পালং শাকের রেসিপি।

in hive-129948 •  20 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000021756.jpg


1000021741.jpg



শীতকাল পড়ে গেছে আর এই সময় বাজারেও প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি পাওয়া যায়। যা দেখলেই পুরো মাথা নষ্ট হয়ে যায় কোনটা ছেড়ে কোনটা খাব সেটাই ভাবতে থাকি সারাক্ষণ। কারণ এই শীতকালীন যে শাকসবজি পাওয়া যায় সেগুলো অন্য সময় পাওয়া যায় না, আর যদিও বা পাওয়া যায় সেটা তো বারো মাসের সবজি। এই শীতকালটা আমার ঠান্ডার জন্য কষ্ট লাগলেও প্রচুর পরিমাণে সবজি খেতে পারি সেই জন্য খুবই ভালো লাগে। আজকে তেমনি আমার একটি প্রিয় সবজি রান্না করব আর সেটি হল পালং শাক। আসলে পালং শাকের অনেক উপকারিতা আছে। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারি এছাড়াও রক্তের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই পালং শাক। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে উপকার আছে এই পালংশাকে। পালং শাক বিভিন্ন রকম ভাবে রান্না করা যায় যেমন মাংস দিয়ে, পনির দিয়ে, এবং বিভিন্ন রকমের সবজি দিয়ে। আজকে আমি রান্না করবো বিভিন্ন রকমের সবজি দিয়ে একদম নিরামিষ।

1000021722.jpg


1000021723.jpg


-:উপকরণ:-

পালং শাক
গাজর
আলু
সিম
কাঁচা টমেটো
পাকা টমেটো
বেগুন
বরি
কাঁচা লঙ্কা
পাঁচফোড়ন
হলুদ
লবণ

1000021730.jpg


1000021731.jpg


-:রন্ধন প্রণালী: -

প্রথমে পালং শাক ভালো করে পরিষ্কার জল দিয়ে বেশ কয়েকবার ধুয়ে নিয়েছি। ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিয়েছি। এরপর আমি গাজর, আলু, সিম, কাঁচা টমেটো, পাকা টমেটো, এবং বেগুন ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে একটু ছোট ছোট করে কেটে নিয়েছি। যেহেতু পালং শাক একদম গোলে নরম হয়ে যায় তাই সবজিগুলো ছোট করে কাটলে দেখতে এবং খেতে বেশ ভালো লাগবে, আর তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যাবে। বেশ কয়েকটি কাঁচালঙ্কা মাঝখান থেকে চিরে নিয়েছি। এবার আমি রান্না শুরু করব তাই কড়াইতে চার চামচ পরিমাণ সাদা তেল নিয়ে নিলাম। তেল একটু গরম হয়ে আসলে পরিমাণ মতো বরি দিয়ে দিলাম। বড়ি গুলো একটু ভাজা ভাজা হয়ে ব্রাউন রঙের হয়ে গেছে, এবার আমি বড়িগুলো তুলে একটি পাত্রে রেখে দিলাম। এখনো বেশ পরিমাণ তেল কড়াইতে রয়েছে, সেই তেলের মধ্যেই হাফ চা চামচ পরিমাণ পাঁচফোড়ন দিয়ে দিলাম। এই পাঁচফোড়ন দুই তিন সেকেন্ড একটু ভাজা হলেই দিয়ে দিলাম আলু।

1000021732.jpg


1000021733.jpg



আলু একটু আগে দেওয়ার কারণ অন্য সবজি তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যাবে কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আলুটা হয়তো আগে একটু ভেজে নিলে ভালো করে একসাথে সেদ্ধ হয়ে যাবে। আলু একটু ভাজা হলেই বাকি সব সবজিগুলি কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দিলাম। এবার সব সবজিগুলো ভালো করে নাড়াচাড়া করে পাঁচ মিনিটের জন্য ঢাকা দিয়ে দিলাম। পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা খুলে এক চামচ পরিমাণ লবণ এবং হলুদ দিয়ে দিলাম। এবার ভালো করে নাড়াচাড়া করে হলুদ লবণ সব সবজিতে মিশিয়ে দিলাম। আরো কিছুক্ষণ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম যেন সবজিগুলো ভালো করে একটু সেদ্ধ হতে পারে। আরো ৫ থেকে ৭ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখলাম সবজিগুলো একটু নরম হয়ে এসেছে। এ পর্যায়ে আমি পালং শাকগুলি সবজির মধ্যে দিয়ে দিলাম। এবার আর একটু ভালো করে নাড়াচাড়া করে আবার ঢাকা দিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে আমি এবার একটু চিনি দিয়ে দিলাম। কারণ আমরা একটু মিষ্টি পছন্দ করি। আর এই সবজিতে একটু মিষ্টি দিলে সবজিগুলোর স্বাদ অনেক সুন্দর লাগবে।


1000021736.jpg


1000021738.jpg



এবার দু চার মিনিট নাড়িয়ে চারিয়ে দেখতে পেলাম একটু জল বেরিয়েছে পালং শাক থেকে। এই পর্যায়ে চিরে রাখা কাঁচালঙ্কা এবং ভেজে রাখা বরি গুলো দিয়ে দিলাম। এবার ভালো করে খুন্তি দিয়ে নাড়াচাড়া করে আরো কিছুক্ষণের জন্য ঢাকা দিয়ে দিলাম। আমি কিন্তু এই রান্নার মধ্যে একটুও জল ব্যবহার করিনি কারণ পালং শাক থেকে যেটুকু জল বেরিয়েছে সেটাতেই আমার পুরো রান্নাটা হয়ে যাবে এবং সব শাকসবজি ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে যাবে। কড়াইয়ের ঢাকনা খুলে মাঝে মধ্যে আমি নাড়িয়ে চাড়িয়ে আবার ঢাকা দিয়ে দিলাম। প্রায় পাঁচ দশ মিনিট ঢাকা দেওয়ার পর ঢাকনা খুলে দেখলাম সব সবজি এবং পালং শাক সুন্দরভাবে সেদ্ধ হয়ে গেছে। এবার আমি ঢাকনা খুলেই রেখে ভালো করে মিডিয়াম ফ্লেমে জাল দিতে লাগলাম। যতক্ষণ না পর্যন্ত জল শুকিয়ে পালং শাক একটু মাখামাখা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমি জাল দিতে থাকবো। কিছুক্ষণ পর দেখলাম পালং শাক এবং সব সবজি সুন্দরভাবে হয়ে গেছে এবং সব জল টেনে নিয়েছে। এবার আমি গ্যাসের ফ্লেম বন্ধ করে দিলাম। খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে খুবই সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর পালং শাক।

1000021744.jpg


1000021745.jpg


1000021751.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পালং শাক আমার খুবই প্রিয় একটি শাক। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে পালং শাকের রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। আপনি প্রতিটি উপকরণ একদম সমান ভাবে মিশ্রণ করে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন। দেখে বেশ ভালো লাগলো । শীতকালে পালং শাক খেতে বেশ ভালোই লাগে।

image.png

শীতকালে চমৎকার সুন্দর সুন্দর সব শাক সবজি পাওয়া যায়। আপনি দারুণ সুন্দর করে পালংশাক,সিম,আলু,টমেটো আলু,ডালের বড়ি দিয়ে চমৎকার সুন্দর ও সুস্বাদু নিরামিষ সবজি তরকারি করেছেন।খুবই সুস্বাদু হয় এই রেসিপি গুলো।ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লোভনীয় রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।

বড়ি দিয়ে শীতকালীন সবজি রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। আর আপনি এত সুন্দর করে রান্না করেছেন দেখেই তো মনে হচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল। খুবই লোভনীয় লাগছে দেখতে। অনেক ভালো লাগলো এই রেসিপি।

পালং শাকের মজাদার রেসিপি শেয়ার করেছেন অনেক লোভনীয় লাগছে। রেসিপির সাথে বেশ কিছু সবজি যুক্ত করেছেন সেই সাথে বরি যুক্ত করায় রেসিপিটা বেশী লোভনীয় লাগছে। যাইহোক রেসিপি টি তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনিও দেখছি আমার মতো সবজি প্রেমী।
বাজারে গেলে সবজি দেখে মাথা নষ্ট হয়ে যায়, কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনবো।
যাইহোক সেই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর সবজিগুলো দিয়ে অসাধারণ একটি রেসিপি তৈরি করে দেখালেন।
নিঃসন্দেহে এটা পুষ্টিকর খাবার। আমি ভাবছি তৈরি করে খাবো।
অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

শীতকালে ঠান্ডার জন্য আমারও কষ্ট হয়। তবে বিভিন্ন রকম খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারি এজন্য বেশি ভালো লাগে। পালং শাক কখনও মাংস অথবা বিভিন্ন রকম সবজি দিয়ে রান্না করা হয়নি। শুধুমাত্র মাছ দিয়ে রান্না করা হয়েছিল। তবে আপনার কাছ থেকে নতুন ধরনের একটা রেসিপি শিখতে পারলাম আপু।

শীতকালীন সবজি দিয়ে দারুন রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। শীতকালে সব ধরনের সবজি পিঠা পুলি খাওয়া যায় এজন্য আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি বিভিন্ন ধরনের সবজি তার সাথে বড়ি ব্যবহার করে দারুন রেসিপি তৈরি করেছেন । এ ধরনের রেসিপি গুলো খেতে ভীষণ লাগে। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।

আমিও খুব সবজি প্রিয় মানুষ। পালং শাকের এই সবজিটা আমিও প্রায়ই রান্না করে থাকি। শীতকালে এই সবজি খাওয়ার মজাই আলাদা। আর বুড়ি যেহেতু দিয়েছেন তাই রান্নার স্বাদ ও অনেক গুণ বেড়ে গেছে।

শীতকালে এই ধরনের পদ খেতে খুব ভালো লাগে। আপনি অনেক রকম সবজি দিয়ে দারুন সুন্দর এই তরকারি টি রান্না করলেন। প্রতিটি ধাপে খুব সুন্দর করে রেসিপিটি উপস্থাপনও করেছেন। সব মিলিয়ে দারুণ সুন্দর একটি রেসিপি পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন বলে ধন্যবাদ।

বাহ্ পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো দিদি। আপনি পালং শাকের চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখতে অনেক লোভনীয় লাগছে। শীতের সময়ে পালং শাক খেতে খুবই ভালো লাগে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।

মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। এভাবে কখনো তৈরি করা হয়নি। তাই ধাপগুলো থেকে শিখে নিলাম।

ঠিক বলেছেন আপু শীতকালে অনেক ধরনের সবজি পাওয়া যায়। শীতকালীন সবজি গুলো অন্যান্য সময় পাওয়া গেলেও শীতকালের মত স্বাদ হয়না। আজকে আপনি অনেকগুলো সবজি মিশিয়ে পালং শাক রান্না করেছেন। তাছাড়া বড়ি দেয়ার কারণে স্বাদ মনে হয় আরো বেড়ে গিয়েছিল। দেখতে তো বেশ লোভনীয় লাগছে।

শীতকাল আসলে বিভিন্ন ধরনের সবজি খাওয়া যায়। আর শীতকাল আসলে সবজির রাজত্ব চলে। আজকে আপনি বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে পালং শাকের রেসিপি করেছেন। আপনার রেসিপিটি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। মজার পালং শাকের রেসিপি অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।