গল্প —আদুরি (শেষ পর্ব).......

in hive-129948 •  20 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আজকের নতুন ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজও আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আদুরি গল্পের শেষ পর্ব। প্রথম পর্বে আমরা জেনেছিলাম —পরপর তিন ভাইয়ের পর আদুরি তার বাবা-মার কোলজুড়ে এসেছিল। তার বাবা-মা এবং ভাইদের কাছে সে খুবই আহ্লাদী ছিল। কিন্তু বড় হওয়ার পর তার এমন এক পরিবারে বিয়ে হয় যেখানে তার শশুর-শাশুড়ি, ননদ জা এবং স্বামী কেউই ভালো ছিল না। আপনারা যদি গল্পটি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে প্রথম পর্ব পড়ে আসতে পারেন। আজ আমি গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে চলেছি আপনাদের সাথে। আশা করি, ভালো লাগবে।

vietnam-8047523_1280.webp

Source

আদুরীর বড় ছেলে বড় হতে থাকলো তারপর আদুরীর আরো একটি পুত্র সন্তান হলো। আদুরী তার বড় সন্তানকে একটি হাফেজি মাদ্রাসায় ভর্তি করল। ছেলেটি মাদ্রাসায় পড়তো কিন্তু যখন বাড়ি যেতো তখন তার বাবা-মায়ের মধ্যে এমন অশান্তি দেখে ছেলেটি খুবই কষ্ট পেত এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তো। মা বাবার মধ্যে এমন অশান্তির কারণে ছেলেটির পড়া বন্ধ হয়ে যায় একসময়। আদুরী মেয়েটি কিন্তু অনেক সাংসারিক ছিল। তার সংসারে আদুরির বাবা-মা কোন কিছুরই অভাব রাখেনি। তারপরও সেই সংসারে আদুরির কোনই দাম ছিল না।

আস্তে আস্তে আদুরির ছেলে দুটি বড় হতে থাকলো। বড় ছেলেটিকে আবারো মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিল। কিন্তু বাবা-মায়ের মধ্যে সব সময় এত অশান্তি লেগে থাকলে কোন সন্তানের কি লেখাপড়ায় মন বসে? আদুরির স্বামী তার মাকে অনেক ভালোবাসতো। সেজন্য বউয়ের নামে তার মা যেগুলো বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিত সেগুলো খুব সহজে বিশ্বাস করে নিত। পরবর্তীতে তার বউয়ের কাছে শোনার প্রয়োজন মনে করতো না এগুলো সত্য কি মিথ্যা। মায়ের কাছ থেকে মিথ্যা অপবাদ শুনেই বউকে রুমে এসে পিটাতো। এত অশান্তিতে থাকার ফলেও কখনো কিন্তু আদুরি তার বাবার বাড়িতে চলে আসিনি সংসার ছেড়ে। কারণ আদুরির খুবই মায়া ছিল সংসারের প্রতি।

তাদের সংসারের বয়স ১৫ বছর হতে চলেছে। তারপরও তাদের সংসারে এই ধরনের অশান্তি লেগেই আছে। আদুরির সংসারের এই অশান্তি মেটানোর জন্য আদুরির মা এবং ভাই-বৌ রা মিলে আদুরির স্বামীর বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু তারা সেখান থেকে এমন অপমানিত হয়ে ফেরত এসেছিল তা বলার মত নয়। আদুরির মা তো সেদিন প্রচুর কেঁদেছিল। কয়েকমাস আগে তো আদুরির স্বামী আদুরীকে মেরেই ফেলছিল পুরো। এত পরিমাণে মারধর করেছিল যে আদুরি সেন্সলেস হয়ে পড়েছিল। আবার কখনো কখনো কনকনে শীতের রাতে মারধর করে বেলকনিতে বেঁধে রাখত। এইসব অত্যাচার তাদের প্রতিবেশীরা দেখতো কিন্তু তাদের কিছুই বলত না।

কয়েকদিন আগে আদুরির স্বামী আদুরীকে এতই মেরেছিল যে আদুরি সহ্য করতে না পেরে লুকিয়ে তার দূর সম্পর্কের এক বোনের বাড়িতে চলে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে তার অবস্থা আরো অনেক বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তারপর তার বোন একটি মেডিকেলে তাকে ভর্তি করে। সেখানে তার ট্রিটমেন্ট চলছিল। ট্রিটমেন্ট চলছিল প্রায় তিন চার দিন। কিন্তু এই তিন-চার দিনে একবারও তার স্বামী খোঁজ নেই নি যে তার স্ত্রী কোথায় গিয়েছে। ছেলে দুটো ও তার কোন খোঁজ খবর নেয়নি। হাসপাতালে আদুরিকে দেখতে ছুটে যায় তার বাবা-মা। তারপর আদুরি যখন একটু সুস্থ হলো তখন আদুরি কে নিয়ে তারা বাড়িতে চলে আসলো।

আদুরি এক দেড় মাস হয়ে গেল তার বাবার বাড়িতে পড়ে আছে। কিন্তু এতদিনেও তার স্বামী তার কোন খোঁজ খবর নেয়নি এমনকি ছেলেরাও না। আর বাড়িতে যে তিন ভাই বোন আছে তারাও আদুরিকে তেমন পছন্দ করেনা। সবমিলিয়ে আদুরির জীবনটা একদমই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।

আল্লাহ হাফেজ


সময় নিয়ে পোস্টটি ভিজিট করার জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ


1691507400587_compress31.jpg

আসসালামু আলাইকুম। আমি নীলিমা আক্তার ঐশী। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী। আর্ট করা,ঘুরতে যাওয়া এবং রান্না আমার খুবই প্রিয়। প্রিয়জনদের পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে এবং তাদের প্রশংসা শুনতে আমার খুবই ভালো লাগে। নতুন নতুন রেসিপি শেখার আমার খুব আগ্রহ রয়েছে। আমি ২০২৩ সালের জুন মাসে স্টিমিটে জয়েন হয়েছি।আমি বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে জয়েন হয়েছি সবার সাথে বিভিন্ন রেসিপি এবং আর্ট শেয়ার করার জন্য এবং সেই সাথে অন্য সবার থেকে দারুন দারুন সব ক্রিয়েটিভিটি শিখতে। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি একটি পরিবারের মত আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি অনেক খুশি।

New_Benner_ABB-6.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP


Heroism_Copy.png

20230619_2107145.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার গল্পটা পড়ে আদুরির জন্য সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। আসলে অবশেষে আদুরীর অনেক কষ্ট হয়েছে। সত্যি আপনজন যখন খারাপ ব্যবহার করে তাহলে আর কিছু করার থাকে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

  ·  18 days ago (edited)

যদিও আমি আপনার এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়ি নি।তবে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি যে বাবা-মার আদরের মেয়েটা শশুর বাড়িতে গিয়ে কতটা নির্যাতিত হচ্ছে। আদরীর এমন নির্যাতনের ঘটনাগুলো পড়ে খুবই খারাপ লাগলো আপু। এমন স্বামীর সংসারে থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।