আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন। আমিও ভালোই আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার গাওয়া একটি ভক্তিমূলক গান নিয়ে এলাম। গানটি কে লিখেছেন তার বিশেষ বর্ণনা আমি ইন্টারনেটে পেলাম না। এটি একটি বলা যেতে পারে রিজিওনাল একটি ট্রেডিশনাল গান। আর গানটি প্রথম গেয়েছেন সুরেশ বাদেকার।মানে তার গলাতেই আমার প্রথম শোনা। আসলে সনাতন ধর্ম এতটাই পুরনো একটা ধর্ম আর এত বড় যে কোন অঞ্চলে কে কিভাবে আঞ্চলিকভাবে ঈশ্বরকে ডাকে তা ঠিক নেই। ৩৩ কোটি দেবতা আমাদের তাই অনেক দেবতাকেই আমরা চিনি না,জানিও না তাদের সম্পর্কে। কিন্তু কৃষ্ণ আমাদের কাছে সব সময় সত্য। শিব এবং কৃষ্ণ এই দুই সত্যই আমাদের জীবনের মূল সত্য। আজ তাই কৃষ্ণের জন্য একটি বন্দনা গাইলাম। আমার কোন মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট নেই। তাই নিজের মতো করেই গাইলাম। গানটা গাইতে গাইতে আমার সারা শরীরে কাঁটা দিচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন ঈশ্বরের সামনেই তাকে বন্দনা করছি।

গানটির সারমর্ম এতটাই অসাধারণ মন দিয়ে শুনলে বোঝা যায় যে সেখানে কি বলতে চেয়েছে। বলছে সবাই আমরা বলি এত ঈশ্বরকে ডাকি তাও ঈশ্বরকে পাই না। সেই না পাওয়ার কারণে এখানে বলা হয়েছে। তুমি ঈশ্বরকে ভক্তি করে ডাকো সবটাই ঠিক। কিন্তু তোমার সেই ভক্তির মধ্যেও কোথাও একটা কমতি থেকে যায়। সেই কারণে তুমি ঈশ্বরের দেখা পাও না। তুমি ভাবো আমি কৃষ্ণকে নিজের ঘরের ছেলের মতো করে দেখব। কিন্তু ঈশ্বর কে যখন তুমি খেতে দাও হয়তো তোমার সেই খেতে দেওয়াটা শবরীর মত হয় না। শবরীর গল্প অনেকেই জানেন হয়তো। শবরী ভগবান রাম কে দেখবে বলে রামের জন্য রোজ ফল বেছে রাখতো। আর সেই ফল নিজে এক কামড় খেয়ে দেখত সেটা মিষ্টি নাকি টক। মিষ্টি ফলগুলো রেখে দিত রামের জন্য। আর টকগুলো ফেলে দিত। আর তার এই ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে প্রভু রাম তার গৃহে পদার্পণ করে। তার সেই রেখে দেওয়া এঁটো ফলই ভক্তি ভরে খেয়েছিলেন। আর তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। সে রকমই কৃষ্ণ কে পেতে গেলে ভক্তির চরমসীমায় পৌঁছে যেতে হবে। যেখানে আর কোন অন্য চিন্তা মাথাতেই আসবে না।

সেভাবেই মা যশোদা কৃষ্ণকে যেভাবে ঘুম পাড়া তো আমরা হয়তো কৃষ্ণকে সেভাবে ঘুমিয়ে পারাতে পারি না, মীরা যেভাবে কৃষ্ণ নামে মগ্ন হয়ে গিয়েছিল, সেভাবে আমরা কৃষ্ণ নামের মগ্ন হতে পারি না। আবার গোপিরা পাগলিনীর মত কৃষ্ণ নামে যেভাবে নৃত্য করতো আমরা সেভাবে নৃত্য করতে পারি না। তাই হয়তো কৃষ্ণ কে মনের ভিতর অনুভব করতে পেলেও ছুঁতে পারি না।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন।