মামা বাড়ি ভ্রমণ শেষ পর্ব।

in hive-129948 •  25 days ago 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000032381.jpg


1000032354.jpg



মামা বাড়িতে দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরে সুন্দর একটা ঘুম দিয়ে নিলাম যেহেতু বিগত কয়েকদিন বোনের বিয়ের জন্য ঠিকঠাক করে ঘুম হয়নি তাই দীর্ঘ সময় ঘুমিয়েছিলাম। মনে ছিল না যে সন্ধ্যা বেলায় আমরা ঘোরাঘুরি করতে বের হব। আমার বৌদির ডাকে ঘুম ভাঙলো প্রায় রাত সাড়ে সাতটা পৌনে আটটার সময়। ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে বৌদি বলল, ঘুমিয়ে তো রাত কাটিয়ে দিলে, ঘুরতে যাবে কখন? আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম অনেক দেরি হয়ে গেছে। যেহেতু হঠাৎ করে বৌদির ডাকে ঘুম ভাঙলো তাই মাথাটা ধরে গেছিল। এমন সময় দাদা আসলো আমরা কি করছি সেটা দেখতে। দাদা আসতে বললাম একটু চা বানিয়ে খাওয়াতে। দাদা দেরি না করে আমাদের জামা কাপড় পড়ে রেডি হতে বলে চা বানাতে গেল। আমরা সাজগোজ করে রেডি হতেই দাদা চা নিয়ে উপস্থিত হল। এবার মাসি বাড়ি এবং মামা বাড়ি ঘোরার মধ্যে সবথেকে ভালো জিনিস যেটা ছিল সেটা হল আমার দাদার বানানো চা। অনেক কপাল করে এবার মুখ ফুটে চাইতে না চাইতেই দাদার বানানো চা খেতে পারলাম। আমি বৌদি এবং দাদারা সবাই গল্প করতে করতে চা খেয়ে প্রায় সাড়ে আটটা বাজতেই বেরিয়ে গেলাম ঘোরাঘুরির উদ্দেশ্যে।


1000032379.jpg


1000032382.jpg


এদিক ওদিক বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে আমরা চলে গেলাম একটি জাগ্রত জগন্নাথ বাবার মন্দিরে। মন্দিরের বাইরের গেটটা অনেক সুন্দর দেখতে ছিল। আমি এর আগে যখন মামা বাড়ি গেছিলাম তখন এই মন্দিরটা তৈরি হয়ে পারিনি। এবার গিয়ে এই মন্দিরটা নতুন দেখতে পেলাম। মন্দির অনেক বেশি সুন্দর এবং সুন্দর পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। চারিদিকটা খুব চকচকে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। সাদা পাথরে তৈরি করা পুরো মন্দির। আমার এত ভালো লেগেছে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করে যে ভাবলাম কয়েকটি ছবি তুলে রাখব স্মৃতি হিসেবে। যেই একটি ছবি তুলেছি সাথে সাথে মন্দিরের গেটম্যান আমাকে বারণ করে বলল এই মন্দিরের ছবি তোলা নিষিদ্ধ। আমার মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেল। তবু আমি চুরি করে আর দু-একটা ছবি তুলে নিয়েছি। তারপর বাইরে থেকে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসল মন্দিরে প্রবেশ করলাম এবং জগন্নাথ বাবার দর্শন পেলাম। মন্দিরের ভেতরের চারপাশটা এতটাই অপরূপ সুন্দর যে আমার ইচ্ছা করছিল যে চুরি করে আরও কয়েকটা ছবি তুলে রাখতে তবে ভেতরের দুজন গার্ড ছিল এবং চারিদিকে অনেক বেশি ক্যামেরা লাগানো ছিল। তাই আর দুঃসাহস দেখালাম না এবং ফোনটি ভদ্র মেয়ের মত পকেটে রেখে দিলাম।


1000032385.jpg


1000032388.jpg


মন্দিরের ভেতর বেশ কয়েকজন ভগবানের নাম করছিল। ভেতরের পরিবেশ খুবই শান্ত এবং মনোরম ছিল। আমরাও ভগবানের নাম করতে করতে জগন্নাথ দেবের সাত পাক ঘুরে নিলাম। তারপর মন্দিরের সামনে বসার জায়গায় বসে বসে ভগবানের নাম শুনতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর জগন্নাথ দেবকে রাতের ভোগ দেওয়া হল। এবং কিছুক্ষণের জন্য সামনে পর্দা টাঙিয়ে দেয়া হলো। পাঁচ দশ মিনিট বাদে আবার পর্দা সরিয়ে জগন্নাথ দেবের সামনে রাতের আরতি শুরু করা হলো। আমরাও জগন্নাথ দেবের আরতি দেখে ভগবানের আরতির আগুন স্পর্শ করে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলাম মন্দির থেকে। মন্দির থেকে বেরিয়ে সবাই মিলে একটা দোকানে গিয়ে ফুচকা খেলাম। এখানে দাদারা যে দোকানে ফুচকা খায় সেখান থেকেই খাওয়ালো এখানকার সবথেকে ভালো ফুচকা। তারপর যেহেতু রাতের রান্না করতে হবে তাই আমার বৌদি এবং বড় দাদা বাড়ি চলে গেল। আমি আর আমার ছোট দাদা চলে গেলাম আর একটু নিজের মত সময় কাটাতে এবং আমাদের পার্সোনাল গল্পো করার জন্য গঙ্গা নদীর পাড়ে। আসলে আমি আর আমার ছোট দাদা আমরা প্রায় একই বয়সে, তাই আমাদের মধ্যে দাদা বোনের থেকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অনেক বেশি।

1000032524.jpg


আর আমরা একে অপরের কাছে কোন কিছু লুকাই না বরং আমাদের জীবনে কি ঘটছে না ঘুরছে একে অপরের সাথে সবকিছু শেয়ার করি। আমরা বেশ কিছুক্ষণ গঙ্গার পাড়ে গল্প করছিলাম এবং নিজেদের ব্যাপারেই আলোচনা করতে ব্যস্ত ছিলাম। এমন সময় বাড়ি থেকে বারবার মামি, দাদা এবং বৌদি পর্যায়ক্রমে ফোন করে করে আমাদের বলা যায় বিরক্তই করে দিয়েছিল। তাই আমরা বিরক্ত হয়ে অবশেষে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। বাড়িতে ঢুকতেই মামী ঘূর্ণিঝড়ের মত আমাদের ওপর ঝরে পড়ল। কারন আমরা অনেক রাত করে বাড়ি ঢুকেছি, প্রচন্ড বকা শুনে তারপর আমরা রাতের খাবার নিয়ে ওপর তলায় দাদার ঘরে সবাই মিলে গল্প করতে করতে রাতের খাওয়া সম্পন্ন করলাম। খাওয়া দাওয়া করে অনেক রাত অব্দি গল্প গুজব করে আবার নিজের ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে সকালের খাওয়া দাওয়া সেরে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে। মামাবাড়ি দুদিন বেশ মজায় কাটলো। আবার কবে আসবো তা ঠিক নেই, তবে মামা বাড়ি আসলে থাকতে বেশ ভালোই লাগে অনেক মজায় কাটে সময়। অনেক বেশি মন খারাপ নিয়ে মামা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের বাড়িতে চলে এলাম।

1000032530.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000036764.jpg

1000036763.jpg

1000036762.jpg