কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমার বোনের বিয়ের জন্য যে লজটি ভাড়া করা হয়েছিল তাড়াতাড়ি সাজগোজ করে সেখানে যেতে না যেতেই দেখতে পেলাম বরের গাড়ি চলে এসেছে। গেট আটকে বরের কাছ থেকে যে টাকাটা আমরা চেয়েছিলাম বরকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়ার পর দেখলাম সেই টাকাটা আমাদের দেওয়া হয়নি। অনেক সামান্য টাকা দিয়ে তারা আমাদের সাথে ছলনা করে ঢুকে গিয়েছিল ভিতরে, তাই আমরা প্রচন্ড রেগে গেছিলাম এবং সেই টাকাগুলো আমাদের বোনের চারপাশে ঘুরিয়ে অর্থাৎ নজর তুলে ঠিক যে ব্যক্তি টাকাটা দিয়েছিল তার হাতেই ধরিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। আসলে বিয়েতে মজা হবে কিন্তু ঝগড়া মান অভিমান হবে না এটা হতেই পারে না সেটাই ছিল এই পুরো বিয়ের মধ্যে এই একটাই মান অভিমান হয়েছিল আমাদের। সবাই যে যার যার মত লজের মধ্যে ঢুকে বিভিন্ন খাবার খাচ্ছিলাম এবং সবার সাথে গল্প গুজব করছিলাম এমন সময় পুরোহিত মশাই ডেকে বলল বরকে নিয়ে আসতে। বর এসে মন্ডপে বসে পড়লো এবং বিয়ে যথাক্রমে শুরু হয়ে গেল কিছুক্ষণ পর আবার আমার বোনকে অর্থাৎ বিয়ের কনেকে ডাক দিল। আমার বোনও বিয়ে করতে বসে পড়ল এবং ধীরে ধীরে বিয়ের বিভিন্ন নিয়ম কানুন চলতে লাগলো।
বিয়ের এত কিছু নিয়মকানুন করতে করতে হবু বর বউ দুজনেই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তাই কিছুক্ষণ তাদেরকে বিশ্রাম দেওয়া হল। এবং হঠাৎ করে সেই সময়ই খেয়াল করলাম তার পাশের ঘরেই আমার মেসোমশাই অর্থাৎ আমার বোনের বাবা কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আসলে আমার মেসোমশাই তার মেয়েকে অনেক বেশি ভালোবাসে আর বিয়ে দেওয়ার পরে যেহেতু সে অন্যের বউ হয়ে যাবে এবং তার এই পরিবার ছেড়ে অন্য পরিবারে গিয়ে থাকতে হবে, তখন মেসোমশাই কিভাবে তার মেয়েকে ছেড়ে থাকবে এই সব ভেবেই তার শরীরটা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সত্যি কথা বলতে বিয়ের আগে আমি এইসব ব্যাপার গুলো মোটেও বুঝতাম না তবে এখন বিয়ের পরে অবশ্যই প্রতিটি মেয়ের এবং বাবা-মার এই বিচ্ছেদের সময়টা আর মানসিক অবস্থা আমি মন থেকে উপলব্ধি করতে পারি। মেসোমশাইয়ের শরীর খারাপ শুনে আমার বোন তার বাবার সাথে দেখা করতে গেল এবং তাকে একটু সান্ত্বনা দিল। মেসোমশাইয়ের শরীরটা একটু ভালো হলে আমার বোন আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়লো বাকি বিয়ের নিয়ম কানুন সম্পূর্ণ করার জন্য। প্রায় তিন চার ঘন্টা ধরে বিয়ের বিভিন্ন নিয়ম কানুন পালনের মাধ্যমে বিয়ে চলতে থাকলো।
এই বিয়ের মধ্যে আমার সবথেকে প্রিয় মুহূর্ত হলো সিঁদুরদান। কেন জানিনা ছেলেরা যখন মেয়েদের শূন্য শীতে ভরিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দেয় সেটা আমার দেখতে খুবই ভালো লাগে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি মেয়ে বউ এ পরিণত হয় আর তার সারা জীবনের জন্য রূপ পরিবর্তন হয়ে যায়। সিঁদুর পড়ার পর যে কোন মেয়েকে দেখতে যেন অপরূপ সুন্দরী লাগে। তবে বোনের বিয়েতে আমি এই সিঁদুর পড়ানোর মুহূর্তটা পুরোই মিস করে গেছি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অনেক নিয়ম কানুন পালন করতে করতে এবং যোগ্য সম্পূর্ণ করে উঠতে উঠতে অনেকটা রাত হয়ে গেছিল তাই আমরা সবাই রাতে খাওয়ার জন্য বসে পড়েছিলাম। আর এমন সময়টাতেই শুনতে পারছি সবাই উলুধ্বনি দিচ্ছে তখনই বুঝতে পারলাম যে এখনই সিঁদুর দান হচ্ছে। সিঁদুর দানের মুহূর্তটা এতটা স্পেশাল হয় যে আলাদা করে বোঝাই যায় যে কখন ছেলেটি মেয়েটিকে সিঁদুর পরিয়ে দিচ্ছে। যেহেতু মণ্ডপ আর খাওয়ার জায়গা একদম পাশাপাশি ছিল তাই আমরা খাওয়ার জায়গা থেকেই সবকিছু বুঝতে পারছিলাম যে কখন কি হচ্ছিল। খেতে যাওয়ার আগে বোনের চেহারা যেমন দেখে গেছিলাম খাওয়ার পরে বোনকে গিয়ে দেখি অনেক বেশি সুন্দর লাগছিল পুরো মাথা ভর্তি সিঁদুর যা একটু ছিঁটে ফোটা নাকে মুখেও পড়েছিল।
বিয়ের সব নিয়মকানুন সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আমরা সবাই মিলে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। এবং তার সাথে আমরা কিছু ছবি তুললাম যাতে আমরা ভাই বোনেরাই শুধু ছিলাম। বেশ কয়েকটা সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে ওদের নিয়ে গেলাম খাবার টেবিলে। আমাদের খাওয়া হয়ে গেল ওদের তো এখনো খাওয়া হয়নি, তাই ওরা গিয়ে খেতে বসলো। বোনের বিয়ের মেনুতে ছিল প্রধান আকর্ষণ বিরিয়ানি আর তার সাথে আরও বিভিন্ন খাবারের আইটেম তো ছিলই। তবে সত্যি কথা বলতে অনেক বেশি সুস্বাদু খেতে ছিল বোনের বিয়েতে যা যা রান্না হয়েছিল। বোনের খাওয়া দাওয়া সম্পূর্ণ হবার পর বোনকে লজ থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হল। তারপর আমরা কিছু কাজ করে কিছু জিনিসপত্র গুছিয়ে চলে এলাম বাড়িতে। বাড়িতে এসে সারাদিনের কাজকর্ম এবং আগের দিন রাতের অসম্পূর্ণ ঘুম তবুও যেন এনার্জি আমাদের অফুরন্ত। বাড়ি ঢুকে ও ভাই বোনেরা মিলে আড্ডা ইয়ার্কি গল্প গুজব চলতেই আছে আর তার সাথে তো এখন যোগ হয়েছে আমাদের নতুন জামাই অর্থাৎ বোনের বর। অনেক রাত অব্দি গল্প গুজব করে অবশেষে গুরুজনদের বকা শুনে আমরা ঘুমাতে বাধ্য হলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার বোনের বিয়ের প্রথম পর্বটা পড়েছিলাম আপু। বেশ ভালো লেগেছিল। তবে আজকে তৃতীয় পর্ব পড়ে আরো ভালো লাগছে। এখানে সবাই বেশ আনন্দে আছে দেখা যাচ্ছে। তবে বিয়ে বাড়িতে এই গেটের বিষয়টা নিয়ে সবার সাথে মনোমালিন্য হয়ে থাকে। যাই হোক এরকম কিছুই হয়তো সুন্দর। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্টটা পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit