সম্পর্ক।

in hive-129948 •  13 hours ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17321803648906937046485430607330.jpg


সোর্স



ছোটবেলায় পড়েছিলাম মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ জীব। অনেকজন মিলে একসাথে বসবাস করে, মানুষ কখনোই একা একা থাকতে পারে না। এটা সত্যি যে যারা একা থাকে তাদের অনেক কষ্ট হয়। তাই আমাদের সবারই সঙ্গ দরকার হয়। আর দুটি মানুষ একসাথে থাকতে থাকতে একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের নাম হতে পারে। সম্পর্কের নাম যাই হোক না কেন সম্পর্ক তৈরি করা অনেক সহজ কিন্তু সম্পর্ক ভালোভাবে মেইনটেইন করা এবং সম্পর্ক রক্ষা করা অনেক কঠিন। সামান্য ভুলের কারণে বা সামান্য আঘাতেই সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। আর একবার সে সম্পর্ক ভেঙে গেলে সেটা কখনোই আগের মত সুন্দর করা যায় না। আর যদিও বা সম্পর্ক আগের মত সুন্দর করার চেষ্টা করা হয় একটা ফাটল থেকেই যায়। তাই প্রত্যেকটা সম্পর্ক সুন্দরভাবে রাখার চেষ্টা করাই ভালো। যেকোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য বেশি কষ্টকর কিছু করার প্রয়োজন হয় না।

প্রত্যেক সম্পর্কে প্রয়োজন একে অপরকে ভালো করে বোঝা। একে অপরের মূল্যায়ন করা। আমার মনে হয় মা বাবার সাথে সন্তানের যে সম্পর্ক সেটা অনেক সুন্দর। আর এই সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি অনেক কম হয়। কারণ প্রত্যেকটা মা-বাবা মনে করেন যে তার সন্তান ছোট কিছু বোঝেনা। আর তাই সে কোন ভুল কাজ করলেও সেটা এড়িয়ে যায় মা বাবা। তাই এই সম্পর্ক অনেক সুন্দর থাকে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক এমন হয় যে তাকে ছাড়া সবকিছুই অসম্পূর্ণ লাগে। তাই এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক আমাদের জীবনে অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবচেয়ে জটিল সম্পর্ক হল স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। এ সম্পর্কে প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসা থাকে, ভুল বোঝাবুঝি থাকে, রাগারাগি থাকে, ঝগড়াঝাঁটি থাকে, শুধু থাকেনা একে অপরকে ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা। এই সম্পর্কটি তৈরি হয় দুজন অচেনা অজানা মানুষের থেকে। যারা দুজনেই বিভিন্ন পরিবেশ থেকে বড় হয়। তারপর কোনোভাবে তাদের পরিচয় হয়ে হয়তো প্রেমের সম্পর্ক থেকে তাদের বিবাহ অব্দি পৌঁছায়। আর না হয় পারিবারিকভাবে তাদের দেখাশোনা করে বিবাহ দিয়ে দেওয়া হয়।



দুটি ভিন্ন মানুষ যখন একই সাথে থাকা শুরু করে তখন তাদের মধ্যে এই নতুন সম্পর্ক বুঝে উঠতেই অনেকটা সময় লেগে যায়। আর এ সম্পর্কে যদি একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এবং সম্মান তৈরি না হয় তাহলে একসাথে জীবন কাটানো অনেকটা কঠিন হয়ে ওঠে। এবং তার সাথে একে অপরকে বোঝাটাও অনেক বেশি প্রয়োজন। প্রত্যেকটা মেয়েই বিয়ের পরে চায় যে তার স্বামী তাকে বুঝবে, সারাদিনে কাজের মধ্যে থাকলেও সন্ধ্যায় এসে তাকে একটু সময় দেবে, তার সাথে কথা বলবে। আমার মনে হয় না মেয়েদের খুব বেশি চাহিদা থাকে তার প্রিয় মানুষটার কাছে। কিন্তু মেয়েদের যখন এই ছোট ছোট চাহিদাগুলো পূরণ হয় না তখনই তারা সংসারে অসুখী হতে শুরু করে। ছেলেদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এটা আলাদা কিছু নয়, প্রত্যেকটা ছেলেদেরও কিছু চাহিদা কিছু আবদার থাকে তার স্ত্রীর কাছে, এছাড়াও ছেলেদের কিছু পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে সেগুলো যখন তার স্ত্রী গুরুত্ব দেয় না তখন তাদের মধ্যে অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে।

আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আরও সমস্যা দেখা দেয় প্রত্যেকটা সম্পর্কের মধ্যে। প্রত্যেকটা সম্পর্কেই একটা অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। কারণ বেশিরভাগ সবাই মোবাইল ফোনে সময় কাটায়। যার ফলে সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি আরো বেড়ে যায়। তাই আমার মনে হয় কিছু নির্দিষ্ট সময়ে ফোনের থেকে দূরে থাকা উচিত। আর পরিবারকে সময় দেওয়া উচিত। ছেলেরা সারাদিনই প্রায় কর্মসূত্রে বাইরে থাকে যার ফলে পরিবারকে সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। আমার মনে হয় বাড়ি ফেরার পরে ফোনে অযথা সময় নষ্ট না করে যদি নিজের পরিবারকে এবং নিজের স্ত্রীকে একটু সময় দেওয়া হয় আর তার কথা শোনা বা তার সাথে একটু গল্প করা হয়, তাহলে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা অনেক সুন্দর হতে পারে। আমরা যখন প্রিয় মানুষটিকে ছেড়ে থাকতেই পারবো না তাহলে তাদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্কটা নষ্ট না করে আরো সুন্দর করে নিলে জীবনটা অনেক সুখের হয়ে উঠবে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সম্পর্ক গুলো আসলেই খুব দামি মানুষের জীবনে। একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না। ঠিক যেমন একবার কাচ ভেঙে গেলে আর জোড়া সম্ভব হয় না। সম্পর্ক বজায় রাখা আসলে শিল্পের মত। আর তা আমাদের সকলেরই উচিত বজায় রাখা।