দারিদ্রতার কারণ।

in hive-129948 •  3 months ago 

কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1733029903653985339255033868530.jpg


সোর্স


আমার মনে হয় দারিদ্রতার মূল কারণই হল আমাদের চিন্তাভাবনা। কারণ আমি দেখেছি যারা ধনী ব্যক্তি হয় তাদের চিন্তাভাবনা দরিদ্র ব্যক্তির থেকে অনেক আলাদা হয়। ধনী ব্যক্তিদের চিন্তাভাবনা থাকে সবসময় নিজের কাজে মন দেওয়া। তারা সর্বদাই সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করে নেয়। এছাড়াও তারা সবসময় বুদ্ধি দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে। ধনী ব্যক্তিরা সবসময় বিশ্বাস করে শারীরিক পরিশ্রম করলেই কাজে সফলতা আসবে এটা আবশ্যক নয়। অনেক সময় পরিশ্রমের কাজও বিফলে যায়। তাই আগে বুদ্ধি দিয়ে সম্পূর্ণ কাজের পরিকল্পনা করে কাজটি সঠিক হবে কিনা সেটা বিবেচনা করে তারপর সেই কাজটা করেন। আর যারা গরীব হন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা না ভেবেচিন্তে হুটহাট কোন কাজ করে বসেন। এবং এরা শারীরিক পরিশ্রমকেই বেশি প্রাধান্য দেয়। অথচ ভাবে না যে এই পরিশ্রমটা তার কাজে আসবে নাকি বিফলে যাবে।

ধনী ব্যক্তিরা কাজকর্মে মনোযোগী হয় এবং তাদের লক্ষ্যই থাকে যে তারা উন্নতি করবে। কিন্তু যারা গরীব হয় তারা অল্প কিছু অর্থ উপার্জন করলেই মনে করে যে তারা অনেক কিছু পেয়ে গেছে। এবং সেই অর্থ কোথায় ব্যয় করবে সেটাই ভাবনা চিন্তা করে এবং ভোগ-বিলাসেই তারা সেই অর্থ অপচয় করে ফেলে, এছাড়াও বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কাজে তারা অর্থ ব্যয় করে ফেলে। অপর ক্ষেত্রে ধনী ব্যক্তিগণ তাদের আর্থিক উপার্জন সব সময় কোন সুরক্ষিত জায়গায় ইনভেস্ট করতে থাকেন। যাতে তারা আরো ভালো লাভ অর্জন করতে পারে এবং আরো কিছু উপার্জন হয়। কিন্তু যারা গরীব মানুষ তারা মনে করে জীবনটা ছোট আজ আছে কাল নেই যেটুকু যা উপার্জন করব সেটাই ভোগ করে নেব। এদের মধ্যে এমন মানসিকতা হয় যে এরা যখন বেশি উপার্জন করে তখন সেটা বাজে ব্যয় করে নষ্ট করে দেয় কিন্তু বিপদের সময় ভেবে সে উপার্জনের কিছু অংশ সঞ্চয় করে রাখে না। আর বিপদে পড়লে ধার দেনা করে কাজ চালায়। আর সেই ধার দেনা ভবিষ্যতে মেটাতে পারবে কিনা সেটাও তারা চিন্তা করে না।

কিন্তু যারা ধনী ব্যক্তি হন তারা কখনোই তাদের সম্পূর্ণ উপার্জন বাজে ব্যয় করে না, ভোগ বিলাসে বা অপ্রয়োজনীয় কোন কাজে নষ্ট করে ফেলেন না। কারণ তারা সব সময় তাদের বিপদের কথা চিন্তা করেন বা কোন আর্থিক প্রয়োজন হতে পারে ভবিষ্যতে সেই কথা ভেবে তারা সর্বদাই কিছু অর্থ সঞ্চয় করে রাখেন। এছাড়াও দেখা যায় যারা ধনী ব্যক্তি হন তারা সর্বদাই কর্মঠ এবং সঞ্চয়ী হন। তারা কখনোই বাজে সময় নষ্ট করেন না এবং শুয়ে-বসে দিন কাটান না। সর্বদাই তারা ভাবতে থাকেন কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায় বা কাজকর্ম আরো ভালো করে কিভাবে করা যায় যাতে তাদের আরো উন্নতি হয়। কিন্তু যারা গরীব হন তারা অলসতায় সময় নষ্ট করেন, এবং তার কোন কাজ করার নেই বা বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে সময় নষ্ট করেন সময়ের সঠিক ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেন না। আসলে এরা একবারে অনেক বড় কিছু করার কথা ভাবে কিন্তু কোন কাজ ছোট থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে বড় করার চিন্তা এরা করে না তাই এরা কখনোই কোন কাজ শুরু করতে পারে না। যার ফলে এদের আর্থিক সফলতা পাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে ওঠে।

যারা ধনী ব্যক্তি তারা একবারে ধনী হয়ে ওঠেনি তারা প্রথমে ছোট থেকে কাজ শুরু করে ধীরে ধীরে কিছু সঞ্চয় করে এবং কিছু আবার সেই কাজে অর্থ দিয়ে কাজটিকে আরো ভালো করে তোলার চেষ্টা করে এবং ধীরে ধীরে তারা সেই কাজটিকে অনেক বড় করে তোলে এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে তারা নিজের সফলতা অর্জন করে। এর থেকেই বোঝা যায় শুধুমাত্র শারীরিক পরিশ্রমে উন্নতি করা যায় না। বুদ্ধি খাটিয়ে বিচার বিবেচনা করে তারপর কাজ করা উচিত। ধনী ব্যক্তিরা কখনোই কোন কাজ না করার জন্য অজুহাত দেয় না, তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের কাজ করে সেখান থেকে জ্ঞান অর্জন করে। কিন্তু যারা গরীব ব্যক্তি হন তারা প্রতিনিয়ত কাজ না করার অজুহাত খোঁজেন। তাই গরিব ব্যক্তিদের জীবন থেকে দারিদ্রতা যেতে চায় না। আসলে ধনী বা গরীব মানুষ হয় না ধনী বা গরীব হয় মানুষের মানসিকতা আর বুদ্ধি। যার যেমন মানসিকতা ও বুদ্ধি থাকে সে তেমনভাবেই অর্থ উপার্জন করতে পারে এবং নিজেকে সাবলম্বী করে তুলতে পারে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

একদম ঠিক বলেছেন আপু গরিব লোকদের হাতে টাকা আসলে তারা কি রেখে কি করবে বুঝতে পারে না। কিন্তু যাদের সব সময় টাকা থাকে তারা এরকম চিন্তাভাবনা করে না। তাদের চিন্তা একেবারে ভিন্ন থাকে। যাই হোক আপনার লেখাটি বাস্তবসম্মত মনে হয়েছে আমার কাছে। ভালো লাগলো পড়ে।