কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের প্রত্যেক মানুষেরই একটা আলাদা পছন্দ-অপছন্দ থাকে। আর এই পছন্দ এবং অপছন্দ একান্তই ব্যক্তিগত হয়ে থাকে। আমাদের একদম ছোটবেলায় যখন আমরা সদ্য বুঝতে শিখেছি এবং আমাদের পছন্দ এবং অপছন্দ তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে তখনকার পছন্দ অপছন্দ এবং এখনকার পছন্দ অপছন্দ অনেকটাই আলাদা। ছোটবেলাকার নিষ্পাপ সহজ সরল মন ছিল, তখন অনেক কিছুই ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই সহজে পছন্দ হয়ে যেত। কিন্তু তারপর থেকে ধীরে ধীরে মানুষ যখন বড় হতে থাকে তখন প্রতিনিয়ত তার বিভিন্ন দিক থেকে একটু একটু করে জ্ঞান সঞ্চয় হয় এবং তার ফলে তার পছন্দ-অপছন্দ আরো ভালোভাবে তৈরি হয়। তবে এটা সত্যি যে আমাদের ছোটবেলাকার পছন্দের সাথে বড় হওয়ার পরে পছন্দের কোন মিল নেই। আমরা এখন ভাবি যে ছোটবেলায় আমরা এটা পছন্দ করতাম বা ওইটা পছন্দ করতাম কিন্তু বর্তমানে এসে একটু ভাবনা চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে সেই জিনিসটা এখন আর তেমন পছন্দ নয়। যেমন ছোটবেলায় আমি খুব ভালবাসতাম শোনপাপড়ি খেতে। তখনকার সময়ে শোনপাপড়ি গুলো অনেক সুন্দর দেখতে ছিল এবং ভীষণ সুন্দর সুস্বাদু ছিল। বড় বড় চৌকো কাগজের প্যাকেটে পুরো প্যাকেট ভর্তি করে থাকতো শোন পাপড়ি।
এবং সেগুলো পাপড়ের মতো মচমচে আবার নরম আর সুতোর মতো লম্বা লম্বা বেশ সুন্দর দেখতে লাগতো এবং খেতেও ভীষণ সুস্বাদু ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ের শোনপাপড়ি গুলো একদমই আলাদা দেখতে এবং খেতে। একদম পুরো ঠাসা চাপা থাকে এবং আগের মত খেতে নেই। তাই বর্তমানে স্বাভাবিকভাবেই আমার সেই পছন্দটা আর পছন্দ নেই অপছন্দ তৈরি হয়ে গেছে। তেমনই বিভিন্ন জিনিস যেমন ব্যক্তি বা কোন বস্তু যা ছোটবেলায় পছন্দ ছিল তা অনেক ক্ষেত্রেই অপছন্দ জিনিসে পরিণত হয়েছে। যেসব ব্যক্তি হয়তো ছোটবেলায় কাছে থাকতো ভালোবাসতো কিন্তু বড় হতে হতে সেইসব ব্যক্তির মধ্যেই হিংসা আর খারাপ লাগাটা দেখা যায় বা অনুভব করা যায়। আবার অন্যদিকে দেখা যায় যেসব বস্তুর প্রতি আমাদের ছোটবেলা থেকে একটি আলাদা অনুভূতি কাজ করে বা ভালোলাগার অনেক বিষয় থাকে সেই সব বস্তুর প্রতি বড় হওয়ার পরে একটা আলাদাই ক্ষোভ জন্ম নেয় এবং খারাপ লাগা কাজ করে। কারণ হয়তো সেই সব জিনিস আমাদের ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দেয় বা কোন খারাপ স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। যার ফলে সেই পছন্দের জিনিসগুলো অপছন্দ হয়ে পড়ে। তাই দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছোটবেলার পছন্দগুলো বড় বেলা এসে এইসব কারণে অপছন্দ হয়ে পড়ে।
ছোটবেলা থেকে আমরা যখন বড় হতে থাকি প্রতি পদক্ষেপে আমাদের বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা হতে থাকে এবং ভালো খারাপ স্মৃতি তৈরি হতে থাকে। তেমনি কোন খারাপ স্মৃতি যদি আমাদের পছন্দের জিনিসের সাথে জড়িয়ে পড়ে তখন আমাদের সে পছন্দের জিনিসটিও অপছন্দ হওয়ার কারণ হয়ে পড়ে। আর এসব ক্ষেত্রেই আমাদের বেশিরভাগ পছন্দের জিনিসগুলি অপছন্দ হয় কারণ আমরা প্রতিনিয়ত ওই খারাপ স্মৃতি থেকে দূরে পালাতে চেষ্টা করি। এমন দেখা যায় যে আমাদের সবথেকে প্রিয় খাবারটিও আমাদের সব থেকে অপছন্দের খাবার হয়ে পড়ে যা আমরা কখনোই আর খাওয়ার চেষ্টা করি না বা খেতে চাই না তেমনি কোন পছন্দের জিনিস থেকেও আমরা দূরে সরে যাই বা ছোটবেলা থেকে যে ব্যক্তিটা আমাদের খুব পছন্দের এবং প্রিয় যাকে আমরা খুব ভালোবাসি কোন একটা কারণে বা কোন একটা ঘটনার পর থেকে আমরা তাদেরকে অপছন্দ করা শুরু করি এবং তাদের কাছ থেকে অনেক বেশি দূরে সরে যাই। যার ফলে একসময় এত বেশি যোগাযোগের বিচ্ছেদ ঘটে যে পছন্দের মানুষকে আমরা একসময় চিনতেই পারি না বা অচেনা হয়ে যায়। আসলে কারণ ছাড়া কোন কিছুই আমাদের পছন্দ হয় না তেমনি কারণ ছাড়া কোন পছন্দের জিনিস অপছন্দ হয় না।
প্রত্যেকটা ব্যক্তি, বস্তু বা অন্যান্য জিনিস পছন্দ হওয়ার জন্য যেমন আমাদের কাছে অনেক কারণ থাকে তেমন অপছন্দ হওয়ার জন্য অথবা ঘৃণা করার জন্য আমাদের কাছে কারণ থাকবেই। আর এই কারণগুলো সময়ের সাথে সাথে তৈরি হতে থাকে। তাই দেখা যায় বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমাদের এইসব পছন্দ এবং অপছন্দগুলো তৈরি হতে থাকে। আমাদের সব সময় আমাদের মনের কথা শুনে চলা উচিত। তাই আমরা যখন মনে করব কোন জিনিস আমাদের পছন্দ তখন সেই পছন্দের জিনিসটাকে আমরা সবসময়ই ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করব এবং যখন কোন জিনিস আমাদের অপছন্দ হবে এবং জিনিসটির প্রতি আমাদের কোন রকম কোন মায়া ভালোবাসা কাজ করবে না তখন সেই জিনিসটি থেকে আমরা সব সময় দূরে থাকার চেষ্টা করব। তাহলে আমরা মন থেকে অনেক বেশি ভালো এবং খুশি থাকতে পারবো। আমাদের এই পছন্দ এবং অপছন্দ আমাদের জীবনের ভালো থাকা এবং খারাপ থাকার উপর অনেকটা বেশি প্রভাব ফেলে। তাই সবসময় আমাদের পছন্দ এবং অপছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit