সর্বত্রই অর্থের চাহিদা।

in hive-129948 •  10 days ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17407295493513490363423349992349.jpg


সোর্স


যখন আমাদের টাকা-পয়সার আবিষ্কার হয়েছে তখন আমাদের কাছে এই টাকা পয়সার মূল্য ছিল অনেক গুণ বেশি। আমি ছোটবেলায়ও দেখেছি ২৫ পয়সা ৫০ পয়সা ব্যবহার করতে কিন্তু ধীরে ধীরে সময় যত গেছে ২৫ পয়সা বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং তারপর ৫০ পয়সা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এবং দিন যত যাচ্ছে ধীরে ধীরে টাকা-পয়সার মূল্য অনেক বেশি কমে যাচ্ছে আর তার সাথে বেড়ে যাচ্ছে প্রত্যেকটা জিনিসপত্রের দাম। আর এই জিনিসপত্রের দাম যত বাড়ছে মানুষের সৎকর্মের ফল বা পরিশ্রমের ফল ততটা বাড়ছে না। মানে অর্থ উপার্জনের পরিমাণ সেই তুলনায় বাড়ছে না। তাই মানুষের যেহেতু প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার জন্য দরকার হয়ে থাকে, তাই তারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে বিভিন্ন দিক থেকে অর্থ উপার্জন করতে। আর এই অর্থ উপার্জনের চেষ্টায় কিছু কিছু মানুষ এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে তাদের জ্ঞান থাকে না যে তারা ভালো কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে নাকি খারাপ কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে। তাদের শুধু মাথায় থাকে যে, যে কোন উপায়ে তাদের প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে হবে। আর সেই জন্য কিছু কিছু মানুষ অসৎ পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। কারণ তাদের মাথায় শুধু একটা জিনিসই কাজ করে যে, কাজ ভালো হোক বা খারাপ টাকা হলেই হবে। আর এসব মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য সবকিছু করতে পারে। আর এই অর্থ উপার্জনের জন্য যদি কারো অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায় তাও তারা দ্বিধা করে না।


আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তো দেখা যায় মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য অন্য মানুষকে মেরে ফেলার সুপারিশ পর্যন্ত নিয়ে নিচ্ছে। আর কিছু কিছু পাষাণ ব্যক্তি তো তার নিজের সন্তান কেও বিক্রি করতে পিছুপা হচ্ছে না। অনেক জায়গায় এমন দেখা যায় যে তাদের অর্থ উপার্জনের জন্য এতটাই কষ্ট হতে থাকে যার ফলে তাদের সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। আর সেই সময় কিছু পাষাণ ব্যক্তি আছে যারা নিজের কন্যা সন্তানকে বিক্রি পর্যন্ত করে দেয়, এবং তার বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করে নেয়। আবার কিছু কিছু মানুষ অর্থের বিনিময়ে অনেক ক্ষতিকর নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি করতে থাকে। আমাদের সমাজের উপর এইসব নেশা জাতক দ্রব্যের প্রচুর পরিমাণে খারাপ প্রভাব পড়ছে এটা জানা সত্বেও এইসব দ্রব্যের বিক্রি কখনোই কমছে না বরং আরো বেড়ে চলেছে। এসব ব্যক্তির মধ্যে মনুষত্ববোধ কোনরকমে দেখতে পাওয়া যায় না। এসব মানুষ শুধু চেনে টাকা। আবার এমনও অনেক ব্যক্তি আছে যারা নিজে স্বেচ্ছায় টাকার জন্যই নিজেকে প্রতিনিয়ত বিক্রি করে দেয়। আমাদের প্রতিনিয়ত অর্থের প্রয়োজন তাই বলে এমনটা নয় যে আমরা মনুষত্ব ভুলে জঘন্য কাজকর্মের একদম সীমানা অতিক্রম করে অর্থই অর্জন করব। আসলে কিছু কিছু মানুষ ভুলে যায় যে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়, কিন্তু সুখে শান্তিতে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন নেই। কারণ অর্থ দিয়ে সবকিছু কেনা গেলেও সুখ শান্তি কখনোই কেনা যায় না।


কিছু কিছু পরিবার এমন দেখা যায় যে, কুড়ে ঘরে থেকে মানুষ অনেক সুখে আছে যেখানে প্রায় দিন আনা দিন খাওয়া হয়ে থাকে। এবং কোন প্রয়োজনের জিনিস কিনতে গেলে তাদের একটু সময় নিয়ে অর্থ উপার্জন করে কিছু পরিমাণ অর্থ জমিয়ে তারপরে সে প্রয়োজনের জিনিসটি কিনতে হয় তারপরও তারা অনেক বেশি সুখে থাকে। কিন্তু অপরদিকে প্রায় দেখা যায় যারা অনেক অর্থ সম্পদের মালিক তাদের মনে কখনোই শান্তি থাকে না। আর এই অর্থ কখনো ভালো কাজে ব্যয় করা যায় না। খারাপ কর্মের উপার্জন সব সময় নষ্ট হয়ে যায়। মানুষ অর্থ উপার্জন করায় এতটাই ডুবে থাকে যে মনের শান্তি ভুলে যায় এবং অর্থ উপার্জনের ওপরে বেশি গুরুত্ব দেয়। আর এই অর্থ উপার্জনের সাথেই তারা ভুলে যায় যে তাদের এই কর্মের জন্য তাদের আশেপাশে তাদের আপনজন অনেক বেশি দূরে সরে যেতে থাকে। তারপরও এইসব ব্যক্তি আপন মানুষকে ভুলে বিভিন্ন ভাবে অর্থ উপার্জনের জন্যই মাথা খাটাতে থাকে। সুযোগ সন্ধানীর মত সুযোগ খুঁজতে থাকে কোথায় কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়। এর জন্য বিভিন্ন ভাবে তারা দালালের কাজ করে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দেখা যায় বিভিন্ন পুজোর সময়, বিয়ের মরসুমের, এছাড়াও সময় সুযোগ হলেই তারা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়ে সুযোগের সৎ ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে।


কাউকে সাহায্যের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যেমন স্কুল-কলেজেও আজকাল বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতে দেখা যায়। আজ কাল কার স্কুল কলেজএ পড়াশোনার বই, খাতা, পেন সহ বিভিন্ন সামগ্রী স্কুল থেকে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে, যেন স্কুল কর্তৃপক্ষ আরো বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। দিন যত যাচ্ছে, আগেকার সময় যা ফ্রিতে পাওয়া যেত সে সব জিনিস এখন বিক্রি করা হচ্ছে, ডিপ টিউবওয়েল বাড়িতে এখন বসাতে দেওয়া হয় না। যার জন্য মানুষের প্রতিনিয়ত পান করার জল কিনে খেতে হয়। যার ফলে এখন দেখা যায় জল বিক্রি করেও মানুষ অর্থ উপার্জন করা শুরু করেছে। আমরা চারিদিকে যেদিকেই দেখি না কেন মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে দেখা যায়। এবং প্রতিনিয়ত মানুষ অর্থ উপার্জনের বিভিন্ন সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু আমাদের এটা ভুললে চলবে না আমরা যেভাবেই যা কাজ করি না কেন বা যতই অর্থ উপার্জন করি না কেন আমাদের প্রিয় মানুষটি আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর সেই জন্যই আমাদের সব সময় ভালো কাজ করতে হবে এবং ভালো পথে উপার্জনের চেষ্টা করতে হবে। তাহলে আমরা সবাই মিলে শান্তিতে থাকতে পারবো। আমাদের প্রতিনিয়ত মনে রাখতে হবে যে, অর্থ জীবনে প্রয়োজন কিন্তু অর্থ জীবনের সবকিছু নয়।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000032147.jpg

1000032146.jpg

1000032145.jpg

যত দিন যাচ্ছে সবকিছুরই পরিবর্তন ঘটছে ঠিক তেমনি টাকার মান ও কমে যাচ্ছে কিন্তু চাহিদা বেড়েই চলেছে। সঠিক বলেছেন এই টাকার জন্য অনেক মানুষ মানুষকে খুন করার জন্য সুপারি পর্যন্ত নিয়ে থাকে। অনেক অর্থ থাকলে সুখী হওয়া যায় না। তবে অনেক গরিব পরিবার রয়েছে যারা দিন আনে দিন খায় তারপরেও অনেক সুখী জীবন উপভোগ করে। তারপরেও এটাই বলতে হবে অর্থ ছাড়া কেউ বাঁচে না। অর্থের চাহিদা সবারই রয়েছে।

আসলে বর্তমান সময়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ টাকার জন্য লেগে পড়ে গিয়েছে। আর টাকা ছাড়া বর্তমান একজন মানুষের কোন মূল্য নেই এই ভদ্র সমাজের মধ্যে। টাকা বিহীন মানুষ, মেরুদন্ড হীন ব্যক্তির মতোই। আপনার লেখা গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে।

একজন শেষের কথাটা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে দিদি অর্থ আমাদের প্রয়োজন কিন্তু অর্থ আমাদের জীবনের সবকিছু না। কিছু কিছু সময় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অর্থের জন্য মানুষ অবশ্য অনেক কিছুই করে। সৎভাবে অর্থ উপার্জন করাটাই সব থেকে সঠিক উপায়। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।