কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
গৃহবধূ নাম শুনলে কেমন জানি লোকের মনে হয় যে সব মেয়েদের কোন যোগ্যতা নেই সেই সব মেয়েরাই গৃহবধূর পদবীটা বেছে নেয়। অথবা যেসব মেয়েরা অলস প্রকৃতির বাইরে গিয়ে নিজে অর্থ উপার্জন করতে চায় না সেসব মেয়েরাই গৃহবধূ হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও সেরকম না যেমনটা কিছু কিছু মেয়েরাও মনে করে থাকে। অনেক স্বামী আছে তারাই চায় না যে তার স্ত্রী বাইরে গিয়ে চাকরি করুক। তারা চায় তাদের স্ত্রী তাদের সংসার সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুক। আবার অনেক মেয়েরা আছে যারা একটু সংসারী প্রকৃতির সংসার করতেই বেশি ভালোবাসে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছে যারা মনে করে যেসব মেয়েরা গৃহবধূ তাদের শুয়ে বসে দিন কাটানো ছাড়া আর কোনই কাজ নেই। অনেক পুরুষ মানুষ তো আবার মুখের পরে বলেই বসে তাদের গৃহিণীকে যে, 'তোমার তো বাড়ি বসে কিছু করা লাগে না বাইরে কাজ করতে যে কত কষ্ট সেটা বুঝবে কি করে? সারাদিন তো শুয়ে বসেই দিন কাটাও আর ওই দুবেলা রান্না করো'। এমন কথা শুনলে যে কোন গৃহবধূর মনে খুব কষ্ট লাগবে। কারণ তারা হয়তো জানে না যে একটা সংসার পরিচালনা করতে এবং সবকিছু গুছিয়ে রাখতে তিনবেলা রান্না করতে অনেক কষ্ট হয়।
তবুও প্রত্যেকটি গৃহবধূ অনেক যত্ন সহকারে তার সংসারটা সামলে রাখে। কারণ তারা এই সংসারটা এবং সংসারের প্রত্যেকটা সদস্যকে অনেক বেশি ভালোবেসে থাকে। আসলে সংসার সামলানো মোটেও মুখের কথা নয় কারণ প্রত্যেকটা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী তাদের প্রত্যেকটা চাহিদা পূরণ করা। সময়মতো বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষের সবকিছু গুছিয়ে দেওয়া। স্বামী চাকরিতে অর্থাৎ কাজে যাওয়ার সময় তাকে গুছিয়ে সবকিছু সামনে দেওয়া খাবার তৈরি করে তাকে সময়ের মধ্যে খাইয়ে দেওয়া, বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার আগে তার বই খাতা ব্যাগে গুছিয়ে দেওয়া এবং বাচ্চাদের পেট ভরে খাইয়ে দেওয়া সব কাজই একজন গৃহবধূ করে থাকে। এছাড়া অনেক সময় বাচ্চাদের স্কুলে দিতে যাওয়া এবং নিয়ে আসতেও হয়। অনেক সময় বাজারও বাড়ির গৃহবধূরই নিজে করতে হয়। এছাড়াও বাড়িতে যদি বয়স্ক শশুর শাশুড়ি অথবা বাবা-মা থাকে তাদের সময় মত ওষুধ খাওয়ানো এবং বিভিন্নভাবে সেবা যত্ন করে থাকতে হয় একজন গৃহবধূর। এছাড়াও সংসারের প্রত্যেকটা কাজ ঘর পরিষ্কার রাখা থেকে শুরু করে প্রত্যেকের জামা কাপড় কাঁচা এবং প্রত্যেকটা জিনিস গুছিয়ে জায়গায় রেখে দিতে হয়।
যেন সবাই আবার জায়গার জিনিস জায়গায় পেয়ে যায়। সবার কথা চিন্তা করতে করতে অনেক সময় নিজের জন্যই সময় থাকে না। তবুও বাড়ির গৃহবধূ সবসময়ই সবাইকে ভালো এবং সুস্থ রাখার চেষ্টা করে চলে। আসলে বাড়ির প্রত্যেক সদস্য কিন্তু এই বাড়ির গৃহবধুর ওপর সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভরশীল থাকে। কারণ বাড়ির সবার প্রয়োজন একমাত্র তিনিই জানেন। তবুও অনেক সময় এই গৃহবধূকে অপমানিত হতে হয়। কারণ তারা সংসারে অর্থ উপার্জন করে দেয় না। কিন্তু একটু শান্ত মাথায় ভাবলে দেখা যায় এই সংসারের গৃহবধুর কারণেই অনেক অর্থ সাশ্রয় হয়ে থাকে, অথবা বলা যায় এই গৃহবধূরা সংসারে বিভিন্নভাবে সাশ্রয় করে কিছু অর্থ সংরক্ষণ করে থাকে। যা তারা তাদের স্বামীর বিপদে সাহায্য করতে পারে। বাড়ির গৃহবধূরা নিজেরা যতই কষ্টে বা শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে থাকুক না কেন তাও অনেক সময় দেখা যায় তারা পরিবারের বাকি সদস্যর কথা ভেবে কিন্তু সংসারের সব কাজ করেই চলে। অনেক সময় দেখা যায় তাদের শরীরে অনেক বেশি জ্বর থাকা সত্ত্বেও তাদের সারাদিনের দৈনন্দিন কাজ করতে থাকতে হয়। যেমন রান্না করা এবং বাড়ির প্রত্যেকটা সদস্যকে ঠিক সময় মত তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া।
কিন্তু এত কিছু করা সত্ত্বেও অনেক মানুষ তাদের সারাদিনের এই পরিশ্রম যেন চোখেই দেখতে পায় না। আর তারা এমন ভাব করে যেন বাড়ির সব কাজ এমনিতেই হয়ে যায় বাড়ির গৃহিনীর কিছু করাই লাগে না। কিছু কিছু পুরুষ মানুষ আছে তারা সারাদিন বাইরে থেকে পরিশ্রম করে এসে তাদের স্ত্রীর সাথে ভালোভাবে কথা না বলে কেমন খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। কিন্তু তারা এইটুকু বোঝে না যে বাড়ির গৃহিণীরাও সারাদিন বাড়িতে বসে থাকে না কিছু না কিছু কাজ করতেই থাকে। এবং সারাদিন বাদে তাদেরও ইচ্ছা করে যে তাদের স্বামী তাদের সাথে একটু ভালো ব্যবহার করবে এবং একটু তাদের সাথে সময় কাটাবে। অনেক পুরুষ মানুষ মেয়েদের কষ্ট না বুঝলেও কিছু কিছু পুরুষ মানুষ আছে যারা তাদের স্ত্রীর কষ্ট বুঝে থাকে। সেই জন্য অনেক সময় দেখা যায় তারা কাজ থেকে এসে তাদের স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করে এবং সুন্দর করে একটু সময় কাটায়। আবার অনেকে আছে স্ত্রীর সাথে হাতে হাতে কাজ করে এগিয়ে দেয়। আসলে একজন গৃহিনী চায় যে তার স্বামী তাকে অবহেলা না করে একটু তার মনের কথা যেন বোঝে এবং তার সাথে যেন একটু ভালো সময় কাটায়।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit