তারিখ-০৭.০৬.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে আপনারা সকলেই ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। এই সপ্তাহে মোটামুটি অ্যাকটিভ থাকতে পেরেছি বলে অর্থাৎ কমেন্ট একটু কম করেছি কিন্তু পোস্ট করতে পেরেছি বলে বেশ ভালো লাগছে। আজ আপনাদের সামনে একটা সিনেমার রিভিউ নিয়ে এলাম। একটা বাংলা সিনেমার রিভিউ করছি। বাংলা সিনেমা সত্যি বলতে আমার একটু কমই দেখা হয়। খুব ইন্টেলেকচুয়াল সিনেমা ছাড়া আমি বিশেষ দেখি না। তবে এই সিনেমাটা কমার্শিয়াল সিনেমা হলেও সবার মুখে শুনেছি খুব ভালো হয়েছে। তাই জি ফাইভে দেখলাম সেদিন। আজ আমি আপনাদের সামনে 'প্রজাপতি' সিনেমার রিভিউ নিয়ে এলাম।
গল্পটা এরকম গৌর চক্রবর্তী তার ছেলে জয় চক্রবর্তীর সাথে কলকাতায় একটি বাড়িতে থাকেন। তার একমাত্র রুমি বিবাহিত স্বপনের সাথে। জয় একজন ওয়েডিং প্লানের। সুতরাং সকালবেলা উঠেই অফিসের কাজে তাকে ছুটতে হয়।এরপর সারাদিন গৌরবাবু বাড়িতে একা থাকেন। আড্ডার সঙ্গী বলতে পাশের বাড়ির এক বন্ধু। তবুও সব সময় যে তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয় তা ও নয়। সেই কারণে গৌরবাবু সবসময় ভাবেন যে তিনি বড্ড একা। ছেলে অফিস থেকে বাড়ি ফিরলে রোজই তাকে জোর করেন বিয়ের জন্য, যাতে ঘরে বউ মা আসে। জয় রোজ বাড়ি থেকে এসে ব্দেখে কোন না কোন মেয়ের বাবাকে বা পরিবারকে গৌর বাবু বাড়িতে বসিয়ে রেখেছেন, জয় ফিরলে তাদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় করাবে বলে। বিয়ের কথা এগোবে বলে। কিন্তু জয় কোনভাবেই বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল না।
অপরদিকে জয়ের অফিসেই কাজ করে মালা, যে জয়কে ভীষণভাবে পছন্দ করে। কিন্তু কখনোই তার বস কে তার পছন্দের কথা বলে উঠতে পারেনি। এরপরেই হঠাৎ করে একদিন মন্দিরে দেখা হয়ে যায় গৌর বাবু, জয়ের সাথে গৌরবাবুর পুরনো বান্ধবী কুসুম এবং তার মেয়ে জয়শ্রীর। এরপরেই ঘটনার ঘনঘটা শুরু হয়।গৌরবাবু মনে মনে কুসুমের মেয়ের সাথেই জয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু জয়শ্রী কানাডাতে সেটেল তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে। তাই আর কোন উপায় না দেখে, ছেলে যখন বিয়ে করবে না পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, তখন গৌর বাবু ভাবলেন তিনি এবং কুসুম আবার বিয়ে করবেন এবং একসাথে থাকবেন। যাতে তার এবং কুসুমের দুজনেরই একাকীত্ব দূর হয়। এই বিষয়ে কুসুমের মেয়ে জয়শ্রী সম্পূর্ণ মত দিলেও, জয় কোনোভাবেই বিষয়টা মেনে নিতে পারছিল না। এর পরে শুরু হয় গল্পের ক্লাইম্যাক্স। পরবর্তী সময়ে কিভাবে সমাজের এই টানাপোড়েন থেকে নিজেদের বার করে এনে একটু সুখের মুখ তারা দেখতে পান,তা নিয়েই গল্প।
এবার চলে আসি আমার মতামত নিয়ে-
একটা সময় বড্ড হাসাহাসি করতাম বয়স্ক লোককে বিয়ে করতে দেখলে। মনে হতো এই বয়সেও ভীমরতি। বিয়ে করতে হয়। কিন্তু খুব কাছের থেকে কিছু মানুষকে যখন দেখেছি যে একা একা সংসারটাকে গোছানো, সাথে ইনকাম করা তারপরে রাতে একাই ঘুমোতে যাওয়া, অসুস্থ হলে তার মাথায় হাত বোলানোরও কেউ নেই, তাকে সেবা সুশ্রুষারও কেউ নেই, তখন বড্ড নিজেকে অপরাধী মনে হতো। মনে হতো কেন আমি এই লোকগুলোর জন্য হাসাহাসি করেছি? গিয়ে তো তাকে সেবা সুশ্রূষা বা একাকীত্ব দূর করতে পারবো না।সুতরাং কেউ যদি নিজের একাকীত্ব দূর করার জন্য শেষ বয়সে এসে একটা সঙ্গী বেছে নেয়, শেষ বয়সে এসে মনের মত মানুষ খুঁজে পায়, গল্প করার জন্য,সময় কাটানোর জন্য, তবে এতে দোষের আমার মনে হয় কিছুই নেই। কিন্তু আমাদের সমাজ এখনো এতটা উন্নত হয়নি যে হঠাৎ করে একজন মধ্যবয়সী বা তার থেকে একটু বেশি বয়স্ক লোককে তার জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে দেখলে উদার মনে মেনে নেবে। সব সময় মাথায় নোংরা চিন্তা ভাবনা আসে সকলেরই। আর খুলে কিছু বললাম না। কারণ এটা একটা পারিবারিক প্ল্যাটফর্ম আমি মনে করি। তাই এর থেকে বেশি কিছু বলবো না। 'প্রজাপতি' সিনেমাতে এই বাস্তবটাকেই তুলে ধরা হয়েছে।
গৌর চক্রবর্তী যখন কুসুম সেনকে বিয়ে করতে চেয়েছে তখন কুসুমের মেয়ে জয়শ্রী কানাডাতে থাকে বলে সে জিনিসটাকে খুব সহজভাবে মেনে নিতে পেরেছে। কিন্তু সমাজের চাপে জয় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। পরবর্তী সময়ে জয়শ্রী এবং জয় একে অপরের সাথে কথা বলে এই বিষয় নিয়ে এবং জয় কোথাও একটা বোঝে তার বাবার একাকিত্বের জন্য সেও কোনভাবে একটা দায়ী। কারণ তার বাবার যদি কোন নোংরা উদ্দেশ্য থাকতো,তবে সে কম বয়সেই জয়ের মা যখন মারা গেছেন তখনই বিয়ে করতে পারতেন।কিন্তু শুধু একমাত্র এখন বিয়ে করতে চাইছেন নিজের নিঃসঙ্গতা দূর করার জন্য। সেই কারণে সে তার বাবার এই মতামতকে মেনে নেয় সাদরে। ঠিক এখানেই সমাজের দেখানো চোখ রাঙ্গানিকে, কাঁচকলা দেখিয়ে বর্তমানের জেনারেশন জিতে গেছে এই সিনেমায়।
[স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে অফিসিয়াল ট্রেলার থেকে]
সিনেমা | প্রজাপতি |
---|---|
অভিনয় | মিঠুন চক্রবর্তী, দেব, কৌশানী, মমতা শঙ্কর, শ্বেতা, প্রমুখ |
ডিরেক্টর | দেব |
প্রোডিউসার | দেব |
IMDb রেটিং | ৭.৫/১০ |
আমার রেটিং | ৮/১০ |
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit