনার দিকের বন্ধু। ছোটবেলায় প্রাইমারি স্কুলে কিছু বন্ধু তৈরি হয়, যার মধ্যে কিছু থাকে আবার কিছু হারিয়ে যায়। তবে এই বন্ধুত্ব বন্ধুর মতো নয় বলা যায় না। পরবর্তীতে হাই স্কুলে কিছু বন্ধু তৈরি হয়, যাদের মধ্যে কিছু সারা জীবন থেকে যায় আবার কিছু হারিয়ে যায়। এই ভাবেই কলেজে এবং চাকরি জীবনেও আমাদের সাথে বিভিন্ন মানুষের দেখা হয় বন্ধুত্ব হয় এবং তাদের মধ্যে কিছু আমাদের জীবনে থেকে যায় কিছু আবার হারিয়ে যায়। তবে স্কুল জীবন থেকে বা কলেজ থেকে যেসব বন্ধু আমাদের জীবনে থেকে যায় তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি মধুর হয়ে থাকে। আর সবচেয়ে বড় কথা যেসব মানুষের সাথে বন্ধুত্ব দীর্ঘদিন ধরে চলছে এসব বন্ধুত্ব অনেক বেশি গভীর হয়ে থাকে। দীর্ঘ বছর ধরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকার কারণে আমাদের সাথে তাদের একটা মজবুত সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা সহজেই ভেঙে ফেলা বা তৃতীয় ব্যক্তির কারণে নষ্ট হওয়া সম্ভব নয়। আর এইসব বন্ধু সুখের সময় যেমন পাশে থাকে তেমন দুঃখের সময়ও বা অনেক বেশি খারাপ সময়ও পাশে পাওয়া যায়।
এই পুরনো বন্ধুগুলোর সাথে আমাদের প্রতিদিন কথা হোক বা না হোক আমাদের একটা মনের মিল এবং আত্মার সম্পর্ক অবশ্যই তৈরি হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় উচ্চ শিক্ষার কারণে অথবা চাকরি করার জন্য দীর্ঘ সময় দূরে থাকতে হয়। তবু এই সব পুরনো বন্ধুর সাথে আমাদের কখনোই সম্পর্কের গভীরতা এবং বন্ধুর প্রতি বন্ধুর টান কখনোই কমেনা। আর কিছু কিছু পুরনো বন্ধুত্ব এমন গভীরতা পেয়ে যায় যে মুখে কোন কিছু বলে বোঝানোর প্রয়োজন হয় না। এক বন্ধু অপর বন্ধুর মুখের দিকে তাকালে বুঝতে পারে তার মনে কি চলছে, তার কোন জিনিস ভালো লেগেছে এবং কোন জিনিস খারাপ লেগেছে। পুরনো বন্ধুরা কখনোই আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে না কারণ তারা আমাদের মন থেকে ভালোবাসা এবং মন থেকে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা ভালো রাখার চেষ্টা করে। যত কষ্টই হয়ে যাক না কেন বা তাদের নিজের উপরে যত বিপদ আসুক না কেন তারা কখনোই তাদের বন্ধুর ক্ষতি চায়না, বরং এইসব পুরনো বন্ধুর ভালোর জন্য অনেক বন্ধু এমন আছে যারা বন্ধুর বিপদ নিজের ঘারে তুলে নেয় এবং সর্বদাই বন্ধুকে প্রটেক্ট করে এবং বিভিন্ন বিপদ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে।
আসলে দীর্ঘ বছরের পুরনো ভালো বন্ধুরা এমন হয়ে থাকে যে শত কষ্টের মাঝে সে পাশে থাকলেই বা তার উপস্থিতিতেই আমাদের কষ্ট যেন অনেক বেশি কমে যায়। কারণ তারা জানে আমাদের মন খারাপ হলে বা চরম কষ্টের দিনে আমাদের পাশে কিভাবে থাকতে হয় এবং আমাদের মন কিভাবে ভালো করতে হয়। আসলে এই পুরনো বন্ধুদের কোন বিকল্প হয় না। এইসব বন্ধু হয় আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ একটি উপহার। তবে বর্তমান সমাজে এমন পুরনো হোক বা নতুন বন্ধু পাওয়া অনেক বেশি কষ্টকর। কারণ এইসব পুরনো বন্ধু অনেক আগের সময়ে বেশি দেখা যেত। বর্তমান সময়ে শুধু স্বার্থের বন্ধুই দেখা যায়। আর আমরা যদি মনে করি দীর্ঘ বছর ধরে আমরা যার সাথে সুন্দর একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছি, তার সাথে আমাদের নির্ভেজাল নিঃস্বার্থ একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তা হয়তো আমাদের ক্ষণিকের চিন্তাভাবনা। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষ এতই স্বার্থপর হয়ে পড়েছে যে সুযোগ পেলে আমাদের দীর্ঘ জীবনের সুখে দু:খে পাশে থাকা পুরনো বন্ধুও আমাদের ক্ষতি করে বসতে পারে।
আসলে বর্তমান সময়ের কোন সম্পর্ককে বিশ্বাস করা যায় না। বিশ্বাসের মধ্যে অবশ্যই কিছুটা ফাঁক রেখে মানুষকে বিশ্বাস করা উচিত। কারণ সম্পর্ক পুরনো হোক বা নতুন স্বার্থের ব্যাপার হলে এবং প্রয়োজন পড়লে মানুষ বিশ্বাস ভেঙে বন্ধুত্বের সম্পর্কের গলা টিপে মেরে ফেলে তার ক্ষতি করবে। তাই আমাদের কখনোই এমন ভাবলে চলবে না যে আগেকার সম্পর্ক এত গভীর এবং এত ভালো ছিল তাই এখনকার সম্পর্ক এতটাই ভালো হতে পারে। আমাদের বাবা কাকাদের বা দাদুদের সময়ের মানুষের মানসিকতা, লোভ, আশা, আকাঙ্ক্ষা এবং নোংরামি তুলনায় অনেক কম ছিল। কিন্তু বর্তমান সময় মানুষের লোভ, আশা, আকাঙ্ক্ষা এত বেশি বেড়ে গেছে যে মানুষ মনুষত্ব ভুলে গেছে। তবে বর্তমান সময়েও যদি এমন সম্পর্ক পাওয়া যায় সেটা আমাদের অবশ্যই ভালো কর্মের ফল। বন্ধুর সম্পর্ক অনেক বেশি পবিত্র হয়ে থাকে তাই আমাদের কখনোই এ সম্পর্কের এবং মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নেওয়া উচিত না। তবে আমাদের প্রতিনিয়ত কাউকে বিশ্বাস করার আগে বা আমাদের পুরনো বন্ধুদেরও বিশ্বাস করার আগে ভেবে চিন্তে এবং কিছুটা অবিশ্বাস রেখেই বিশ্বাস করা উচিত।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit