কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
আগেকার সমাজে দেখা যেত প্রত্যেকটা পরিবারই যৌথ পরিবার। অর্থাৎ তারা বাবা-মা, দাদা-ভাই, বউ বাচ্চা এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে একসাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করত। তাদের মধ্যে অনেক বেশি আন্তরিকতা ছিল, এবং সেই সাথেও ছিল একে অপরের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা আর সম্মান। বাড়িতে কোন অতিথি আসলে তারা খুব খুশি হত এবং তাদের খুব ভালোভাবে আপ্যায়ন করতো। এইসব কারণেই তারা একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে বছরের পর বছর তাদের জীবন কাটিয়ে দিত। একটা কিছু ভালো মন্দ রান্না হলে তারা সবাই মিলেমিশে ভাগ করে খেত। ওই সময় তাদের মধ্যে কোন হিংসা পূর্ণ মনোভাব দেখা যেত না। তারা একে অপরের সঙ্গে নিজের সুখ দুঃখ ভাগ করে নিত। আর দেখা যেত তারা যে যতটা অর্থ উপার্জন করছে সবই তারা সংসারে নিঃস্বার্থভাবে দিয়ে দিত একে অপরকে ভালো রাখার জন্য, এবং একে অপরের প্রয়োজন মেটানোর জন্য। যৌথ পরিবারের প্রত্যেকেই খুবই আন্তরিক হতে দেখা যেত। আগেকার যৌথ পরিবারে বেশিরভাগ দেখা যেত ধানি জমি সম্পন্ন গৃহস্থ বাড়ি।
অর্থাৎ প্রায় যৌথ পরিবার এই দেখা যেত যে তাদের প্রচুর পরিমাণে জমিজমা থাকতো। যা তারা চাষাবাদ করতো এবং কিছু কিছু বাড়িতে তো গরু-মোষও দেখা যেত। আর এইসব জমিজমা চাষ করে এবং গরু মোষ লালন পালন করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করত। আগেকার সময় এই যৌথ পরিবারে সবাই মিলে মিশেই এইসব চাষাবাদের কাজ করতো এবং গরু মোষ পালন করতো। সবাই মিলে মিশে একসঙ্গে কাজ করায় তাদের প্রতিনিয়ত উন্নতিও হতে দেখা যেত। কারণ তারা হিংসা না করে একসঙ্গে মিলেমিশে সব কাজ করতো এবং একসাথে মিলেমিশে থাকতো। আর এই কারণেই তাদের জীবনে অনেক শান্তি ছিল। কারণ হিংসা এবং অলসতা মানুষের জীবনে দারিদ্রতা এনে দেয় এবং মানুষকে অসুখী করে তোলে। আর সত্যি কথা বলতে একসাথে মিলেমিশে থাকার মধ্যে আলাদাই শান্তি আছে। আর এই শান্তি কখনোই এনজাইটি আর ডিপ্রেশন আসতে দেয় না। তবে এমন নয় যে আগেকার দিনে যৌথ পরিবারে কোন সমস্যা ছিল না বা কোন ঝগড়া অশান্তি হতো না।
সংসার মানেই সেখানে ঝগড়া ঝামেলা অশান্তি এগুলো থাকবে তাই বলে এমন নয় যে তারা আপন মানুষ ছেড়ে দূরে চলে যাবে। আসলে আগেকার দিনে যৌথ পরিবারে যতই ঝগড়া ঝামেলা হোক না কেন কখনোই তারা সংসার ছেড়ে যাওয়ার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতো না। সবকিছু মানিয়ে নিয়ে থাকার চেষ্টা করতো। কিন্তু আস্তে আস্তে সমাজব্যবস্থা যত আধুনিক হচ্ছে এবং মানুষজন সৌখিন জীবন যাপন শুরু করছে ততই মানুষ যৌথ পরিবার ছেড়ে নিজস্ব ছোট একটি পরিবারের কথা কল্পনা করছে। আর এই পরিবার এতই ছোট যে, সে পরিবারে থাকবে স্বামী স্ত্রী এবং সন্তান। যেখানে থাকবে না কোন ঝগড়া অশান্তি মানুষ নিজের মত নিজে গুছিয়ে থাকতে পারবে। এখন আর মানুষ আগেকার যৌথ পরিবারে যেমন সবকিছু মানিয়ে ত্যাগ করে চলতে হতো তেমন আর ত্যাগ করতে চায় না। তাই এখন বেশিরভাগ মানুষ আলাদা হয়ে যায় এবং নিজস্ব একটি আলাদা সংসার তৈরি করে। তবে এতে যেমন সুবিধা আছে তেমন অনেক অসুবিধা ও হয়ে থাকে।
ছোট পরিবার হওয়ায় সবকিছু একা হাতে করতে হয়। এবং সবকিছু নিজে সামলাতে হয় আর অনেক সময় মানুষের কথা বলার সঙ্গী থাকে না। সেই জন্য মানুষকে একাকীত্ব গ্রাস করে নেয়, তাই এনজাইটি আর ডিপ্রেশন এখনকার সময়ে বেশি দেখা যায়। আসলে যৌথ পরিবারে মানুষ কখনো একা হয় না। পরিবারের একজনের যেকোনো অসুবিধায় পরিবারের বাকি সদস্যরা সবসময় তার পাশে থাকে। যৌথ পরিবারের মানুষেরা গুরুজনদের সম্মান করতে জানে। তবে আগেকার সমাজ ব্যবস্থা আর এখনকার সমাজববস্থা অনেকটাই আলাদা। আগেকার মানুষের মনের মধ্যে নিষ্পাপ এবং সরলতা ছিল। কিন্তু এখনকার সমাজ ব্যবস্থা এবং বেঁচে থাকা এতই কষ্টকর হয়ে গেছে যে এখনকার মানুষের মনের মধ্যে সরলতা নেই বললেই চলে। তাই দিন যত যাচ্ছে এই যৌথ পরিবার বিভিন্ন সমস্যার কারণে ভেঙে পড়ছে এবং বর্তমান সময়ে যৌথ পরিবার দেখা যায় না বললেই চলে। কারণ এখন সবাই স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে চায় কেউ কারো অবহেলা সহ্য করতে পারে না। তবে যৌথ পরিবার হোক বা ছোট পরিবার সবাই মিলে মিশে সুখে থাকাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আপনি লেখালেখি করেছেন। আমি সর্বদা যৌথ পরিবারের সাপোর্ট করে থাকি। কারণ যৌথ পরিবার থাকলে সেই পরিবারের ছেলে-মেয়েদের শাসন তাকে এবং তারা সঠিক পথে পরিচালিত হয়। এছাড়াও ঝগড়া ঝাটি যায় হোক না কেন সবার মধ্যে এক প্রকার শান্তি থাকে যেটা একক পরিবারে হয়ে যাওয়ার কারণে কমে যায়। যত একক পরিবার সৃষ্টি হবে তত খারাপের প্রবণতা সৃষ্টি হবে। আপনি সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আমিও যত পরিবার নিয়ে লেখার লিস্ট করে রেখেছি। জেনারেল রাইটিং লেখার জন্য সুন্দর একটি লিস্ট রেখেছি তার মধ্যে এই বিষয়টাও রয়েছে। যাইহোক তার পূর্বে আপনার লিখতে দেখে বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit