রুপার জীবনের গল্প শেষ পর্ব

in hive-129948 •  3 days ago 

আসসালামু আলাইকুম

আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরি করেছি আজকের পোস্ট।

রুপার জীবনের গল্প শেষ পর্ব

1000019428.jpg

Source

বরাবরের মতো আজ আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি একটা গল্প নিয়ে। যদিও গল্পের কয়েক পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি তবে আজ এর শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আসলে আমাদের সমাজ এমনি কারো ভালো দেখতে পারে না। আর মেয়েরা একটু বড় হলে তাদের বিয়ে না দিলে হাজার কথা শোনতে হয়। আর এমন কান কথা শোনে সত্যি আর পারা যায় না। অনেক সময় চেষ্টা থাকলেও কোন উপায় থাকে না আসলে রুপার জীবনে এমন এক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যদিও রুপা প্রথম দিকে অনেক জেদ ছিল কিন্তু পরবর্তীতে জেদ আর রাখতে পারলো না।

যাইহোক রুপা যখন বেতন দেবার জন্য তার বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলো।তখন তাকে কেউ আসতে দেবে না তবে রুপার স্বামী চেয়েছিল রুপা টাকা গুলো তার বাবা মাকে দিক।যেহেতু রুপা কারো কথা না শোনে বাবাকে দেখার উদ্দেশ্যে চলে এলো, আসার সময় রুপার শাশুড়ি বললো। তুমি যাবে যাও আর এদিকে এসো না, রুপা বললো ঠিক আছে। এই বলে রুপা শশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে এলো।এসে দেখে তার বাবা অনেক অসুস্থ। এদিকে রুপার স্কুল অনেক দিন বন্ধ। রুপার বাবাকে দেখে রুপার অনেক খারাপ লাগলো। রুপা ভাবতে লাগলো আমি যদি ছেলে হতাম তাহলে হয়তো এমন হতো না আমার সাথে। আমি আমার টাকা দিয়ে যা খুশি করতে পারতাম। রুপা এসে দেখে তার বাবা একেবারে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।তারপর রুপা তারাতাড়ি করে তার বাবাকে ঢাকায় বড় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেল।

ডাক্তার সকল পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বললো রুপার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ডাক্তার বলেছে আপনার বাবা আর বেশি দিন বাঁচবে না।উনাকে বাড়িতে নিয়ে দেখাশোনা করেন। এভাবে চলে গেল বেশ কিছু দিন রুপার মাঝে মাঝে তার স্বামীর সাথে কথা হয়।রুপার স্বামী প্রথমে রুপার খোঁজ খবর রাখত কিছু দিন যাবার পরে সেও তার বাবা মায়ের মতো হয়ে গেল। এদিকে বাবার চিন্তা আর অন্য দিকে শশুর বাড়ির চিন্তা করতে রুপা হাঁপিয়ে উঠেছে।কিছু দিন পরে রুপার বাবা মারা গিয়েছে। রুপার বাবা মারা যাবার পরে রুপা প্রতিজ্ঞা করেছে সে আর কখনো তার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যাবে না। রুপার বাবা মারা যাবার পরে রুপার শশুর বাড়ির লোকজন রুপাকে নিতে এসেছিল। কিন্তু রুপা বলেছে আপনাদের জন্য আমি আমার বাবকে হারিয়েছি তাই আমি আর আপনাদের বাড়িতে যাব না।তবে আপনার ছেলে যদি ইচ্ছে করে আমাদের বাড়িতে থাকতে পারে।

রুপা স্বামী শশুর বাড়ি থাকার রাজি না আবার রুপার শাশুড়ি ও থাকতে দেবে না। এভাবে কয়েক মাস তারপর বছর পেরিয়ে গেল। তারপর রুপার স্বামী রুপাকে ডিভোর্স দিয়ে আবার বিয়ে করল। এদিকে রুপা আর বিয়ে করবে না বলে বসে রইল।রুপা বললো সবাই শুধু বিয়ে বিয়ে করে আমাকে দেখলে হয়তো অনেকে আর বিয়ে করার জন্য কাউকে বলবে না।রুপা এখন সব কিছু হারিয়ে তার মাকে নিয়ে বেঁচে আছে।তার ইচ্ছে বাবাকে দেখতে পারেনি কিন্তু মাকে টাকা পয়সা আর নিজের সব কিছু দিয়ে দেখবে। তবে রুপা জীবনে কিছুই পেল না। যদি এভাবে হঠাৎ করে বিয়ে না করতো তাহলে হয়তো তার জীবন এমন হতো না।রুপা সবাইকে বলে বিয়েটা মেইন নয় নিজের পায়ে দাঁড়াতে হওয়াটাই মেইন উদ্দেশ্য। আসলে আমরা মেয়েরা একটু বড় হলেই বিয়ে দেবার জন্য ব্যস্ত থাকি।এই ছিল রুপার জীবনের গল্প। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

1000000176.gif

প্রয়োজনীয়তথ্য
ফটোগ্রাফার@parul19
ডিভাইসredmi note 12
লোকেসনফরিদ পুর

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

1000000175.png
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।

1000000177.gif

1000000178.png

1000019427.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

যদিও আপনার এই গল্পের আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়নি তবে এই পর্বটা পড়ে রূপার বাবার জন্য বেশ খারাপ লাগলো। তবে রুপা একদিক থেকে বেশ ভালোই করেছে। যাদের জন্য তার বাবাকে হারালো তাদের কাছে না ফিরে। আশা করছি বাকিটা জীবন রুপা নিজের মতো করে কাটিয়ে দিতে পারবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

ঠিক বলেছেন আপু এখন বাকি জীবনটা রুপা তার নিজের মতন করে কাটাতে পারবে ধন্যবাদ আপু

আপু আপনার গল্পের আগের কয়েকটি পর্ব পড়েছিলাম আর এখন শেষের পর্ব পড়ে রুপার জন্য খুব খারাপ লাগলো। সত্যিই রুপা জীবনে কোনো কিছুই পেলো না। মেয়ে বড় হলেই যে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে হবে তা কিন্তু নয়। রুপা যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতো তাহলে হয়তো আজ তার বাবাকে এত কষ্ট পেয়ে মরতে হতো না। তবে এখন সে এমন শ্বশুর বাড়ি যাবে না বলে মানা করে ভালো করেছে। এখন সে নিজের করে ভালো সময় কাটাতে পারবে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

আসলে আপু পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু করতে বাধ্য করে। ধন্যবাদ আপু।

1000019433.jpg