হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম ৷ প্রতিদিনের মতোই নতুন কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
কনকনে শীতের দিন গুলো তো চলে এলো ৷ শীতের আমেজ আর কুয়াশার দাপট বেশ ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে গ্রামের এইদিকে দিকে ৷ প্রত্যেকটা সকাল এখন কুয়াশাছন্ন ৷ সন্ধ্যা হলেই ঠান্ডা অনুভূতি শুরু হয় , আর কুয়াশার ছোঁয়া পড়ে যায় গ্রামের মাঠ জুরে ৷ কয়েক দিন ধরে শীতের প্রকোপ একটু বেশিই , কিছুটা বেড়েছে আগে তুলনায় ৷ গ্রামের এই দিকে আরো অনেক আগেই শীত শুরু হয়েছে ৷ সেটা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে ৷ যদিও কনকনে সেই শীতের দিন গুলো এখনো আসেনি ঠিকঠাক , তবে আসতে আর দেরি নেই ৷ অনুভব করা যাচ্ছে সেই দিন গুলোর ছোঁয়া ৷ যাই হোক , শীত বরাবরই আমার অনেক পছন্দের একটি ঋতু ৷ অন্যান্য ঋতু গুলোর মধ্যে শীতকাল একটু বেশিই ভালো লাগে আমার ৷ ভালো লাগার অবশ্য অনেক গুলো কারণ আছে ৷ আজ সেগুলো না বলি ৷ আজ বরং ছোট বেলার শীত কেমন ছিলো আমার , সেটা সংক্ষেপে আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
অক্টোবরের হালকা কুয়াশা দিয়ে শুরু হতো শীত , এই থেকে শুরু ৷ কুয়াশায় মাঝে সকাল সকাল স্কুল প্রাইভেট যাওয়ার মজাই ছিলো আলাদা ৷ শুরুতে সব ঠিক থাকলেও নভেম্বরের শেষে কনকনে শীতের দিনে বিছানা ছেড়ে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার ইচ্ছে হতো না ৷ এরপরও বিছানা ছেড়ে উঠতে হতো মায়ের ডাকে ৷ এরপর ঘন কুয়াশা মাঝে চলে যেতাম স্কুল ৷ ফিরে এসে সন্ধ্যায় উঠোনে আগুন জ্বালিয়ে বৃত্তাকারে বসে চলতো আড্ডা । আড্ডার মাঝে চলতো ভাজা-পোড়া বিভিন্ন খাবার খাওয়া ৷ এই যেমনঃ আলু পোড়া , বেগুন পোড়া সহ আর কত কী ৷ শীত কাল মানেই বিভিন্ন শাক-সবজ আর ফুলের সমারোহ ৷ তাই কোনো কিছু অভাব নেই ৷ মাঝে মাঝে আবার সেই আগুনের পাশেই বই নিয়ে বসে যেতাম পড়তে ৷ এভাবেই চলতো সেই সময়ের রঙিন শীতকাল ৷
ডিসেম্বরে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে চলে যেতাম মামার বাড়ি ঘুরতে ৷ আর মামার বাড়ি মানেই রসের হাড়ি ৷ সেখানে আনন্দের কমতি ছিলো না ৷ সবাই মিলে বিকেলে বেলা গ্রামের মাঠে নানান খেলা খেলতাম ৷ আর সন্ধ্যার একটু আগে বাড়ি আসতেই দেখতাম পিঠা তৈরির আয়োজন চলছে ৷ তাই ঝটপট হাত মুখ ধুয়ে বসে যেতাম চুলার খুব কাছে ৷ চুলার পাশের জায়গায় নিয়ে ভাই বোনদের মাঝে ঝগড়া হলে , আবার সেই উঠানে আগুন জ্বালানো হতো ৷ সেখানে গোল করে বসে নানান পিঠা খেতাম ৷ যদিও অনেক পিঠার নাম এখন ভুলেই গেছি ৷
এরপর আরো একটা সকাল ৷ কিছু মানুষ খুব সকালে খেজুরের রস বিক্রি করে বেড়াতো ৷ তাদের থেকে রস কিনে নিয়ে খেতাম ৷ চলতো ভরপুর আনন্দ ৷ কখনো কখনো মামাকে নিয়ে চলে যেতাম খেজুর গাছের নিচে , খেজুরের রস খেতে ৷ কি যে স্বাদ ছিলো সেই রসের এখনো মনে পড়ে ৷ এভাবেই কেটে যেতো বেলা ৷ সন্ধ্যা হলে এবার পিকনিকের আয়োজন শুরু করে দিতাম ৷ সবাই মিলে শীতের রাতে পিকনিক করতাম ৷ চলতো বেশ ভালোই ৷ শীতের চার পাচ মাসে দশ/বারোবার পিকনিক হয়ে যেতো আমাদের ৷
গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে জরিত , আমরাও তেমনি ৷ শীতের সময় কিছু সবজির চারা লাগাতো , আর সেই চারা গাছে পানি দিতে হতো প্রতি সকাল বেলা ৷ আমার এখনো মনে আছে , চারা গাছে পানি দিতে দিতে হাত অবস হয়ে যাওয়ার সেই রঙিন স্মৃতি গুলো ৷ ঘাসের শিশির কোণে জমে থাকতো ছোট ছোট বিন্দু পানি কণা ৷ খালি পায়ে হেটে গেলে পা ভিজে পরিস্কার হয়ে যেতো ৷ সকাল বেলা সূর্যের আলো সেই শিশির কণার মাঝে পড়লে দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে ৷
সময়টা খুব তারাতারি ফুরিয়ে যেতো ৷ দেখতে দেখতে জানুয়ারির এক তারিখ ৷ নতুন বই পাওয়ার আনন্দে দিশেহারা হয়ে যেতাম , কুয়াশার মাঝে চলে আসতাম স্কুল ৷ এরপর নতুন বইয়ের ঘ্রাণ , সেটা কি যে খুশির বলে বোঝানোর মতো নাহ ৷ এরপর শীতের কথা ভুলে গিয়ে নতুন ক্লাসে আসার আনন্দই ছিলো অন্যরকম ! নতুন বই আর নতুন ক্লাস পেয়ে ধীরে ধীরে ভুলে যেতাম শীতের কথা ৷ আর এতো দিনে হারিয়ে যেতে শুরু করতো শীত ৷ বসন্তের আগমনে মেতে উঠতো পাড়া ৷
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই ৷ সবাই ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন ৷ আশা করি আমার এই পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷ অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে, সময় নিয়ে পোস্টটি দেখার জন্য ৷
𝙽 𝚒 𝚛 𝚘 𝚋 7 0
লোকেশনঃ https://w3w.co/slotted.inward.quartered
আমার বাংলা ব্লগ || বাংলাদেশ || 30 Nov , 2023
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছোটবেলা মানেই অনেক স্মৃতি অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত মিস করা । শীতকালীন সময়ে আপনি যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন সত্যিই সবাই মিস করে । ছোট্টবেলা স্কুলে যাওয়া সকালবেলা শীতের সময় ঘুম থেকে উঠে প্রাইভেটে যাওয়া আসলেই কতই না সুন্দর ছিল। যদিও সেই মুহূর্তে এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারিনি সেটা এখন মিস করি ভালো লাগলো পুনরাবৃত্তি হলো আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে স্মরণ করলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের প্রত্যেকের জীবনের ছোটবেলাটা ছিল সত্যি অনেক বেশি আনন্দের। ছোটবেলায় সবাই অনেক বেশি মজা করতাম। বিশেষ করে শীতের সময়টাতে একটু বেশি ভালো সময় কাটতো। আর আমরা যারা গ্রামে ছিলাম তাদের শীত ছিল সবথেকে বেশি আলাদা। আমি মনে করি শহরের মানুষেরা শীত ভালোভাবে উপভোগ করতে পারত না। ছোটবেলার শীত গল্পটা আপনি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন, যেটা আমার খুব ভালো লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গ্রামের দিকে মনে হচ্ছে ভালই ঠান্ডা পড়ছে। শহরে এখনও তেমন একটা ঠান্ডা পড়েনি। বছরের এই শেষ সময় গুলো ছোটবেলায় খুব মজার সাথে কেটে যেত। এখন তো এগুলো কিছুই হয় না। শৈশবের সময় গুলো আসলেই খুব মজার ছিল। আপনার লেখাগুলো পড়ে ভালো লাগলো। ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit