পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি।

in hive-129948 •  19 days ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000022755.jpg



শীতকাল মানেই প্রচুর খাওয়া দাওয়া। শীতকালে আমরা বিভিন্ন রকম খাবার খেয়ে থাকি যেটা গরমের সময় আমরা খাই না, তার মধ্যে সবার খুব পছন্দের একটি খাবার পিঠা। আজকে আমি তাই বানাতে চলেছি পাটিসাপটা পিঠা। এত ঠান্ডা পড়ে গেছে আর এখনো যদি কোন পিঠে করে না খাই তাহলে মনে হয় এই শীতকালটা পুরাই নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ আমার মনে হয় শীতকালের আসল মজা পিঠা খাওয়াতে আসে। আর আমার বাবার পছন্দের পিঠা হল পাটিসাপটা পিঠা। সেই জন্য অন্য কোন পিঠা তৈরি করা হোক বা না হোক পাটিসাপটা পিঠা তৈরি করা খুবই আবশ্যক হয়ে পড়ে। তাই আজকে বানাতে চলেছি বাবার পছন্দের পাটিসাপটা পিঠা। আর এই পিঠা তৈরি করার জন্য খুব বেশি উপকরণ ব্যবহার না করলেও হয়। তাই যেকোনো সময় খুব সহজে তৈরি করা যায় এই পাটিসাপটা পিঠা।

1000022726.jpg


-:উপকরণ:-

আটা
কলা
গুড়
সন্দেশ
দুধ

1000022728.jpg


-:পিঠা বানানোর পদ্ধতি:-

পাটিসাপটা পিঠা বানানোর জন্য প্রথমেই আমি এক বাটি ভরে আটা নিয়ে নিলাম। এখানে আমি আটার সাথে ময়দা এবং চালের গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু চালের গুঁড়ো ব্যবহার করলে পিঠা একটু শক্ত অর্থাৎ একটু মচমচে ধরনের হয়ে যেতে পারে। আর শুধু আটা দিয়ে পিঠা করলে সুন্দর নরম তৈরি করা যাবে। আমার বাবা মচমচে শক্ত কিছু খায় না, নরম পিঠে পছন্দ করে। সেই জন্য চালের গুঁড়ো দিয়ে না করে শুধুমাত্র আটা দিয়ে তৈরি করছি। এছাড়াও ময়দা খাওয়া খুব একটা ভালো না সেই জন্য ময়দাও এখানে আমি ব্যবহার করছি না। একবাটি গুড়, তিনটি কলা, আর দুই প্যাকেট আমুলের গুঁড়ো দুধ নিয়ে নিয়েছি। গরুর দুধ থাকলে খেতে বেশি ভালো লাগতো কিন্তু আমার কাছে যেহেতু ছিল না তাই আমি প্যাকেট গুঁড়ো দুধ ব্যবহার করছি।

1000022730.jpg

1000022731.jpg


এবার আমি পিঠের জন্য প্রস্তুতি নেব। একটি বড় গামলায় প্রথমে তিনটি কলা নিয়ে নেব বেশি কলা ব্যবহার করলে বেশি নরম হয়ে যাবে আর প্যান থেকে পিঠে উঠতে চাইবে না। এই তিনটি কলা চামচ এর মাধ্যমে ভালো করে ম্যাশ করে নিলাম। এবার এর মধ্যে দিয়ে দিলাম ভরা এক বাটি আটা, এক বাটির একটু কম গুড়, আর পরিমাণ মতো জল দিয়ে সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম। এরপর দিয়ে দিলাম দুই প্যাকেট গুঁড়ো দুধ। সেটিও সুন্দর করে মিশিয়ে নিলাম। ঘন করে সব উপকরণ মিশিয়ে নেব, তবে এটি খুব বেশি পাতলা হবে না আবার খুব বেশি ঘনও হবে না। একটি মিডিয়াম ঘন ব্যাটার তৈরি করে নিলাম। ঠিক যেমন গোলা রুটি তৈরি করতে ঘনত্ব দরকার হয় তেমন ঘন ব্যাটারটি তৈরি করেছি।

1000022744.jpg

1000022748.jpg


এবার একটি নন স্টিক প্যানে সামান্য একটু তেল দিয়ে নিলাম। তেলটি ভালো করে প্যানে ছড়িয়ে নিলাম, প্যান্ গরম হতে একটি গোল হাতার সাহায্যে ব্যাটার তুলে ভালো করে প্যানে গোল রুটির আকারে ব্যাটারটি ছড়িয়ে নিলাম পুরো প্যানে। তারপর কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করতেই দেখতে পেলাম গোলা রুটির মত এটি শুকিয়ে এসেছে, কাঁচা ভাব নেই। এমন সময় এই গোলার একপাশ বরাবর লম্বা করে দিয়ে দিলাম সন্দেশ। এরপর এই সন্দেশটাকে গোলার মধ্যে মুড়িয়ে মুড়িয়ে গোল করে নিলাম। ঠিক পাটিসাপটা পিঠের যেমন আকার হয় তেমন করে। আরো কয়েক সেকেন্ড উল্টেপাল্টে দিলাম উপর থেকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ভেতরটা ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেছে। পিঠের রংটা একটু ব্রাউন রংয়ের হয়েছে এবার আমি তুলে নিলাম এবং একটি প্লেটে রেখে দিলাম। এই ভাবেই পুরোটা গোলা দিয়ে আমি অনেকগুলি পাটিসাপটা করে নিলাম।

1000022749.jpg

1000022751.jpg


এইভাবে পাটিসাপটা পিঠা করলে পিঠে অনেক নরম হয় এবং যেকোন বয়স্ক মানুষ ভালোভাবে খেতে পারে। যাদের দাঁত নেই তারাও এইভাবে নরম পিঠে করে দিলে খেতে পারবে। আসলে আমার পাটিসাপটা পিঠে অতটাও পছন্দ নয়। কিন্তু যেহেতু আমার বাবা খুব ভালো খায় এই পাটিসাপটা পিঠে তাই আমি তার জন্য এমনভাবে করে দিই। আর এইভাবে নরম হওয়াতে আমার বাবা ও খুব ভালোভাবে খেতে পারে। এই পাটিসাপটা পিঠে আমি একটু বেশি মিষ্টি দিয়েই করি যেহেতু তিনি মিষ্টি বেশি পছন্দ করে। তবে এভাবে করলে খুবই বেশি সুস্বাদু লাগে আমার বাবার কাছে। যারা মিষ্টি বেশি পছন্দ করে তাদের এই পিঠে এবং এইভাবে বেশি মিষ্টি দিয়ে বানিয়ে দিলে আশা করি তাদেরও খুব পছন্দ হবে।

1000022753.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি এবছর এখন পর্যন্ত কোন দিন খাওয়া হয়নি। তবে, পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি আমার আম্মু তৈরি করে থাকেন। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। আপনি ধারাবাহিক ভাবে খুবই সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে পিঠা রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন।

image.png

পাটিসাপটা পিঠা খেতে আমার ভালোই লাগে। আজকে আপনার তৈরি পাটিসাপটা পিটা দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। পাটিসাপটা পিঠা তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন আপনি,এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শীতকাল এলেই দেখতে পাওয়া যায় মজার মজার পিঠা। পাটিসাপটা পিঠা আমার বেশ পছন্দের। আমার মা মাঝে মাঝেই পাটি সাপটা পিঠা আমাদেরকে তৈরি করে খাওয়ান। আমার খুব পিঠা খেতে ইচ্ছে করছে শীত চলে গেল এখনো বাড়ি যেতে পারলাম না। মায়ের হাতের মজার পিঠা খুব মিস করছি। আপনার রেসিপিটি দেখে আরো বেশি লোভ লাগছে। ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি ধাপ সুন্দর করে উল্লেখ করে পিঠা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো।

শীতের সময় এই পিঠাগুলো বেশি বেশি বাড়ানো চলে এবং বেশি বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। আপনার রেসিপি তৈরি করতে দেখলাম, মনে মনে ভাবলাম আমাদের বাসাতে কতদিন আগে তৈরি করেছিল। তবে খুব শীঘ্রই বানিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করব।

পাটিসাপটা খেতে আমি ভীষণ পছন্দ করি। অসাধারণ এই রেসিপিটা দেখেই যেন খিদে পেয়ে যাচ্ছে। শীতকাল এলেই পাটিসাপটার কথা মনে পড়ে। আর ব্লগ খুলেই দেখি আপনি পাটিসাপটার রেসিপি শেয়ার করেছেন। অসাধারণ এই খাবারের রেসিপি শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ।

বেশ মজাদার ও হল লোভনীয় একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার তৈরি করা এই পাটিসাপটা পিঠা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমি মনে করি এ সময়টাতে সারা ভারতবর্ষে অনেক অনেক পিঠার আয়োজন হয় এবং পিঠা তৈরি হয়। এ পিঠাটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।

খুবই মজাদার পিঠা তৈরি করেছেন আপনি। পাটিসাপটা পিঠাটা আমার কাছে বেশি ভালো লাগে যদি মিষ্টি হিসেবে গুড় ব্যবহার করা হয়। আবার অনেক সময় রয়েছে এই পিঠাতে আমি খেজুরের গুড় ব্যবহার করেছি। যাহোক অনেক লোভনীয় ছিল আপনার তৈরি এই রেসিপি।

পাটিসাপটা পিঠা রেসিপি দেখে খুবই সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে আমি এই পাটিসাপটা পিঠা খুবই পছন্দ করি। আপনার রেসিপি দেখে তাই খেতে ইচ্ছা করছে, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

এ সময় এটা কি যে দেখালেন। দেখেই তো জিভে জল চলে এসেছে আমার। মজার মজার রেসিপি গুলো দেখলে কে পারে লোভ সামলাতে। বিশেষ করে আমি তো একেবারেই পারি না। আর যদি নিজের পছন্দের রেসিপিটা হয় তাহলে তো আরো লোভ লাগে। রেসিপিটা দেখেই তো বুঝতে পারছি কতটা মজাদার হয়েছে। একা একা এতো মজাদার একটা খাবার খেয়ে নিলেন। আমার কিন্তু দারুণ ভালো লেগেছে আপনার আজকের রেসিপি পোস্টটি।

শীতের সময় বিভিন্ন রকম পিঠা খেতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ তো খুব কম রয়েছে। আমার কাছে তো অনেক বেশি ভালো লাগে এরকম পিঠাগুলো খেতে। আপনি খুব মজাদার ভাবে পাটিসাপটা পিঠা তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা পাটিসাপটা পিঠা দেখে আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে। দেখেই বুঝতে পারছি দারুন হয়েছিল এই পিঠা।