কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বর্তমান সমাজে পড়াশোনা প্রায় অবহেলিত একটি জিনিস হয়ে যাচ্ছে। কারন আমরা সারাদিনে অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২ ঘন্টাও বই নিয়ে পড়তে বসি না। যারা বর্তমান সময়ে পড়াশোনার মধ্যে রয়েছে অর্থাৎ শিক্ষার্থী জীবনের মধ্যে রয়েছে তাদেরকেও বই নিয়ে বসে পড়াশোনা করতে খুবই কম দেখা যায়। আসলে আগেকার সময়ে পড়াশোনার খুবই গুরুত্ব থাকলেও ধীরে ধীরে মানুষের পড়াশোনা থেকে টিভির প্রতি এবং অন্যান্য জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বাড়তে শুরু করে এবং সেই আকর্ষণ ধীরে ধীরে এসে দাঁড়ায় বর্তমান সমাজে মোবাইলের প্রতি। মানুষ মোবাইলের প্রতি এত আসক্ত হয়ে পড়েছে এবং মোবাইলের মাধ্যমেই সোশ্যাল মিডিয়া এবং মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপ ও অন্যান্য মাধ্যমে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি সংগ্রহ করার কারণে বইয়ের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গেছে। আগেকার সময় পৃথিবীর কোথায় কি আছে অর্থাৎ কোথায় কি অবস্থিত , ইংরেজি হিন্দি সহ বিভিন্ন ভাষা শেখা, রকমারি রান্না শেখার জন্য রান্নার বই, ব্যায়াম করার জন্য এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানের জন্য সবাই বই পড়ে সেই সম্পর্কে ধারণা এবং অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করত কিন্তু বর্তমান সময়ে বই না পড়ে সবাই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে সার্চ করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারে। তাই এখন বিস্তারিতভাবে বই পড়ে কোন কিছু জানার প্রয়োজন হয় না।
আগেকার সময় মানুষরা অনেক বেশি পড়াশোনা করতো এবং কবিতা আবৃতি, ছোট গল্প, উপন্যাস বিভিন্ন জিনিস পড়ে তাই নিয়ে চর্চা করতো। কিন্তু এখনকার মানুষ ইন্সটাগ্রামের রিল এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে চর্চা করতে বেশি ব্যস্ত থাকে। তাই এখন আর আগেকার মতো সেই আবৃতি কবিতা, ছোট গল্প এসবের গুরুত্ব অনেকটাই কমে গেছে। এখনকার শিক্ষার্থীরা কোন রকমে বাধ্য হয়ে ক্লাসের বই পড়ে শুধু পরীক্ষা দিতে পারলেই বাঁচে কিন্তু আগেকার মতো ক্লাসের বই ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হাস্যকর গল্প, কবিতা, উপন্যাস সহ বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে দেখা যায় না। তাই এখনকার সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বইয়ের দোকান খুব কম দেখতে পাওয়া যায়। কারণ মানুষও বুঝে গেছে যে বইয়ের দোকান দিলে তাদের ব্যবসা ভালো চলবে না এবং ভালো বিক্রি হবে না সেই জন্য প্রচুর পরিমাণে মোবাইলের দোকান, সাজগোজের দোকান, খাবারের দোকান এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দোকান দেখা গেলেও বইয়ের দোকান একটা কি দুটো শুধুমাত্র প্রয়োজনের জন্য দেখা যায়। তাও আবার স্কুল-কলেজ এর কাছাকাছি সেই বই খাতার দোকানগুলো থাকে। আমি দেখেছি শহরের মত অনেক ভালো জায়গাতে যেখানে ভালো স্কুল-কলেজ অবস্থিত সেখানেও একটি থেকে দুটো বইয়ের দোকান রয়েছে। তাও আবার অনেক সময় প্রয়োজনীয় কিছু কিছু বই পাওয়া যায় না অর্ডার দিয়ে পরে কিনে আনতে হয়।
দিন যত যাচ্ছে মানুষ জ্ঞানের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং বই পড়ে জ্ঞান অর্জন না করে অযথা সোশ্যাল মিডিয়ায় অথবা অন্যান্য বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কাজেই সময় ব্যয় করে চলেছে। আর এই পড়াশোনা না করার জন্য মানুষের মধ্যে জ্ঞানের অভাব হচ্ছে এবং মানুষ মূর্খের মতো আচরণ আর কাজ করা শুরু করছে। আর এই মূর্খতা আমাদের সাথে সাথে আমাদের চারপাশেও ছড়িয়ে পড়ছে এবং আমাদের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারন আমরা যত বই পড়বো তত আমাদের বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অর্জন হবে। আর এই জ্ঞানের সাহায্যে আমরা নিজেরাও জীবনে অনেক উন্নতি করতে পারব আর তার সাথে সাথে আমাদের দেশেরও অনেক বেশি উন্নতি হবে। আমরা শিক্ষিত হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেও আরো ভালোভাবে শিক্ষিত করে তুলতে পারবো। তবে আমরা যদি এভাবেই পড়াশোনার দিক থেকে সরে আসি এবং ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাই তাহলে আমরা নিজেরা উন্নতি করতে পারবো না আর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেও সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারব না। আর সেই কারণেই দিন যত যাবে আমাদের প্রত্যেকের অবনতি হতে থাকবে। আমরা নিজেও হয়তো ধারণা করতে পারি না যে বইয়ের মাধ্যমে আমরা কতটা জ্ঞান অর্জন করতে পারি এবং কতটা ভালো মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারি।
বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের ক্রোধ, লোভ-লালসা, এবং বিভিন্ন জিনিসের প্রতি মোহ এছাড়াও আরো ক্ষতিকারক কিছু বস্তু থেকে আমরা বিরত থাকতে শিখতে পারবো। যা আমাদের জীবন অনেক সুন্দর করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। দেখা যায় যারা প্রচুর পড়াশোনা করে অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করে তাদের স্বভাব চরিত্র খুবই শান্ত এবং ধৈর্যশীল হয়ে থাকে এবং চিন্তাভাবনা প্রখর হয়। পড়াশোনার মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জন করে তার দ্বারা এইসব ব্যক্তির জীবনে প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত সঠিক নিয়ে থাকে এবং জীবনে অনেক উন্নতি করে। অপরদিকে যারা পড়াশোনা থেকে বিরত থাকে তাদের দেখা যায় খুবই চঞ্চল স্বভাবের এবং উত্তেজিত চন্ডাল প্রকৃতির হয়ে থাকে। অর্থাৎ এদের কথায় কথায় খুব রেগে যেতে দেখা যায়। যারা বই থেকে সঠিক জ্ঞান অর্জন করে না তাদের জ্ঞানের অনেক ঘাটতি থাকে যে কারণে তারা জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা। যারা প্রতিনিয়ত পড়াশোনার মধ্যে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অর্জন করতে ভালোবাসেন দেখা যায় তাদের ব্যবহার খুবই ভালো হয়ে থাকে এবং তারা খুবই সুন্দর মিষ্টভাষী হয়ে থাকেন এবং চলাফেরা আচার-আচরণ অনেক বেশি ভালো হয়ে থাকে। তাই এই সব ব্যক্তিকে মানুষ খুবই বেশি পছন্দ করে থাকে। আর বর্তমানে স্কুল-কলেজেও পড়াশোনার মান অনেক বেশি নিচে নেমে গেছে। তাই আমাদের নিজেদেরই অনেক বেশি বই পড়া উচিত এবং সেখান থেকে বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করে জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলা উচিত। বই একমাত্র জিনিস যা আমাদের মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যতই দিন যাচ্ছে ততই পড়াশোনা অবহেলার পাত্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। আসলে অন্যান্য সব কিছুর তুলনায় পড়াশোনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। শিক্ষাহীন জাতি মেরুদন্ড হীন মানুষের সমান।তাই সব কিছুর আগে শিক্ষা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের সকলের উচিত আগে শিক্ষা অর্জন করা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকের সবটাই প্রফেসর গুগল থেকে শিক্ষা লাভ করা। তাই পুঁথিগত বিদ্যার হয়তো আর কারো প্রয়োজন নেই। আমরা ছোটবেলায় শিখেছিলাম স্কুলে যেতে হবে পড়াশোনা ভালো করে করতে হবে পুঁথির মূল্য অনেক। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের মুখে শুনি প্রতিগত মিথ্যার কোন মূল্য নেই। পড়াশোনা পুঁথি দেখেই হয় বলে জানতাম। তাছাড়াও বর্তমানে বাবা মায়েরা প্রচন্ড বেশি রিল অ্যাডিকটেড তাই বাচ্চারা ভালো কিছু করবে বা শিখবে এমন নয়৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পড়াশোনা সত্যিই মানুষের চরিত্র, চিন্তাভাবনা ও ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বই শুধু জ্ঞানের ভান্ডারই নয়, এটি ধৈর্য, শৃঙ্খলা ও ভালো আচরণেরও শিক্ষা দেয়। যারা নিয়মিত পড়াশোনা করে, তারা চিন্তাশীল ও সুসংগঠিত হয়, আর যারা তা এড়িয়ে চলে, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও ঘাটতি দেখা যায়। বর্তমান সময়ে তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা আরও বেশি প্রয়োজন। আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, পড়ে বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিদ্যা অমূল্য সম্পদ। বিদ্যা একটি জাতির মেরুদন্ড। দিন যতই যাচ্ছে শিক্ষার হার ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পৃথিবীর সবকিছুর ক্ষেত্রে নানা ধরনের পরিবর্তন আসছে। যা সব কিছু শিক্ষার কারণে হচ্ছে। আসলে শিক্ষার গুরুত্বের কোন শেষ নেই। জীবনে উন্নতি লাভ করতে হলে পড়ালেখার কোন বিকল্প নেই। তাই আমি বলব এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ সংক্ষিপ্ত ভাষায় বলে শেষ করা যাবে না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই, প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে বই পড়ার অভ্যাস কমে যাচ্ছে, যা দুঃখজনক। বই শুধু জ্ঞানের উৎস নয়, এটি চিন্তাশক্তি ও নৈতিকতার বিকাশেও সহায়ক। আমাদের সবার উচিত বই পড়ার সংস্কৃতি ধরে রাখা। সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit