বিপদ অগণিত।

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।আসলে বলার জন্যেই বলা ভালো আছি!

গতকাল হ্যাংআউট এ বলেছিলাম আসলে আমি খুব বিপদের মধ্যেই রয়েছি।আসলে কয়েক দিন ধরেই আমার জীবন থেকে বিপদ যেনো কাটছেই না। তাও চেষ্টা করছি সব কাজ চালিয়ে যাওয়ার। কারণ আমার মতে কাজের জায়গায় কাজ এবং জীবন জীবনের জায়গায়। অর্থাৎ কাজের ক্ষেত্রের সাথে বাস্তব জীবনের সমস্যাকে না মেলানোতেই বিশ্বাসী আমি। সে যাই হোক, আসলে জাস্ট কয়েকদিন আগেই আমার বাবার মাইনর স্ট্রোক হলো। সেসব নিয়ে বেশ দৌড়াদৌড়িতে ছিলাম এবং বেশ চিন্তার মধ্যে ছিলাম।

বুঝতেই পারছেন ঘরের পরিস্থিতিটা সেই মুহূর্তে কেমন ছিলো। তার কারণ ঘরের কেউ যদি অসুস্থ হয় তাহলে তা ভোগ করে সম্পূর্ণ পরিবারটি মিলেই। কারণ একটা মানুষের পেছনে প্রতিটি মানুষকেই শ্রম দিতে হয়। সে সাথে টেনশন তো আছেই। আর যার অসুখ হয় তার কথা তো বাদই দিলাম। কারণ সে ই থাকে সবচেয়ে বেশি বিপদে।

যাইহোক কয়েকদিন আগে আম্মু সব সময় বলতো যে আম্মুর পেট ব্যথা করছে। তো আমি প্রথমে ভাবলাম হয়তো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। কারণ আম্মু খাবার-দাবারে খুবই অনিয়মিত অর্থাৎ সব সময় খাবার খুব দেরিতে খায়। বুঝতেই পারছেন ঘরে বাচ্চা কাচ্চা রয়েছে তো বাচ্চাকে খাওয়াতে খাওয়াতে অর্থাৎ নুয়াইরাকে খাওয়াতে খাওয়াতে অনেক সময় হয়ে যায়। তো এর পরে আসলে নিজের খেতেও ইচ্ছা করে না। সে কারণে আম্মুর খাওয়াটা খুব অনিয়মিত। তো আমি বেশ চিল্লাচিল্লি করলাম, কারণ খাবারের টাইম যেন ঠিক করে।

কিন্তু দিন দিন যেনো এই সমস্যাটা বেড়েই চলছিলো অর্থাৎ ব্যথার সমস্যাটা বেড়েই চলছিলো। সে কারণেই আমি একটা এক প্রকার জোর করেই আম্মুকে ডাক্তারের কাছে পাঠালাম। কারণ আম্মু ডাক্তারের কাছে যেতে নারাজ।

তো প্রথমে ডাক্তার কিছু ওষুধ পত্র দিল অর্থাৎ বেশ দামী ওষুধপত্রই দিল। বোধহয় কয়েকটা ওষুধে আট হাজার টাকার বিল এসেছিলো। যাই হোক, তার সাথে কিছু টেস্টও দিলো।আমি তখন ও ভাবছিলাম যে ঠিক আছে, এতোটুকুতেই মিটে যাবে হয়তো। তো টেস্ট করার পরে রিপোর্ট দেখে মনে হল ঠিকঠাক আছে সবকিছু। যেহেতু আমি রিপোর্টে সবকিছু বুঝতে পারছিলাম না। যেহেতু আমি ডাক্তার নই তাই মনে হচ্ছিলো রিপোর্ট স্বাভাবিক।আমি স্বাভাবিক বলছিলাম আর মা বললো তবে ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট দেখাতে যাবে না তখন আমি একটু বেশ গরম হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি তো নিশ্চয়ই রিপোর্ট দেখতে পারবো না। আর পরীক্ষা করিয়েছে যেহেতু, সেহেতু রিপোর্ট ও ডাক্তারকে দেখাতে হবে। ওই আর কি আম্মুর প্রচণ্ড ডাক্তার দেখানো তে অনিহা।

তারপরও আমি অনেক জোরাজোরি করে আবার রিপোর্ট দেখাতে পাঠালাম। আর তখনই আসলে ধরা পরলো যে আম্মুর পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। যার জন্য এতো বেশি ব্যথা উঠছে বারবার। তারপর সেই ডাক্তার অন্য একটি প্রফেসরকে রেফার করলো।অর্থাৎ চট্টগ্রাম মেডিকেল এর সার্জারির হেড যিনি উনাকে রেফার করলো।

এরপর ওনার কাছে যাওয়া হলো। এরপর তো উনি সার্জারি সাজেশন ই দিলেন। কারণ আম্মুর এমন অবস্থা যে এখন আর সার্জারি ছাড়া কোনোভাবেই পিত্তথলির পাথরগুলো বের করা সম্ভব নয় কিংবা গলানো সম্ভব নয়। তো তাই গতকালকে অপারেশন ছিলো।

আসলে একটা বিষয় আমি খুব বেশি অবাক হয়েছি যে সব সময় দেখেছি অপারেশন হয় কিংবা পরিবারের অনেক সদস্যেরই অপারেশন হয়েছে। কিন্তু অপারেশনের প্রসেসিংটা হয় যে, একেবারে অসুস্থ ব্যক্তি বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে থাকছে। এরপরে অপারেশন হচ্ছে বিষয়গুলো আসলে ছোটবেলা থেকে এমনটাই দেখে এসেছি। তবে এবার তার একেবারে ভিন্ন কিছু দেখেছি।

অর্থাৎ আম্মুর আজকে কোনো ব্যথাই ছিল না। কিন্তু অপারেশনের ডেট অনুযায়ী অপারেশন করাতে হবে। কারণ এই ব্যথা সব সময় থাকে না, মাঝে মধ্যে উঠে আর প্রচন্ড রকমের ব্যথা করে।তাই সুস্থ একজন অপারেশন করাতে যাচ্ছিলো যেটা মেনে নেওয়াটা অন্তত আমার পক্ষে খুব বেশি কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো অর্থাৎ আমার বারবার চোখে পানি চলে আসছিলো।এমনকি আম্মু আমাদের জন্য ২-৩ দিনের রান্নাও করে দিয়েছিলো সকালবেলা। এরপরেই মূলত বের হয়েছিলো অর্থাৎ আমাদের জন্য রান্না বান্না শেষ করে এরপরে বের হয়েছিলো।মা শব্দটাই হয়তো এমনই হয়।

আমার কাছে ব্যাপারগুলো আরো বেশি অতিরিক্ত মনে হচ্ছিলো। তার কারণ আমি আসলে এই গুলো খুব বেশি একটা ফেস করিনি বললেই চলে। অর্থাৎ আমার খুব বেশি বয়স তো হয়েছে বিষয়টা এমনও নয়। তাই বাবা-মাকেও খুব বেশি এভাবে অসুস্থ হতেও দেখিনি। যে কারণে আমার বিষয়গুলো নিতে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছিলো,হচ্ছে।

যাইহোক আলহামদুলিল্লাহ আম্মুর সার্জারিটি সাকসেসফুল হয়েছে এবং দ্রুতই আম্মু বাসায় চলে আসবে, এটাই সুখের খবর আমার জন্য আপাতত। কিন্তু বাসায় আসার পরেও একটা অপারেশনের রোগী মানে বুঝতেই পারছেন খুব টেককেয়ার দরকার। এদিকে আমার রেগুলার ক্লাস থাকে আসলে আমি খুব চিন্তার মধ্যেই আছি যে কি করা যায়।

সবাই দোয়া করবেন যেনো এই বিপদ থেকে দ্রুতই মুক্তি পাই।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।