প্রাচীন গ্রিসের ম্যাসিডনের রাজা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। আলেকজান্ডার দা গ্রেট অত্যন্ত সুপুরুষ ছিলেন,বলিষ্ট চেহারায় রূপ আর শক্তির মিশেলে তিনি অন্য সকল রাজার থেকে ছিলেন স্বতন্ত্র। সিংহের মতোই বিক্রম ছিল তার। মাথায় সবসময় সিংহের চামড়া জড়িয়ে রাখতেন। তার বাবা ফিলিপ আলেকজান্ডারকে বলেছিলেন, “ম্যাসিডন বড়ই ছোট তোমার পক্ষে, একদিন সারা পৃথিবী জয় করবে তুমি।” তার বাবার কথাই সত্যি হয়েছিল।
ম্যাসিডনের তৃতীয় আলেকজান্ডার খ্রিস্টপূর্ব ৩৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। রাজা হিসেবে মাত্র ২০ বছর বয়সে পিতা দ্বিতীয় ফিলিপের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। তার শাসনকালে বেশিরভাগ সময় তিনি উত্তর-পূর্ব আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়া জুড়ে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি মিশর থেকে শুরু করে উত্তর পশ্চিম ভারত পর্যন্ত ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।কথিত আছে, পৃথিবীর শেষপ্রান্তে পৌছানোর ইচ্ছে নিয়ে ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভারত অভিযান শুরু করেন। কিন্তু তার সেনাবাহিনীর অসন্তোষ এর কারণে ফিরে যেতে বাধ্য হন।৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলনে দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের প্রাসাদে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর কারণ নিয়েও নানা মতভেদ আছে। কারো কারো মতে, তিনি ম্যালেরিয়ায় মারা গেছেন, কারো মতে অত্যাধিক মদ্যপানের কারণে তার মৃত্যু হয়। আবার কেউ কেউ বলে বিষ দিয়ে নাকি মারা হয়েছিলো তাকে। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র বত্রিশ বছর। কিন্তু বিষ দিয়ে মেরে ফেলার পেছনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং ‘ন্যাশনাল পয়জন সেন্টার’-এর টক্সিকোলজিস্ট ড. লিও এসচেপ এক দীর্ঘ গবেষণার পর জানান যে, ইউরোপীয় ‘হোয়াইট হেলেবোর’ নামক বিষাক্ত উদ্ভিদই আলেকজান্ডারের মৃত্যুর জন্য দায়ী। তবে আজকের এই লেখায় আমরা আলেকজান্ডারের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করবো না। বরং মৃত্যুর পর তার শবদেহ নিয়ে ঘটা নানা রহস্যময় ও চমকপ্রদ কাহিনীই জানার চেষ্টা করবো।
আলেকজান্ডারের দৃঢ বিশ্বাস ছিল, তিনি ইজিপ্সীয় পূরাণের দেবতা আমনের সন্তান। এমন বিশ্বাসের কারণে মৃত্যুর আগে তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর মরদেহ যেন ইউফ্রেটিস নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। কেননা তিনি মনে করতেন, নদীতে ভাসিয়ে দিলে তার দেহ সরাসরি চলে যাবে স্বর্গে।শোনা যায় তার শেষ ইচ্ছা ছিলো, সেনাপতিরা যেন আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁর তিনটি শেষ ইচ্ছা অবশ্যই পূরণ করেন-
প্রথম ইচ্ছা: “চিকিৎসকরাই একমাত্র আমার কফিন বহন করবেন।”
ব্যাখ্যা: “আমার চিকিৎসকদেরই কফিন বহন করতে বলেছি। যাতে মানুষ বোঝেন চিকিৎসকরা ক্ষমতাহীন এবং মৃত্যুর হাত থেকে কাউকে রক্ষা করতে অক্ষম।”
দ্বিতীয় ইচ্ছা:, “যে পথ দিয়ে আমার কফিন সমাধিস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই পথে আমার কোষাগারে থাকা সমস্ত সোনা, রুপা ও মূল্যবান পাথর ছড়াতে ছড়াতে যেতে হবে।”
ব্যাখ্যা: “পথে আমার সম্পদ ছড়াতে বললাম, মানুষ জানুক আমার সম্পদের একটা কণাও আমার সঙ্গে যাবে না। এগুলির জন্য আমি সারা জীবন সময় দিয়েছি , কিন্তু এখন কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না। ধন-সম্পদের পিছনে ছোটা সময়ের অপচয় মাত্র।”
তৃতীয় ইচ্ছা : “কফিন বহনের সময় আমার দুই হাত কফিনের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’
ব্যাখ্যা: “আমি এই পৃথিবীতে খালি হাতে এসেছিলাম, খালি হাতেই চলে যাচ্ছি। এটা মানুষকে বোঝাতেই আমি কফিনের বাইরে আমার হাত ছড়িয়ে রাখতে বলেছি”
কিন্তু তার সহযোগী ও অনুরাগী প্রজারা তা পারেননি। তাই তারা আলেকজান্ডারের মরদেহের জন্য অতি যত্নে প্রায় দু’বছর ধরে তৈরি করেছিলেন সুদৃশ্য মানবাকৃতি শবাধার। এই দু’বছর নাকি তার মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়।প্রধান সেনাপতি পারডিকাসের নির্দেশে মেসোডোনিয়ার অ্যাগাইতে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ সেখানে পৌঁছায়নি কখনোই, বরং একপর্যায়ে তার মৃতদেহ হারিয়ে যায় ইতিহাস থেকেই। আলেক্সজান্ডারের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ নিয়ে চলা রাজনীতি আর তার ফলে সেটি হারিয়ে যাওয়ার গল্প নিয়ে আজকের আলোচনা।
তবে বর্তমানে তার মৃত্যু র কারন আধুনিক বৈজ্ঞানিক রা কি বলছে তা তুলে ধরতে চাই,প্রায় দশ বছর ধরে গবেষণার পর, এই তত্ত্ব জনসমক্ষে আনেন নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল পয়জনস সেন্টারের গবেষক লিও শেপ। প্রাচীন গ্রিসে আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হত হোয়াইট হেলিবোর (ভেরাট্রাম অ্যালবাম) নামের এক বিষাক্ত লতা।গবেষক লিও শেপের মতে, সেই লতাকে পচিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ভয়ংকর বিষ। তীব্র কটু স্বাদের ওই বিষ আলেকজান্ডারের মিষ্টি ওয়াইনের পাত্রে কেউ মিশিয়ে দিয়েছিল। বিষ মেশানো সুরা পান করে মারা যান আলেকজান্ডার।গ্রীকদের কাছে আলেকজান্ডার ছিলেন দেবতা। আলেকজান্ডার নিজেও নাকি ভাবতেন, তিনি কোনও সাধারণ মানুষ নন। ইতিহাস বলছে মৃত্যুর ছয় দিন পরেও আলেকজান্ডারের শরীরে পচন ধরেনি। আর এই তথ্যটি নিয়েই গবেষণা করেন নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগোর সিনিয়র লেকচারার ডঃ ক্যাথেরিন হল। যিনি মৃত্যুশয্যায় থাকা রোগীদের নিয়ে বহুদিন ধরে গবেষণা করে আসছেন। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণটি তিনিই ঘটিয়েছেন, The Ancient History Bulletin ম্যাগাজিনে।আলেকজান্ডারের মৃত্যুর আগে প্রচন্ড জ্বর ও তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগেছিলেন। ডঃ হল নিশ্চিত আলেকজান্ডারের শরীরে কোনও ভাবে Campylobacter pylori নামক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটেছিল। এর ফলে আলেকজান্ডার Guillain-Barré Syndrome (GBS) নামে একটি অসুখের শিকার হন। এটি একটা বিরল কিন্তু মারাত্মক একটি স্নায়বিক অসুখ। যা শরীরের স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থ কোষকে আক্রমণ করে। এই অসুখেই তাঁর মৃত্যু হয়।ডঃ ক্যাথেরিন হল জোর দিয়ে বলেছেন, আলেকজান্ডারের মৃত্যুর ছয় দিন পরেও তাঁর দেহে পচন ধরেনি। কারন আলেকজান্ডার তখনও বেঁচে ছিলেন। তাঁর সমস্ত শরীরে পক্ষাঘাত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সজ্ঞানে (compos mentis) ছিলেন। আলেকজান্ডারের শরীরকে যত পক্ষাঘাত গ্রাস করছিল, তত শরীরের অঙ্গের কাজ কমছিল এবং শরীরে অক্সিজেনের প্রয়োজন কমছিল। এর ফলে তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস অত্যন্ত ধীরে চলছিল। বুকের ওঠা নামা প্রায় বোঝা যাচ্ছিল না। প্রাচীনকালে ডাক্তাররা, রোগী জীবিত না মৃত তা বুঝতেন রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস দেখে। রোগীর পালস দেখা তখনও শুরু হয়নি। ফলে মৃত্যুর আগেই আলেকজান্ডারকে মৃত ঘোষণা করা হয়। উপস্থিত সকলে তাঁকে মৃত মনে করলেও আলেকজান্ডার তখনও মারা যাননি। আলেকজান্ডারের মৃত্যু, তাঁকে মৃত ঘোষণা করার ছ’দিন পরে হয়েছে। তাই সবাই ভেবেছিলেন মৃত্যুর ছয় দিন পরেও আলেকজান্ডারের শরীরে পচন ধরেনি।
যাইহোক আলেক্সজান্ডারের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিতর্ক আছে ও থাকবে ও। তিনি মারা যাবার আগে কাউকে তার বিশাল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার হিসেবে ঘোষণা দিয়ে যাননি। ঘোষণা যে করে যাননি এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক বা সন্দেহ নেই। ফলে মারা যাবার সাথে সাথেই তার সেনাপতিদের মাঝে লেগে যায় দ্বন্দ্ব, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্রোহ। যার সম্পদ নিয়ে নিজেদের বিরোধ, তার মৃতদেহের কথাই ভুলে যায় সবাই! যখন মৃতদেহের কথা মনে পড়ে তারা গিয়ে হতবাক হয়ে দেখে ব্যাবিলনের গরমেও আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের কোনো ক্ষতি হয়নি। এমনিতেই বিশাল সাম্রাজ্য জয়ের কারণে আলেক্সজান্ডার নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করতো, সেই সাথে তার মৃতদেহের এরকম অস্বাভাবিক ঘটনা দেখে সবাই পুরো ব্যাপারটিকে একপ্রকার অলৌকিক ঘটনা হিসেবে মনে করতে শুরু করে।এরপর পারডিকাসের নির্দেশে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ মমি করা হয় এবং সোনার তৈরি সারকোফেগাসে (মমি রাখার কফিন) রাখা হয়। পারডিকাস ও তার অধীনস্থদের নির্দেশে ব্যাবিলনে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ নিয়ে যাবার জন্য তৈরি করা হয় এক বিশেষ বাহন। বিশাল এই বাহনটি ছিল একটি মন্দিরের মতো, যাতে ছিল আলেক্সজান্ডার আর সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ছবি আর ভাস্কর্যযুক্ত কলাম। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, পুরো বাহনটি ছিল সোনা দিয়ে তৈরি করা! এই বিশাল বাহনটি টানার জন্য দরকার হতো ৬৪টি গাধা, যেগুলোর প্রত্যেকটির মাথায় ছিল সোনার মুকুট আর গলায় ঝোলানো সোনার ঘন্টা। এককথায়, চাকচিক্যের কোনো অভাব রাখেননি পারডিকাস। নির্মাণ শেষে পারডিকাসের নির্দেশে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ রওনা হয় মেসোডোনিয়ার উদ্দেশ্যে।
ঠিক সেসময়েই মিশরে থাকা টলেমি আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহকে দেখেন নিজের জন্য এক আশীর্বাদ হিসেবে। টলেমি ছিলেন আলেক্সজান্ডার আরেকজন সেনাপতি, যিনি শুরু থেকেই আলেক্সজান্ডারের অভিযানের সঙ্গী ছিলেন। আলেক্সজান্ডারের মৃত্যুর পর তিনি মিশরের শাসনভার নেন। আলেক্সজান্ডার মৃত্যুর পর তার মৃতদেহের অস্বাভাবিক ঘটনাটির কারণে সবাই ভাবতে শুরু করেছিল, যার অধীনে এই মৃতদেহ থাকবে সেই সব ক্ষমতার অধিকারী হবে। আর এ কারণেই পারডিকাস এতদিন ক্ষমতা ভোগ করেছেন। সব কিছু বিবেচনা করে টলেমি সিদ্ধান্ত নেন, মৃতদেহটিকে তিনি নিজের কব্জায় নেবেন আর পারডিকাসকে সরিয়ে দিয়ে মেসোডোনিয়ানদের একচ্ছত্র শাসক হিসেবে ক্ষমতা ভোগ করবেন।তবে পুরো ব্যাপারটি মোটেও সহজ ছিল না। মেসোডোনিয়া যাবার পথে হামলা হতে পারে ভেবে পারডিকাস যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। যথেষ্ট নিরাপত্তা দিয়েছিলেন রাজকীয় মৃতদেহ বহনকারী বাহনটিকে। কিন্তু সিরিয়া পৌঁছতেই টলেমি মৃতদেহের নিরাপত্তায় থাকা সেনাদের ঘুষ দিয়ে নিজের পক্ষে করে নেন! সেই সাথে মৃতদেহটি মেসোডোনিয়ার পরিবর্তে নিয়ে আসেন মিশরের তখনকার রাজধানী মেমফিসে! মৃতদেহ নিয়ে আসার পরিকল্পনার সাথে টলেমির ক্ষমতার পরিকল্পনাও সফল হতে থাকে। কারণ মেসোডোনিয়ার সেনাবাহিনীর সেনাপতিরা একে একে টলেমির অধীনে যোগদান করতে থাকে।
অন্যদিকে পরিস্থিতি পুরো উল্টে যায় পারডিকাসের। টলেমির মৃতদেহ চুরির ঘটনা শুনে পারডিকাস রেগে যান। আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ আর নিজের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে নেবার জন্য ব্যাবিলন থেকে রওনা দেন মিশরের উদ্দেশ্যে। কিন্তু টলেমির সাথে যুদ্ধে পারডিকাস পেরে উঠেননি। যুদ্ধে পারডিকাস শুধু পরাজিতই হননি, সেখানেই হত্যা করা হয় তাকে। এর ফলে টলেমিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আর কেউ থাকলো না। আর এরপরেই শুরু হলো আলেক্সজান্ডারকে নিয়ে নতুন এক রাজনীতির খেলা।পারডিকাসের সাথে বিজয়ের পর থেকেই টলেমি নিজেকে আলেক্সজান্ডারের সাথে নানাভাবে যুক্ত করার মিশন শুরু করেন। টলেমি পরিষ্কার বুঝতে পেরেছিলেন, সরাসরি নিজের নামে ক্ষমতা দখলের চেয়ে নিজেকে আলেক্সজান্ডারের সাথে যুক্ত করতে পারলে সবদিক থেকে সমর্থন পাওয়া যাবে। আর সেই অনুযায়ী নিজের চাল দেয়া শুরু করেন টলেমি। নিজেদের মাঝে বিবাদে জড়িয়ে থাকা আলেক্সজান্ডারের সেনাপতিদের মধ্যে টলেমি প্রথম আলেক্সজান্ডারের ছবিযুক্ত মুদ্রা চালু করেন। সেই সাথে প্রচার করতে থাকেন, আলেক্সজান্ডারের এশিয়া আর ভারত অভিযানে টলেমি ছিলেন আলেক্সজান্ডারের সবচেয়ে প্রিয় সেনাপতি।
তবে টলেমির সব থেকে বড় চাল ছিল আলেক্সজান্ডারের জন্ম নিয়ে গুজব রটিয়ে। টলেমি গুজব রটিয়ে দেন, আলেক্সজান্ডার আসলে দ্বিতীয় ফিলিপের ছেলে না, বরং মিশরের তৎকালীন শেষ ফারাও দ্বিতীয় নেক্টানিবোর ছেলে! খ্রিস্টপূর্ব ৩৪৩ সালে পার্সিয়ানদের হাতে নেক্টানিবো পরাজিত হন আর পার্সিয়ানরা তাকে পাঠায় নির্বাসনে আর সেখানেই মৃত্যু হয় তার। মেমফিসে তার জন্য তৈরি করে রাখা রাজকীয় সারকোফেগাসে সমাহিত হবার ভাগ্য হয়নি আর। ধারণা করা হয়, নেক্টানিবোর সেই ফাঁকা সারকোফেগাসেই টলেমি আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ রাখেন। এতে টলেমির দুটি স্বার্থ ছিল।
প্রথমত, মিশরের বৈধ ফারাও হতে হলে তাকে পূর্বের কোনো ফারাওয়ের সাথে রক্তের সম্পর্ক থাকতে হবে। টলেমির গুজব ছড়িয়ে পড়ার কারণে সবাই আলেক্সজান্ডারকে নেক্টানিবোর ছেলে হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। ফলে ফারাও হিসেবে আলেক্সজান্ডারকে সহজেই প্রতিষ্ঠা করা যায়। আর দ্বিতীয় স্বার্থটি ছিল নিজেকে আলেক্সজান্ডারের উত্তরাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। আর সেই কারণে এবার নিজের জন্ম নিয়েই গুজব রটিয়ে দেন টলেমি। নিজেকে দ্বিতীয় ফিলিপের অবৈধ ছেলে হিসেবে দাবী করেন, সেই সাথে প্রতিষ্ঠা করতে চান আলেক্সজান্ডারকে নিজের সৎভাই হিসেবে। গুজবগুলো খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় টলেমি হয়ে ওঠেন বিশ্বাসযোগ্য। ফলে খুব দ্রুতই মিশরের ক্ষমতা নিজের করেন নেন টলেমি।
খ্রিস্টপূর্ব ৩০১ সালে ইপসাসে (বর্তমান তুরস্কে) যুদ্ধ বাঁধে আলেক্সজান্ডারের কয়েকজন সাবেক সেনাপতির। কিন্তু ততদিনে মিশরের ক্ষমতা নিজের কুক্ষিগত করে ফেলেছেন টলেমি। আর পুরোটাই আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহকে ব্যবহার করে। ইপসাসের যুদ্ধে অন্যান্য সেনাপতিদের লড়তে দেখে নিজের ক্ষমতা আরো গ্রহণযোগ্য করার জন্য এবার টলেমি তার রাজধানী নিয়ে যান আলেক্সজান্দ্রিয়াতে। আর পুরোটাই আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহকে ব্যবহার করে। সেই সাথে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ নিতে ভোলেননি। বরং সেই মৃতদেহকেই আবার ব্যবহার করেন নিজের ক্ষমতা আরো সুদৃঢ় করতে। প্রথমেই আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের জন্য তৈরি করা হয় এক সুন্দর কবর। ৩৩১ সালে আলেক্সজান্দ্রিয়া শহরের নির্মাণ শুরু করেছিলেন আলেক্সজান্ডার। আর সে কারণে আলেক্সজান্ডারকে শহরের নির্মাতা হিসেবে ঘোষণা করেন টলেমি।শুধু ঘোষণা করেই থেমে যাননি টলেমি, বরং রাষ্ট্রীয় খরচে আলেক্সজান্ডারের স্ট্যাচু ছড়িয়ে দেয়া হয় মিশরের প্রতিটি কোণায়। চালু করা হয় আলেক্সজান্ডারের নামে বিভিন্ন উৎসব। আলেক্সজান্ডারকে প্রমোট করার বিন্দুমাত্র সুযোগ হাতছাড়া করেননি টলেমি। ফলে মিশরে তার শাসনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। খ্রিস্টপূর্ব ২৮৩ সালে টলেমি মারা গেলে ক্ষমতায় আসে তার ছেলে দ্বিতীয় টলেমি ফিলাডালফাস। ফিলাডালফাস বাবার থেকেও একধাপ উপরে উঠে যান, আলেক্সজান্ডারের সাথে তার বাবাকেও বানিয়ে দেন ঈশ্বরতুল্য এক চরিত্র। বাবার নামে চালু করেন নতুন এক ধর্মীয় উৎসবের- টলেমিয়া। চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত এই উৎসব ছিল নিজেদের শক্তি আর সামর্থ্য প্রদর্শনের এক উৎসব। এই উৎসবের খ্যাতি মিশর ছাড়িয়ে গ্রিসেও ছড়িয়ে পড়ে। আলেক্সজান্ডার আর টলেমি বংশের মাঝে বন্ধন দেখানোর সুযোগও ছিল এই উৎসব। ফলে টলেমি বংশের শাসন নিয়ে কেউই প্রশ্ন ওঠাতে সাহস করেনি।
চতুর্থ টলেমি খ্রিস্টপূর্ব ২১৫ সালে আলেক্সজান্ডার আর তার পূর্ব পুরুষদের মৃতদেহ রাখার জন্য নির্মাণ করেন আরেকটি রাজকীয় কবরস্থানের। মিশরসহ আশেপাশের মানুষদের জন্য এক দর্শনীয় স্থান হিসেবে খ্যাতি পায় ‘দ্য সোমা’। আলেক্সজান্ডার আর পূর্ব পুরুষদের মৃতদেহ রাখা হয় মাটির নিচে এক কক্ষে। এটিও ছিল আলেক্সজান্ডারের সাথে টলেমি বংশের বন্ধন দেখানোর এক সুযোগ। এই রাজকীয় কবরস্থানটির নাম হয়ে উঠে ‘দ্য সোমা’। সেই সাথে প্যাগান ধর্মের একটি তীর্থযাত্রার স্থান হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পায় ‘দ্য সোমা’।কিন্তু রাজার ধনও একদিন ফুরিয়ে যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৮৯ সালে দশম টলেমি অর্থের অভাবে আলেক্সজান্ডারের সোনার সারকোফেগাস গলিয়ে ফেলেন। সোনার পরিবর্তে নতুন একধরনের কাঁচের সারকোফেগাস জোটে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের জন্য। পরবর্তী ৭০ বছরে টলেমি রাজবংশে দেখা দেয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। ফলে একসময়ের প্রশ্নাতীত ক্ষমতার অধিকারী টলেমিদের ক্ষমতা কমতে থাকে। আর একপর্যায়ে টলেমিদের শাসনেরও পতন ঘটে এমন এক সাম্রাজ্যের হাতে যাদেরও আগ্রহ ছিল আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ নিয়ে, তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। সেই সাম্রাজ্য সে সময়কার প্রবল প্রতাপশালী রোমান সাম্রাজ্য। গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়া টলেমি রাজবংশের পতন ঘটে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের হাতে। সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত ক্লিওপেট্রা ছিলেন টলেমি বংশের শেষ স্বাধীন শাসক। টলেমি রাজবংশের পতনের কাহিনীর সাথে এ লেখার সম্পর্ক না থাকায় সেদিকে আর আলোচনা করা হচ্ছে না। সম্রাট জুলিয়াস সিজার আর তার পরবর্তী সম্রাট অগাস্টাস সিজার দুজনই আলেক্সজান্ডারের ভক্ত ছিলেন। বাস্তবে রোমানরা বেশ আগে থেকেই আলেক্সজান্ডারকে সম্মান করতো, তবে গ্রিক বা মিশরীয়দের মতো ঈশ্বর হিসেবে নয়। বরং একজন বহু রাজ্যবিজয়ী রাজা হিসেবে। তবে টলেমি রাজবংশের প্রতি রোমানদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। ধারণা করা হয়, অগাস্টাস সিজারের আমলে ‘দ্য সোমা’ থেকে টলেমি রাজাদের মৃতদেহ সরিয়ে ফেলে শুধুমাত্র আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ রাখা হয়।
পরবর্তী রোমান সম্রাটরাও নিজেদের আলেক্সজান্ডারের ভক্ত হিসেবে প্রচার করতেন, একেকজন একেকভাবে। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সম্রাট ক্যারাকেলা। তিনি দাবী করতেন, আলেক্সজান্ডারের পুনর্জন্ম হয়েছে এবং তিনি সেই নতুন রূপ! তিনি এই ব্যাপারটি নিয়ে এতটাই মগ্ন ছিলেন যে নিজেকে আলেক্সজান্ডার গ্রেট হিসেবে প্রচার করতেন। আলেক্সজান্ডারের মেসোডোনিয়ান সেনাবাহিনীর মতো করে নিজের রোমান সেনাবাহিনী সাজিয়িছিলেন। কিন্তু অল্প দিন পরেই আততায়ীর হাতে মারা যেতে হয় তাকে। তৃতীয় শতাব্দীতে আলেক্সজান্দ্রিয়া শিকার হয় একের পর এক যুদ্ধের। স্থানীয় শাসকদের নিজেদের যুদ্ধ, রোমান সম্রাটদের সাথে যুদ্ধ, কিন্তু সব কিছুর পরেও টিকে ছিল ‘দ্য সোমা’। তবে সেসময়ের ইতিহাসে ধীর ধীরে আলেক্সজান্ডারের কবরস্থান ‘দ্য সোমার’ স্থান কমতে থাকে। তবে ৩৯০ খ্রিস্টাব্দে ঐতিহাসিক লিবানিয়াসের লেখায় পাওয়া যায় আলেক্সজান্দ্রিয়ায় আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ প্রদর্শনের। কিন্তু তিনি তখনো জানতেন না যে তিনিই শেষ ব্যক্তি যিনি আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ নিয়ে শেষবারের মতো লিখে যাচ্ছেন। মাত্র দশ বছরের মধ্যে ইতিহাস থেকে হারিয়ে যায় আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের সব চিহ্ন! প্রায় ছয়শো বছর ধরে রাজনীতির কেন্দ্র হয়ে থাকা মৃতদেহটি হারিয়ে যায়, যেন এর কোনো অস্তিত্বই ছিল না! ৪০০ খ্রিস্টাব্দের আলেক্সজান্দ্রিয়াতে খ্রিস্টান পাদ্রী জন ক্রিসোসটম বিদ্রুপ করে বলেন, “আমাকে দেখাও, কোথায় সেই আলেক্সজান্ডারের কবর?”
কিন্তু কী হলো আলেক্সজান্ডারের কবরের? এর উত্তর খুব সম্ভবত রয়েছে চতুর্থ শতাব্দীর শুরুতে রোমে উত্থান হওয়া এক নতুন ধর্মে: খ্রিস্টধর্ম। ৩৩০ খ্রিস্টাব্দের পর রোমসহ রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টধর্মের অনুসারী বাড়তে থাকে বহুগুণে। আলেক্সজান্দ্রিয়াতে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা আগে থেকেই বাস করত, তবে প্যাগানদের তুলনায় একেবারেই অল্প। কিন্তু খ্রিস্ট ধর্ম রোমের রাষ্ট্রধর্মে পরিণত হলে খ্রিস্টানদের সংখ্যা ও ক্ষমতা বাড়তে থাকে। প্যাগানদের বিভিন্ন উপাসনালয় কিংবা প্রতীকে হামলা চালানো খ্রিস্টানদের নিত্যদিনের কর্মে পরিণত হয়। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে ৩৯১ খ্রিস্টাব্দে, যখন রোমান সম্রাট থিওডিসিয়াস রোমে প্যাগান ধর্ম ও প্রতীক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।অতি উৎসাহী জনতা একের পর এক হামলা চালাতে থাকে প্যাগান মন্দির ও তীর্থযাত্রার স্থানগুলোতে। রোমান সাম্রাজ্যের অন্যান্য স্থানের মতো আলেক্সজান্দ্রিয়াতেও ছোঁয়া লাগে এই ধর্মীয় উন্মাদনার। বিভিন্ন প্যাগান ধর্মীয় স্থাপনা আগুনে পুড়িয়ে দেয় জনতা। ধারণা করা হয়, ৩৯১ সালের ধর্মীয় উন্মাদনার সময় ইতিহাস থেকে হারিয়ে যায় ‘দ্য সোমা’। আলেক্সজান্ডারের কবরস্থানটি কয়েক শতাব্দী ধরে ধর্মীয় উপাসনালয় হিসেবে ব্যবহার করত প্যাগানরা। সেই সাথে আলেক্সজান্ডারকে ঈশ্বর হিসেবেও মানতো তারা। ফলে খ্রিস্টানদের হাতে ধ্বংস হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কিন্তু আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের কী হলো, সেটা আজ পর্যন্ত অজানাই রয়ে গেছে।
বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু কোনোটিই সুনিশ্চিত নয়। প্রথমত, যদি ‘দ্য সোমা’ ধ্বংস করা হয়ে থাকে, তাহলে হয়তো এখনো এর মাটির নিচের কক্ষে রয়ে গিয়েছে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ। আবার কেউ মৃতদেহটিকে ধ্বংস করে থাকতে পারে, কিংবা ‘দ্য সোমা’ ধ্বংস হবার আগেই কেউ নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে ফেলতে পারে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ। কিন্তু কোনটি ঘটেছে কেউই বলতে পারবে না। এখানেও কিন্তু থেকে যায়, কারণ খ্রিস্টানরা সব প্যাগান স্থাপনা ধ্বংস করত না। কিছু স্থাপনাকে তারা চার্চে রূপান্তর করে ফেলত। ঐতিহাসিক অ্যান্ড্রু চাগের ধারণা অনুযায়ী খ্রিস্টানরা ‘দ্য সোমা’ ধ্বংস করেনি, বরং আলেক্সজান্দ্রিয়ার প্রথম চার্চ ‘সেইন্ট মার্ক চার্চ’ হচ্ছে ‘দ্য সোমার’ রূপান্তরিত রূপ। এই চার্চটির কথা প্রথম জানা যায় ৩৯০ খ্রিস্টাব্দে, ঠিক যে বছরে শেষ জানা গিয়েছিল আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহের কথা।সেইন্ট মার্ক চার্চ আলেক্সজান্দ্রিয়ার একেবারে কেন্দ্রে অবস্থিত, ঠিক যেমনটা ছিল দ্য সোমা। গুজব প্রচলিত আছে, সেইন্ট মার্ক মারা যাবার পর তার মৃতদেহ মমি করে চার্চের নিচে সমাহিত করা হয়। ৮২৮ সালে একদল ভেনিসিয়ান নাবিক চার্চ থেকে একটি মৃতদেহ চুরি করে নিয়ে যায়, যেটি সেইন্ট মার্কের বলে দাবী করা হয়। সেই মৃতদেহটি এখনো ভেনিসের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ব্যাসিলিকা অব সেইন্ট মার্কে রয়েছে। এমন তো হতে পারে, মৃতদেহটি বাস্তবে আলেক্সজান্ডারেরই? ড্যান ব্রাউনের গল্পের মতো শোনালেও এ তত্ত্বে অসংখ্য ফাঁক-ফোঁকর রয়েছে। ফলে খুব একটি বিশ্বাসযোগ্য থিওরি হয়ে উঠতে পারেনি।
১৭৯৮ সালে নেপোলিয়ান মিশর অভিযান শুরু করেন আলেক্সজান্দ্রিয়া থেকে। সেখানে এক মসজিদের ভূগর্ভস্থ কক্ষ থেকে নেপোলিয়ানের সেনারা একটি ফাঁকা সারকোফেগাস উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা ১৮০১ সালে মিশর দখল করলে সারকোফেগাসটি চলে যায় তাদের দখলে। উভয় পক্ষই ভেবেছিল এটি আলেক্সজান্ডারের সারকোফেগাস। ব্রিটিশরা সারকোফেগাসটি নিয়ে যায় ব্রিটিশ মিউজিয়ামের জন্য। কিন্তু কয়েক বছর পরেই হায়ারোগ্লিফ পড়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হলে দেখা যায় সারকোফেগাসটি ছিল দ্বিতীয় নেক্টোনিবোর, যার কফিনে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ টলেমি স্থানান্তর করেছিল বলে প্রথম দিকে বলা হয়েছিল। ফাঁকা সারকোফেগাসের অর্থ এই না যে আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ সেখানে কখনোই ছিল না। টলেমি যেভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তাতে ধারণা করা হয় কিছু সময়ের জন্য হলেও আলেক্সজান্ডারের মৃতদেহ সেই সারকোফেগাসে ছিল, অন্তত টলেমির নিজের ক্ষমতা পুরোপুরি শক্ত করা পর্যন্ত।অবশ্য ১৮৮৭ সালে লেবানন থেকে একটি শিল্পকীর্তি আবিস্কার হয়। সেটি একটি শবাধার,যা বর্তমানে রাখা আছে ইস্তানবুল জাদুঘরে। সেটির নামফলকে লেখা ‘আলেকজান্ডার সার্কোফেগাস’। অর্থাৎ আলেকজান্ডারের শবাধার। সেই হিসেবে আলেকজান্ডারের শবাধার মিলেছে বলে স্থাপত্যবিদেরা দাবি করলেও ইতিহাসবিদদেরা একমত নন। তাদের মতে এটি সম্ভবত সিডন এর রাজা ‘আবদালোনিমাস’এর।সম্ভবত শবাধারটির গায়ে আলেকজান্ডার ও তাঁর সেনাবাহিনীর ছবি খোদাই থাকায় এটি জাদুঘরে ঠাঁই পেয়েছে।যাকে সবাই চেনে আলেকজান্ডারের সমাধি হিসেবে।
এখন পর্যন্ত ১৪০ বার অনুসন্ধান চালিয়ে আজও মিশরের পুরাতত্ত্ববিদরা বলতে পারেননি কোথায় রয়েছে রাজার দেহাবশেষ। তবে মাঝেমধ্যে হঠাৎ একেকটা আবিষ্কারে চমকে উঠতেই হয়। ঠিক তেমনি কয়েক বছর আগরে এক ঘটনা। একদল বিজ্ঞানী বলেন যে, একসময় যেখানে ম্যাসিডন ছিল, সেখানে প্রাচীন শহর অ্যাম্ফিপোলিসের কাস্তা সমাধিক্ষেত্রে পাওয়া গেছে মার্বেলে মোড়া এক রাজকীয় সমাধির খোঁজ। সবাই ভেবে নিল এটাই বুঝি সম্রাটের সমাধি। অনেকে অনুমান করতে লাগলেন, রোমান সম্রাট কারাকালা ছিলেন আলেকজান্ডারের শোর্যবীর্যের খুব ভক্ত। দ্বিতীয় খ্রিস্টাব্দ নাগাদ হয়তো তিনিই রাজার মরদেহকে সসম্মানে রাজার নিজ জন্মভূমি গ্রিসে এনে সমাধিস্থ করেছেন।এখানেও প্রশ্ন থেকে যায়। অনেকেই বলেন, সমাধিটি আলেকজান্ডারের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু টলেমি সোটার সম্রাটের শববাহী গাড়ি নিয়ে কেটে পড়ায় এটি পরিত্যক্ত ছিল। পরে রাজপরিবারেরই কাউকে এখানে সমাধি দেওয়া হয়।
আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে তার পর পোস্ট করতে হবে। আপনি প্রথমে আপনার পরিচিতি মূলক পোস্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি নিজস্ব লেখা ব্যতীত অন্যের সামগ্রী এখানে শেয়ার করতে পারবেন না। & আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।
আপনার পোস্টের লেখাগুলো শতভাগই চৌর্যবৃত্তি করা।
এ ধরনের post আমাদের কমিটিতে রাখা হয় না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।
কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-29-sep-21
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493
Source:
https://ojanar.blogspot.com/2018/04/alexanderbodymystrey.html?m=1
https://www.amaderparis.com/blog/
https://www.thewall.in/magazine/feature-alexander-was-still-alive-long-after-he-was-pronounced-dead/
https://360faithstory.blogspot.com/2018/02/blog-post_62.html
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit