রাতের বেলা মেসের আপুদের সাথে ছাদে আড্ডা দেওয়ার মুহূর্ত।

in hive-129948 •  yesterday 

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ২২ শে ফেব্রুয়ারি, শনিবার, ২০২৫খ্রিঃ

কভার ফটো


1000027382.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আজ আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা অনেকেই আছি যারা স্টুডেন্ট লাইফে মেসে থাকি। পরিবার ছেড়ে দূরে থাকতে অনেক কষ্ট হয়। তবে মেসে এসে আমরা সবাই একসাথে একটি পরিবার তৈরি করে নি।বিভিন্ন জায়গা থেকে সবাই আসে। একেক জন একেক রকম। সবাই মিলে একসাথে থাকতে থাকতে বিভিন্ন আনন্দ মুহূর্ত সৃষ্টি হয়। এই পরিবার ভেঙে আবার সবাইকে চলে যেতে হয়।আমি আসার পরে আমার পাশের রুমে আরেকটি আপু আসে। তার সাথে বেশ ভালো বন্ডিং হয়ে যায়। তার পড়াশোনা শেষ হওয়ার কারণে সে মেস ছেড়ে চলে গেলো দুই দিন আগে। এরকমই চেনা সম্পর্ক গুলো আবার অচেনা হয়ে যাই। আপু যাওয়ার আগের দিন তার সাথে কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করবো।



1000027383.jpg
আমি আসার দুই তিন মাস পরে আপু মেসে এসেছিলো।আপু সিঙ্গেল রুমে থাকতো। একেবারে আমার পাশের রুমটাই। আমাদের ইউনিটে আমরা পাঁচজন একসাথে থাকতাম। এই পাঁচজনের মধ্যে বেশ ভালো বন্ডিং তৈরি হয়ে গিয়েছিলো।মেসে এরকম অনেক আপুদের সাথে পরিচিত হয়েছি। আমি যেই আপুর সাথে রুম শেয়ার করতাম সেই আপু তিন মাস আগে মেস ছেড়ে দিয়েছে। আপুর চাকরি হওয়ার কারণে আপু চলে গিয়েছে। আপুর সাথেও আমার খুব ভালো বন্ডিং ছিলো।সম্পর্ক গুলো এরকমই তৈরি হয় আবার ভেঙ্গে যায়। তবে একসাথে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে।
1000027384.jpg
আপু এবং আপুর বোন তারা দুজনে এখানে থাকতো। মেস ছেড়ে চলে যাওয়ার আগের দিন আপু বলল সময় মিলে সুন্দর একটি সময় উপভোগ করলে মন্দ হতো না। ইচ্ছা ছিল দিনের বেলায় কোথাও ঘুরতে যাবো।সারাদিন কলেজ থাকার কারণে দিনের বেলায় আর কোথাও ঘুরতে যেতে পারলাম না। সন্ধ্যাবেলায় সবাই মিলে মেলায় গিয়েছিলাম সেটা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।
1000027385.jpg
মেলা থেকে এসে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রাত বারোটার দিকে আপু আমাদের বলল চলো সবাই মিলে একটু ছাদে গিয়ে আড্ডা দি। আমার শরীর অসুস্থ ছিল তারপরেও অপু যেহেতু চলে যাবে সেজন্য রাজি হয়ে গেলাম। তারপর ঠিক বারোটার সময় সবাই মিলে ছাদে গেলাম। যেতেই দেখি ছাদে দরজা বন্ধ। তারপর চার তলায় থাকা আপদের ডেকে ছাদে দরজা খুলে নিয়ে আমরা পাঁচজনে মিলে ছাদে চলে যাই।
1000027386.jpg
অনেকদিন হয়ে গেল আমি ছাদে যায় না। শীতকালে দুপুরবেলায় মেসের ছাদে মাঝে মাঝে যেতাম। এখন দুপুরে প্রচন্ড গরম পরে। সেজন্য আর যাওয়া হয় না। রাত্রেবেলা ছাদে গিয়ে খুব ভালো লাগছিলো।রাতে বেলা ছাদে গিয়ে বুঝতে পারছিলাম শীত এখনো আছে। আমি অবশ্য যাওয়ার সময় গায়ের চাদর জড়িয়ে গিয়েছিলাম।
1000027387.jpg
আমার ধারণা, সেদিন রাতে পূর্ণিমা ছিলো।পূর্ণিমা না থাকলেও পূর্ণিমার পরের দিন হবে হয়তো। চাঁদটা ভীষণ পরিষ্কার ছিলো।আকাশে উজ্জ্বল চাঁদ, চারিপাশের তারা, মৃদু মৃদু বাতাস বয়ে যাচ্ছিলো।অপূর্ব লাগছিলো।মনে পড়ে যাচ্ছিল,ছোটবেলায় উঠানে বসে মাদুর পেতে গল্প করার দৃশ্য। সবাই মিলে বেশ দারুন দারুন বিষয় নিয়ে মজার গল্পে মেতে উঠেছিলাম।
1000027388.jpg
আবার কবে দেখা হবে কেউ তা জানিনা। হয়তোবা কখনো দেখায় হবে না আর। এতদিন ধরে কাটানো বিভিন্ন স্মৃতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিলাম। আপুরা চলে যাবে ভেবে খুব খারাপ লাগছিলো।সবাই মিলে কত মিলেমিশে থাকতাম আমরা। আপুদের জীবনের অনেক সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করলো। আমরা আমাদের সুন্দর মুহূর্তগুলো শেয়ার করলাম। ভীষণ হাসি মজা করলাম। এত সুন্দর মুহূর্তর সাথে রাতের দৃশ্যটা ছিল উপরি পাওনা। অসম্ভব সুন্দর লাগছিল চারিপাশের দৃশ্য।
1000027389.jpg
রাতের শহরটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। রাতের শহরে হাঁটতে বেশি ভালো লাগে। ছাদে গিয়ে শহর দেখতেও খুব ভালো লাগছিলো।দূরে থাকা বড় বড় বিল্ডিং গুলো অন্ধকারে দাঁড়িয়েছিলো।চারি পাশে আলো আর আলো। এতো অপূর্ব লাগছিল যে বোঝাতে পারবো না। বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমরা গল্প করলাম। প্রায় দুই ঘন্টা মতো ছাদে কাটালাম। মেস লাইফে রাতে ঘুমানোর কোন তাড়াহুড়ো থাকে না। গভীর রাতও আমাদের কাছে যেন রাত মনে হয় না।
1000027390.jpg
সবাই মিলে বেশ সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করলাম। তারপর একটু বেশি ঠান্ডা লাগছিলো।আমার যেহেতু শরীরটা একটু খারাপ ছিলো সেজন্য আমি আপনাদের বললাম, আপু এবার নিচে যাওয়া যাক? আপুরা বলল হ্যাঁ চলো যাওয়া যাক। আপুদের সাথে শেষের দিনটা গল্প আড্ডায় বেশ ভালোই কাটিয়েছিলাম।এরকমই অনেক স্মৃতি জমে আছে স্মৃতি পাতায়। আমরা কেউ কাউকে কখনো ভুলব না তবে এরকম সুন্দর মুহূর্ত আর হয়তো কাটানো হবে না। কয়েক দিনের পরিচয় আমরা সবাই কত আপন হয়ে যায়।এরকমই পরিবার তৈরি হয় মেস লাইফে এসে। কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়।
যে যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক। এই কামনাই করি।

আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000027396.png1000027398.png1000027397.png

সঠিক বলেছেন আপনি সম্পর্ক গুলো এমনই সুমধুর আভাস নিয়ে গড়ে ওঠে আবার পরিস্থিতির কারণেই সম্পর্ক গুলো ভেঙ্গে যায়। যাই হোক আপনার ম্যাচের বড় আপু চলে যাওয়ার নিরিখে মেলাতে ঘোরাঘুরি সহ অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও ছাদে গিয়ে আড্ডা দিয়েছেন তাদের সাথে। খুবই ভালো লাগলো আপনার অনুভূতিটি পড়ে। আমাদের সাথে এরকম মজার একটি মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

এই সময় গুলো একটু বেশি সুন্দর হয় আপু। রাতের বেলা ম্যাচের আপুদের সাথে ছাদে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আর এই মুহূর্তটা খুবই সুন্দরভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আমরাও মাঝে মাঝে এভাবে আড্ডা দিতাম। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

মেসের আপুদের সাথে রাতের বেলায় ছাদে গিয়ে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছে জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে মেস লাইফ যেমন কষ্টের তেমনি অনেক মজার। সবার সাথেই সুন্দর সম্পর্ক হয় আবার সেই সম্পর্কটা ভেঙে যায় কিন্তু থেকে যায় সুন্দর স্মৃতি। পূর্ণিমার রাতে ছাদে গিয়ে এভাবে গল্প করার মজাই আলাদা। ফটোগ্রাফি গুলো এক কথায় দারুন হয়েছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিত ভাবে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।