কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
অবশেষে আমরা বারাসাতে কালী পুজো দেখার একদম শেষের দিকে চলে এসেছি। সত্যি কথা বলতে বারাসাতের প্রচুর কালীপুজোর প্যান্ডেল দেখে নিয়েছি। এবার আমাদের শরীর আর চলছে না খুবই ক্লান্ত অনুভব করছি। এবার সোজা রাস্তায় একটা প্যান্ডেল আছে সেটা দেখেই বাড়ির দিকে রওনা করব। সারারাতটাই কালী মায়ের প্যান্ডেল দেখে কাটিয়ে দিলাম আর কিছুক্ষণ পরে ভোর হয়ে যাবে। সূর্যের আলো পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছে যাবে, আর কতক্ষণই বা এনার্জি থাকে। সারারাত ধরে অনেক হাঁটাহাঁটি করেছি আমরা সেজন্য এবার পা দুটো ব্যথা করা শুরু হচ্ছে আস্তে আস্তে। বেশি দেরি না করে সামনের প্যান্ডেলের দিকে আরো একটু কষ্ট করে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম প্যান্ডেলের সামনে। প্যান্ডেল থেকে একটু আগেই দেখতে পেলাম তিনটি বড় বড় লাইটিং করেছে। এবং এই লাইটিং এর আকৃতি তিনটি কুলোর মতো করেছে। আর এই কুলোর উপরে একটিতে ঘট তার উপরে নারকেল, দ্বিতীয়টিতে একটি সিঁদুরদানি এবং তার ওপরে প্রজাপতি বসেছে, এবং তৃতীয় কুলোতে কনে ও বরের মুকুট রয়েছে।
এবং এই তিনটি গুলোর সামনে আবার দেখা যাচ্ছে তিনটি হাত রয়েছে সেই হাতে আরো কিছু ধরা আছে যেটা আমি সঠিক জানিনা। তবে এগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলো সব বিয়ের সামগ্রী লাইটিং এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা এসব দেখে আরেকটু সামনে এগিয়ে যেতেই আমাদের আবার দড়ি দিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল। বোঝা যাচ্ছে ভেতরে একটু ভিড় হতে চলেছে। তাও আমরা একটু কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থেকে আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভেতরে ঢুকে দেখতে পেলাম সত্যিই অনেকটাই ভিড় রয়েছে ভেতরে। ঢুকতেই ডান দিকে বড় প্যান্ডেল দিয়ে খুবই কালারফুল লাগছে দেখতে। বাঁ দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম আরও অনেক দেবদেবী সারিবদ্ধ ভাবে বসে আছে। এখানে মায়ের বিভিন্ন রূপের প্রতিমা করা হয়েছে। সবগুলো প্রতিমাই দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। আমরা ভিড়ের মধ্যে দিয়েই আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম। আরেকটু সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম বাঁ দিকের দেয়ালে আরো কিছু দেব-দেবীর ছবি রয়েছে। তবে এই ছবিগুলো পুরো সিলভার রঙের করা হয়েছে।
আরেকটু সামনে এগোতেই প্যান্ডেলের একদম সামনে দেখতে পেলাম একটি বড় জলের ফোয়ারা করা হয়েছে। এই জলের ফোয়ারাকে মাঝখানে রেখে দুই পাশ থেকে দুটো লাইন চলে গেছে প্যান্ডেলের দিকে। আমি এই লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটা জিনিস ভাবছিলাম যে, আমাদের মত মানুষ কত আছে এত রাতেও প্যান্ডেল দেখা ছাড়ছে না এত ভিড় ভাবাই যায় না। অনেক আস্তে আস্তে লাইন টানছিল তবু আমরা মোটামুটি আধ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলাম। তারপর অনেক কষ্টে ভিতরে প্রবেশ করেই মায়ের প্রতিমা দর্শন করে মনটা একটু শান্তি পেল। ভেতরে ঢুকেই চারিদিকটা এত চকচক করছিল যে মনে হচ্ছিল চারিদিকে যেন আয়না অথবা কাচ লাগানো রয়েছে। মনে হচ্ছে নিজের মুখটাই যেন এবার দেখতে পারবো। তবে এখানে কোনো রকম কাচ লাগানো হয়নি। অন্য এমন কিছু দিয়ে কারুকার্য করা হয়েছে যেন এমন চকচক করে। তবে চারিদিকে অনেকগুলি কৃষ্ণের মূর্তি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
মাথার উপরে আবার পুরো ছাদ জুড়ে অনেক বড় ঝুমুর লাগানো রয়েছে। এই ঝুমুরের আলোতেই পুরো প্যান্ডেলটি আলোকিত হয়ে রয়েছে। মায়ের প্রতিমাটি পুরো নীল রঙের করেছে, আর সারা শরীরে ভর্তি করে অনেক অলংকার পড়া আছে। মূলত অলংকার এই শরীর ঢেকে গেছে তাই মাকে দেখতেও অনেক সুন্দর লাগছে। মায়ের প্রতিমার দুই পাশে আবার দুটি ছবি দেখা যাচ্ছে যেখানে একদিকে দেবী সিতার সতীত্ব এর প্রমাণ করার জন্য অগ্নিপরীক্ষা দিচ্ছেন এবং অন্যদিকে কালী মায়ের পূজা করার ছবি দেখা যাচ্ছে। মূল কালী মায়ের প্রতিমার সামনে একটু নিচে দেখা যাচ্ছে আরও একটি কালী মায়ের মূর্তি রয়েছে। এখানে সম্ভবত আসল পূজা করা হয়েছে। কালী মায়ের পেছনে সাদা এবং নীল রঙের ব্যাকগ্রাউন্ড খুবই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এই প্যান্ডেলটিও বেশ ভালই করেছে। মায়ের মুখ টি ভালো করে দেখে মাকে প্রণাম জানিয়ে এবার প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সৌজন্যে বারাসাতের দারুণ দারুণ কালী পূজা একবার সুযোগ পেয়ে গেলাম বোন। আপনি দারুণ সুন্দর করে পোষ্টের মাধ্যমে বারাসাতের কালী পূজার আলো এবং মন্ডপ দর্শন করারচ্ছিলেন। এই মন্ডপ আমার দারুণ সুন্দর লাগলো। বিশেষ করে ভালো লাগলো এর আলোকসজ্জা। বারাসাতের কালী পূজা বিখ্যাত আমি শুনেছি। কিন্তু কখনো দেখবার সৌভাগ্য হয়নি। আপনার ছবি দেখে অবশ্যই পরের বছর একবার যাওয়ার ইচ্ছে হলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit