😐অলস মানুষ স্বভাবতই একজন খারাপ মানুষ ✋ || ১০% বেনিফিশিয়ারি @shy-fox ||

in hive-129948 •  3 years ago 

২০(সেপ্টেম্বর)
সোমবার

আসসালামু আলাইকুম

আজকে আমি আপনাদের সাথে অলসতা নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো।অলসতা কি, এটি আমাদের জীবনযাপনকে কিভাবে প্রভাবিত করে! এর থেকে কিভাবে আমরা নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারি।সেসবকিছুই আলোচনা করবো এই পোস্ট এর মাধ্যমে। তো চলুন শুরু করা যাক।


আলোচ্য বিষয় : অলসতা


iMarkup_20210920_093340.jpg
image source

অলসতা একটা খারাপ গুন! এটি এমন একটা বিষয় যেটা আমাদের জন্য খুবই মারাত্মক একটি রোগ। আর এই রোগের নিয়মিত রোগী আমরা অনেকেই। আমরা অনেকেই এই বিষয় টা এড়িয়ে যায়।বুঝেও যেন বুঝিনা, অলসতা আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে।সব জেনেও যেন জানিনা এমন ভাবসাব আমাদের।কোনো জিনিস ভুল জেনেও সেটা বার বারই করি। অলস মস্তিষ্কে শয়তানে বাসা বাধে।একটু খেয়াল করলে দেখবেন,এই অলসতার কারনে আমরা অনেকেই অনেক কিছু করতে চাই কিন্তু করে উঠতে পারিনা।আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু অলসতা।

pexels-photo-4866046.jpeg

image source

যত দিন যাচ্ছে ততই যেন আরো অলসতা বাড়ছে।না পড়তে ভালোলাগে, না ভালোলাগে খেলতে কোনোকিছুই যেন ভাল ভালেলাগেনা। এখন এই সমস্যা টা অধিকাংশ মানুষের কাছেই কমন একটা বিষয় তাইনা।

ভেবে দেখুন,পড়তে ভালোলাগেনা, কাজ করতে ভাল লাগেনা ঠিকই কিন্তু ফোন নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে আমাদের কোনো সমস্যা নাই আর এই ব্যাপারে আমরা খুবই দক্ষ! কোনো প্যারা নাই ফোন নিয়ে সারাদিন ঘাটাঘাটি করতে কিন্তু, কাজ করতে গেলে অথবা পড়তে গেলেই যতো অনীহা এটাই মুলত অলসতা।

অলসতা কি আমাদের মস্তিষ্কের কোনো ছলোনা নাকি এটা জীনগত ব্যাপার। এটা বুঝতে হলে আগেই জেনে নিতে হবে অলসতার সিস্টেমটা ঠিক কি ভাবে কাজ করে..??

আমাদের মস্তিষ্কে "ডোপামিন" নামে একটি হরমোন ক্ষরিত হয় যেটা আমাদের যে কোনো কাজ করার জন্য ইচ্ছেশক্তিকে ভীষন ভাবে নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

এই ডোপামিন সিস্টেমটিকে মস্তিষ্কের রিউওয়ার্ড সার্কেটারীও বলা হয়।

girl-4378283__340.webp
image source

ফেসবুক চালাতে অথবা গেইম খেলতে আমরা কি কোনো অলসতা অনুভব করি? একদমই না, আমরা একনাগাড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কোনো পরিশ্রম ছাড়ায় খেলে চলি।কিন্তু, বই পড়তে বসলে কিছুতেই যেন সময় যায়না।৫ মিনিট কে ৫ ঘন্টার চেয়েও অনেক বেশি মনে হয়।
এরকম কেন হয়? কারন হলো- আমরা যখন ফেসবুকিং করি বা গেইম খেলি তখন আমাদের ব্রেনের রিউওয়ার্ড সার্কেটারী এক্টিভেট হয়ে যায়!কারন এগুলিতে প্রতি মুহুর্তে আমরা নতুন কিছু এক্সপিরিয়েন্স করি।কিছু সময় পরপরই আমরা নতুন কিছু রিউওয়ার্ড পায়।যেটা আমাদের মস্তিষ্কের ডোপামিন হরমনের নিস্বরণ কে বাড়িয়ে দেয়।যার ফলে আমরা ক্রমাগত বেশ একটা ভাল অনুভূতি অনুভব করি।
ধীরে ধীরে সেটার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি।ঠিক এই কারনে পরিক্ষার আগে পড়তে বসতে আমাদের কোনো অলসতায় অনুভব হয়না।কারন, তখন আমাদের সাবকনশিয়াস মাইন্ড খুব ভাল ভাবেই যানে যে এখন পড়লে ভালো নাম্বার পাবো আর না পড়লে ফেইল।যেটা আমাদের রিউওয়ার্ড সার্কেটরি কে এক্টিভ করে দেয়। অলসতা দূর করার জন্য আমাদের মুল লক্ষ্য হওয়া উচিত কিভাবে আমরা আমাদের রিউওয়ার্ড সার্কেটরী কে আমাদের ক্ষতি করা থেকে বিরত রেখে উলটে বরং আমাদের উপকারের জন্য কাজে লাগাতে পারি।এর মাধ্যমেই অনেক টা অলসতা কমিয়ে ফেলতে পারবো।

অলসতা দূর করার উপায়

  • অলসতা দুই ধরনের।একটি হলো শারীরিক এক হলো মানুষিক। শারীরিক অলসতা দূর করা অতি প্রয়োজন নাহলে মানুষিক অলসতা দূর করা কোনোভাবেই সম্ভব না।
  • এরজন্য আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

white-2565766__480.webp

image source
১. আমরা অনেকেই দিনের বেশিরভাগ সময় বেড এ শুয়ে থাকি! কেউ কেউ অনেক রাত জেগে দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে । এগুলা আমাদের জন্য খুবই খারাপ। আমরা যদি সারাক্ষন বেড এ শুয়ে বসে কাটায় তবে আমাদের অজান্তেই আমাদের মস্তিষ্কে এমন সিগনাল যাবে যেটার জন্য সারাক্ষন শুয়ে থাকা অলস মনোভাব হবে! অন্য কিছু করার মনোবল হারিয়ে যাবে।কোনো নতুন কিছু করার আগ্রহ হারিয়ে যাবে। ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনে চলে যাবো।তখন সবকিছুই খারাপ লাগবে।

beach-3310294__340.jpg
image source
২. সকাল দেরিতে না উঠে ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নামাজ পড়ে হাটাহাটি করা কিচ্ছুক্ষণ। এতে করে আমাদের মস্তিষ্কে ভাল অনূভব হবে।যেটা অলসতা কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

৩. নিজের রিউওয়ার্ড সার্কেটরী কে উপকারের জন্য কাজে লাগানো। যেটা করা নিজের জন্য ভাল কিন্তু অলসতার জন্য করতে পারিনা যেমন পড়াশোনা করতে ভাল না লাগলে তখন আমরা নিজেকে নিজে রিউওয়ার্ড দিবো! যদি এই পড়াটা শেষ করতে পারি তবে কোথায় ঘুরতে যাবো নয়তো নিজের পছন্দের কিছু খাবো।

birthday-1670415__480.webp

image source

তাহলে আমরা কিন্তু যেকোনো কাজের জন্য নিজে উৎসাহিত হবো।আমাদের মধ্যে অলসতা তখনই আরো বেশি দেখা দেয় যখন আমরা জোর করে কোনো কাজ করতে যায় যেটাতে আমাদের মনের ভিতর থেকে কোনো ইন্টারেস্ট নাই।

৪. খেয়াল করলে দেখবেন যখন আমরা অনেক বড় কাজ করতে যায় বা কঠিন কোনো কাজ তখন মনে হয় এতো বড় আর কঠিন কাজ কিভাবে করবো।। আগেই মনোবল হারিয়ে ফেলি সেটা, আমাদের মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলে আমরা তখন আমাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। আমাদের উচিত কাজ গুলাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নেওয়া। এতে করে অল্প অল্প কাজ খুব সহজেই আনন্দ ও মজার সাথে শেষ করে ফেলবো একসময় দেখবো সব কাজই শেষ।

disorder-4073570__480.webp

image source

৫. যেসব কাজে কোনো ইন্টারেস্ট নাই এমন কাজ বর্জন করা কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেগুলা আমাদের অনিচ্ছা সত্তেও বর্জন করা সম্ভব হয়না যেমন পড়াশোনা। একজন স্টুডেন্ট হয়েও পড়াশোনাই মন না থাকলে তো হবেনা কিছু তো পড়তেই হবে।কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে কাজ টা কে ইগনোর করা সম্ভব হয়না।সেক্ষেত্রে,আমরা এমন কিছু করতে পারি যেন বরিং কাজটাও মজার লাগে। সেটার জন্য অন্যভাবে চেষ্টা করতে হবে।কোনো কাজে মজা পেলেই সেই কাজ থেকে আমাদের অলসতা দূর হয়ে যায় এভাবেই আমরা আমাদের অলসতা থেকে বেরিয়ে এসে কিছুটা হলেও সাভাবিক জীবন যাপন করতে পারি। এটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্তপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

আমার লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ!

20210902_020400-1.png

Screenshot_2021-09-02-01-33-35-1-1.png

20210902_022200-1.png
আমি মেঘলা!অসাধারণ দের মাঝে অতি সাধারন একজন।আমার প্রিয় শখ হলো-ফুলের বাগান করা,ছবি আকা,ফটোগ্রাফি করা, মনের অনুভূতি গুলো নিয়ে লেখালেখি করা,অবসর সময়ে গান শোনা এছাড়াও আমি ঘুরতে ভীষন পছন্দ করি!জীবন আমাকে সবকিছু দিবেনা,তাই স্বল্প আশায় বাঁচি।আমি নিজেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি,সেই স্বপ্নগুলা বাস্তবায়িত করতেই আমার এই পথচলা।স্বপ্ন পূরনে ব্যার্থ, হয়তো পিছনে ফিরে গিয়ে শুরুটা পরিবর্তন করতে পারবোনা কিন্তু এখন আবার শুরু করে শেষটা অবশ্যই পরিবর্তন করতে পারবো।

20210902_020227-1.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমরা অলসতার ফলে অনেক সফলতা থেকে দূরে সরে যায়। আমরা একটা জিনিসে ভাবি যে এই কাজটা করব কিন্তু অলসতার কারণে করা হয় না। আসলে
অলসতা আপনি সঠিকভাবে তুলে ধরেছেন। একটা মানসিক আর শারীরিক। আমাদের এখনো কোনো কিছুই করতে ভালো লাগে না,পড়তে ভালো লাগে না, খেলাধুলা করতে ভালো লাগে না। একমাত্র অলসতার কারণে আমরা একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে আছে। আসলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আমাদের অধিক পরিশ্রমই হতে হবে। অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার পোষ্টটি পড়ে

আমার লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে এতো সুন্দর কিছু মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ! আপনাদের ভালো লাগায় আমাকে একটু একটু করে নতুন কিছু লেখার অনুপ্রেরনা যোগায়।

কথায় আছে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আর শয়তানের কারখানায় তো শয়তানি তৈরি হবে। মানুষের সফলতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা অলসতা। খুব ভালো লিখেছেন আপু। আপনার জন্য শুভকামনা।।

হুম, সফলতার পথে আমাদের এতো অলসতার কারনে আমাদের উন্নতি হয় না।অলস মাত্রই মাত্রই একজন খারাপ মানুষ। আমাদের উচিত অলসতা পরিহার করা।

আসলেই আপু অলসতা কখনো মানুষের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। জীবনে সাকসেস আনতে হলে অলসতাকে বাই বাই জানাতে হবে।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা আপু ।

একদম সত্যি কথা বলেছেন। জীবনে ভাল কিছু করতে হলে অলসতা রাখা যাবেনা।অলসতা দূর করতে পারলেই আমরা জীবনের লক্ষ্য পূরন করতে পারবো।

অলসতা আমাদের জীবনকে নষ্ট করে দেয়।যা ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ রূপ নেয়।আমরা প্রতিনিয়ত অলসতার কাছে হেরে যাচ্ছি।যেদিন অলসতার জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো সেদিন আমি আমার লক্ষ্য পৌঁছাতে পারবো।

বই পড়তে বসলে কিছুতেই যেন সময় যায়না।৫ মিনিট কে ৫ ঘন্টার চেয়েও অনেক বেশি মনে হয়।

কথাটা আমার বেলায় ১০০% রাইট।সত্যিই এমন মনে হয় আমার।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

হুম,আপনার মতো আমারো এমন হয়। ভাল কিছু করতে গেলেই যতো অলসতা। অথচ, যেগুলা আমাদের জন্য উপকারী নয় সেসব কাজে আমরা অতিউৎসাহী।

সত্যিই ,অলসতা আমাদের জীবনের বড়ো একটি রোগ।অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন আপু।অনেক কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ আপু।

জ্বি আপু চেষ্টা করেছি, অনেক বিষয় একসাথে গুছিয়ে তথ্যপূর্ন একটি আলোচনা করতে। লেখাটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।