দেশি স্টাইলে চিকেন রেসিপি।

in hive-129948 •  16 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000018030.jpg



আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আমার বাবা চিকেন কিনে এনেছে। আমি যেতেই আমাকে বলল পাতলা ঝোল করে চই ঝাল দিয়ে আর গোটা পেঁয়াজ দিয়ে রান্না করতে। পুরো দেশি স্টাইলে আগে যেমন রান্না হতো গোটা পেয়াজ এবং গোটা রসুন দিয়ে। তেমনটাই আজকে বাবার খেতে ইচ্ছা করছে। আমিও একবার খেয়েছিলাম এমন রান্না গ্রামের দিকে খুবই সুস্বাদু হয় এইভাবে রান্না করলে। আমি একটুও সময় নষ্ট না করে রান্নার আয়োজন করা শুরু করে দিলাম।

1000018009.jpg


1000018010.jpg


-:চিকেন রান্নার উপকরণ:-

চিকেন
আলু
পেঁয়াজ
রসুন
আদা
চই ঝাল
জিরা গুঁড়া
ধনে গুঁড়া
শুকনো লঙ্কার গুঁড়া
গরম মসলার গুঁড়া
গোটা দারচিনি
তেজপাতা
গোটা এলাচ
গোটা লবঙ্গ
গোটা জিরা
হলুদ
লবণ

1000018019.jpg


1000018013.jpg


-:রেসিপি:-

চিকেন রান্না করার জন্য আমি প্রথমেই মাংস ভালো করে ধুয়ে একটা ঝাজরি ঝুড়িতে রেখে দিলাম যেন জলটা ভালো করে ঝরে পড়ে যায়। মাঝারি সাইজের কয়েকটি আলু নিয়ে নিলাম। আলু গুলি ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে নিলাম। এরপর আলু গুলোকে ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে দুখণ্ড করে কেটে নিলাম। তারপর পরিমাণ বুঝে কয়েকটি পেঁয়াজ খোসা ছাড়িয়ে নিলাম। এবার পেঁয়াজ গুলোকে ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে কুচি করে নিলাম। এবার পরিমাণ মতো আদা নিয়ে ভালো করে শিলে বেটে নিলাম। একইভাবে পরিমাণ মতো রসুন নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে শিলে বেটে নিলাম। এরপর চই ডালটা ভালো করে গা টা একটু বটিতে আছড়ে নিলাম। তারপর প্রায় এক কর মত লম্বা করে পুরো ডালটা কেটে নিলাম। এবং ছোট ছোট করে কাটা চই গুলো নোড়া দিয়ে একটু থেঁতো করে নিলাম। এবার ছোট ছোট দেখে কিছু পেঁয়াজ খোসা ছিলে নিলাম। এই ছোট আকারে পেঁয়াজ গুলি কুচি করবো না এগুলো গোটাই মাংসের মধ্যে দেব।

1000018014.jpg


1000018012.jpg



এ পর্যায়ে দেখতে পাচ্ছি আমার মোটামুটি কাটাকাটি হয়েছে। এবার আমি রান্নাটা শুরু করে দেব, তার জন্য একটা কড়াইতে পরিমাণ মতো সরষের তেল নিয়ে নিলাম। তেলটা গরম হলে তার মধ্যে কিছুটা পরিমাণ গোটা জিরা ফোড়ন দিয়ে দিলাম, এবং প্রায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দিয়ে দিলাম তেজপাতা, গোটা দারচিনি, গোটা এলাচ, এবং গোটা লবঙ্গ। ফোড়নটি একটা সুন্দর গন্ধ ছাড়তে এর মধ্যে দিয়ে দিলাম কুচি করা পেঁয়াজ। পেঁয়াজটা সুন্দর করে একটু ব্রাউন রংয়ের ভাজা করে নিলাম। এরপর দিয়ে দিলাম আগে থেকে বেটে রাখা আদার পেস্ট। এবার একটু নাড়াচাড়া করে নিলাম আবার একটু রসুন বাটা দিয়ে দিলাম। এবার কিছুক্ষণ সুন্দর করে নাড়াচাড়া করে নিলাম। আদা রসুনের কাঁচা ভাবটা চলে গেছে এবং একটু ভাজা ভাজা হয়ে গেছে। এই সময় দিয়ে দিলাম এক চামচ জিরা গুঁড়ো এবং এক চামচ ধনে গুঁড়ো। দুই একবার নাড়াচাড়া করেই দিয়ে দিলাম শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো। এবার আমি অল্প একটু জল দিয়ে নেব না হলে নিচে কড়াইতে মসলা পুড়ে যেতে পারে।

1000018017.jpg


1000018018.jpg



এবার ভালো করে সব মসলা সুন্দর করে কষিয়ে নেব। একটু পর পরিমাণ মতো হলুদ দিয়ে দিলাম এবং স্বাদমতো লবণ দিয়ে দিলাম। এ পর্যায়ে আরো কিছুক্ষণ মসলাগুলোকে ভালো করে কষিয়ে নিলাম। এবার দেখতে পেলাম মসলা কষিয়ে পাশে তেল ছেড়ে দিয়েছে। ধুয়ে রাখা মাংস কড়াইতে দিয়ে দিলাম। সুন্দর করে মাংসটাকে মসলার সাথে মাখিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম। একটু বেশি সময় ধরেই মাংসটাকে কষিয়ে নিলাম। শুনেছি মাংস মসলার সাথে ভালো করে কষিয়ে নিলেই নাকি স্বাদ ভালো হয়। ভালো করে কষানো হয়ে গেলে এবার আমি চই গুলিকে দিয়ে দিলাম। এবার একটু নাড়াচাড়া করে পরিমাণ মতো জল ঢেলে দিলাম। মাংসের ঝোলটা ভালো করে ফুটে আসলে কেটে রাখা গোটা ছোট আকারের পেঁয়াজগুলো দিয়ে দিলাম। এবার ভালো করে জ্বালিয়ে নিলাম। ভালো করে জাল দিয়ে পরিমাণ মতো ঝোল রেখে নিলাম। এবার এক চামচ মত গরম মসলার গুঁড়ো দিয়ে দিলাম। আগুনটা নিভিয়ে ঢেকে দিলাম তাহলে গরম মসলার ফ্লেভারটা সুন্দর মিশে যাবে। এ পর্যায়ে আমার রান্না সম্পন্ন হলো, এবার পরিবেশনের পালা।

1000018020.jpg


1000018028.jpg

ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

চই মানে কি আপু?

মাংসের রান্নার পর রংটা কি অপূর্ব এসছে। বহু আগে আমাদের বাড়িতে আমার লাল লাল ঝোল বানানো হতো। এখন সকলেরই স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই ঝোল বানানো হয় না। তবে আপনার পোস্টে পুনরায় সেই জিনিস দেখতে পাওয়ার জন্য আনন্দিত। ভালো থাকবেন আপু।

আপু একটা ফটো আছে দেখেন ডাটা বা গাছের ডাল এর মত দেখতে ছোট ছোট টুকরো করে কাটা আছে। ওইটাকেই চই বলে। অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটা কমেন্ট করার জন্য।

আচ্ছা৷ ওটা কিসের ডাটা?

ওটা চই ডাটা, এটি চিবালে অনেক ঝাল লাগে।

এটাকে চুই ঝাল বলে আপু। আমাদের বাংলাদেশের যশোর খুলনা অঞ্চলে পাওয়া যায়। চুইঝালের মাংস রান্না করলে খুবই সুস্বাদু। চুইঝালের মাংস অনেক জনপ্রিয়।

বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে চিকেন রেসিপি তৈরি করা যায়। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে দেশি স্টাইলে চিকেন রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা চিকেন রেসিপি টি অসাধারণ হয়েছে। রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। আপনি প্রতিটি উপকরণ একদম সমান ভাবে মিশ্রণ করে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন।

আপু আপনার মাংস রান্না ধাপগুলো আমার ভীষণ ভালো লাগলো। খুবই সুন্দর ভাবে দেশি স্টাইলে মাংস রান্না করেছেন। তবে চই ঝাল এটা আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজকে প্রথম দেখলাম। ভীষণ ভালো লাগলো আপু আপনার রেসিপিটা ধন্যবাদ।

আপনার তৈরি করা রেসিপিটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে দেখতে। তবে আপনি একটু চেষ্টা করবেন অন্যদের পোস্টগুলো ভালোভাবে দেখে ধাপ অনুযায়ী সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য। আরো একটু ডিটেলসে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে পোস্টটা দেখতে তখন আরো বেশি ভালো লাগবে। দেশি স্টাইলে চিকেন রেসিপিটা তৈরি করেছেন দেখে আমার তো অনেক লোভ লেগে গিয়েছে। বোঝা যাচ্ছে অনেক সুস্বাদু ছিল রেসিপিটি।

মুরগির মাংস অনেক ভাবেই খেয়েছি। কিন্তু কখনো সজনে ডাটা দিয়ে এভাবে মুরগির মাংস তৈরি করে খাওয়া হয়নি। কিন্তু আজকে তৈরি আপনার এই রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। নতুন এই রেসিপি আমাদের মাঝে এত সুন্দর হবে জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

চুই ঝাল টা দেখেই চিনেছি। পরবর্তীতে উপকরণ দেখে পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম। চিকেন রেসিপি টা দারুণ তৈরি করেছেন আপু। এবং রেসিপি টার উপস্থাপনা টাও বেশ চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে।।

অনেক সুন্দর একটি চিকেন রেসিপি করেছেন বাবার আবদার মতো। খুব সুস্বাদু হয়েছে আপনার রেসিপিটি তা রন্ধন পদ্ধতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। রেসিপির ধাপ উল্লেখ্য করলে আরো ভালো হতো।ধন্যবাদ চুই ঝাল দিয়ে দেশি মুরগির ঝোলা রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।