আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভালো আছেন । আমিও ভালো আছি ।আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই ,আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি একটা মজার ঘটনা নিয়ে। ঘটনাটি গত বৃহস্পতি বার দিন ট্রেনের কামড়ায় ঘটেছিল। সেদিনই চাইলে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারতাম। তবে কিছুটা ক্লান্তি বোধ করছিলাম তাই আর পোস্ট করা হয়ে ওঠেনি ।তবে আজ কিছুটা সময় করে নিয়ে আপনাদের মাঝে ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য চলে এসেছি।
আসলে ট্রেনের কামরায় খুব একটা টিটি উঠতে দেখা যায় না। খুব একটা বলাটাও ভুল, দেখাই যায় না বললে চলে। তবে কিছু কিছু স্টেশনে প্রতিনিয়তই টিটি ঘুরতে দেখা যায় ,যেমন ধরুন - বনগাঁ ,হাবরা ,বারাসাত, শিয়ালদা ইত্যাদি। তবে মাঝের অন্য স্টেশন গুলোর প্ল্যাটফর্মেও টিটি দেখা যায় না। আর ট্রেনে ওঠার কথা তো দূরে থাকলো। তবে গত বৃহস্পতিবার দিন গতানুগতিক রুটিন ভঙ্গ করে হঠাৎ করে গোবরডাঙ্গা স্টেশন থেকে ট্রেনের কামরায় টিটি উঠে পড়ল। সেই নিয়ে তো ট্রেনের কামরায় তুমুল ঝগড়া শুরু হলো। আমি তো ঝগড়া শুনে প্রথমে রীতিমত অবাক হয়ে গিয়েছি। তারপর বিষয়টা ভালো করে লক্ষ্য করে বুঝতে পারলাম,অনেক হাস্যকর একটা ঘটনা ঘটছে।
প্রতিনিয়ত ট্রেনে যাতায়াত করার সময় দেখা যায় দরজার সামনে কিছু মহিলা বসেই থাকে। ওনারা আসলে স্টেশন আসলেও ওঠেন না ,আর প্রচন্ড ভিড় হলে দাঁড়ানোর জায়গা না থাকলেও ওঠেন না, ট্রেনের সিট খালি থাকলেও উনারা ওঠেন না ,ঠিক ওই জায়গাটাতেই তাদের বসতে হবে। যাই হোক টিকিট পরীক্ষক উঠে তো প্রথমে ওনাদের মধ্যেই একজনকে টিকিট দেখাতে বললেন। যাকে টিকিট দেখাতে বলেছিল তার কাছে আসলে টিকিট ছিল না, কিন্তু তাও তিনি টিকিট পরীক্ষকের সাথে সমানতালে ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আর বলছিলেন "আমি রোজই টিকিট কাটি শুধুমাত্র আজকেই কাটিনি"। তখন টিকিট পরীক্ষক বললেন "আজকেই তাহলে ফাইন টা দাও, অন্যদিনের টিকিট না হয় অন্যদিন দেখিও"। তখন উনি বললেন" আপনি এখানে টাকা খেতে উঠেছেন ,এরপর যখন আমি আপনাকে একদিন টিকিট দেখাবো তখন আপনার মুখ থাকবে তো?" এসব বলে টিকিট পরীক্ষক কে নানাভাবে অপমান করতে থাকলেন। এদিকে তিনি নিজে ভুল করেছেন কিন্তু সেটা স্বীকার না করে সমানতালে টিকিট পরীক্ষককে নানা রকম কথা বলে তিক্ত করে তুলছিলেন। যাইহোক শেষ পর্যন্ত অনেক অজুহাত দেখানোর পরেও তাকে তার ফাইনের ২৭০ টাকা দিতেই হয়েছিল। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরে তিনি ওখানে বাকি যে মহিলারা বসে ছিলেন, তাদেরকে সবাইকে দেখিয়ে বললেন "এই প্রত্যেকের টিকিট যদি পরীক্ষা না করা হয়, তাহলে আমি গিয়ে কমপ্লেন করব "।আসলে ওনারা সবাই একসাথেই ট্রেনের দরজায় বসে থাকেন ,তবুও উনি নিজে ধরা পড়েছেন বলে বাকি সবাইকেই ধরিয়ে দিয়েছিলেন। যাই হোক টিকিট পরীক্ষাক তো বাকি সবার কাছ থেকেও টিকিট পরীক্ষা করতে থাকলো আর ওনাদের কারোর কাছেই টিকিট কাটা ছিল না, পরপর সবাইকেই ফাইন দিতে হয়েছিল।
এরপর তিনি দরজার সামনে থেকে আসলেন ,ট্রেনের সিটে বসে থাকা সদস্যদের দিকে ,এখানেই তো ঘটলো মজার ঘটনা। শুধুমাত্র যে দরজার সামনে বসে থাকা মহিলাগুলো টিকিট কাটে না এমন নয় ,ভদ্র সমাজের সুন্দর সাজগোজ করা মহিলারাও যে টিকিট কাটেন না ,সেটা সেদিনই দেখা গেল। সেটা দেখেই অনেক হাসি পাচ্ছিলো। প্রথমেই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন সুন্দর সাজগোজ করা মহিলাটির দিকে টিকিট পরীক্ষক কিভাবে তাকিয়ে আছে? আসলে উনি সেই মহিলার কাছে টিকিট না কাটার দরুন ২৭০ টাকা ফাইন চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি বারবারই বলছিলেন আমার কাছে অত টাকা নেই। তখন টিকিট পরীক্ষক বলছিলেন "দেখি তোমার ব্যাগে টাকা আছে কিনা ?"সেই বলে উনি কিভাবে তার ব্যাগের দিকে উঁকি মারছিল ,সেটা তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, হি হি হি। তারপর শেষ পর্যন্ত উনি যখন টাকা দেখেই ফেললেন ,তখন কি আর না নিয়ে বাড়ি যাই ? হা হা হা।
এই ঘটনা দেখে আমার সামনে বসে থাকা প্রায় ২৪ থেকে ২৫ বছর বয়সি একটি মেয়ে নিজেকে ১৬ বছরের মেয়ে বলে দাবি করতে থাকলো , এটা দেখে তো আমার আরো হাসি পাচ্ছিল। মেয়েটি এসে আমার কানে কানে বলল ,"দিদি আমি তো ক্লাস ১০ পড়ি, আমারতো টিকিট লাগবে না বলো? আমি বললাম তুমি ১০ পড়ো!! বলল হ্যাঁ, আমি কিন্তু এখন যদি টিকিট চাই আমি কিভাবে দেখাবো? আমাকেও কি ফাইন দিতে হবে ? আমি বললাম হ্যাঁ, স্কুল কলেজে যাওয়ার সময় ছাড়া ঘুরতে যাওয়ার সময় তো সবারই টিকিট কাটা উচিত। বলেও পড়লাম মুশকিলে, সে তো আমার টিকিটটা নেবে বলে জোরাজোরি করতে থাকলো। আমি বললাম ,"সেটা কিভাবে সম্ভব? তাহলে আমি কি দেখাবো?" । তখন সে বলল ,"আমার দেখানো হয়ে গেলে তুমি দেখিয়ে দিও"। কিন্তু সেটা কিছুতেই সম্ভব না, কারণ সে আর আমি পাশাপাশি ছিলাম। তাই সে আমার কাছে যেহেতু উপায় চেয়েছিল, তাই ধরা না পড়ার জন্য আমি তাকে ট্রেন থেকে নেমে যেতে বলেছিলাম ।সেই মতো সে ট্রেন থেকে নেমে গিয়েছিল ,ঠিক তারপর পরেই আমাদের দিকেও টিকিট পরীক্ষক এসে টিকিট চাইতে লাগলেন। ভাগ্যিস মেয়েটি নেমে গিয়েছিল, না হলে তারও ভালোই টাকা খসে যেত, হি হি হি।
যাইহোক হঠাৎ করে ট্রেনের কামড়ায় টিকিট পরীক্ষা উঠে সবার মধ্যে একটা উন্মাদনা সৃষ্টি করে দিয়েছিল। অনেক মজার একটা অভিজ্ঞতা ছিল এটা ,তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
তারিখ | ০৪/০৫/২০২৩ |
সময় | বিকাল ৪:৩০ |
লোকেশন | গোবরডাঙ্গা |
পোস্ট বিবরণ | জেনারেল রাইটিং |
আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
আমাদের এদিকেও এরকম ঘটনা দেখা যায়। হঠাৎ ট্রেনে ট্রেনে টিটি উঠে সমানে জরিমানা করতে থাকে। আসলে টিকিট না কাটা অনেকেরই অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়, তাই এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিকই বলেছেন ভাই ,এরকম বাজে অভ্যাসের জন্যই তাদের এরকম ভুগতে হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু ট্রেনের কামরায় ঘটে যাওয়া খুবই মজার একটি ঘটনা আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।টিকিট পরীক্ষক ব্যাগের দিকে উঁকি মারার বিষয়টা আমার কাছে খুবই মজা লেগেছে। একই সাথে ২৫ বছরের মেয়ে নিজেকে 16 বছরের মেয়ে দাবি করার বিষয়টাও দারুন ছিল। আসলে আপু ট্রেনে যাত্রা করার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই উচিত প্রথমে টিকিট ক্রয় করা।টিকিট পরীক্ষক তো তার নিয়ম অনুসারে কাজ করবে আর এটাই তো স্বাভাবিক। দারুন একটি মজার ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। একদমই তাই আমাদের ট্রেনে চড়তে গেলে অবশ্যই নিয়ম মেনে টিকিট কাটা উচিত। সত্যি খুব হাসি পেয়েছিল আমারও, টিকিট পরীক্ষকের ব্যাগে উঁকি মারার বিষয়টাতে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ট্রেনের কামড়ায় ঘটে যাওয়া মজার ঘটনাটি পড়ে খুব ভালোই লাগলো।আসলে আমাদের অনেকেরই টিকিট কাটার প্রবনতা কিছুটা কম।আর তাইতো এমন অনাকাংখিত ঘটনার সৃষ্টি হয়।ধন্যবাদ দিদি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঘটনাটি পড়ে আপনার মজা লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি শুধু ওই মেয়েটার কথা চিন্তা করছি যে তোমার টিকিট চেয়েছিল টিটিকে দেখানোর জন্য। হা হা হা... আমার কাছে এরকম যদি কেউ টিকিট চাইতো, আমি তো ঠেলে ট্রেন থেকে ফেলে দিতাম তাকে। যাইহোক ঘটনাটা পড়ে খুব হাসি পেলো। এরপর থেকে মনে হচ্ছে আমাকেও টিকিট কেটে ট্রেনে যেতে হবে। 🤭
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কেনো দাদা, তুমিও কি টিকিট না কেটে ট্রেনে উঠে ঘুরে বেড়াও? হি হি হি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি সব সময় টিকিট কেটে ট্রেনে উঠি। আর টাইটেল এ কামড়ায় হবে না, কামরায় হবে। ওটা ঠিক করো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ওহ আচ্ছা দাদা , ঠিক করে নিচ্ছি। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কিছুদিন আগে আমি যখন যশোর থেকে চুয়াডাঙ্গায় ফিরছিলাম তখনও এমন ঘটনা আমাদের চোখের সামনে বেধে ছিল। তবে যাই হোক এমন একটি ঘটনা আপনি আমাদের মাঝে আর শেয়ার করেছেন দেখি পড়ে ভালো লাগলো আশা করি এভাবে আরও অনেক কিছু আমাদের মাঝে উপস্থাপন করবেন যা শুনে এবং পড়ে অনেক ধারণা অর্জন করতে পারব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাই এসব ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে ।আপনার সামনেও ঘটেছে দেখছি ঘটনাটি
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit