দুর্গাপূজা ২০২৪। পর্ব:- ৬

in hive-129948 •  18 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000014361.jpg

1000014374.jpg



আমরা বনগাঁর বড় বড় নামকরা প্যান্ডেল গুলো সব দেখে ফেলেছি। এবার ভাবছি বাড়ির দিকে যাওয়া যায়। আর এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যেই সকাল হয়ে যাবে। আমাদের এখন দিদির বাড়ির দিকে যেতে হবে অবশ্য যেতে যেতে আমরা আরো কয়েকটি প্যান্ডেল দেখতে পাবো। সেই মত হাঁটতে হাঁটতেই পাশে একটি প্যান্ডেল দেখতে পেলাম। প্যান্ডেলটি একটু ছোট করে করেছে। কার্ডবোর্ড বা পিচবোর্ড জাতীয় কিছু কেটে সুন্দরভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। আর তার সাথে জ্বলছে বিভিন্ন রঙের লাইট। ভেতরে ঢুকে প্রতিমা দর্শন করতে গিয়ে দেখলাম। মায়ের মূর্তি এবং তার সাথে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী সব দেবীর মূর্তি পিতলের মূর্তির মত দেখতে লাগছে। খুবই সুন্দর লাগছে দেখতে। মা দুর্গা একটি ড্রাগন এর উপর বসে আছে। আর তার সামনে আছে সম্ভবত একটি ষাঁড়ের মাথা। মায়ের শাড়ি এবং অলংকার সবই সোনালী রঙের। মাকে প্রণাম করে আমরা বেরিয়ে গেলাম।

1000014379.jpg

1000014382.jpg



আবার হাঁটতে শুরু করলাম কিছুক্ষণ বাদে আরও একটি প্যান্ডেলের দর্শন হলো। এই প্যান্ডেলটি শ্রী রাধা কৃষ্ণের প্রেম মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে। এই প্যান্ডেল টিতে অবশ্য একটু লাইনও পড়েছে, তাই আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। প্যান্ডেলের সামনে যেতেই দেখলাম সুন্দর একটি জলের ফোয়ারা করেছে প্যান্ডেলের সামনে। আর জলের ফোয়ারা এর ঠিক মাঝখানে শিব ঠাকুর ধ্যানে বসে আছেন। আর জলের ফোয়ারার বাইরে সামনে বসে আছেন গণেশ। গণেশের দুপাশে বসে আছে দুটো ময়ূরপঙ্খী। এসব দেখে আমরা ভেতরের দিকে এগিয়ে গেলাম। ভেতরে ঢুকেই দেখতে পেলাম চারিদিকে শ্রীকৃষ্ণের ছবি। শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন লীলা খেলার ছবি চারিদিকে দেওয়া আছে। এছাড়াও শ্রীকৃষ্ণের রাধার সাথে খুনসুটি করার সুন্দর মুহূর্তগুলো তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটা ছবির চারিপাশে প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে সুন্দর কারুকার্য করা হয়েছে। ছাদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানেও প্লাস্টিকের চামচ দিয়ে সুন্দর কারুকার্য করা। প্যান্ডেলটি পুরোটা প্লাস্টিকের চামচ দিয়েই কারুকার্য করা ছিল।

1000014390.jpg

1000014388.jpg



প্যান্ডেলটির ভেতরে যেদিকেই তাকাই শ্রীকৃষ্ণের ছোটবেলা থেকে শুরু করে বড় হওয়া অব্দি পুরোটাই যেন স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। ছোটবেলায় মাখন চুরি করা , মায়ের শাস্তি দিয়ে বেধে রাখা, শ্রীকৃষ্ণের সখীদের সাথে লীলা করা এবং শ্রী রাধাকৃষ্ণের অনেক ছবি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণের ছবিগুলি মন ভরে দেখে মায়ের প্রতিমা দর্শন করতে গেলাম। মাকে এখানে সুন্দর একটি লাল শাড়ি এবং সুন্দর সোনালী অলংকারে সাজানো হয়েছে। মাকে প্রণাম জানিয়ে আমরা বেরিয়ে গেলাম। আবার আমরা বাড়ির রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলাম। এবার আমরা চলে এসেছি আমাদের নিজের ক্লাবে। এই প্যান্ডেলটিও অনেক সুন্দর করেছে। প্যান্ডেলটিতে ঢোকার রাস্তার দুই পাশে জলের ফোয়ারা করেছে। পুরো প্যান্ডেলের মাঝখানে একটি মায়ের মুখমণ্ডল দেখা যাচ্ছে। এবং তার উপরে ছোট্ট একটি জলের ফোয়ারা করা হয়েছে। প্যান্ডেলের দুই পাশে কিছু মানুষের মূর্তি করা হয়েছে। কিন্তু এই মানুষগুলোকে দেখতে বড়ই অদ্ভুত। চোখ গুলো কেমন টানা টানা আর নিচের অংশ অনেক মোটা।

1000014430.jpg

1000014428.jpg



আমরা এবার ভেতর দিকে প্রবেশ করলাম। ভেতরে প্রবেশ করে চারপাশে দেখতে পেলাম একই ধরনের মানুষের মূর্তি। কিন্তু এখানের মূর্তিগুলো আকারে একটু ছোট আর অলংকারে সজ্জিত। মূর্তিগুলো দেখতে ভালো লাগছিল। ছাদের দিকে তাকাতেই দেখলাম ছাদের কোনা জুড়ে লাইট ঝুলে আছে। আর মাঝখানে বড় বড় তিনটি ফুলের মত কারুকার্য করা। মাঝখানের ফুলটিতে একটি ছোট ঝাড়বাতি ঝুলছে আর পাশের দুটো ফুলের মধ্যে মায়ের মুখমণ্ডল রয়েছে। এসব দেখে আমরা মায়ের প্রতিমার দিকে এগিয়ে গেলাম। মা এখানে সুন্দর একটি সাদা বস্ত্র পড়েছিল। এবং দুর্গা মা সহ লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী সব দেবী ধ্যান করার মত করে বসে আছেন। প্রত্যেক মানুষের কিছুক্ষণ হলেও ধ্যান করা উচিত এতে মন শান্ত হয় এবং শরীর ভালো থাকে। আমরা দেবী প্রণাম করে প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে এলাম। এবার আমরা দিদি বাড়ি থেকে বাইকটা নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। আমাদের বাড়ি ঢুকতে সকাল হয়ে গিয়েছিল।

1000014440.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

খুব সুন্দর সুন্দর দুর্গা পূজার ছবি শেয়ার করছেন। পুজোর পরেও এত সুন্দর ছবি দেখে যেন পুজোর আমেজ আবার ফিরে আসছে। কিন্তু লোকেশন যুক্ত করুন। লোকেশন ছাড়া ছবির অবস্থান বোঝা যাচ্ছে না।